বুখারী শরীফ ১০ম খন্ড, অধ্যায়ঃ আকাঙ্ক্ষা অধ্যায় (৬৭৩২-৬৭৫১)
হাদিস ৬৭৩২
সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রান! যদি কিছু লোক আমার সঙ্গে শরীক না হয়ে পিছনে থেকে যাওয়াটা অপছন্দ না করত, আর সবাইকে বাহন (যুদ্ধ সরঞ্জাম) সরবরাহ করতে আমি অক্ষম না হতাম, তাহলে আমি কোন যুদ্ধ থেকেই পিছনে থাকতাম না। আমার বড়ই কামনা হয় যে, আমাকে আল্লাহর পথে শহীদ করা হয়, আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয় আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয় আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয়।
হাদিস ৬৭৩৩
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! আমি কামনা করি যেন আল্লাহর পথে যুদ্ধ করি। এতে আমাকে শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয় আবার শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয় আবার শহীদ করা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন! বাক্যটি তিনি তিনবার বলেছের। এ ব্যাপারে আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি।
হাদিস ৬৭৩৪
ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ যদি ওহুদ (পাহাড়) পরিমাণ স্বর্ণ আমার কাছে থাকত, তাহলে আমি পলে করতাম যে, তিন রাতও এরুপ অবস্হায় অতিবাহিত না হোক যে ঋন, আদায় করার জন্য ব্যতীত একটি দীনারও আমার কাছে থাকুক যা গ্রহণ করার মত লোক পাই।
হাদিস ৬৭৩৫
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়য় (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার এ ব্যাপারে যদি আমি পূর্বে জানতাম যা পরে জানতে পেরেছি তাহলে আমি হাদী (কুরবানীর পশু) সঙ্গে আনতাম না এবং লোকেরা যখন হালাল হয়েছে, তখন আমিও (ইহরাম) ছেড়ে হালাল হয়ে যেতাম।
হাদিস ৬৭৩৬
হাসান ইবনু উমর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে ছিলাম এবং আমরা হাজ্জের (হজ্জ) তালবিয়া পাঠ করলাম। তারপর যিলহাজ্জ মাসের চারদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা মক্কায় এসে পৌছলাম তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে এবং সাফা ও মারওয়ার সায়ী করতে আদেশ দিলেন এবং এটাকে উমরা বানাতে ও ইহরাম খূলে হালাল হতে বললেন। তবে যাদের সাথে হাদী ছিল তাদের এ হুকুম দেননি। জাবির (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তালন্হা (রাঃ) ছাড়া আমাদের আর কারো সাথে হাদী ছিল না। এ সময় আলী (রাঃ) ইয়ামান থেকে আসলেন। তাঁর সাথে হাদী ছিল। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রুপ ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও সেরুপ ইহরাম বেধেছি। সাহাবা কিরাম (রাঃ) বললেনঃ আমরা মিনার দিকে যাচ্ছি অথচ আমাদের কারো কারো পুরুষাঙ্গ বীর্য টপকাচ্ছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি আমার এ বিষয়ে যদি পুর্বে জানতাম যা আমি পরে জানতে পেরেছি, তাহলে আমি হাদী সঙ্গে আনতাম না। আর আমার সঙ্গে যদি হাদী না থাকত তাহলে আমি অবশ্যই হালাল হয়ে যেতাম। রাবী বলেনঃ পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামরা-ই-আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ করছিলেন, এমতাবস্হায় তার সাথে সুরাকা ইবনু মালিক (রাঃ) সাক্ষাৎ করলেন। তখন তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! এটা কি শুধু আমাদের জন্যই? তিনি বললেনঃ না, বরং এটা চিরদিনের জন্য। জাবির (রাঃ) বলেনঃ আয়িশা (রাঃ) ঋতুমতী অবস্হায় মক্কায় পৌছে ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে নির্দেশ দিলেন যে, হাজ্জের (হজ্জ) যাবতীয় কাজকর্ম যথারীতি করে যাও, তবে পবিত্র হওযার আগ পর্যন্ত বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করো না এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করো না। তারা যখন বুতহা নামক স্থানে অবতরণ করলেন, আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনারা একটি হাজ্জ (হজ্জ) ও একটি উমরা নিয়ে ফিরলেন। আর আমি কি শুধুমাত্র একটি হাজ্জ (হজ্জ) নিয়ে ফিরব? জাবির (রাঃ) বলেনঃ তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদূর রহমান ইবনু আবূ বকর সিদীক (রাঃ)-কে তাকে তানঈমে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। পরে আয়িশা (রাঃ) যিলহাজ্জ্ব মাসে হাজ্জের (হজ্জ) দিনগুলোর পরে একটি উমরা আদায় করেন।
হাদিস ৬৭৩৭
