Wednesday, April 2 2025

সহিহ্ মুসলিম শরীফ ৮ম খন্ড, অধ্যায়ঃ অসদ্ব্যাবহার, আত্নীয়তার সম্পর্ক-২য়




পরিচ্ছেদঃ ২৫. যাদের উপর নবী (ﷺ) লা'নত করেছেন, তিরস্কার করেছেন অথবা বদ দু'আ করেছেন; অথচ তারা এর যোগ্য নয়, তাদের জন্য তা পবিত্রতা, পুরস্কার ও রহমত স্বরূপ


৬৩৭৭.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার দু'জন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো। তারা তাঁর সঙ্গে কোন বিষয়ে আলোচনা করল। তা কী ছিল, আমি জানি না। এরপর তারা তাঁকে অসন্তুষ্ট করেছিল। তিনি তাদের উভয়কে লানত করলেন এবং তিরস্কার করলেন। যখন তারা বের হয়ে গেল আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সবাই আপনার কাছ থেকে কল্যাণ লাভ করল। আর এরা দুজনে কিছুই পাবে না। তিনি বললেনঃ সে কী ব্যাপার! তিনি [আয়িশা (রাঃ)] বললেন, আপনি তো তাদের উভয়কে লানত দিয়েছেন এবং তিরস্কার করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি জান আমার প্রতিপালকের সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কী শর্তাশর্তি হয়েছে? আমি বলেছি হে আল্লাহ! আমি একজন মানুষ। আমি কোন মুসলমানকে লা'নত করলে কিংবা তিরস্কার করলে তা তুমি তার জন্য পবিত্রতা ও প্রতিদান বানিয়ে দিও।

৬৩৭৮.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব, আলী ইবনু হুজর সা’দ, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) ... আ'মাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে জারীর বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তিনি ঈসা (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে বলেন, এরপর তারা তার সঙ্গে একান্তে মিলিত হল, তখন তিনি তাদের উভয়কে তিরস্কার করলেন এবং তাদের লানত দিয়ে বের করে দিলেন।

৬৩৭৯.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ। সূতরাং আমি কোন মুসলমানকে গালি দিলে কিংবা তাকে লা'নত করলে অথবা মারলে তখন তুমি তার জন্য তা পবিত্রতা ও রহমত বানিয়ে দিও।

৬৩৮০.    ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তার হাদীসে رَحْمَةً এর স্থলে زَكَاةً وَأَجْرًا উল্লেখিত হয়েছে।

৬৩৮১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আ’মাশ (রহঃ) থেকে আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে ঈসা (রহঃ) বর্ণিত আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর হাদীসে اجعل ও أَجْرًا এবং জাবির (রাঃ) এর হাদীসে تجعل ও رَحْمَةً আছে।

৬৩৮২.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট থেকে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হচ্ছি (আশা করি), আপনি কখনো তার বিপরীত করো না। আমি তো একজন মানুষ। সূতরাং আমি কোন মুমিন ব্যক্তিকে কষ্ট দিলে, গালি দিলে, লানত করলে, তাকে চাবুক লাগালে তা তার জন্য রহমত, পবিত্রতা ও নৈকট্য বানিয়ে দিবেন, যার দ্বারা সে কিযামত দিবসে আপনার নৈকট্য লাভ করতে পারে।

৬৩৮৩.    ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... আবূ যিনাদ (রহঃ) এই সনদে তার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। পার্থক্য এইটুকু যে, তিনি বলেছেন, أَوْ جَلَدُّهُ (কিংবা আমি চাবুক মেরেছি) আবূ যিনাদ (রহঃ) বলেন, এই শব্দটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর বিভিন্ন উচ্চারন। আসলে এর অর্থ جَلَدْتُهُ এর একটি উপভাষ্য।

৬৩৮৪.    সুলায়মান ইবনু মাবাদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৩৮৫.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... নাসরিদের আযাদকৃত গোলাম সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ “হে আল্লাহ্‌! মুহাম্মাদ তো একজন মানুষ। তিনি রাগান্বিত হন যেভাবে একজন মানুষ রাগান্বিত হয়। আর আমি আপনার কাছ থেকে এ প্রতিশ্রুতি গ্রহন করছি, (আমার আশা) আপনি কখনো তার বিপরীত করবেন না। সুতরাং কোন মু’মিনকে আমি কষ্ট দিলে কিংবা তাকে গালি দিলে অথবা তাকে কোড়া লাগালে তা আপনি তার জন্য কাফফারা ও নৈকট্য (লাভের ওসীলা) বানিয়ে দিন, যার দ্বারা কিয়ামত দিবসে সে আপনার নৈকট্য লাভ করবে।

৬৩৮৬.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, “হে আল্লাহ্‌! আমি কোন ইমানদার বান্দাকে তিরস্কার করলে তুমি তা তার জন্য কিয়ামত দিবসে তোমার নৈকট্য (লাভের মাধ্যম) বানিয়ে দিও।”

