Breaking News
recent

অষ্ট্রেলিয়াতে খরগোশ

জন উইলিয়াম ক্লাষ্ট তাঁর লেখা এক নিবন্ধে উল্লেখ করেন যে, যখন বিশ্ব চরাচরে অষ্ট্রেলিয়া নামক দেশটি আবিস্কৃত হল। সেখানে ইউরোপ কান্ট্রির বহু লোক বসতি স্থাপন শুরু করল। তারা লক্ষ্য করল যে, অষ্ট্রেলিয়ার কোথাও খরগোশ নেই। এ সকল ইউরোপিয়ান তাদের দেখ খরগোশ শিকারে অভ্যস্ত ছিল। খরগোশ শিকারের পূর্বে যত সব মজাদার স্মৃতি তাদেরকে বার বার বিড়ম্বিত করে তুলত এবং পীড়া দিত। তাদেরই একজন ছিল থমস স্টন। তিনি সর্ব প্রথম ১৮৫৯ খৃষ্টাব্দে অষ্ট্রেলিয়ার বন-জঙ্গল গুলো কে খরগোশের মত সুন্দর সুন্দর প্রাণী দ্বারা মনোরম করার জন্য চেষ্টা চালালেন। এ পর্যায়ে তিনি ইউরোপ থেকে বার জোড়া খরগোশ এনে অষ্ট্রেলিয়ার অরণ্যে ছেড়ে দিলেন।
কিন্তু খোদার কুদরতী কারিশমা বুঝার সাধ্য আছে কার ? আল্লাহ তা’আলা যেখানে যে জিনিস প্রয়োজন, সেখানে ঠিকই তাই দান করে থাকেন। তার জন্য সেখানে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করেন। ইউরোপের বন-জঙ্গলে খরগোশের পাশাপাশি অন্যান্য জীব-জন্তুও আছে। যেগুলো খরগোশের প্রকৃতি গত দুশমন, বিধায় সেখানে খরগোশের প্রজনন স্বাভাবিকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। কিন্তু অষ্ট্রেলিয়ায় সে সকল প্রাণী ছিল না। ফলে বারো জোড়া খরগোশের বংশ বিস্তার হল এবং ক্রমে তা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েই চলল। দেখতে দেখতে সমগ্র অষ্ট্রেলিয়ায় সর্বত্র খরগোশে ভরে গেল। এ অসংযত ও লাগামহীন প্রাণী গোটা অষ্ট্রেলিয়ার বাগান-বাগিচা গুলো সাবাড় করতে লাগল। কোন চারণ ভূমিতে ঢুকতে পারলে তা উজাড় ও বিরান করে ছাড়ত।
এক কথায় যে প্রাণীকে অষ্ট্রেলিয়ার পরিবেশ-প্রকৃতি সুন্দর ও সজ্জিত করতে ইউরোপ থেকে আনা হয়েছে, তা এখন গোটা উপমহাদেশের পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াল। এবার শুরু হল এর থেকে পরিক্রানের অভিযান । কোয়েঞ্জলা এলাকায় সাতশত মেইল লম্বা প্রাচীর নির্মাণ করা হল কেবল মাত্র খরগোশের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ। খরগোশ উক্ত বেষ্টনি ভেদ করে ভেতরে ঢুকে পড়ল। এরপর এক ধরণের বিষাক্ত খাবার প্রয়োগ করে খরগোশ নিধন অভিযান শুরু হল। কিন্তু ফলাফল যা ছিল তাই। কোন অবসান ঘটলন এ দুর্বিসহ অবস্থার।
অবশেষে কয়েক বছর চেষ্টা তদবীরের পর এ সমস্যার সমাধানের পথ খুজে পাওয়া গেল এক ধরণের ঔষধ আবিস্কারের মাধ্যমে। ঔষধটি প্রয়োগ করলেই খরগোশ এক কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ত এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে পতিত হত। এভাবে খরগোশের বংশ বিস্তার রোধ হতে লাগল। ধীরে ধীর শুস্ক মাঠ, পাহাড় ও বনাঞ্চল আবার সবুজ শ্যামল ও ফলে-ফুলে সুশোভিত হয়ে উঠল। এ ছাড়া ছাগল পালনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বাৎসরিক আমদানীও কয়েক গুন বেড়ে গেল। ১৯৫২ -৫৩ব অর্থ বছরে এর মাধ্যমে বৃদ্ধি পাওয়া আমদানীর পরিমাণ ছিল ৮৪ মিলিয়ন পর্যন্ত।

No comments:

Powered by Blogger.