Breaking News
recent

এস্তেখারার নামায

এস্তেখারার নামায
১।মাসআলাঃ যখন কোন কাজ করিবার ইচ্ছা করিবে, তখন আগে আল্লাহ্ তা’আলার দরবারে খায়ের-বরকতের জন্য দো’আ করিয়া লইবে, তারপর কাজে হাত দিবে। এই মঙ্গল প্রার্থনাকেই আরবীতে ‘এস্তেখারা’ বলে। হাদীস শরীফে সব কাজের পূর্বে এস্তেখারা করিয়া লওয়ার বিশেষ উৎসাহ দেওয়া হইয়াছে। রসূলুল্লাহ (দঃ) ফরমাইয়াছেনঃ ‘আল্লাহ্ তা’আলার নিকট খায়ের ও বরকতের জন্য দো’আ না করা বদবখতির আলামত।’ (ফরয, ওয়াজিব এবং নাজায়েয কাজের জন্য এস্তেখারা নাই।) বিবাহ শাদি, বিদেশ যাত্রা, (বাড়ি নির্মান ইত্যাদি) যাবতীয় মোবাহ কাজের আগে এস্তেখারা করিয়া তারপর করিবে, তাহা হইলে ইনশাআল্লাহ্ (ফল ভাল হইবে) পরে অনুতাপ করিতে হইবে না।
২।মাসআলাঃ এস্তেখারা করিবার সুন্নত তরীকা এই যে, (এ’শার পর তাজা ওযূ করিয়া) প্রথমে দুই রাকা’আত নামায খুব ভক্তির সহিত পড়িবে, তারপর এই দো’আটি খুব মনোযোগের সহিত, (অর্থের দিকে খেয়াল রাখিয়া, খোদাকে হাযির নাযির জানিয়া অন্ততঃ তিনবার পড়িবে।
[আরবি]
ভাবার্থঃ (‘হে আল্রাহ্! তুমি জান, আমি জানি না, তুমি ক্ষমতাবান, আমি অক্ষম অর্থাৎ, ভবিষ্যতের এবং পরিণামের খবর অন্য কেহই জানে না, একমাত্র তুমিই জান; এবং তুমি সর্বশক্তিমান। মন্দকেও ভাল করিয়া দিতে পার; কাজের শক্তিও তুমিই দান কর, চেষ্টাকে ফলবতীও তুমিই কর, কাজেই আমি তোমার নিকট মঙ্গল চাহিতেছি এবং কাজের শক্তি প্রার্থনা করিতেছি। হে আল্লাহ্! যদি এই কাজটি আমার জন্য, আমার দ্বীনের জন্য, আমার দুনিয়ার জন্য এবং আমার পরিণাম ও আকেবতের জন্য তুমি ভাল মনে কর, তবে এই কাজটি আমার জন্য তুমি নির্ধারিত করিয়া দাও এবং উহা আমার জন্য সহজলভ্য করিয়া দাও এবং উহাতে আমার জন্য খায়ের বরকত দান কর। পক্ষান্তরে যদি এই কাজটি আমার পক্ষে, আমার দ্বীনের পক্ষে বা দুনিয়ার পক্ষে বা পরিণামের হিসাবে আমার জন্য মন্দ হয়, তবে এই কাজকে আমা হইতে দূরে রাখ, আর যেখানে মঙ্গল আছে তাহা আমার জন্য নির্ধারিত করিয়া দাও এবং তাহাতেই আমি যেন সন্তুষ্ট থাকি।’) যখন [আরবি] (‘হাযাল আমরা’) শব্দটি মুখে উচ্চারণ করিবে, তখন যে কাজ করিবার ধারণা করিয়াছ মনে মনে তাহা স্মরণ করিবে। তারপর পাক বিছানায় ওযূর সহিত পশ্চিম দিকে মুখ করিয়া শয়ন করিবে। ভোরে উঠিয়া মন যেদিকে ঝুঁকে বলিয়া মনে হয় তাহা করিবে, তাহাতেই ইনশাআল্লাহ্ ভাল হইবে। (অনেকে মনে করে, “ইস্তেখারা” দ্বারা গায়েবের রহস্য জানা যায় বা স্বপ্নে কেহ বলিয়া দেয়, ইহা যরূরী নহে। তবে স্বপ্নে কিছু জানিতেও পারে, নাও জানিতে পারে।
৩।মাসআলাঃ যদি এক দিনে মন ঠিক না হয়, তবে পর পর সাতদিন এস্তেখারা করিবে। তাহা হইলে ইনশাআল্লাহ ভালমন্দ বুঝা যাইবে। (আল্লাহর কাছে মঙ্গলের জন্য দো’আ করাই এস্তেখারার আসল উদ্দেশ্য; সুতরাং মন কোন দিকে ঝুঁকিলেওে এস্তেখারা করিয়া কাজ করিলে আল্লাহর রহমতে মঙ্গলই হইবে।)
৪।মাসআলাঃ হজ্জে যাওয়ার জন্য এই ভাবিয়া এস্তেখারা করিবে না যে, যাইবে কি না যাইবে। অবশ্য কোন নির্দিষ্ট তারিখে বা জাহাজে যাইবে কি না তজ্জন্য এস্তেখারা করিবে।
(মাসআলাঃ যদি কোন কারণে এস্তেখারার নামায পড়িতে না পারে, অন্ততঃ দো’আটি কয়েকবার পড়িয়া লইবে, তবুও এস্তেখারা ছাড়িবে না। অন্ততঃ [আরবি] এতটুকু পড়িবে।)

No comments:

Powered by Blogger.