খালিদ ইবনু মুখাল্লাদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক রাত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রৎ রইলেন। পরে তিনি বললেনঃ যদি আমার সাহাবীদের কোন এক নেক ব্যাক্তি আজ রাত আমার পাহারাদারী করত! হঠাৎ আমর! অস্ত্রের আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন তিনি বললেনঃ এ কে? বলা হল, এ হচ্ছে সা’দ, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার পাহারাদারীর জন্য এসেছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমালেন, এমন কি আমরা তার নাক ডাকার আওয়াজ শুনতে পেলাম। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ বিলাল (রাঃ) আবৃতি করেছিল- হায়! আমার উপলব্ধি, আমি কি উপত্যকায় রাত যাপন করতে পারব, যখন আমার পাশে হবে জালীল ও ইযখির ঘাস। পরে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ খবর পৌছিয়ে ছিলাম।
হাদিস ৬৭৩৮
উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি বিযয় ছাড়া ঈর্ষা করা যায় না। একটি হল এমন ব্যাক্তি, যাকে আল্লাহ তা আলা কুরআন দান করেছেন। সে তা দিবারাত্রি তিলাওয়াত করে। (শ্রোতাদের) কেউ বলল, একে যা দান করা হয়েছে, যদি আমাকেও তা দান করা হত, তবে সে যেরুপ করছে, আমিও সেরুপ করতাম। অপরটি হল, এমন ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ মাল দান করেছেন, সে তা ন্যায় সঙ্গতভাবে খরচ করে। (তা দেখে) কেউ বলল, যদি তাকে যা প্রদান করা হয়েছে তা আমাকে প্রদান করাতে তাহলে সে যা করে আমিও তা করতাম।
হাদিস ৬৭৩৯
হাসান ইবনু রাবী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যদি আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ কথা না বলতে শুনতাম যে, তোমরা মৃত্যুর কামনা করো না, তাহলে অবশ্যই আমি (মৃত্যু) কামনা করতাম।
হাদিস ৬৭৪০
মুহাম্মাদ (রহঃ) কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ আমরা খাব্বাব ইবনু আরাৎ (রাঃ) এয় শুশ্রুষায় গেলাম। তিনি সাতটি দাগ লাগিয়ে ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে মউতের জন্য দোয়া করতে নিষেধ না করতেন তাহলে আমি অবশ্যই এর দোয়া করতাম।
হাদিস ৬৭৪১
আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মৃত্যু কামনা করবে না। কেননা, (কামনাকারী) সে যদি সৎকর্মশীল হয় তবে (বেঁচে থাকলে) হয়ত সে সৎকর্ম করবে। কিংবা সে পাপাচারী হবে, তাহলে হয়ত সে অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করবে। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আবূ উবায়দ-এর নাম হচ্ছে সা’দ ইবনু উবায়দ আব্দুর রহমান ইবনু আযহার এর আযাদকৃত গোলাম।
হাদিস ৬৭৪২
আবদান (রহঃ) বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খব্দকের যুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে মাটি উঠাচ্ছিলেন। আমি তাকে দেখতে পেলাম তার পেটের শুভ্রতাকে মাটি আচ্ছাদিত করে ফেলেছে। তিনি পড়ছিলেনঃ (হে আল্লাহ) যদি আপনি না করতেন তাহলে আমরা হেদায়েত লাভ করতাম না এবং আমরা সাদাক করতাম না, আর সালাত (নামায/নামাজ)ও পড়তাম না। অতএব আপনি আমাদের উপর শান্তি অবতীর্ন করুন। নিঃসন্দেহে প্রথম দলটি আমাদের উপর যুলুম করেছে; কখনো বলতেন, নিঃসন্দেহে একদল লোক আমাদের উপর যুলুম করেছে, যখন তারা কোনরুপ ফিতনার ইচ্ছা করে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। প্রত্যাখ্যান করি -এ কথাটি উচ্চস্বরে বলতেন।
হাদিস ৬৭৪৩
আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) আবূ নাযর সালিম (রাঃ) যিনি উমর ইবনু উবায়দুল্লাহর আযাদকৃত গোলাম এবং তার কাতিব (সচিব) ছিলেন, বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ তার কাছে আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) একট চিঠি লিখলেন, আমি তা পাঠ করলাম। তাতে লেখা ছিল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়া কামনা করো না বরং আল্লাহ তায়াআলার কাছে শান্তি কামনা কর।
হাদিস ৬৭৪৪
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) দূ-জন লিআনকারীর ঘটনা বর্ণনা করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ বললেনঃ এ কি সেই স্ত্রীলোক যার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, যদি বিনা প্রমাণে কোন স্ত্রীলোককে রজম করতাম? তিনি বললেনঃ না! সে স্ত্রীলোকটি প্রকাশ্যে অশ্নীল কাজ করেছে।
হাদিস ৬৭৪৫
