Breaking News
recent

কুদরতে এলাহীর বিচিত্র কারিশমা

উল্লেখিত নিবন্ধকার তাঁর একই গ্রন্থে উল্লেখ করেন–Jack In The Pulpoivt নামে এক ধরণের ফুল আছে। এ ফুলের চারায় দুই ধরণের ফুলের গুচ্ছ থাকে। যথা-নর ও মাদী । এ ফুলটির চারাগাছে তৃণলতার বৃত্ত থাকে যা, পেয়ালার মত গোলাকৃত সে বৃত্ত হতেই ফুল অঙ্কুরিত ও পল্লবিত হয়ে পূর্ণ পরিপক্ক অবস্থায় প্রস্ফুটিত হয়। এ ফুলের প্রজনন পদ্ধতি অন্যান্য ফুলের মতই নর ও মাদীর মিলনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে এর মিলন পদ্ধতিটা অন্যান্য ফুলের চাইতে অনেকটা ভিন্ন ও বিচিত্র । এ ফুলে নর-মাদীর মিলন সরাসরি হয় না বরং তাদের মিলন হয় এক ধরণের ছোট ছোট কীট দ্বারা । এ ফুলের লতাগুল্ম দ্বারা সৃষ্টি বৃত্তের বহিরাংশ থাকে প্রশস্ত ও প্রসন্ন আর ভিতরের অংশ থাকে ছোট ও সংকীর্ণ। পোকা গুলো সে বৃত্তের মাঝে ঢুকার প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু মাঝ পথে যেয়ে আটকা পড়ে আর ভেতরের দিক যেহেতু সংকীর্ণ সেহেতু সেদিকে অগ্রসর হতে পারে না ফুলটির উপর দিক হতে মোমের মত এক ধরণের বিশেষ পদার্থ বৃত্তের মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে পোকার প্রবেশ পথে সরে আসে। এর ফলে বৃত্তের মাঝ পথে যেয়ে পোকা আটকা পড়ে যায়। সামনে বা পেছনে কোন দিকেই সরার পথ সে খুঁজে না পেয়ে দিশেহারা ও উম্মাদের মত ঘুরতে থাকে। আর তখনই বৃত্তের ভেতরকার প্রজননের পদার্থ তাঁর সর্বাঙ্গে লেগে যায়। যখন এ কাজ সম্পন্ন হয়, বৃত্তের প্রবেশ দ্বার দিয়ে মোমের মত পদার্থ নির্গত হওয়া বন্ধ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে উপরিভাগ শুস্ক হয়ে আসে। তখন পোকা একটু জোরে ধাক্কা দিলেই আবরণটি সরে যায় অতঃপর পোকা বেরিয়ে আসে।
এরপর শুরু হয় প্রজননের দ্বিতীয় ধাপের কাজ। পোকাটি সে অবস্থায় কোন একটি মাদী গাছের বৃত্তে প্রবেশ করে এবং একই ভাবে মাঝ পথে গিয়ে আটকা পড়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে নরের চাইতে একটু ব্যতিক্রম । এ বৃত্তে ঢুকার পর পোকাটি আর বের হতে পারে। আজীবনের জন্য আটকে যায় এবং সেখানেই মৃত্যু ঘটে। বৃত্তের ভেতর আবদ্ধাবস্থায় পোকাটি তাঁর সকল শক্তি দিয়ে বের হওয়ার জন্য চেষ্টা চালায়। এতে তাঁর শরীরে অবস্থানরত নর প্রজনন পদার্থ মাদী চারার জরায়ূতে স্থানাস্তরিত হয়। এভাবেই প্রজনন ক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং ফুলে কলি পল্লবিত ও প্রস্ফুটিত হয়। এটা নিঃসন্দেহে কুদরতে এলাহীর অদ্ভুদ ও বিচিত্র কারিশমা। প্রথমে প্রজনন সহায়ক পোকাটিকে নর গাছটি তাঁর ভেতর ঢোকার সুযোগ দিয়ে পূণরায় বের হওয়ার পথ ক্রমেই সংকীর্ণ করে ক্ষণিকের জন্য তাকে আবদ্ধ করে ফেলে। তারপর বাহির হওয়ার সুযোগ দেয়। অপর দিকে মাদীগাছটিও পোকাটিকে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দেয়, কিন্তু পূণরায় বের হওয়ার সুযোগ আর দেয়না।
(আরবী)
বরকতময় মহান আল্লাহ তা’আলা সুনিপুন হাতে সৃষ্টিকারী।
এসব কুদরতী লীলা কি মহান আল্লাহ তা’আলার অস্তিত্বের সাক্ষ্য দেয় না? এ সকল সুনিপূণ সৃষ্টি ব্যবস্থাপনাকে যদি নিছক প্রকৃতির রীতি বলে ধারণা করা হয় তবে তা হবে অত্যন্ত জঘন্য বোকামী ও হতবুদ্ধিতা । গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আমাদেরকে স্বীকার করতেই হবে যে, এ গুলো নিঃসন্দেহে এক নিখুঁত ও সুনিপুণ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনারই ফল ।

No comments:

Powered by Blogger.