Breaking News
recent

সহিহ মুসলিম শরীফ ৪র্থ খন্ড, অধ্যায়ঃ হাজ্জ-৫ম




৩০৬১.    উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন আয়িশা (রাঃ) এর পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেন।
৩০৬২.    মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ও সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া উমাবী তার পিতা থেকে ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সহধর্মিনীদের পক্ষ থেকে একটি কুরবানী করেছেন। কিন্তু ইবনু বকর (রহঃ) কর্তুক আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, তিনি তাঁর হাজ্জ (হজ্জ) উদযাপনকালে একটি গাভী কুরবানী করেন।
৩০৬৩.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... যিয়াদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) এক ব্যক্তির কাছে এলেন। সে তার উটকে বসিয়ে কুরবানী করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তিনি বললেন, এটাকে দাঁড় করিয়ে কুরবানী কর। এটাই তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত।
৩০৬৪.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা (রহঃ) ... উরওয়া ইবনু যুবায়র ও আমরাহ বিনত আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা থেকে তাঁর কুরবানীর পশু (মক্কার হরমে) পাঠাতেন। আমি তার কুরবানীর পশুর (গলায় বাঁধার জন্য) মালা তৈরি করে দিতাম। এরপর তিনি এমন কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না যা থেকে ইহরামধারীদের বিরত থাকতে হয়।
৩০৬৫.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে এ সনদে (উপরোক্ত হাদীসের) অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩০৬৬.    সাঈদ ইবনু মানসূর, যুহায়র ইবনু হারব, খালফ ইবনু হিশাম ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার চোখে সেই দুশ্য ভাসছে- আমি যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর পশুর (গলায় পরানোর জন্য) মালা তৈরি করে দিচ্ছি...... অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ।
৩০৬৭.    সাঈদ ইবনু মানসুর (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার হাত দিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর পশুর মালা বানিয়ে দিয়েছি। এরপর তিনি কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না এবং তা পরিহার করতেন না (যা হজ্জের ইহরামধারীকে পরিহার করতে হয়)।
৩০৬৮.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নিজ হাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর পশুর মালা বানিয়ে দিয়েছি। এরপর তিনি কুরবানীর পশুকে চিহ্নিত করেন ও গলায় মালা বেঁধে দেন। এরপর তিনি বায়তুল্লাহয় পাঠিয়ে দেন এবং মদিনায় অবস্থান করেন। ফলে তাঁর উপর এমন কোন জিনিস হারাম হয়নি যা তার জন্য হালাল ছিল।
৩০৬৯.    আলী ইবনু হুজর সা’দী ও ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম দাওরাকী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কুরবানীর পশু (মক্কায়) পাঠিয়ে দিতেন। আমি নিজ হাতে এর মালা তৈরি করে দিতাম। অতঃপর তিনি এমন কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না যা থেকে কোন ইহরামবিহীন ব্যক্তি বিরত থাকে না।
৩০৭০.    মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... উম্মুল মুমিনীন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রঙ্গিন পশমের সূতা যা আমাদের কাছে ছিল তা দিয়ে এ সব মালা তৈরি করেছি। অতঃপর তিনি ভোরবেলা ইহরামবিহীন অবস্থায় উপনীত হতেন এবং আমাদের কাছে আসেন, ইহরামবিহীন ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর সাথে যা করে, তিনিও তাই করেছেন; কিংবা তিনি বলেন, লোকে তার স্ত্রীর কাছে যে ভাবে উপগত হয়, তিনিও সেভাবে উপগত হতেন।
৩০৭১.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যেন নিজেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর মেষের জন্য মালা তৈরিরত দেখতে পাচ্ছি। তিনি তা হরমে পাঠিয়ে দেন এবং আমাদের মাঝে অবস্থান করেন ইহরামবিহীন ব্যক্তির মতো।
৩০৭২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর পশুর জন্য মালা তৈরি করে দিতাম এবং তিনি তা নিজের কুরবানীর পশুর গলায় পরিয়ে দিতেন, এরপর তা (মক্কায়) পাঠিয়ে দেন। অতঃপর তিনি (মদিনায়) অবস্থান করতেন এবং এমন কোন কিছু থেকে বিরত থাকতেন না - যা থেকে ইহরামধারী ব্যক্তি বিরত থাকে।
৩০৭৩.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল্লাহর হরমে (কুরবানীর উদ্দেশ্যে) ছাগল পাঠান এবং এর গলায় মালা বাঁধেন।
৩০৭৪.    ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বকরীর গলায় মালা পরিয়ে তা (কুরবানীর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহয়) পাঠিয়েছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরামবিহীন অবস্থায় ছিলেন এবং কোন জিনিস তাঁর জন্য হারাম হয়নি (যা মুহরিমের জন্য হারাম)।
৩০৭৫.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আমরাহ বিনত আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। ইবনু যিয়াদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) এর কাছে লিখেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ "যে ব্যক্তি (মক্কার হবমে) কুরবানীর পশু পাঠায়, হাজীদের জন্য যা করা হারাম তার জন্যও তা করা হারাম যতক্ষন না ঐ পশু কুরবানী করা হয়। আমি কুরবনীর পশু (হরমে) পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত আমাকে লিখে জানাবেন।" 

আমরাহ বলেন, আয়িশা (রাঃ) বললেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) যেভাবে বলেছেন, ব্যাপারটি তা নয়। আমি নিজ হাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর পশুর (গলায় বাঁধার) জন্য মালা তৈরি করে দিয়েছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে তা পশুর গলায় বেঁধেছেন, তারপর আমার পিতার মাধ্যমে তা (হরম শরীফ) পাঠিয়েছেন। কিন্তু এর ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এমন কোন জিনিস হারাম হয়নি- যা আল্লাহ তা'আলা তাঁর জন্য হালাল করেছেন। অতঃপর পশু কুরবানী করা হয়েছে।
৩০৭৬.    সাঈদ ইবনু মাসরুক (রহঃ) ... মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) কে পর্দার আড়াল থেকে হাত তালি দিয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি নিজ হাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানীর পশুর জন্য মালা তৈরি করে দিতাম। অতঃপর তিনি (তাঁর) কুরবানীর পশু (মক্কায়) পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু পশু কুরবানী হওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি এমন কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না যা থেকে সাধারণত ইহরামধারী ব্যক্তিগণ বিরত থাকে।
৩০৭৭.    মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
৩০৭৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে একটি কুরবানীর উট টেনে নিয়ে যেতে দেখলেন। তিনি বললেনঃ এর পিঠে সওয়ার হও। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এটা কুরবানীর উট। তিনি দ্বিতীয় অথবা তৃতীয়বারে বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে আরোহণ কর।
৩০৭৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে। রাবী বলেন, একদা এক ব্যক্তি গলায় মালা পরিহিত একটি কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
৩০৮০.    মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মাম ইবনু মুনব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) মুহাম্মদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর থেকে এগুলো আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেন। তন্মধ্যে একটি এই যে, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি কুরবানীর একটি উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এর গলায় মালা পরিহিত ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে আরোহণ কর। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কুরবানীর পশু। তিনি বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে আরোহণ কর, তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে চড়ে যাও।
৩০৮১.    আমরুন-নাকিদ, সুরায়জ ইবনু ইউনুস ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে একটি উট টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ এর পিঠে চড়ে যাও। সে বলল, এটা কুরবানীর উট। তিনি দুই-তিনবার বললেনঃ এর পিঠে চড়ে যাও।
৩০৮২.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দিয়ে কুরবানীর উট অথবা কুরবানীর পশু নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি বললেনঃ পিঠে চড়ে যাও। সে বলল, এটা কুরবানীর উট বা কুরবানীর পশু। তিনি বললেনঃ তাহলেও।
৩০৮৩.    আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দিয়ে একটি কুরবানীর উট নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩০৮৪.    মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আবূ যুবায়র (রহঃ) বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) এর নিকট কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ প্রয়োজনবোধে এর পিঠে আরোহণ করতে পার, একে কষ্ট না দিয়ে- যতক্ষন না অন্য সওয়ারী পাও।
৩০৮৫.    সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) ... আবূ যুবায়র (রহঃ) বলেন, আমি জাবির (রাঃ) এর নিকট কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ সহানুভূতির সাথে এর পিঠে আরোহণ কর- যদি অন্য সওয়ারী না পাও।
৩০৮৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবদুল ওয়ারিস থেকে এবং তিনি আবুত-তায়্যাহ হুযালী থেকে বর্ণনা করেন যে ... মূসা ইবনু সালামা হুযালী (রহঃ) বলেন, আমি ও সিনান ইবনু সালামা উমরা পালনের জন্য রওনা হলাম। সিনানের একটি কুরবানীর উট ছিল। সে সেটি হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে সেটি অচল হয়ে পড়ল। এ ব্যাপারে সে অসহায় ও চিন্তগ্রস্থ হয়ে পড়ল এবং (মনে মনে বলল) এ যদি সামনে অগ্রসর না হতে পারে, তবে এটাকে কি করে গন্তব্যস্থলে নেয়া যাবে? সে বলল, যদি মক্কা পর্যন্ত পৌঁছতে পারতাম তবে এ সম্পর্কে ভালরূপে মাসআলা জেনে নিতাম। 

রাবী বলেন আমরা দিনের প্রথমভাগে আবার চলতে শুরু করলাম এবং “বাতহা” নামক স্থানে যাত্রা বিরতি দিলাম। সিনান বলল, চল আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট গিয়ে (বিষয়টি) আলোচনা করি। রাবী বলেন, সিনান তার নিকটে নিজের উটের কথা বর্ণনা করল। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তুমি উত্তম রূপে অবহিত ব্যক্তির নিকটই বিষয়টি বর্ণনা করেছ। 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির মাধ্যমে ষোলটি উট (মক্কার হরমে) পাঠালেন এবং তাকে এগুলোর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করলেন। রাবী বলেন, সে রওনা হয়ে গেল এবং পূনরায় ফিরে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি এর মধ্যকার কোন পশু চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়ে, তবে কি করব? তিনি বললেনঃ তা যবেহ কর এবং এর (গলায় বাঁধা) জুতা জোড়া রক্তে রঞ্জিত করে এর কুঁজের উপর রেখে দাও। এর গোশত তুমিও খাবে না তোমার সঙ্গীদের কেউও খাবে না।
৩০৮৭.    ইয়াইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে আঠারটি উট (কুরবানীর জন্য মক্কার হরমে) পাঠালেন। ...... অবশিষ্ট আবদুল ওয়ারিসের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এই সনদে হাদীসের প্রথমাংশের (সিনানের সাথে সংশ্লিষ্ট) ঘটনা উল্লেখ নেই।
৩০৮৮.    আবূ গাসসান মিসমাঈ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তার নিকট যুওয়ায়ব আবূ কাবীসা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কুরবানীর উটসহ (মক্কায়) পাঠাতেন এবং বলে দিতেনঃ "এগুলোর মধ্যকার কোন উট দুর্বল হয়ে চলতে অক্ষম হয়ে পড়লে এবং তুমি এর মৃত্যুর আশংকা করলে তা যবেহ করে দিও। অতঃপর এর (গলায় বাঁধা) জুতা জোড়া রক্ত রঞ্জিত করে এর কুঁজে ছাপ মেরে দিও। তুমি এবং তোমার সঙ্গীদের কেউই এ গোশত খাবে না।"
৩০৮৯.    সাঈদ ইবনু মানসূর ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা বিভিন্নভাবে প্রত্যাবর্তন করছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “কেউই যেন প্রত্যাবর্তন না করে যাবত না তার সর্বশেষ কাজ হবে শেষবারের মত বায়তুল্লাহ তাওয়াফ।”
৩০৯০.    সাঈদ ইবনু মানসুর ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (প্রত্যাবর্তনকালে) তাদের সর্বশেষ কাজ যেন হয় বায়তুল্লাহ তাওয়াফ। কিন্তু ঋতুমতী মহিলাদেরকে তা থেকে রেহাই দেয়া হয়েছে।
৩০৯১.    মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... তাঊস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বললেন, আপনি কি এই ফাতওয়া দিয়েছেন যে, হায়যগ্রস্ত মহিলারা বিদায়ী তাওয়াফ না করেই প্রস্থান করতে পারবে? ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাকে বললেন, যদি আপনি আশ্বস্ত না হতে পারেন, তবে অমুক আনসারী মহিলাকে জিজ্ঞাসা করুন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তাকে এরূপ নির্দেশ দিয়েছিলেন? তাঊস বলেন, যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) হাসতে হাসতে ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট ফিরে এসে বললেন আমি মনে করি আপনি সত্য কথাই বলেছেন।
৩০৯২.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনু রুমহ (রহঃ) লায়স থেকে তিনি ইবন শিহাব থেকে এবং তিনি আবূ সালমা ও উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আয়িশা (রাঃ) বলেন, সাফিয়্যা বিনত হুওয়াই (রাঃ) তাওয়াফে ইফাযা করার পর হায়যগ্রস্ত হয়ে পড়েন। আয়িশা (রাঃ) আরও বলেন, আমি তার হায়যের কথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে কি আমাদেরকে আটকিয়ে রাখবে? আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে তাওয়াফে ইফাযা করার পর হায়যগ্রস্ত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে সে রওনা হতে পারে।
৩০৯৩.    আবূ তাহির, হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া ও আহমদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ইবন ওয়াহাব থেকে তিনি ইউনুস থেকে এবং তিনি ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে এই সনদে বর্ণিত। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী সাফিয়্যা বিনত হুওয়াই বিদায় হাজ্জকালে পবিত্র অবস্থায় তাওয়াফে ইফাযা করার পর হায়গ্রস্ত হন......। অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত লায়সের হাদীসের অনুরূপ।
৩০৯৪.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ, যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবন কাসিম তার পিতা থেকে এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলেন, সাফিয়্যা (রাঃ) এর হায়য হয়েছে। অবশিষ্ট যুহরীর হাদীসের অনুরূপ।
৩০৯৫.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা'নাব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আশংকা করছিলাম যে, সাফিয়্যা (রাঃ) তাওয়াফে ইফাযা করার পূর্বে হায়যগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলেন এবং বললেনঃ সাফিয়্যা কি আমাদের আটকে রাখবে? আমরা বললাম, তিনি তাওয়াফে ইফাযা করেছেন। তিনি বললেনঃ তাহলে নয়।
৩০৯৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সাফিয়্যা বিনত হুওয়াই হায়যগ্রস্তা হয়ে পড়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হয়ত সে আমাদের আটকে রাখবে। সে কি তোমাদের সঙ্গে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেনি? তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে তোমরা চল।
৩০৯৭.    হাকাম ইবনু মূসা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কোন পুরুষ স্ত্রীর সাথে সাধারণত যা করার ইচ্ছা করে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাফিয়্যা (রাঃ) এর সাথে তাই করার ইচ্ছা করলেন। তারা বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি হায়যগ্রস্তা। তিনি বললেনঃ তাহাল সে তো আমাদের এখানে আটকে রাখবে। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি কুরবানীর দিন (বায়তুল্লাহ এর) যিয়ারত করেছেন। তিনি বললেনঃ তাহলে সে তোমাদের সঙ্গে যাত্রা করুক।
৩০৯৮.    মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না, ইবনু বাশশার ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... হাকাম ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রওনা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সাফিয়্যাকে তাঁর তাঁবুর দরজায় চিন্তিতা ও অবসাদগ্রস্তা দেখতে পেলেন। তিনি বললেনঃ বন্ধ্যা, নেড়ি! তুমি আমাদের (এখানে) আটকে রাখবে? তিনি পুনরায় তাকে বললেনঃ তুমি কি কুরবানীর দিন (বায়তুল্লাহ) যিয়ারত করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে রওনা হও।
৩০৯৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে এই সূত্রে উপরোক্ত হাকওমের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এই সুত্রে 'চিন্তিতা' ও 'অবসাদগ্রস্তা' শব্দদ্বয়ের উল্লেখ নেই।
৩১০০.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং উসামা, বিলাল ও উসমান ইবনু তালহা হাজাবী (রাঃ) কা’বার অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন। তারপর তিনি ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন এবং কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করলেন। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, আমি বিলালকে বের হয়ে আসলে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি করেছেন? তিনি বললেন, তিনি দুইটি থাম নিজের বাঁ দিকে একটি থাম ডান পাশে এবং তিনটি থাম পেছনে রেখে সালাত আদায় করলেন। তৎকালে বায়তুল্লাহ ছয়টি থামের উপর স্থাপিত ছিল।
৩১০১.    আবূর-রবী যাহরানী, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ কামিল জাহদারী হাম্মাদ (রহঃ) থেকে, তিনি আয়্যুব থেকে, তিনি নাফি' থেকে এবং তিনি ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কায়) এলেন এবং কাবার চত্বরে অবতরণ করলেন। অতঃপর উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) কে ডেকে পাঠালেন। তিনি চাবি নিয়ে এলেন এবং (কাবার) দরজা খুললেন। রাবী বলেন, অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল, উসামা ইবনু যায়দ ও উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) ভিতরে প্রবেশ করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দরজা (ভিতর থেকে) বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন, অতএব তা বন্ধ করে দেয়া হলো। তারা কিছু সময় ভিতরে অবস্থান করলেন। অতঃপর দরজা খোলা হল। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি বাইরে সকলের আগে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মিলিত হলাম এবং বিলাল তাঁর পেছনে ছিলেন। আমি বিলালকে বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কাবার অভ্যন্তরে সালাত আদায় করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কোন জায়গায়? বিলাল (রাঃ) বললেন, তাঁর সামনের দুই থামের মাঝখানে। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, তিনি কত রাক’আত সালাত আদায় করেছেন, বিলালের নিকট তা জিজ্ঞাসা করতে আমি ভুলে গেছি।
৩১০২.    ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) এর উষ্ট্রীতে আরোহণ করে (মক্কায়) আগমণ করেন। উসামা (রাঃ) উষ্ট্রীকে কাবার চত্বরে বসান। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) কে ডাকলেন এবং বললেন, আমার নিকট (কাবার) চাবি নিয়ে এসো। তিনি তার মায়ের নিকট উপস্থিত হয়ে চাবি চাইলেন কিন্তু তিনি তাকে চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানান। উসমান (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! তাঁকে চাবি দিন, অন্যথায় এই তরবারি আমার পিঠ ভেদ করে চলে যাবে। অতঃপর তিনি তাকে চাবি দিলেন। তিনি চাবি নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তা তাঁর নিকট হস্তান্তর করেন। তিনি কা’বার দরজা খুললেন। ...... হাদীসের অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত হাম্মাদ ইবনু যায়দের হাদীসের অনুরূপ।
৩১০৩.    যুহায়র ইবনু হারব, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল্লাহর অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন এবং তার সঙ্গে ছিলেন উসামা, বিলাল ও উসমান ইবনু তালহা (রাঃ)। লোকেরা অনেকক্ষণ দরজা বন্ধ করে রাখল। অতঃপর তা খোলা হল। আমিই সর্বপ্রথম (অগ্রসর হয়ে ভিতরে) প্রবেশ করে বিনালকে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কান স্থানে সালাত আদায় করেছেন? বিলাল বললেন, সামনের দুই থামের মাঝখানে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত রাকআত সালাত আদায় করেছেন।
৩১০৪.    হুমায়দ ইবনু মাসাআদা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি কা'বা শরীফের নিকটে পৌঁছলেন। ইতিমধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল ও উসামা (রাঃ) কা'বার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) দরজা বন্ধ করে দিলেন। তারা কিছু সময় কাবার অভ্যন্তরে অবস্থান করলেন। অতঃপর দরজা খোলা হল এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে এলেন। আমি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম এবং বায়তুল্লাহর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় সালাত আদায় করেছেন? তারা বললেন, এখানে। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, তিনি কত রাকআত সালাত আদায় করেছেন তা আমি তাদের নিকট জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেছি।
৩১০৫.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) ... সালিম (রহঃ) থেকে তার পিতা সুত্রে বর্ণিত। তিনি (পিতা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসামা ইবনু যায়দ, বিলাল ও উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) বায়তুল্লাহয় প্রবেশ করলেন। অতঃপর তারা দরজা বন্ধ করে দিলেন। অতঃপর যখন তারা দরজা খুললেন, তখন প্রথমেই আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং বিলালের সাথে মিলিত হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ভিতরে সালাত আদায় করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি দুই ইয়ামানী থামের মাঝখানে সালাত আদায় করেছেন।
৩১০৬.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, উসামা ইবনু যায়দ, বিলাল ও উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) কে কা'বার অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেখলাম। তাদের সঙ্গে আর কেউ প্রবেশ করেনি। অতঃপর দরজ বন্ধ করে দেয়া হল। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, বিলাল অথবা উসমান ইবনু তালহা (রাঃ) আমাকে অবহিত করলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবার কেন্দ্রস্থলে ইয়ামানী দুই স্তম্ভের মাঝখানে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন।
৩১০৭.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) বলেন, আমি আতা (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছেনঃ তোমাদের কেবল তাওয়াফের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বায়তুল্লাহ অভ্যন্তরে প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হয়নি? আতা বললেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) তো কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশে নিষেধ করেননি, বরং আমি তাকে বলতে শুনেছিঃ উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) আমাকে অবহিত করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল্লাহর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এর সকল পার্শ্বে দু’আ করেছেন কিন্তু বের হওয়া পর্যন্ত কোন সালাত আদায় করেননি। তিনি বের হয়ে এসে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দু'রাকআত সালাত আদায় করেছেন এবং বলেছেন, এ হল কিবলা। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এর পার্শ্ব বলতে কি বুঝায়? তা দিয়ে কি কোণ বুঝানো হয়েছে? তিনি (আতা) আরও বললেন, বরং সমস্ত পার্শ্ব ও কোণই কিবলা।
৩১০৮.    শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) ... আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন। আর তাতে ছিল ছয়টি স্তম্ভ। একটি থামের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে তিনি দু’আ করেছেন তিনি সালাত আদায় করেননি।
৩১০৯.    সুরায়জ ইবন ইউনুস (রহঃ) ... ইসমাঈল ইবন আবূ খালিদ (রহঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আবূ আওফা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরা আদায়কালে বায়তুল্লাহ অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিলেন কি? তিনি বললেন না।
৩১১০.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ তোমার জাতির লোকদের কুফরি পরিত্যাগের যুগটি নিকটবর্তী না হলে আমি কাবাঘর ভেঙ্গে তা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিতের উপর পুনর্নিমাণ করতাম। কারণ কুরায়শগণ কা'বাঘর নির্মানের সময় এর আয়তন ছোট করে দিয়েছে। আর তার পেছনে একটি দরজা স্থাপন করতাম।
৩১১১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণিত।
৩১১২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তুমি কি দেখনি যে, তোমার গোত্রের লোকেরা কা'বাঘর নির্মাণের সময় তা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিত্তিগুলোর চেয়ে ছোট করে দেয়? আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি তা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিতের উপর পুনর্নির্মাণ করতে চান? 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কওমের কুফরী পরিত্যাগের যুগটি যদি নিকটতর না হতো (তরে তাই করতাম)। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, যদিও বা আয়িশা (রাঃ) তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখে শুনে থাকেন। তবে আমি মনে করি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজর (হাতীম) সংলগ্ন রুকন দুটি স্পর্শ করা কেবল এ কারনেই পরিত্যাগ করেছেন যে, বায়তুল্লাহ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর গোটা ভিতের উপর পুননির্মিত হয়নি।
৩১১৩.    আবুত-তাহির ও হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা যদি জাহেলী যুগের কাছাকাছি না হতো অথবা নিকট অতীতে কুফরী ত্যাগ না করত, তবে আমি অবশ্যই কাবায় পুঞ্জীভূত সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতাম, এর দরজা ভূমির সমতলে স্থাপন করতাম এবং হাতীমকে কাবার অন্তর্ভুক্ত করে দিতাম।
৩১১৪.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... সাঈদ ইবনু মীনাআ (রহঃ) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ আমার খালা আয়িশা (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়েশা! তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা নিকট অতীতে শিরক পরিত্যাগ না করলে আমি কাবাঘর ভেঙ্গে এর ভিত ভূমির সমতলে স্থাপন করতাম। এর দুটি দরজা করতাম- একটি পূর্বদিকে, অপরটি পশ্চিমদিকে এবং আল-হিজার (হাতীম) এর ছয় গজ স্থান কা'বার অন্তর্ভুক্ত করতাম। কেননা কুরায়শরা কা'বা ঘর নির্মাণকালে এর ভিত ছোট করে দেয়।
৩১১৫.    হান্নাদ ইবনুল সারী (রহঃ) ... আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াযীদ ইবনু মু'আবিয়ার সময় কাবাঘর দগ্ধীভূত হয়েছিল- যখন সিরীয় বাহিনী মক্কায় যুদ্ধে লিপ্ত ছিল (৬৩ হিজরী) এবং কা'বার যা হবার তাই হল। হজ্জের মৌসুমে লোকদের আগমণের সময় আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) কাবাকে এই অবস্থায় রেখে দিলেন। তার উদ্দেশ্যে ছিল লোকদেরকে উদ্দীপ্ত করা অথবা তাদের মধ্যে সিরীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার মনোবল সৃষ্টি করা। লোকেরা সমবেত হলে তিনি বললেন, হে জনগণ! আমাকে কাবাঘর সম্পর্কে পরামর্শ দিন। আমি কি তা ভেঙ্গে ফেলে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গড়ে তুলব, নাকি শুধু এর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করব? 

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমার মনে একটি মতের উদয় হয়েছে, আমি মনে করি যে, শুধু ক্ষতিগ্রস্ত অংশ তুমি মেরামত করবে এবং লোকদের ইসলাম গ্রহণ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুওয়াত লাভকালীন সময়ে কাবাঘর ও পাথরসমূহ যে অবস্থায় ছিল, তা সেই আবস্থায় রেখে দেবে। ইবনু যুবায়র (রাঃ) বললেন, আপনাদের কারো ঘর অগ্নিদগ্ধ হলে তা সংস্কার না করা পর্যন্ত তিনি স্বস্তি লাভ করতে পারেন না। অতএব আপনাদের প্রতিপালকের ঘর কি করে এরূপ জীর্ণ অবস্থায় রাখা যেতে পারে? আমি আমার রব এর কাছে তিন দিন ইস্তিখারা করব (অভিপ্রায় অবগত হওয়ার জন্য)। অতঃপর চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তিন দিন পর তিনি কা'বাঘর ভেঙ্গে পূনর্নির্মাণের দৃঢ় সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। 

লোকেরা আশংকা করল যে, সর্ব প্রথম যে ব্যক্তি কাবার ছাদে উঠবে, সে হয়ত কোন আসমানী গযবে নিপতিত হবে। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি (ছাদ ভাঙ্গার জন্য) কা'বার ছাদে উঠল এবং তার একটি পাথর নীচে ফেলল। লোকেরা যখন দেখল সে কোন বিপদে পড়েনি, তখন তারাও তাকে অনুসরণ করল এবং কাবাঘর ভেঙ্গে যমীনের সাথে মিশিয়ে দিল। অতঃপর ইবনু যুবায়র (রাঃ) কতগুলো থাম স্থাপন করে এগুলোর সাথে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। অবশেষে কা'বার দেয়ালের গাঁথুনি উচ্চ হল। 

ইবনু যুবায়র (রাঃ) বললেন, অবশ্যই আমি আয়িশা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “লোকেরা যদি নিকট অতীতে কুফরী ত্যাগ না করত এবং আমার নিকটও কাবাকে পুনর্নির্মাণ করার মত অর্থ-সামর্থ্যও নেই- তাহলে আমি অবশ্যই আল-হিজার (হাতীম) এর পাঁচ গজ স্থান কা'বা ঘরের অন্তর্ভুক্ত করতাম এবং লোকদের প্রবেশের জন্য ও বের হওয়ার জন্য এর দুটি দরজা বানাতাম। 

ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন, বর্তমানে আমার হাতে তা নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ আছে এবং লোকদের তরফ থেকেও কোন প্রতিবাদের আশংকা নেই। রাবী বলেন, এরপর হাতীমের পাঁচ গজ এলাকা কা'বার অন্তর্ভুক্ত করলেন। এভাবে তিনি (পুরাতন) ভিত উন্মোচন করলেন [যার উপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তা গড়েছিলেন] এবং লোকেরা তা অবলোকন করল। এই ভিতের উপর দেয়াল গড়ে তোলা হল। কাবার দৈর্ঘ্য ছিল আঠার গজ। তা যখন (প্রস্থে) বাড়ানো হল, তখন (স্বাভাবিকভাবেই দৈর্ঘ্যে) তা ছোট হওয়ায় দৈর্ঘ্যে তা আরও দশ গজ বৃদ্ধি করা হল এবং এর দুটি দরজা নির্মাণ করা হল, একটি প্রবেশের জন্য এবং অপরটি প্রস্থানের জন্য।

ইবনু যুবায়র (রাঃ) শহীদ হলে হাজ্জাজ (ইবনু ইউসূফ) আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ানকে তা লিখে জানাল। সে আরও জানাল যে, ইবনু যুবায়র (কা’বার ঘর) সেই ভিতের উপর নির্মাণ করেছে যা ছিল ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিত এবং মক্কার বিশ্বস্ত লোকেরা তা যাচাই করে দেখেছে। আবদুল মালিক তাকে লিখে পাঠালেন যে, কোন বিষয়ে ইবনু যুবায়রকে অভিযুক্ত করার প্রয়োজন আমাদের নেই। সে দৈর্ঘ্যে যতইকু বর্ধিত করেছে, তা বহাল রাখ এবং হাতীমের দিকে যতটুকু বর্ধিত করেছে, তা ভেঙ্গে পূর্বাবস্থায় নিয়ে আসো। আর সে যে (নতুন) দরজা খুলেছে তা বন্ধ করে দাও। এরপর হাজ্জাজ তা ভেঙ্গে পূর্বের ভিতের উপর পুননির্মাণ করে।
৩১১৬.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... হারিস ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আবূ রবিআ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু উবায়দ বলেন, হারিস ইবনু আবদুল্লাহ প্রতিনিধি হিসেবে আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ানের রাজত্বকালে তার নিকট গিয়েছিলেন। আবদুল মালিক বললেন, আমি মনে করি না যে, আবূ যুবায়র অর্থাৎ ইবনু যুবায়র (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর নিকট এমন কথা শুনেছেন যার দাবি তিনি করে থাকেন। [অর্থাৎ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিত এর উপর কাবা ঘরের পুননির্মাণের ব্যাপারে রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভিপ্রায় সম্পর্কিত কোন হাদীস তিনি আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট শুনেন নি।] 

হারিস বলেন, হ্যাঁ, আমি নিজেই তার নিকট এই হাদীস শুনেছি। আবদুল মালিক বললেন, আপনি তাকে কি বলতে শুনেছেন? হারিস বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “তোমার কওমের লোকেরা কাবা ঘরের ভীত (আয়তনে) ছোট করে ফেলেছো নিকট অতীতে তারা শিরক পরিত্যাগ না করলে আমি তাদের পরিত্যক্ত অংশটুকু কাবার অন্তর্ভুক্ত করে দিতাম। তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা যদি আমার পরে তা পুননির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে এস, আমি তোমাকে তাদের পরিত্যক্ত অংশটুকু দেখিয়ে দেই” অতএব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা কে (হাতীম সংলগ্ন) প্রায় সাত গজ স্থান দেখিয়ে দিলেন। 

এই হাদীস আবদুল্লাহ ইবনু উবায়দ কর্তুক বর্ণিত। ওয়ালীদ ইবনু আতা এ বর্ণনার উপর আরো বৃদ্ধি করেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যমীনের সমতলে দুটি দরজাও নির্মাণ করতাম, একটি পূর্বদিকে এবং অপরটি পশ্চিমদিকে। তুমি কি জান তোমার গোত্রের লোকেরা কা’বার দরজা (ভূমি থেকে) উঁচুতে স্থাপন করেছে কেন?” আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ গর্ব ও অহংকারের বশবতী হয়ে (তারা এটা করেছে) যাতে কেবল সেই ব্যক্তই কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে- যাকে তারা অনুমতি দেবে। 

যখন কোন ব্যক্তি কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশের ইচ্ছা করত, তারা তাকে বেয়ে উপরে উঠতে দিত। এমনকি সে যখন তাতে প্রবেশ করত, তখন তারা তাকে টেনে নীচে ফেলে দিত। আবদুল মালিক হারিসকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আয়িশা (রাঃ) কে একথা বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাবী বলেন, কিছুক্ষণ তিনি হাতের ছড়ি দিয়ে মাটি খুড়তে লাগলেন, এরপর বললেনঃ আমার মনে হয় যে দায়ভার তিনি নিজে বহন করেছিলেন তার উপর যদি তাকে ছেড়ে দিতাম সেটাই ভাল হত।
৩১১৭.    মুহাম্মাদ ইবনু আমর ইবনু জাবালা ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে এই সনদে ইবনু বকর এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩১১৮.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আবূ কাযাআ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান বায়তুল্লাহ তাওয়াফকালে বলে উঠলেন, আল্লাহ ইবনু যুবারকে ধ্বংস করুন- যেহেতু সে উম্মুল মুমিনীন (আয়িশা)-এর উপর মিথ্যা আরোপ করেছে যে, সে তাকে নাকি বলতে শুনেছে, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আয়িশা! তোমার সম্প্রদায় যদি নিকট অতীতে কুফুরি পরিত্যাগকারী না হতো তবে আমি কা-বাঘর ভেঙ্গে তাতে হাতীমের অংশ যুক্ত করে দিতাম। কারণ তোমার সম্প্রদায় কা'বার আয়তন ছোট করে দিয়েছে।” (আব্দুল মালিকের এই কথার উপর) হারিস ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আবূ রবীআ বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! এই কথা আর বলবেন না। কারণ আমি নিজে উম্মুল মুমিনীন (আয়িশা) কে একথা বলতে শুনেছি। অতঃপর আবদুল মালিক বললেন, কাবাঘর ভাঙ্গার পুর্বে যদি আমি তা শুনতে পেতাম, তাহলে ইবনু যুবায়য়ের ভিতের উপরই তা অটুট রাখতাম।
৩১১৯.    সাঈদ ইবনু মানসূর আবুল আহওয়াস থেকে ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, হাতীমের দেয়াল কি বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম, তবে তারা কেন এটাকে বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত করেনি? তিনি বললেনঃ তোমার সম্প্রদায়ের নিকট পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, এর দরজা উঁচুতে স্থাপিত হওয়ার কারণ কি? তিনি বললেনঃ তাও তোমার সম্প্রদায়ের কান্ড যাতে তাদের কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি তাতে প্রবেশাধিকার পায় এবং অবাঞ্ছিত ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে। তোমার কওমের জাহিলিয়াত পরিত্যাগের যুগ নিকটতম না হলে এবং আমার যদি এই আশংকা না হতো যে, তাদের অন্তর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে- তা হলে আমি অবশ্যই (হাতীমের) দেয়াল বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত করা এবং কাবার দরজা যমীনের সমতলে স্থাপন করার বিষয়ে বিবেচনা করতাম।
৩১২০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল হাজার (হাতীম) সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম। এরপর পূর্বোক্ত আবূল-আহওয়াসের হাদীসের অনুরূপ। এই বর্ণনায় আছে আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ “এর দরজা উঁচুতে স্থাপিত হওয়ার কারণ কি যে, সিড়ি ব্যতীত তাতে উঠা যায় না?” এতে আরো আছেঃ “তাদের অন্তর আপত্তি জাগার আশংকায়।”
৩১২১.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) সওয়ারীতে রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে উপবিষ্ট ছিলেন। এমতাবস্থায় খাসআম গোত্রের এক মহিলা তাঁর নিকট মাসআলা জিজ্ঞাসা করতে আসলো। ফযলও তার দিকে তাকাচ্ছিল এবং মহিলাটিও ফযলের দিকে তাকাচ্ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফযল (রাঃ) এর মুখমণ্ডল অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন। মহিলাটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর যে হাজ্জ (হজ্জ) ফরয করেছেন তা আমার বৃদ্ধ পিতার উপরও ফরয হয়েছে, কিন্তু তিনি বাহনের উপর অবস্থান করতে অক্ষম। আমি কি তার পক্ষ থেকে হাজ্জ (হজ্জ) করতে পারি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। এটা বিদায় হজ্জের সময়কার ঘটনা।
৩১২২.    আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে তার ভাই ফযলের সুত্রে বর্ণিত। খাসআম গোত্রের এক মহিলা বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা অতি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন এবং তার উপর আল্লাহর ধার্যকৃত হাজ্জ (হজ্জ) ফরয হয়েছে। কিন্তু তিনি তার উটের পিঠে বসে থাকতে সক্ষম নন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার পক্ষ থেকে হাজ্জ (হজ্জ) কর।
৩১২৩.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাওহা নামক স্থানে একদল আরেহীর সাক্ষাত পেলেন এবং তিনি বললেন, তোমরা কোন সম্প্রদায়ের লোক? তারা বলল, আমরা মুসলিম। তারা আরও জিজ্ঞাসা করল, আপনি কে? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসুল। এরপর এক মহিলা তাঁর সামনে একটি শিশুকে তুলে ধরে জিজ্ঞাসা করল, এর জন্য হাজ্জ (হজ্জ) আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং তোমার জন্য সাওয়াব রয়েছে।
৩১২৪.    আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা তার শিশু পুত্রকে তুলে ধরে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এর জন্য হাজ্জ (হজ্জ) হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ এবং তোমার জন্য রয়েছে সাওয়াব।
৩১২৫.    মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... কুরায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। এক মহিলা তার শিশুকে তুলে ধরে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এর হাজ্জ (হজ্জ) হবে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং তোমার জন্য আছে সাওয়াব হবে।
৩১২৬.    মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে এই সনদ সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩১২৭.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ হে জনগণ! তোমাদের উপর হাজ্জ (হজ্জ) ফরয করা হয়েছে। অতএব তোমরা হাজ্জ (হজ্জ) কর। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা কি প্রতি বছর? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন এবং সে তিনবার কথাটি বলল। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি হ্যাঁ বললে তা অবধারিত হয়ে যাবে (প্রতি বছরের জন্য) অথচ তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হবে না। তিনি পুনরায় বললেনঃ তোমরা আমাকে ততইকু কথার উপর থাকতে দাও যতটুকু আমি তোমাদের জন্য বলি। কারণ তোমাদের পুর্বেকার লোকেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং তাদের নবীদের সাথে বিরোধীতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অতএব আমি তোমাদের যখন কোন কিছু করার নির্দেশ দেই- তোমরা তা যথাসাধ্য পালন কর এবং যখন তোমাদের কোন কিছু করতে নিষেধ করি তখন তা পরিত্যাগ কর।
৩১২৮.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মাহিলা যেন সাথে মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া একাকী তিন দিনের (দুরত্বে) সফর না করে।
৩১২৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... উবায়দুল্লাহ (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত। আবূ বকর (রহঃ) এর বর্ণনায় রয়েছেঃ তিন দিনের অতিরিক্ত আর ইবনু নুমায়র (রহঃ) এর পিতার সূত্রে বর্ণনায় রয়েছে- তিনরাত।
৩১৩০.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে স্ত্রীলোক আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে- তার জন্য কোন মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া তিন দিনের দূরত্বের পথের সফর করা বৈধ নয়।
৩১৩১.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... কাযা'আ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) এর নিকট থেকে একটি হাদীস শুনে আশ্চর্যান্বিত হলাম এবং তাকে জিজ্ঞেসা করলাম, আপনি কি এটা সরাসরি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট শুনেছেন? তিনি বললেন, আমি যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট শুনি নি তা কেন তাঁর নামে বলব। 

কাযাআ (রহঃ) বলেন, আমি আবূ সাঈদ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কেবল তিনটি মসজিদের দিকেই (সাওয়াবের উদ্দেশ্যে) সফর করঃ আমার এই মসজিদ, মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে আকসা। আমি তাকে আরও বলতে শুনেছিঃ "কোন মহিলা যেন দুই দিনের পথেও সফর না করে- তার সাথে তার কোন মাহরাম পূরুষ অথবা তার স্বামী ব্যতীত।"
৩১৩২.    মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট চারটি কথা শুনেছি এবং তা আমার বড় মুগ্ধ করেছে ও আমার বড় পছন্দ হয়েছে। তিনি স্বামী অথবা কোন মাহরাম ব্যক্তি ব্যতীত কোন মহিলাকে দুই দিনের পথও সফর করতে তিনি নিষেধ করেছেন। অতঃপর তিনি অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেছেন।
৩১৩৩.    উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন স্ত্রীলোক যেন সাথে কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত তিন দিনের দূরত্বের পথ সফর না করে।
৩১৩৪.    আবূ গাসসান মিসমাঈ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোন স্ত্রীলোক যেন তিনি দিনের দুরত্বের পথ একাকী সফর না করেন- একজন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত।
৩১৩৫.    ইবনু মুসান্না (রহঃ) ... কাতাদা (রহঃ) থেকে এই সনদ সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। এই বর্ণনায় আছেঃ "তিন দিনের অতিরিক্ত দুরত্ব, সাথে মাহরাম পুরুষ ব্যতীত।"
৩১৩৬.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম মহিলার জন্য সাথে তার কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত এক রাতের পথও সফর করা বৈধ নয়।
৩১৩৭.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে কোন মহিলা আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে- তার জন্য সাথে কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত এক দিনের দূরত্বের পথ সফর করা হালাল নয়।
৩১৩৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে কোন মহিলা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে তার জন্য সঙ্গে কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত একাকী এক দিন ও এক রাতের দূরত্বের পথও সফর করা হালাল নয়।
৩১৩৯.    আবূ কামিলা জাহদারী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন স্ত্রীলোকের জন্য তার সাথে কোন মাহরাম ব্যক্তি ব্যতীত তিন দিনের দূরত্বের পথ সফর করা বৈধ নয়।
৩১৪০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মহিলা আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে- তার পিতা অথবা তার ছেলে অথবা তার স্বামী অথবা তার ভাই অথবা তার অপর কোন মাহরাম আত্নীয় তার সফর সঙ্গী না হলে তার জন্য তিন দিন বা তার অতিরিক্ত সময়ের পথ সফর করা হালাল নয়।
৩১৪১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ সাঈদ আশাজ্জ (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) থেকে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩১৪২.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ভাষণে বলতে শুনেছিঃ সাথে মাহরাম পুরুষ না থাকা অবস্থায় কোন পুরুষ লোক যেন কোন মহিলার সাথে একান্তে সাক্ষাত না করে। কোন স্ত্রীলোক যেন সাথে কোন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকী সফর না করে। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার স্ত্রী হজ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেছে এবং আমাকে অমুক সৈন্য বাহিনীতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে- যা অমুক স্থানে যুদ্ধে যাবে। তিনি বললেনঃ তুমি চলে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সাথে হাজ্জ (হজ্জ) কর।
৩১৪৩.    আবূর রাবী যাহরানী (রহঃ) ... আমর ইবনু দীনার (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩১৪৪.    ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এই সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিম্নোক্ত কথার উল্লেখ নাইঃ "কোন পুরুষ লোক যেন কোন মহিলার সাথে একান্তে সাক্ষাত না করে, কিন্তু তার সাথে তার কোন মাহরাম পুরুষ থাকলে স্বতন্ত্র কথা।"
৩১৪৫.    হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথাও সফরের উদ্দেশ্যে তাঁর উটে আরোহণের সময় তিনবার "আল্লাহু আকবার" (আল্লাহ মহান) বলতেন, এরপর যে দুআ পাঠ করতেন তার অর্থ এইঃ 

"পবিত্র মহান সেই সত্তা- যিনি একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের নিকট ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ! আমাদের এই সফরে আমরা তোমার নিকট কল্যাণ, তাকওয়া এবং তোমার সন্তুষ্টি বিধানকারী কাজের তৌফিক চাই। হে আল্লাহ! আমাদের এই সফর আমাদের জন্য সহজ করে দাও এবং এর দুরত্ব কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ! তুমিই (আমাদের) সফরসঙ্গী এবং পরিবারের তত্ত্বাবধানকারী। হে আল্লাহ! তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট, দুঃখজনক দৃশ্য এবং ফিরে এসে সস্পদ ও পরিবারের ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে।" 

এরপর তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন তখনও উপরোক্ত দুআ পড়তেন এবং এর সাথে যোগ করতেনঃ (অর্থ) "আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, আমাদের প্রতিপালকের ইবাদতকারী ও প্রশংসাকারী।"
৩১৪৬.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু সারজিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সফর করতেন তখন আশ্রয় প্রার্থনা করতেন সফরের কষ্ট থেকে, দুঃখজনক প্রত্যাবর্তন থেকে, সুখময় অবস্থার পর দুঃখময় অবস্থায় পতিত হওয়া থেকে, মযলুমের বদদু'আ থেকে এবং সম্পদ ও পরিবার-পরিজনের ক্ষতিকর দৃশ্য অবলোকন থেকে।
৩১৪৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবু মু'আবিয়াহ হতে, হামিদ ইবন উমর আবদুল ওয়াহিদ হতে আর তারা উভয়ে ... আসিম আল-আহওয়াল (রহঃ) থেকে এই সনদে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। অবশ্য আবদুল ওয়াহিদের বর্ণনায় "ফীল মাল ওয়াল আহল" এবং মুহাম্মাদ ইবনু হাযিমের বর্ণনায় প্রত্যাবর্তনকালে প্রথমে "আহল" শব্দ রয়েছে। উভয়ের বর্ণনায় রয়েছেঃ "হে আল্লাহ! আমি সফরে কষ্ট ক্লান্তি হতে তোমার কাছে পানাহ চাই।"
৩১৪৮.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদ, অভিযান, হাজ্জ (হজ্জ) অথবা উমরা করে ফিরে আসার সময় যখন কোন উঁচুটিলা বা কংকরময় উচ্চভূমিতে আরোহণ করতেন তখন তিনবার “আল্লাহ আকবার” (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ) ধ্বনি দিতেন এরপর এই দুআ পড়তেনঃ 

অর্থ “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। তিনি একক তাঁর কোন শরীক নাই। তাঁরই রাজত্ব (বা সার্বভৌমত্ব), তাঁর জন্য সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান (আমরা) প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী, আমাদের প্রতিপালককে সিজদাকারী ও প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করেছেন।”
৩১৪৯.    যুহায়র ইবনু হারব, ইসমাইল ইবন উলায়্যা থেকে ও তিনি আয়্যুব থেকে, ইবনু আবূ উমর মা'ন থেকে ও তিনি মালিক থেকে, ইবনু রাফি (রহঃ) ইবন আবু ফুদায়ক থেকে তিনি দাইহাক থেকে আর তারা সকলে নাফি হতে এবং তিনি ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে এই সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। শুধুমাত্র আয়্যুবের বর্ণনা দু'বার তাকবীরের কথা উল্লেখ আছে।
৩১৫০.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও আবূ তালহা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে প্রত্যাবর্তন করলাম এবং সাফিয়্যা (রাঃ) তাঁর উষ্ট্রীর পিঠে পেছনে সাওয়ার ছিলেন। আমরা যখন মদিনার শহরতলীতে পৌঁছলাম তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুআ পড়লেনঃ (অর্থ) "আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, আমাদের প্রভূর ইবাদাতকারী, প্রশংসাকারী।" আমরা মদিনায় প্রবেশ করা পর্যন্ত তিনি অবিরত এই দু’আ পড়তে থাকতেন।
৩১৫১.    হুমায়দ ইবনু মাসআদা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
৩১৫২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যূল-হুলায়ফার কংকরময় ভূমি (বাতহা) তে তাঁর উট বসালেন এবং সেখানে সালাত আদায় করলেন। নাফি (রহঃ) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)ও তাই করতেন।
৩১৫৩.    মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ইবনু মুহাজির মিসরী ও কুতায়বা (রহঃ) ... নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) যুল-হুলায়ফার বাতহা প্রান্তরে তাঁর উট বসাতেন সেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উট বসাতেন এবং সালাত আদায় করতেন।
৩১৫৪.    মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক মুসীবী (রহঃ) ... নাফি' (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) হাজ্জ (হজ্জ) অথবা উমরা সমাপনান্তে ফেরার পথে যুল-হুলায়ফার কংকরময় ভূমিতে নিজের উট বসাতেন যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উট বসাতেন।
৩১৫৫.    মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) ... সালিম (রহঃ) থেকে তার পিতার সুত্রের বর্ণিত। যূল-হুলায়ফায় রাতের শেষ ভাগে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (কোন আগন্তুক ফেরেশতা) আবির্ভুত হয়। তাঁকে বলা হল, আপনি বরুকতপূর্ণ পাথরময় স্থানে (অবস্থান করছেন)।
৩১৫৬.    মুহাম্মাদ ইবনু বাক্কার (রহঃ) ... মুসা ইবন উকবা সালিম ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রহঃ) থেকে এবং তিনি তার পিতার সুত্রে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যূল-হুলায়ফার উপত্যকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থানকালে রাতের বিশেষ প্রহরে তাঁর নিকট (কোন ফেরেশতা) আবির্ভুত হয় এবং বলা হয়ঃ আপনি বরকতপূর্ণ কংকরময় স্থানে (অবস্থান করছেন)। মূসা ইবনু উকবা (রহঃ) বলেন, সালিম (রহঃ) আমাদের সাথে সফরকালে মসজিদের নিকট তাঁর উট বসাতেন। যেখানে আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নিজের উট বসাতেন এবং এই স্থানকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবতরণ (অবস্থান) স্থল মনে করতেন। স্থানটি উপত্যকার কেন্দ্রস্থলে নির্মিত মসজিদের নিম্নদেশের সমতলে মসজিদ ও কিবলার মাঝখানে অবস্থিত।
৩১৫৭.    হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হজ্জের পূর্ববতী (বছরের) যে হজ্জে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) কে আমীর নিয়োগ করেছিলেন, সেই হজ্জের সময় তিনি (আবূ বকর) আমাকে সহ একদল লোককে কুরবানীর দিন জনগণের মধ্যে নিন্নোক্ত ঘোষণা দেওয়ার জন্য পাঠালেনঃ “এ বছরের পর মুশরিকরা আর হাজ্জ (হজ্জ) করতে পারবে না এবং উলঙ্গ অবস্থায় আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করবে না।” 

ইবনু শিহাব বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর এই হাদীস অনুযায়ী হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান বলতেন- "মহান হজ্জের দিন হচ্ছে এই কুরবানীর দিন।"
৩১৫৮.    হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) ... সাঈদ ইবনুল মূসায়্যাব থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আরাফাত দিবসের তুলনায় এমন কোন দিন নাই- যে দিন আল্লাহ তাআলা সর্বাধিক সংখ্যক লোককে দোযখের আগুন থেকে মুক্তি দান করেন। আল্লাহ তাআলা নিকটবর্তী হন অতঃপর বান্দাদের সম্পর্কে ফিরিশতাদের সামনে গৌরব প্রকাশ করেন এবং বলেনঃ তারা কি উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছে (বা তারা কি চায়)?
৩১৫৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ একটি উমরা পরবর্তী উমরা পর্যন্ত মাঝখানের গুনাহসমূহের কাফফারা স্বরুপ এবং ক্রটিমুক্ত (অথবা আল্লাহর নিকট গৃহীত) হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।

No comments:

Powered by Blogger.