আলী (রহঃ) আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এশার সালাত (নামায/নামাজ) বিলন্ব হল তখন উমর (রাঃ) বেরিয়ে এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! সালাত (নামায/নামাজ)। (এদিকে) মহিলা ও শিশুরু া ঘুমিয়ে যাচ্ছিল। তখন তিনি বেরিয়ে এলেন, তার মাথা থেকে পানি টপকে পড়ছে। তিনি বলছিলেন, যদি আমার উম্মাতের জন্য, কিংবা বলেছিলেন, লোকের জন্য সুফিয়ানও বলেছেন, আমার উম্মাতের জন্য কইসাধ্য মনে না করতাম, তাহলে অবশ্যই তাদের এ সময়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের নির্দেশ দিতাম। ইবনু জুরায়জ আতার সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সালাত (নামায/নামাজ) বিলম্ব করলেন। ফলে উমর (রাঃ) এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! মহিলা ও শিশুরু া ঘুমিয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি তাঁর মাথার পার্শ থেকে পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসে বললেনঃ আসলে এটাই সময়। এরপর বললেনঃ যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কইসাধ্য মনে না করতাম । আমর এ হাদীসটি আতা থেকে বর্ণনা করেন, সে সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নাম নেই। তবে আমর বলেছেনঃ যে, তার মাথা থেকে পানি টপকে পড়ছিল। আর ইবনু শুরু ায়জ বলেনঃ তিনি তার এক পার্শ থেকে পানি মুছছিলেন। আবার আমরের সুত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি আনি আমার উম্মাতের উপর কষ্টসাধ্য মনে না করতাম। আর ইবনু জুরায়জ বলেনঃ এটাই সময়। যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কষ্টসাধ্য মনে না করতাম। তবে ইবরাহীম ইবনু মুনযির ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিস ৬৭৪৬
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি আমার উম্মাতের উপর কষ্টসাধ্য মনে না করতাম, তাহলে আমি তাদের মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।
হাদিস ৬৭৪৭
আইয়াস ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে (একটি) মাসের শেষাংশে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরতিহীন রোযা রাখলেন এবং আরো কতিপয় লোকও বিরতিহীনভাবে রোযা পালন করতে লাগল। এ সংবাদ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে পৌছলে তিনি বললেনঃ যদি আমার এ মাস দীর্ঘায়িত হত, তবুও আমি এভাবে বিরতিহীন রোযা রাখতাম। যাতে অধিক কষ্টকারীরা তাদের কষ্ট করা ছেড়ে দেয়। আমি তো তোমাদের মত নই, আমার প্রতিপালক আমাকে আহার করায় এবং পান করায়। সূলায়মান ইবনু মুগীরা আনাস (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হুমায়দ-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিস ৬৭৪৮
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ও লাইছ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরতিহীন রোযা রাখতে নিষেধ করলেন। সাহাবাগণ বললেনঃ আপনি বিরতিহীন রোযা রাখছেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের কে আছ আমার মতো? আমি তো রাত্রি যাপন করি এমতাবস্থায় যে আমার প্রতিপালক আমাকে আহার করান ও পান করান। কিন্তু তারা যখন বিরত থাকতে অস্বীকার করলেন, তখন তিনি তাদেরসহ একদিন, তারপর আর একদিন রোযা রাখলেন। তারপর তারা নতূন চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি চাঁদ আরো দেরীতে উদিত হত, তাহলে আমিও তোমাদের (রোযা) বাড়াতাম। তিনি যেন তাদেরকে শ্বাসাচ্ছিলেন।
হাদিস ৬৭৪৯
মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কাবার বাইরের দেওয়াল (যাকে হাতীমে কাবা বলা হয়) সম্প্ররকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, এটা কি কা’বা ঘরের অংশ ছিল? তিনি বললেনঃ হ্যা। আমি বললাম, তাহলে তারা এ অংশকে (কাবা) ঘরের ভিতরে শামিল করল না কেন? তিনি বললেনঃ তোমার গোত্রের খরচে অনটন দেখা দিয়েছিল। আমি বললামঃ এর দরজাটি এত উচ্চ স্থাপিত হল কেন? তিনি বললেনঃ এটা তোমার গোত্র এজন্য করেছিল যাতে তারা যাকে ইচ্ছা প্রবেশ করতে দেবে এবং যাকে ইচ্ছা বাধা প্রদান করবে। তবে যদি তোমার গোত্র সদ্য জাহেলিয়াত মুক্ত না হত। এরপর তাদের অন্তর বিগড়িয়ে যাওয়ার ভয় না হত তাহলে আমি বহির্ভূত দেওয়ালকে কাঁবা ঘরের মাঝে শামিল করে দিতাম এবং এর দরজাকে মাটির বরাবরে মিলিয়ে দিতাম।
হাদিস ৬৭৫০
আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি হিজরত না হত, তাহলে আমি আনসারদের অন্তর্ভুক্ত একজন হতাম। আর লোকেরা যদি এক উপত্যকা দিয়ে গমন করত আর আনসাররা যদি অন্য উপত্যকা দিয়ে কিংবা গিরিপথ দিয়ে গমন করত তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়েই গমন করতাম।
হাদিস ৬৭৫১
মূসা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যদি হিজরত না হত, তাহলে আমি আনসারদের অন্তর্ভুক্ত একজন হতাম। আর লোকেরা যদি কোন এক উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে গমন করত, তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে গমন করতাম। আবূ তাইয়াহ (রহঃ) আনাস (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস উপত্যকারঁ কথা উল্লেখ করে আববাদ ইবনু তামীম-এর অনুসরণ করেছেন।
No comments: