বেৎর নামায-(বেঃ জেওর)
বেৎর নামায-(বেঃ জেওর)
বেৎর নামায-(বেঃ জেওর)
১।মাসআলাঃ বেৎর নামায ওয়াজিব। ওয়াজিবের মর্তবা প্রায় ফরজের মত। ওয়াজিব তরক করিলে ভারি গোনাহ। যদি ক্বচিৎ কখনও কোন কারণবশতঃ ছুটিয়া যায়, তবে সুযোগ পাওয়া মাত্রই ক্বাযা পড়িতে হইবে। (বেৎর শেষ রাত্রে তাহাজ্জুদের পরে ছোবহে ছাদেকের আগে পড়া ভাল; কিন্তু যাহার শেষ রাত্রে উঠার অভ্যাস নাই বা উঠার বিশ্বাস নাই তাহার জন্য এশার পর পড়িয়া লওয়া উচিত।)
২।মাসআলাঃ বেৎর নামায তিন রাকা‘আত; দুই রাকা‘আত পড়িয়া বসিয়া শুধু আত্তাহিয়্যাতু (আবদুহু ওয়ারাসূলুহু পর্যন্ত) পড়িবে, দুরুদ পড়িবে না, আত্তাহিয়্যাতু শেষ হওয়া মাত্রই তৎক্ষণাৎ দাড়াইয়া যাইবে এবং সূরা-ফাতেহা ও অন্য একটি সূরা পড়িয়া ‘আল্লাহু আকবার’ বলিবে এবং কান পর্যন্ত (স্ত্রীলোকেরা কাঁধ পর্যন্ত) উঠাইয়া আবার হাত বাঁধিয়া লইবে। তারপর দোয়া কুনূত পড়িয়া রুকূ করিবে; এইরুপে তৃতীয় রাকা‘আত পড়িয়া আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ এবং দোয়া মাছুরা পড়িয়া নামায শেষ করিবে।
৩।মাসআলাঃ দোআ কুনূত এইঃ
[আরবী]
(অর্থ- আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য ভিক্ষা করিতেছি; এবং তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি; এবং তোমার উপর ইমান আনিতেছি, এবং তোমারই উপর ভরসা করিতেছি, তোমারই উত্তম উত্তম প্রশংসা করিতেছি। এবং (চীরকাল) তোমার শুকর-গুযারী করিব (কখনও) তোমার না শুকরী বা কুফরী করিব না, তোমার নাফরমানী যাহারা করে (তাহাদের সঙ্গে আমরা কোন সংশ্রব রাখিব না) তাহাদের আমরা পরিত্যাগ করিয়া চলিব। হে আল্লাহ! আমরা একমাত্র তোমারই এবাদত করি (অন্য কাহারও এবাদত করিব না) একমাত্র তোমারই জন্য নামায পড়িব একমাত্র তোমাকেই সজদা করিব (তুমি ব্যতীত অন্য কাহারও জন্য নামায পড়িব না বা অন্য কাহাকেও সজদা করিব না।) এবং একমাত্র তোমার আদেশ পালন ও তাবেদারীর জন্য সর্বদা (দৃঢ় মনে) প্রস্তুত আছি। (সর্বদা) তোমার রহমতের আশা এবং তোমার আযাবের ভয় হৃদয়ে পোষণ করি। (যদিও) তোমার আসল আযাব শুধু নাফরমানগনের উপরই হইবে। (তথাপি আমরা সে আযাবের ভয়ে কম্পমান থাকি)
৪।মাসআলাঃ বেৎরের তিন রাকা‘আতেই আলহামদুর সহিত সূরা মিলান ওয়াজিব।(অন্যান্য নামাযের মত এ নামাযের জন্যও কোন সূরা নির্দিষ্ট নাই, কিন্তু হযরত (দঃ) অনেক সময় প্রথম রাকা‘আতে সূরা-ইখলাছ পড়িয়াছেন, সেইজন্য আমরাও প্রায়ই এইরুপ পড়ি।)
৫।মাসআলাঃ তৃতীয় রাকা‘আতে যদি দোআ কুনূত পড়া ভুলিয়া গিয়া রুকুতে চলিয়া যায় এবং রুকুতে গিয়া স্বরণ হয়, তবে আর দোয়া কুনূত পড়িবে না এবং রুকু হইতে ফিরিবে না এবং রুকু করিয়া নামায শেষে ছহো সজদা করিয়া লইবে। অবশ্য যদি রুকু হইতে ফিরিয়া গিয়া খাড়া হইয়া দোআয়ে কুনুত পড়ে, তবে নামায হইয়া যাইবে, কিন্তু এরুপ করা ঠিক নহে এবং এ অবস্থায় ছহো সেজদা ওয়াজিব হইবে।
৬।মাসআলাঃ ভুলে যদি প্রথম বা দ্বিতীয় রাকা‘আতে দোয়া কুনূত পড়িয়া ফেলে তবে ইহা দোয়া কুনূত হিসেবে ধরা হইবে না, তৃতীয়া রাকা‘আতে আবার পড়িতে হইবে এবং ছহো সজদাও করিতে হইবে।
৭।মাসআলাঃ (দোআ কুনূতের অর্থ আরবী ভাষায় খোদার নেকট বশ্যতার স্বীকারোক্তি) যদি কেহ দোআ কুনূত না জানে তবে শিথিতে চেষ্টা করিবে এবং শিক্ষা না হওয়া পর্যন্ত [আরবী] পড়িবে বা তিনবার [আরবী] বলিবে বা তিনবার [আরবী] বলিবে ইহাতে তাহার নামায হইয়া যাইবে।
No comments: