Breaking News
recent

আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারকের জীবনের পট পরিবর্তন

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রহ.) মুসলিম বিশ্বের একজন প্রিয় ও প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব । ইলমে হাদীস, ইলমে ফিকাহ, ও ইলমে তাসাওউফের তিনি শ্রেষ্ঠ ও শীর্ষ স্থানীয় আলিম ছিলেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো বা জানেন না যে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রহ.) শুরু থেকেই এরূপ গুণ-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন না। তারুণ্যের শুরুতে তিনি ছিলেন একজন সাধীনচেতা বেপরোয়া যুকব। তখন তিনি নেশা, গান-বাজনা ও আনন্দ ফূর্তি ও ভোগ-বিলাসে সর্বক্ষণ মত্ত থাকতেন। আল্লাহ তা’আলা তাকে প্রচুর অর্থ-সম্পদ ও দান করেছিলেন।
তাঁর অনেক মূল্যবান সম্পদের মধ্যে একটি ছিল নাশপাতির বাগান। বাগানে ফল তোলার মৌসুমে একবার তিনি জাক জমকপূর্ণ একটি ভোজন অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন এবং সকল বন্ধু-বান্ধবদেরকে দাওয়াত করলেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে মদের আসর বসল। সকলে মহা আনন্দ ফুর্তি ও মহা ধুম–ধামের সঙ্গে গোটা অনুষ্ঠান উপভোগ করছিল। একের পর এক মদের পাত্র খালি হচ্ছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক এত অধিক পরিমানে মদ পান করলেন যে, এক পর্যায়ে নেশার ঘোরে তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। রাতভর বেঁহুশ থাকার পর সকালে হুঁশ ফিরল। হুঁশ ফিরতেই দেখলেন বীণটা পড়ে আছে। বীনটা উঠিয়ে বাজাতে চাইলেন, কিন্তু তা নিস্কর্য মনে হল। সূর উঠাতে যন্ত্রাংশ খুলে তিনি নেড়ে চেড়ে দেখলেন। তবুও সুর আসল না। এতে আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক যথেষ্ট অস্থীর ও বিরক্ত হয়ে নির্বিকার হয়ে বসে রইলেন। হঠাৎ বীনা থেকে আওয়াজ আসল –
মু’মিনদের অন্তর আল্লাহর স্মরণে কোমল ও বিগলিত হওয়ার সময় এখনো কি হয়নি?
কুরআনের এ অনাবীল বাণী শুনে তাঁর অন্তর জগৎ আন্দোলিত ও আলোড়িত হয়ে উঠল তিনি তৎখনাত বীণাটি ভেঙ্গে ফেললেন। মদের পাত্র গুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেললেন। গায়ের রেশমী কাপড় ছিড়ে টুকরা টুকরা করে ফেললেন। সর্বোপরি তখনি তওবা করে ইলমে দ্বীন অন্বেষণ ও আলাহর ইবাদতে লেগে লেগেন।
ঘটনাটিকে এভাবে আবু আব্দুল্লাহ হাম্মাদ তাঁর মোখতাসারুল মাদারেক, নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেন। কিন্তু তবকাতে কাফারী তে অন্য রকম রয়েছে। তাতে উল্লেখ আছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক মদের নেশায় ঘুমিয়ে পড়লেন। স্বপ্নে দেখেন যে, একটি প্রাণী নিকটবর্তী একটি গাছ থেকে এ আয়াতটি তিলাওয়াত করছে। তখনই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। হযরত শাহ আব্দুল আযীয (রহ.) বলেন, হতে পারে আল্লাহ তা’আলা সর্ব প্রথম তাকে স্বপ্ন যোগে সতর্ক করেছেন পুণরায় জাগ্রত হবার পর বীণা দ্বারা তাগীদ দিয়েছেন।-বুসতানুল মোহাদ্দেসীণ-৯৭

No comments:

Powered by Blogger.