Breaking News
recent

সহিহ মুসলিম শরীফ ৪র্থ খন্ড, অধ্যায়ঃ হাজ্জ-৪র্থ




পরিচ্ছেদঃ ৪১. কুরবানীর দিন জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপ শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত হজ্জ পালনকারীর তালবিয়া পাঠ করা মুস্তাহাব


২৯৬২.    সুরায়জ ইবনু ইউনূস (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) মুযদালিফা রওয়ানার প্রাক্কালে তালবিয়া পাঠ করলেন। বলা হল, এ সম্ভবত বেদুঈন (হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সঠিকভাবে জানে না)। আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, লোকেরা কি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সূন্নাত) ভূলে গেছে, না পথভ্রষ্ট হয়েছে! যার উপর সূরা বাকারা নাযিল হয়েছে, তাকে আমি এই স্থানে বলতে শুনেছিঃ লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা।”
২৯৬৩.    হাসান হুওয়ানী (রহঃ) ... হুসায়ন (রহঃ) থেকে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
২৯৬৪.    ইউসুফ ইবনু হাম্মাদ মাইয়ী (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযিদ ও আসওয়াদ ইবনু ইয়াযিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, আমরা আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) কে মুযদালিফায় বলতে শুনেছি যে, যার উপর সূরা বাকারা নাযিল হয়েছে, তাঁকে আমি বলতে শুনেছিঃ "লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা।" এরপর তিনি (ইবনু মাসউদ) তালবিয়া পাঠ করলেন এবং আমরাও তার সঙ্গে তালবিয়া পাঠ করলাম।

পরিচ্ছেদঃ ৪২. আরাফাত দিবসে মিনা থেকে আরাফাতে যাওয়ার পথে তালবিয়া ও তাকবীর পাঠ করার বর্ণনা


২৯৬৫.    আহমদ ইবনু হাম্বল, মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না ও সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া উমাবী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা সকালবেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মিনা থেকে আরাফাতের দিকে রওনা হলাম তখন আমাদের মধ্যে কতক ছিল তালবিয়া পাঠকারী এবং কতক ছিল তাকবীর পাঠকারী।
২৯৬৬.    মুহাম্মদ ইবনু হাতিম, হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও ইয়াকুব আদ-দাওরাকী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবন সালামা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবন আবদুল্লাহ ইবন উমর (রহঃ) থেকে এবং তিনি নিজ পিতা আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আরাফাত দিবসের সকালবেলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। আমাদের মধ্যে কতক তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করছিল আর কতক তালবিয়া পাঠ করেছিল। আমরা তাকবীর ধ্বনি করেছি। পরবর্তী রাবী (আবদুল্লাহ ইবনু আবূ সালামা) বলেন, আমি (আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহকে) বললাম, কি আশ্চর্য! আপনি তাকে (আবদুল্লাহ ইবনু উমর) কেন জিজ্ঞাসা করলেন না যে, আপনি এই ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি করতে দেখেছেন?
২৯৬৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর সাকাফী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর সাথে সকালবেলা মিনা থেকে আরাফাতে যাওয়ার সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা এই দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কিভাবে কি করতেন? তিনি বললেন, আমাদের কতক তালবিয়া পাঠ করত কিন্তু তাতে বাঁধা দেয়া হতো না এবং কতক তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করত কিন্তু তাতেও বাঁধা দেয়া হতো না।
২৯৬৮.    সুরায়জ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আরাফাত দিবসের সকালবেলা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, এই দিন আপনারা তালবিয়ার ক্ষেত্রে কি বলতেন? তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আমি ও তাঁর সাহাবীগণ এই পথ ভ্রমণ করেছি। আমাদের কতক "আল্লাহু আকবার" ধ্বনি উচ্চারণ করেছে এবং কতক তালবিয়া (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা) উচ্চারণ করেছে। এতে আমাদের কেউ কারো নিন্দা করেনি।

পরিচ্ছেদঃ ৪৩. আরাফাত থেকে মুযদালিফায় প্রত্যাবর্তন এবং মুযদালিফায় এই রাতের মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করা মুস্তাহাব


২৯৬৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব থেকে উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) এর সুত্রে বর্ণিত। তিনি তাকে বলতে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন, পাহাড়ের সরু পথের নিকট পৌঁছে বাহন থেকে নেমে পেশাব করলেন, এরপর হালকা উযু করলেন, পূর্ণ উযু নয়। আমি তাঁকে বললাম, সালাতের ওয়াক্ত হয়ে গেছে। তিনি বললেন, সামনে এগিয়ে সালাত আদায় করব। এরপর তিনি সওয়ারীতে আরোহণ করলেন, মুযদালিফায় পৌঁছে পূর্ণাঙ্গ উযু করলেন। এরপর সালাতের ইকামত দেওয়া হল এবং (এখানে) মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর প্রত্যেকে নিজ নিজ উট বসাল (বিশ্রামের জন্য), এরপর ইশার সালাতের ইকামত দেওয়া হল এবং ইশার সালাত আদায় করলেন। এই দুই সালাতে মধ্যে তিনি অন্য কোন সালাত আদায় করেননি।
২৯৭০.    মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ... উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তনের পথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য কোন এক গিরিপথে গেলেন। এরপর আমি তাঁর উযুর পানি ঢেলে দিলাম, এরপর বললাম, সালাত আদায় করবেন কি? তিনি বললেন, সালাতের স্থান সামনে।
২৯৭১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন। তিনি গিরিপথের নিকটে পৌঁছে বাহন থেকে নেমে পেশাব করলেন। উসামা বলেন নি যে, তিনি পানি গড়িয়েছেন (ঢেলে দিয়েছেন)। তারপর তিনি পানি চাইলেন এবং হালকাভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি সালাত আদায় করবেন? বললেনঃ সালাত তো তোমার সম্মুখে। রাবী বলেন, এরপর তিনি চলতে থাকলেন এবং মুযদালিফায় পৌছলেন। এরপর মাগরিব ও ইশার সালাত আদায় করলেন।
২৯৭২.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... কুরায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) কে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাঁর বাহনে আরোহণ করলেন, তখন আরাফাত দিবসের সন্ধ্যায় আপনারা কি করেছিলেন? তিনি বললেন, যে উপত্যকায় লোকেরা মাগরিবের সময় নিজের উটকে (বিশ্রামের জন্য) বসায়, সেখানে এলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উষ্ট্রী বসালেন এবং পেশাব করলেন। উসামা (রাঃ) বলেননি যে, পানি গড়িয়েছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূর পানি চেয়ে আলালেন এবং হালকাভাবে উযু করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি সালাত আদায় করবেন? তিনি বললেন, সালাত তোমার সম্মুখে। এরপর তিনি সওয়ার হয়ে রওনা করলেন। অবশেষে আমরা মুযদালিফায় আসলাম। তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। লোকেরা নিজ নিজ স্থানে উট বসাল কিন্তু মাল-সামান খুলল না, এমনকি ইশার সালাতে দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করলেন। এরপর লোকেরা মাল-সামান নামাল। আমি (কুরায়ব) বললাম, ভোর হওয়ার পর আপনারা কি করলেন? তিনি (উসামা) বললেন, ফযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) তার বাহনে (তার পেছনে) সওয়ার হলেন এবং আমি পদব্রজে কুরায়শদের অগ্রগামীদের সাথে চললাম।
২৯৭৩.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যে উপত্যকায় মক্কার সমস্ত লোকেরা অবতরণ করত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে অবতরণ করে পেশাব করলেন। তিনি বলেননি যে, পানি ঢাললেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূর পানি চাইলেন এবং হালকা উযু করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত। তিনি বললেন, সালাত সামনে।
২৯৭৪.    আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... উসামা ইবনু যায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সওয়ারীতে পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। উপত্যকায় পৌঁছে তিনি তাঁর উটনী বসালেন, এরপর প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য গেলেন। তিনি ফিরে এলেন। আমি পাত্র থেকে পানি ঢেলে দিলাম এবং তিনি উযু করলেন, এরপর সওয়ার হলেন এবং মুযদালিফায় পৌঁছে তিনি মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করলেন।
২৯৭৫.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তনের জন্য রওনা হলেন। উসামা (রাঃ) তাঁর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। উসামা (রাঃ) বলেন, তিনি মুযদালিফায় পৌঁছা পর্যন্ত অনবরত চলতে থাকলেন।
২৯৭৬.    আবূর রবী যাহরানী ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) থেকে তার পিতার হতে বর্ণিত। তিনি (উরওয়া) বলেন, উসামা (রাঃ) কে আমার উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসা করা হল অথবা আমি উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকে তাঁর সওয়ারীর পেছনে বসিয়েছিলেন, তখন তিনি কিভাবে চলেছিলেন? তিনি বললেন, তিনি ধীর গতিতে সওয়ারী চলছিলেন, যখন খোলা জায়গা পেলেন, তখন দ্রুতগতিতে চলতেন।
২৯৭৭.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) থেকে এই সূত্রে হাদীস অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। হুমায়দের রিওয়ায়াতে আছে, রাবী হিশাম (রহঃ) বলেন عَنَق এর চেয়ে আরো দ্রুত গতিতে চলাকে نص বলা হয়।
২৯৭৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ আয়্যুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বিদায় হজ্জে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত আদায় করেছেন।
২৯৭৯.    কুতায়বা ও ইবনু রুমহ (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অমূরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু রুমহ তার বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ খাতমীর সুত্রে উল্লেখ করেছেন যে, আবূ আয়্যুব আনসারী (রাঃ) আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর খিলাফতকালে কুফার আমীর ছিলেন।
২৯৮০.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করেন।
২৯৮১.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... উবায়দূল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তার পিতা বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করেছেন। তিনি এই দুই সালাতের মধ্যে অন্য কোন সালাত (সুন্নাত বা নফল) আদায় করেনি। তিনি মাগরিব তিন রাক'আত এবং ইশা দু'রাক'আত আদায় করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)-ও (মুযদালিফায়) অনুরূপভাবে সালাত আদায় করতেন যাবত না তিনি আল্লাহর সঙ্গে মিলত হয়েছেন।
২৯৮২.    মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... সাঈদ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি (মুযদালিফায়) মাগরিব ও ইশার সালাত এক ইকামতে একই সাথে আদায় করেছেন। এরপর তিনি ইবনু উমর (রাঃ) সম্পর্কে বলেছেন যে, তিনিও অনুরূপভাবে সালাত আদায় করেছেন। আর ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ করেছেন।
২৯৮৩.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... শু'বা (রহঃ) সুত্রে এই সনদে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এতে উল্লেখ আছে, "তিনি একই ইকামতে দুই ওয়াক্তের সালাত আদায় করেছেন।"
২৯৮৪.    আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মুযদালিফায়) মাগরিব ও ইশার সালাত একত্রে আদায় করেছেন। তিনি এক ইকামতেই মাগরিবের সালাত তিন রাকআত এবং ইশার সালাত দু'রাক’আত আদায় করেছেন।
২৯৮৫.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) বলেন, আমরা ইবনু উমর (রাঃ) এর সাথে (আরাফাত থেকে মুযদালিফায়) এলাম। তিনি আমাদের সাথে মাগরিব ও ইশার সালাত এক ইকামতে আদায় করেন। সালাত শেষ করে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই স্থানে আমাদের নিয়ে এভাবে সালাত আদায় করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৪৪. কুরবানীর দিন, মুযদালিফায় ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথেই ফজরের সালাত আদায় করা মুস্তাহাব


২৯৮৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোন সালাত তার নির্ধারিত ওয়াক্ত ছাড়া আদায় করতে দেখেনি। তবে মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশার সালাত ব্যতিক্রম এবং পরবর্তী ভোরে ফজরের সালাত নির্ধারিত সময়ের পূর্বে অর্থাৎ ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আদায় করেছেন।
২৯৮৭.    উসমান ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) সুত্রে উক্ত সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই বর্ণনার শেষাংশ নিম্নরুপঃ “ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথেই অন্ধকারের মধ্যে তা আদায় করেছেন।”
২৯৮৮.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা'নাব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সওদা (রাঃ) মুযদালিফার রাতে রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগেই এবং রাস্তায় জনতার ভিড় হওয়ার পূর্বেই মিনার উদ্দেশ্যে যাত্রার জন্য তাঁর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন। তিনি ছিলেন স্থুলদেহী। আল কাসিম বলেন, الثَّبِطَة শব্দের অর্থ الثَّقِيلَة (ভারী)। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন। অতএব তিনি তাঁর আগেই রওনা হয়ে গেলেন এবং আমরা ফজর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলাম। এরপর আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাখে রওনা হলাম। আমিও যদি সওদা (রাঃ) এর মত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অনুমতি নিয়ে আগেভাগে চলে যেতাম, তবে আমার কাছে তা যে কোন আনন্দদায়ক বস্তু হতে বেশি আনন্দদায়ক হত।
২৯৮৯.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সওদা (রাঃ) ছিলেন ভারী ও স্থুলদেহী। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট মুযদালিফা থেকে রাত থাকতেই প্রস্থান করার অনুমতি চাইলেন। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। আয়িশা (রাঃ) আরও বলেন, হায়! যদি সওদা (রাঃ) এর মত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আমিও অনুমতি প্রার্থনা করতাম! আয়িশা (রাঃ) ইমামের সাথে মুযদালিফা হতে রওনা হতেন।
২৯৯০.    ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমার আকাঙ্ক্ষা, আমিও যদি সওদা (রাঃ) এর অনুরূপ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করতাম! তিনি মিনায় পৌছে ফজরের সালাত আদায় করেন এবং লোকদের পৌঁছার পূর্বেই জামরায় পাথর নিক্ষেপ করেন। আয়িশা (রাঃ) কে বলা হল, সওদা (রাঃ) কি তাঁর নিকট অনুমতি চেয়েছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি ছিলেন স্থুলদেহী এবং ভারী, তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি তাকে অনুমতি দিয়েছিলেন।
২৯৯১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনুল কাসিম (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
২৯৯২.    মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দমী (রহঃ) ... আসমা (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আসমা (রাঃ) মুযদালিফা অবস্থানকালে জিজ্ঞাসা করলেন, চাঁদ ডুবেছে কি? আমি বললাম, না। অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ সালাত আদায় করলেন। পরে পূনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, হে বৎস! চাঁদ ডুবেছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আমার সাথে রওনা হও। আমরা রওনা হলাম এবং জামরা (পৌঁছে) তিনি কাঁকর নিক্ষেপ করলেন, এরপর নিজের তাঁবুতে সালাত আদায় করলেন। আমি তাকে বললাম, হে সম্মানিত মহিলা! আমরা খুব ভোরে রওনা হয়েছিলাম। তিনি বললেন, কোন অসুবিধা নেই হে বৎস! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের খুব ভোরে রওনা হওযার অনুমতি দিয়েছিলেন।
২৯৯৩.    আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এতে আছেঃ “আসমা (রাঃ) বলেন, হে বৎস! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সহধর্মিনাকে অনুমতি দিয়েছিলেন।”
২৯৯৪.    মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ও আলী ইবনু খাশরম (রহঃ) ... (সালিম) ইবনু শাওয়াল (রহঃ) উম্মু হাবীবা (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাকে অবহিত করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত থাকতেই তাকে মুযদালিফা থেকে মিনায় (পাঠিয়ে দেন)।
২৯৯৫.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমরুন-নাকিদ (রহঃ) ... সালিম ইবনু শাওয়াল সুত্রে উম্মূ হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমল থেকে এরূপ করতাম, অর্থাৎ রাতের অন্ধকারেই মুযদালিফা থেকে মিনায় চলে আসতাম। নাকিদ-এর বর্ণনায় আছেঃ "মুযদালিফা থেকে আমরা রাতের অন্ধকারেই রওনা হতাম।"
২৯৯৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে মালপত্র নিয়ে অথবা (অপর বর্ণনা অনুযায়ী) দূর্বল লোকদের সাথে রাত থাকতেই মুযদালিফা থেকে (মিনার উদ্দেশ্যে) পাঠিয়ে দেন।
২৯৯৭.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারের যে দুর্বলদের (মুযদালিফা থেকে) সর্বাগ্রে পাঠিয়ে দেন, আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।
২৯৯৮.    আবূ বকর আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিবারের যে দুর্বলদের আগেভাগে পাঠিয়ে দেন, আমি তাদের সাথে ছিলাম।
২৯৯৯.    আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর মালপত্র নিয়ে ভোর রাতে মুযদালিফা থেকে (মিনায়) পাঠিয়ে দেন। আমি (ইবনু জুরায়জ) আতাকে বললাম, আপনি জানেন কি ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে গতীর রাতে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেন, না, কেবল ভোর রাতের কথাই আমি জানি। আমি তাঁকে পুনরায় বললাম, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, "আমরা ফজরের সালাতের পূর্বেই জামরায় পাথর নিক্ষেপ করেছি।" তাহলে তিনি ফজরের সালাত কোথায় আদায় করেছেন? আতা বললেন, না, আমি এতটুকুই জানি।
৩০০০.    আবূত-তাহির ও হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তার সাথের দুর্বল লোকদেরকে মূযদালিফার নিকটবর্তী স্থান মাশ'আরুল হারামে রাতে অবস্থানের জন্য আগেভাগেই পাঠিয়ে দিতেন। অতএব তারা রাতের বেলা যতক্ষন ইচ্ছা আল্লাহর যিকির করত। ইমামের অবস্থান ও ফিরে আসার পুর্বেই তারা (এখান থেকে) রওনা হতো। অতএব তাদের মধ্যে কেউ ফজরের সালাতের সময় মিনায় পৌছত এবং কেউ ফজরের সালাতের পরে। তারা এখানে পৌঁছে জামরায় পাথর নিক্ষেপ করত। ইবনু উমর (রাঃ) বলতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুর্বল ও বৃদ্ধদের এই অনুমতি প্রদান করেছেন।
৩০০১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) উপত্যকার মধ্যখানে দাঁড়িয়ে জামরাতুল আকাবায় সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেছেন এবং প্রতিটি পাথরের সাথে তাকবীর বলেছেন। রাবী বলেন, তাকে বলা হল, লোকেরা তো উচ্চ স্থানে দাঁড়িয়ে পাথর নিক্ষেপ করে। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বললেন, সেই সত্তার শপথ, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, এই সেই স্থান যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর সূরা বাকারা নাযিল হয়েছে।
৩০০২.    মিনজাব ইবনু হারিস তামীমী (রহঃ) ইবন মুসহির হতে তিনি আ'মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজ ইবনু ইউসূফকে মিম্বারে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তখন আমি তাকে বলতে শুনেছিঃ জিবরীল (আলাইহিস সালাম) যেভাবে কুরআন মজীদ বিন্যাস করেছেন, তোমরা তদনুযায়ী তা বিন্যস্ত কর। যেমন, প্রথম সেই সূরা যার মধ্যে বাকারা (গাভী) সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। এরপর যে সূরায় নিসা (মহিলাদের) সম্পর্কে আলোচনা আছে, এরপর সেই সূরা যার মধ্যে ইমরান-পরিবার সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। 

আমাশ (রহঃ) বলেন, এরপর আমি ইবরাহীমের সাথে সাক্ষাত করে তাকে হাজ্জাজের বক্তব্য সম্পর্কে অবহিত করলাম। তিনি তাকে গালি দিলেন। এরপর বললেন, আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ আমাকে বলেছেন যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) এর সাথে ছিলেন। তিনি জামরাতুল আকাবায় এলেন, উপত্যকার মাঝে দাঁড়ালেন এবং জামরাকে নিজের সম্মুখভাগে রাখলেন, এরপর উপত্যকার মাঝে দাঁড়িয়ে সাতটি কাঁকর নিক্ষেপ করলেন, প্রত্যেকবার নিক্ষেপের সাথে সাথে আল্লাহ আল্লাহ বললেন। 

রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আবূ আবদুল রহমান! লোকেরা উপত্যকার উপরিভাগ থেকে পাথর নিক্ষেপ করে। তিনি বললেন, সেই সত্তার শপথ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, এই সেই স্থান যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর সূরা বাকারা নাযিল হয়েছিল।
৩০০৩.    ইয়াকুব দওরাকী ইবনু আবূ যায়েদা হতে ও ইবনু আবূ উমর সুফইয়ান হতে এবং তারা উভয়ে আ'মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে বলতে শুনেছি, তোমরা সূরাতুল বাকারা বলো না ...... এরপর ইবনু মুসহির (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩০০৪.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) এর সাথে হাজ্জ (হজ্জ) করেন। রাবী বলেন, তিনি (আবদুল্লাহ) জামরায় সাতটি কাঁকর নিক্ষেপ করেন- বায়তুল্লাহকে বামদিকে এবং মিনাকে ডানদিকে রেখে এবং তিনি বলেন, এই সেই স্থান যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সূরা বাকারা নাযিল করা হয়েছিল।
৩০০৫    উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... শু'বা (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, "তিনি (আবদুল্লাহ) যখন জামরাতুল আকাবায় এলেন।"
৩০০৬.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) কে বলা হল, লোকেরা আকাবার উচ্চভূমি থেকে পাথর নিক্ষেপ করে। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) উপত্যকার মধ্যভাগে দাঁড়িয়ে তা নিক্ষেপ করলেন। এরপর তিনি বলেন, সেই সত্তার শপথ যিনি ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই, যার উপর সূরা বাকারা নাযিল হয়েছে, তিনি এই স্থান থেকে কাঁকর নিক্ষেপ করেছেন।
৩০০৭.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কুরবানীর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সওয়ারীতে আরোহণ অবস্থায় পাথর নিক্ষেপ করতে দেখেছি এবং তিনি বলছিলেনঃ "আমার নিকট থেকে তোমরা হজ্জের নিয়ম-কানুন শিখে নাও। কারণ আমি জানি না এই হজ্জের পর আমি আর হাজ্জ (হজ্জ) করতে পারব কিনা।"
৩০০৮.    সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) ... উম্মুল হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে বিদায় হাজ্জ (হজ্জ) করেছি এবং আমি দেখেছি, তিনি জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপ করে সওয়ারীতে চড়ে ফিরে আসেন এবং তাঁর সাথে ছিলেন বিলাল ও উসামা (রাঃ)। তাদের একজন উটের লাগাম ধরে তা টেনে নিচ্ছিলেন এবং অপরজন সূর্যের তাপের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথার উপর কাপড় ধরে রেখেছিলেন। উম্মুল হুসায়ন (রাঃ) আরো বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক কথা বললেন। এরপর আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ যদি নাক-কান কাটা কোন কাফ্রী ক্রীতদাসকেও তোমাদের নেতা নিয়োগ করা হয় এবং সে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের পরিচালনা করে, তবে তার নির্দেশ শোন এবং আনুগত্য কর।
৩০০৯.    আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) ... উম্মুল হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে বিদায় হাজ্জ (হজ্জ) করেছি। আমি উসামা ও বিলালকে দেখেছি যে, তাদের একজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উষ্ট্রীর লাগাম ধরে আছেন এবং অপরজন কাপড় দিয়ে তাকে রৌদ্র তাপ থেকে ছায়া দান করছেন। এমতাবস্হায় তিনি জামরায় কাঁকর নিক্ষেপ করেন। 

ইমাম মুসলিম বলেন, আবূ আবদুর রহীমের নাম খালিদ ইবনু আবূ ইয়াযীদ যিনি মুহাম্মদ ইবনু সালামার মামা ওয়াকী এবং হাজ্জাজ আওয়ার তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেন।
৩০১০.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জামরায় ক্ষুদ্র পাথর (পাথর) নিক্ষেপ করতে দেখেছি।
৩০১১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন সূর্য কিছুটা উপরে উঠলে জামরায় পাথর নিক্ষেপ করেন, পূনরায় দ্বিপ্রহরের পরে।
৩০১২.    আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ...... পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ।
৩০১৩.    সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইস্তিঞ্জায় ব্যবহ্নত ঢিলার সংখ্যা বেজোড়, জামরায় নিক্ষিপ্ত পাথরের সংখ্যা বেজোড়, সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈর সংখ্যা বেজোড় এবং তাওয়াফও বেজোড়। অতএব তোমাদের যে কেউ যখন ইস্তিঞ্জায় ঢেলা ব্যবহার করবে, সে যেন বেজোড় সংখ্যক ব্যবহার করে।
৩০১৪.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা মুন্ডন করলেন। তাঁর কিছু সংখ্যক সাহাবীও মাথা মুন্ডন করলেন আর কিছু সংখ্যক চুল ছোট করলেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক অথবা দুইবার বললেনঃ যারা মাথা মুন্ডন করেছে, আল্লাহ তাদের উপর অনুগ্রহ করুন। অতঃপর তিনি বললেনঃ যারা চুল ছোট করেছে, তাদের উপরও।
৩০১৫.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে আল্লাহ! মাথা মূণ্ডনকারীদের প্রতি দয়া করুন। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! চুল ছোটকারীদের প্রতিও। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি দয়া করুন। তারা বললেন, চুল ছোটকারীদের প্রতিও! তিনি বললেনঃ এবং চুল ছোটকারীদের প্রতিও।
৩০১৬.    আবূ ইসহাক ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মদ ইবনু সুফয়ান ইমাম মুসলিম হতে বর্ণনা করেন যে, ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মাথা মুণ্ডনকারীদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করুন! তারা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! চুল ছোটকারীদের প্রতিও। তিনি বললেনঃ মাথা মুণ্ডকারীদের আল্লাহ রহম করুন। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! চুল ছোটকারীদের প্রতিও। তিনি বললেনঃ মাথা মুন্ডনকারীদের প্রতি আল্লাহ দয়া করুন। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! চুল ছোটকারীদের প্রতিও। তিনি বললেনঃ চুল ছোটকারীদের প্রতিও।
৩০১৭.    ইবনু মুসান্না (রহঃ) ... উবায়দুল্লাহ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তার বর্ণনায় আছেঃ "চতুর্খবারে তিনি বললেনঃ চুল খাটোকারীদের উপরও (রহম করুন)।"
৩০১৮.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুন্ডনকারীদের ক্ষমা করুন। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! চুল ছোটকারীদের? তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুন্ডনকারীদের ক্ষমা করুন। তারা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! চুল ছোটকারীদেরও। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! মাথা মুন্ডনকারীদের গুনাহ মাফ করুন। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! চুল ছোটকারীদেরও। তিনি বললেনঃ চুল ছোটকারীদেরও (গুনাহ ক্ষমা করুন)।
৩০১৯.    উমায়্যা ইবনু বিসতাম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এই সনদ সুত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরোক্ত হাদীসে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩০২০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ওয়াকী ও আবু দাউদ তায়লাসী (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু হুসায়ন (রহঃ) থেকে তার দাদীর সুত্রে বর্ণিত। তিনি (দাদী) বিদায় হাজ্জকালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মাথা মুন্ডনকারীদের জন্য তিনবার এবং চুল ছোটকারীদের জন্য একবার দু’আ করতে শুনেছেন। ওয়াকীর "বিদায় হাজ্জ" কথাটুকু উল্লেখ করেননি।
৩০২১.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হাজ্জকালে নিজের মাথার চুল মুন্ডন করেছেন।
৩০২২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় এলেন, অতঃপর জামরায় এসে পাথর নিক্ষেপ করলেন। তারপর তিনি মিনায় নিজ স্থানে ফিরে এলেন এবং কুরবানী করলেন। তারপর ক্ষৌরকারকে ইশারায় বললেনঃ মাথার ডান পাশ থেকে শুরু কর, তারপর বাম পাশ। তারপর তিনি লোকদেরকে নিজের চুল দান করলেন।
৩০২৩.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। আবূ বকর (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের ইশারা দিয়ে ক্ষৌরকারকে মাথার ডান পাশ থেকে শুরু করতে বললেন। তারপর তিনি কাছের লোকেদের মধ্যে তার চুল বণ্টন করলেন। রাবী বলেন, তারপর তিনি ক্ষৌরকারকে মাথার বাম পাশের চুল কাটার ইঙ্গিত করলেন। সে তা মুণ্ডন করল। এই চুলগুলো তিনি উম্মু সুলায়ম (রাঃ) কে দান করলেন। 

আর আবূ কুরায়বের বর্ণনায় আছেঃ ক্ষৌরকারক ডান পাশ থেকে ক্ষৌরকার্য শুরু করল। তিনি লোকদের একটি-দু'টি করে চুল বণ্টন করলেন। তারপর বাঁ পাশের প্রতি ইশারা করলেন সে তার অনুরূপ করল। তারপর তিনি বললেনঃ আবূ তালহা এখানে আছে? তিনি এবারের চুলগুলো তাকে দান করলেন।
৩০২৪.    মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপ করলেন, অতঃপর কুরবানীর উটের নিকট ফিরে এসে তা যবেহ করলেন। ক্ষৌরকার নিকটেই বসা ছিল। তিনি মাথার দিকে হাতের ইশারা করলেন এবং সে তার মাথার ডানপার্শ্বের চুল কামিয়ে দিল। তিনি তা নিকটস্থ লোকদের মধ্যে বণ্টন করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ মাথার অপরাংশ কামাও। তিনি বললেনঃ আবূ তালহা কোথায়? তখন তিনি সেগুলো তাকে দান করলেন।
৩০২৫.    ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, তিনি জামরায় পাথর নিক্ষেপ করলেন। তারপর কুরবানী করলেন, তারপর মাথা কামালেন- তিনি ক্ষৌরকারের প্রতি মাথার ডানপার্শ্ব এগিয়ে দিলেন এবং সে তা চেঁছে দিল। তারপর তিনি আবূ তালহা আনসারী (রাঃ) কে ডাকলেন এবং তাকে (নিজের) চুল দান করলেন। অতঃপর তিনি মাথার বামপাশ এগিয়ে দিলেন এবং বললেনঃ কামিয়ে দাও। সে তা কমিয়ে দিল। তিনি চুলগুলো আবূ তালহা (রাঃ) কে দিয়ে বললেনঃ এগুলো লোকদের মধ্যে বন্টন কর।
৩০২৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদের সঙ্গে মিনায় অবস্থান করলেন যাতে তারা প্রয়োজনীয় বিষয় তাঁর কাছ থেকে জেনে নিতে পারে। এ সময এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! না জানার কারণে আমি কুরবানী করার পূর্বে মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই, তুমি কুরবানী কর। অতঃপর এক ব্যক্তি তাঁর নিকট উপস্থিত হলে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জানতাম না, ফলে পাথর নিক্ষেপের পুর্বে কুরবানী করে নিয়েছি। তিনি বললেন, অসুবিধা নেই, তুমি পাথর নিক্ষেপ কর। রাবী বলেন, অজ্ঞতাবশত কাজ আগে অথবা পরে করা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হলেই তিনি বলেন, তুমি এখন করে নাও, তাতে কোন দোষ নেই।
৩০২৭.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ঈসা ইবনু তালহা তামীমী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সওয়ারীর উপর অবস্থান করলেন। লোকেরা তাঁর নিকট বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে থাকল। তাদের কেউ জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জানতাম না যে, কুরবানীর পূর্বে পাথর নিক্ষেপ করতে হয়। তাই আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করে ফেলেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ পাথর নিক্ষেপ কর, এতে কোন দোষ নেই। অপর ব্যক্তি এসে বলল, আমি জানতাম না যে, মাথা কামানোর পূর্বে কুরবানী করতে হবে। অতএব আমি কুরবানীর পূর্বে মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেন, কোন দোষ নেই, তুমি কুরবানী কর। রাবী বলেন, মানুষ অজ্ঞতা বশত যেসব কাজের ক্ষেত্রে পরেরটি আগে করে ফেলেছে, এ সম্পর্কে বা এ জাতীয় বিষয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলেই আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ তোমরা তা করে নাও, এতে কোন দোষ নেই।
৩০২৮.    হাসান আল হুলওয়ানী (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
৩০২৯.    আলী ইবনু খাশরম (রহঃ) ঈসা থেকে, তিনি ইবন জুরায়জ থেকে ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন ভাষণ দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জানতাম না যে, এই এই কাজ অমুক অমুক কাজের পূর্বে করতে হয়। এরপর আর এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি মনে করেছিলাম এই কাজ অমুক অমুক তিনটি (পাথর নিক্ষেপ, কুরবানী, মাথা কামানো) কাজের পূর্বে করতে হয়। তিনি বললেনঃ করে নাও, কোন অসুবিধা নেই।
৩০৩০.    আবদ ইবনু হুমায়দ মুহাম্মাদ ইবন বাকর থেকে ও সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া উমাবী (রহঃ) তার পিতা থেকে এবং তারা উভয়ে ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে এই সূত্রে বর্ণিত। মুহাম্মাদ ইবনু বকর এর বর্ণনা ঈসার বর্ণনার অনুরূপ। তবে তার বর্ণনায় "ঐ তিন কাজ" কথাটুকু উল্লেখ নাই। ইয়াহইয়া উমাবীর বর্ণনায় আছেঃ "আমি কুরবানী করার পূর্বে মাথা মুন্ডন করেছি, পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করেছি ইত্যাদি।"
৩০৩১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আমি যবেহ করার পূর্বে মাথা কমিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেন, কোন দোষ নেই, এখন যবেহ কর। (অতঃপর একজন) বলল, আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করছি। তিনি বললেনঃ কোন ক্ষতি নেই, তুমি এখন পাথর নিক্ষেপ কর।
৩০৩২.    ইবনু আবূ উমর ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিনায় তাঁর উষ্ট্রীর উপর অবস্থানরত দেখেছি। এ সময় এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এলো...... উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ।
৩০৩৩.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কুহযায (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন জামরাতুল আকাবার নিকট অবস্থানরত ছিলেন। আমি এক ব্যক্তিকে তার নিকট এসে বলতে শুনলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে মাথা কামিয়ে নিয়েছি। তিনি বললেনঃ কোন অসুবিধা নেই, পাথর নিক্ষেপ করে নাও। আরেক ব্যক্তি তার নিকট এসে বলল, আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি বললেন, কোন দোষ নেই, পাথর নিক্ষেপ করে নাও। অপর এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে বলল, আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন অসুবিধা নেই পাথর নিক্ষেপ কর। রাবী বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি, সেদিন যে সম্পর্কেই (আগে-পিছে করার ক্ষেত্রে) তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, তিনি বলেছেনঃ কোন দোষ নেই, এখন করে নাও।
৩০৩৪.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কুরবানী, মাথা মুণ্ডন, পাথর নিক্ষেপ, আগের অনুষ্ঠান পরে এবং পরের অনুষ্ঠান আগে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ কোন দোষ নেই।
৩০৩৫.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন তাওয়াফুল ইফাযা সম্পন্ন করেন, অতঃপর মিনায় ফিরে এসে যোহরের সালাত আদায় করেন। নাফি বলেন, ইবনু উমর (রাঃ)-ও কুরবানীর দিন তাওয়াফূল ইফাযা সম্পন্ন করতেন, অতঃপর ফিরে এসে মিনায় যোহরের সালাত আদায় করতেন এবং বলতেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করেছেন।
৩০৩৬.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল আযীয ইবনু রুফাই (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে বললাম, আপনার যা স্মরণ আছে সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারবিয়ার দিন (৮ই যিলহাজ্জ) যোহরের সালাত কোথায় আদায় করেছেন? তিনি বললেন, মিনায়। আমি বললাম, (হাজ্জ (হজ্জ) সমাপান্তে) বিদায়ের দিন তিনি আসরের সালাত কোথায় আদায় করেছেন? তিনি বললেন, বাতহা উপত্যকায়। অতঃপর তিনি বললেন, তোমার প্রশাসকগণ যা করেন, তদ্রুপ কর।
৩০৩৭.    মুহাম্মদ ইবনু মিহরান রাযী (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) আবতাহ নামক স্থানে অবতরণ করতেন।
৩০৩৮.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মায়মূন (রহঃ) ... নাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। ইবনু উমর (রাঃ) মুহাসসাবে যাত্রা বিরতি সুন্নাত মনে করতেন। তিনি বিদায়ের দিন (১২ অথবা ১৩ যিলহাজ্জ) সেখানে যোহরের সালাত আদায় করতেন। নাফি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাসুসাবে যাত্রা বিরতি করেছেন এবং তাঁর পরে খলীফাগণও।
৩০৩৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবতাহে অবতরন করা সুন্নাত নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল এজন্য সেখানে যাত্রা বিরতি করেছিলেন যে, সেখান থেকে তার জন্য যাত্রা করা সহজতর ছিল।
৩০৪০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ রবি যাহরানী ও আবূ কামিল (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) থেকে। এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত আছে।
৩০৪১.    আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আবূ বকর (রাঃ), উমর (রাঃ) ও ইবনু উমর (রাঃ) আবতাহে অবতরণ করতেন। যুহরী বলেন, আমাকে উরওয়া অবহিত করেছেন যে, আয়িশা (রাঃ) আবতাহে যাত্রা বিরতি করতেন না। তিনি বলতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল (বিশ্রামের জন্য) এখানে যাত্রা বিরতি করতেন। কেননা এটা এমন জায়গা ছিল, যেখান থেকে তার বের হওয়া সহজতর ছিল।
৩০৪২.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, ইবনু আবূ উমর ও আহমদ ইবনু আবদা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাসসাবে যাত্রা বিরতি বাধ্যতাম্যূলক নয়। এটি একটি মঞ্জিল যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাত্রা বিরতি করেছেন।
৩০৪৩.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আবূ রাফি (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মিনা থেকে রওনা হলেন তখন তিনি আমাকে আবতাহে যাত্রা বিরতির নির্দেশ দেননি; বরং আমি সেখানে পৌঁছে তাঁবু খাটালাম, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে সেখানে অবতরণ করলেন। আবূ রাফি (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মালপত্রের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ছিলেন।
৩০৪৪.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আমরা আগামীকাল সকালে খায়ফে বানূ কিনানায় অবতরণ করব- যেখানে তারা (কাফিররা) কুফরীর উপর অবিচল থাকার শপথ নিয়েছিল।
