Breaking News
recent

বিস্ময়কর কাকতাল

বর্তমান যুগে কল্পনা ও ভাবনার জোরে মানুষ ব্যাপক হারে প্রাচীন যুগের লোকদের ছবি নির্মান করতে শুরু করেছে। বেশকিছু দিন পূর্ব রিভার্স ডাইজেষ্টে এ সংক্রান্ত একটি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আার নজরে পড়েছিল। রুচির খোরাক হিসাবে ঘটনাটি নিন্মে উল্লেখ করছি।
© বুনি চেম্বারলিন জনৈক বয়োবৃদ্ধ পাদ্রীর বরত দিয়ে বর্ণনা করেন যে, কয়েক শতাব্দি পূর্বে সিকলিয়ার একটি গীর্জায় দেয়ালে ছবি অঙ্কনের জন্য একজন চিত্র শিল্পীকে ডাকা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ছবি অঙ্কনের মাধ্যমে হযরত ঈসা (আঃ) এর সামগ্রীক জীবনের চিত্রপট তুলে ধরা। উক্ত কার্য সম্পাদনের জন্য শিল্পী প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন। এমন কি প্রায় সকল ছবির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্র অঙ্কনের কাজ বাকী ছিল। তার একটি হল-হযরত ঈসা (আঃ) এর বাল্য কালের চিত্র, অপরটি ছিল ইয়াহুদা স্ক্রুট নামক হযরত ঈসা (আঃ) এর সহচরের ছবি। (যার ব্যাপারে ইঞ্জিল শরীফে উল্লেখ আছে যে, সে হযরত ঈসা (আঃ) কে মাত্র ত্রিশ টাকার লোভে গ্রেফতার করিয়ে ছিল।) উক্ত ছবি দুটির উপযুক্ত আকৃতির কোন চিত্রশিল্পীর মাথায় আসছিল না। এজন্য সে হব্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। পথিমধ্যে একদিন সে নগরীর একটি সড়ক অতিক্রম করছিল। হঠাৎ তাঁর দৃষ্টি গিয়ে থমকে দাঁড়ায় গলীতে খেলাধূলায় মত্ত শিশদর মধ্যে বার বয়সী বালকের প্রতি শিল্পী এই নিষ্পাপ চেহারাকেই হযরত ঈসা (আঃ) এর বাল্য কালের ছবির জন্য উপযোগী বলে মনে কুরে তাকে সাথে যেত উদ্ভুদ্ধ করল। বালকটি রাজি হলে চিত্রকার তাকে এনে ছবি আঁকতে শুরু করল। কিছু দিনের মধ্যে এ কাজটি সম্পাদন হয়ে গেল।
তবে ইয়াহুদা স্ক্রুষ্টের ছবির কাটি তখনো অবশিষ্ট ছিল। এজন্য সে দীর্ঘদিন যাবৎ কোন উপযুক্ত চেহারা মাথায় আনতে পারছিল না। ইয়াহুদা যেহেতু অসৎ চরিত্রের ছিল সেহেতু অনেকই নিজেকে সে রকম ভেবে সে রকম ভেবে ছবি আকার জন্য নিজেকে পেশ করল। কিন্তু কোনটিই শিল্পীর মনঃপূত হয়নি।
সে মূলতঃ এমন একটি আকৃতি তালাশ করছিল, যা দেখেই অনুমান করা যায় যে, এটা কোন লোভী, প্রতারক ও গোমরাহ ব্যক্তির আকৃতি । কিন্তু বেশ কয়েক বছর অতিবাহিত হয়ে লেগেও উপযুক্ত কোন আকৃতির সন্ধান পাওয়া গেল না।
একদিন সে অপরাহ্নে একটি মুদের আসরে বসেছিল। হঠাৎ দরজার সম্মুখ জনৈক ভয়ঙ্কর কুশ্রী, বিভৎস ও দুরাবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তি তাঁর দৃষ্টিতে পড়ল। সে হেলে দুলে মদের আসরে প্রবেশ করেই মদ-মদ বলে হাঁক দিল। লোকটিকে দেখ মনে হচ্ছিল যেন সকল প্রকার পাপ-পঙ্কিলতার প্রতিচ্ছবি তাঁর চেহারায় উদ্ভাসিত হচ্ছে। শিল্পী তাকে দেখে যার পর নাই খুশি হল এবং তাকে মদের প্রলোভন দেখিয়ে সঙ্গে নিয়ে চলল। ঘরে এসে তাঁর ছবি আকতে শুরু করল। আর সে সম্পূর্ণ নিরবে-নিঃশব্দে বসেছিল। ছবি আঁকার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। একদিন দেখতে পেল যে, লোকটি নিজেই নিজের অংকিত চেহারা দেখে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। শিল্পী তাকে জিজ্ঞাসা করলঃ কি ব্যাপার, কি হল তোমার ? ঘাবড়াচ্ছ কেন? লোকটি কিছুক্ষণ নিজের মাথায় হাত রেখে দীর্ঘশ্বাস বলল, আপনি আমাকে একটু গভীর ভাবে পর্যাবেক্ষণ করুন। কয়েক বছর পূর্বে আপনি আমাকেই কিন্তু নিয়ে এসেছিলেন হযরত ঈসা (আঃ) এর বাল্যকালের কাল্পনিক চিত্রাঙ্কণের জন্য। -রিভার্স ডাইজেষ্ট-মে-১৯৬৩

No comments:

Powered by Blogger.