৩০৪৫.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মিনায় থাকাকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ আগামীকাল সকালে আমরা কিনানা গোত্রের ঘাঁটিতে অবতরণ করব যেখানে তারা কুফরীর উপর অটল থাকার শপথ করেছিল। তা হচ্ছে- কুরায়শ ও কিনানা গোত্র হাশিম ও মুত্তালিব গোত্রদ্বয়ের বিরুদ্ধে এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয় যে, এরা তাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে স্থাপন করবে না এবং বাণিজ্যিক লেনদেন করবে না- যতক্ষন তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাদের হাতে অর্পণ না করবে- এ হচ্ছে সেই মুহাসসাব।
৩০৪৬.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ যদি আমাদের বিজয় দান করেন তবে ইনশাআল্লাহ আমাদের মঞ্জিল হবে খায়ফে, যেখানে কুরায়শরা কুফরীর উপর অটল থাকার শপথ করেছিল।
৩০৪৭.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) মিনার রাতগুলো মক্কায় অতিবাহিত করার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করলেন। কারণ পানি সরবরাহের দায়িত্ব তার উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন।
৩০৪৮.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর (রহঃ) থেকে এই সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩০৪৯.    মুহাম্মদ ইবনু মিনহাল যারীর (রহঃ) ... বকর ইবনু আবদুল্লাহ মুযানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সাথে কাবার সন্নিকটে বসা ছিলাম। এ সময় এক বেদুঈন তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, কি ব্যাপার? আমি দেখছি আপনার চাচাতো ভাইয়েরা (আগন্তুকদের) মধু ও দুধ পান করায়। আর আপনারা নাবীয (খেজুরের তৈরি শরবত) পান করান? তা কি আপনাদের দরিদ্রতার কারণে, না কৃপণতার কারণে? ইবনু আব্বাস (রাঃ) আলহামদুলিল্লাহ উচ্চারণ করে বললেন, আমাদের না দারিদ্র আক্রান্ত করেছে, না কৃপণতা। প্রকৃত ব্যাপার এই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সওয়ারীতে চড়ে এখনে এলেন এবং তাকে এক পেয়ালা নাবীয দিলাম। তিনি তা পান করলেন এবং অবশিষ্টটুকু উসামাকে পান করালেন। এরপর বললেনঃ "তোমরা খুবই উত্তম কাজ করেছ এবং এরূপই করতে থাক।" অতএব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যা করার নির্দেশ দিয়েছেন- আমরা তার পরিবর্তন করতে চাই না।
৩০৫০.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর কুরবানীর উটগুলোর নিকট দাঁড়াতে এবং এগুলোর গোশত, চামড়া ও বস্র সদাকা করে দিতে নির্দেশ দিলেন এবং তা দিয়ে কসাইয়ের মজুরী দিতে নিষেধ করলেন এবং বললেনঃ আমাদের নিজেদের পক্ষ থেকে তার মজুরী পরিশোধ করে দেব।
৩০৫১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমরুন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আব্দুল কারীম জাযারী (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩০৫২.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে এই সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এই বর্ণনায় কসাইয়ের মজুরীর কথা উল্লেখ নাই।
৩০৫৩.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম, মুহাম্মাদ ইবনু মারযূক ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার কুরবানীকৃত উটগুলোর নিকট অবস্থানের নির্দেশ দিলেন। তিনি তাকে উটের সমস্ত গোশত, চামড়া ও বস্র মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করারও নির্দেশ দিলেন এবং তা থেকে কসাইকে মজুরী স্বরূপ কিছু দিতে নিষেধ করলেন।
৩০৫৪.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দিলেন...... উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ।
৩০৫৫.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুদায়বিয়ার বছর (৬ষ্ঠ হিজরী) আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে প্রতি সাতজনের পক্ষ থেকে একটি উট এবং প্রতি সাতজনের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেছি।
৩০৫৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে রওনা হলাম। তিনি আমাদেরকে প্রতিটি উট বা গরু সাতজনে মিলে কুরবানী করার নির্দেশ দিলেন।
৩০৫৭.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হাজ্জ (হজ্জ) সমাপন করি। আমরা সাত শরীকে একটি করে উট বা গরু কুরবানী করেছি।
৩০৫৮.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাজ্জ (হজ্জ) ও উমরা পালনকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাতজনে মিলে একটি উট কুরবানী করেছি। এক ব্যক্তি জাবির (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করল, জাযূরে যে কজন শরীক হতে পারে বাদানাতেও কি অনুরূপ শরীক হওয়া যায়? তখন তিনি বললেন, উভয় তো একই। জাবির (রাঃ) হুদায়বিয়ায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা ঐদিন ৭০ টি উট কুরবানী করেছি। প্রতিটি উটেই ৭ জন শরীক ছিলাম।
৩০৫৯.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিদায় হাজ্জ (হজ্জ) সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছেন। তিনি (জাবির রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইহরাম খোলার সময় কয়েকজন শরীক হয়ে এক-একটি পশু কুরবানীর নির্দেশ দেন। এটা সেই সময়ের কথা যখন তিনি তাদেরকে (উমরা আদায়ের পর) হজ্জের ইহরাম খোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
৩০৬০.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তামাত্তু হাজ্জ (হজ্জ) করেছি। আমরা সাত শরীকে মিলে একটি গরু কুরবানী করেছি।

No comments:

Powered by Blogger.