৬৩৮৭.    যুহায়র ইবনু হারব ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, “হে আল্লাহ্‌! আমি আপনার নিকট থেকে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করছি, (আমার আশা ও বিশ্বাস যে,) আপনি কখনো তার বিপরীত করবেন না। (এ মর্মে যে,) আমি কোন মু’মিন ব্যক্তিকে তিরস্কার করলে কিংবা চাবুক মারলে আপনি তার জন্য তা কিয়ামত দিবসে কাফফারা বানিয়ে দিন।”

৬৩৮৮.    হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমি তো একজন মানুষ। আমি আমার প্রতিপালকের সঙ্গে শর্ত (প্রতিশ্রুতি) বদ্ধ হয়েছি যে, কোন মুসলমান বান্দাকে আমি ভৎসনা করলে কিংবা তিরস্কার করলে তা যেন তার জন্য পবিত্রতা ও প্রতিদান (হিসাবে গণ্য) হয়।

৬৩৮৯.    যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ মা’আন রাকাশী (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) এর মাতা উম্মু সুলায়মের কাছে একটি ইয়াতিম বালিকা ছিল। রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখে বললেনঃ এই মেয়ে , তুমি তো বেশ বড় হয়েছ; তবে (আমার বয়স বড় না হোক) তুমি দীর্ঘজীবী না হও। তখন ইয়াতীম বালিকাটি উম্মু সুলায়মের কাছে ফিরে গেল। তখন উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, তোমার কী হয়েছে? ওহে আমার পিচ্চি মিষ্টি মেয়ে! মেয়েটি বলল, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বদ দু’আ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ আমার বয়স যেন বড় না হয় (আমি দীর্ঘজীবী না হই)। সুতরাং এখন থেকে আমি আর বয়সে বড় হব না। অথবা সে سِنِّي এর স্থলে قَرْنِي (আমার চুল) বলেছিল। 

একথা শুনে উম্মু সুলায়ম (রাঃ) তাড়াতাড়ি ওড়না পরে বেরিয়ে পড়েন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন তাঁকে (লক্ষ করে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কী ব্যাপার, হে উম্মু সুলায়ম! তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি আমার ইয়াতীম বালিকাটিকে বদ দু’আ করেছেন? তিনি বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! তা কি? (কিসের বদ দু’আ?) উম্মু সুলায়ম বললেন, সে তো বলছে যে, আপনি তাকে বদ দু’আ করেছেন যেন তার বয়স না বাড়ে কিংবা তার চুল বৃদ্ধি না পায়। 

বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকী হাসি দিয়ে বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! তুমি কি জাননা যে, আমার প্রতিপালকের সঙ্গে এই মর্মে আমি শর্ত (প্রতিশ্রুতি) বদ্ধ হয়েছি এবং আমি বলেছি যে, আমি তো একজন মানুষ। মানুষ যাতে সন্তুষ্ট হয় আমিও তাতে সন্তুষ্ট হই। আমিও অসন্তুস্ত হই যে ভাবে মানুষ রাগান্বিত হয়ে থাকে। সুতরাং আমি আমার উম্মাতের কোন ব্যক্তি কে বদ দু’আ করলে সে যদি তার যোগ্য না হয় তাহলে তা তার জন্য পবিত্রতা, আত্মশুদ্ধি ও নৈকট্যের মাধ্যম বানিয়ে দিন, যা তাকে কিয়ামত দিবসে সে আপনার নৈকট্য লাভ করিয়ে দিবে। আবূ মা'আন (রহঃ) উল্লেখিত তার হাদীসে তিন জায়গায় (يتيمة এর স্থলে) يُتَيِّمَةٌ (তাসগীর) রূপে উল্লেখ করেছেন, (যার অর্থ ছোট ইয়াতীম বালিকা)।

৬৩৯০.    মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না আনাযী ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি বালকদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে এলেন। সে সময় আমি একটি দরজার আড়ালে আত্মগোপন করলাম। তিনি বলেন, তিনি আমাকে (আদর করে) কাঁধে থাপ্পড় দিলেন এবং বললেন, যাও, মুআবিয়াকে আমার নিকট ডেকে আন। তিনি বলেন, তখন আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং বললাম, তিনি আহার করেছেন। (আমি ফিরে এলে) তিনি বলেন, এরপর তিনি আমাকে আবার বললেন, যাও, মুয়াবিআকে আমার কাছে ডেকে আন। তখন আমি তার কাছে গেলাম এবং (ফিরে এসে) বললাম, তিনি আহার করেছেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্‌ যেন তার উদর পূর্তি না করেন। ইবনুল মুসান্না (রহঃ) বলেন, আমি উমায়্যাকে বললাম, حَطَأَنِي এর অর্থ কি? তিনি বললেন, قَفَدَنِي قَفْدَةً অর্থাৎ তিনি আমাকে (আদর করে) কাঁধে চাপড় দিলেন।

৬৩৯১.    ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) ... আবূ হামযা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি বালকদের সঙ্গে খেলছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে এলেন। তখন আমি তাঁর থেকে আত্মগোপন করলাম। ...... এরপর তিনি তার অনুরূপ উল্লেখ করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ২৭. মিথ্যাবলা হারাম ও তার মুবাহ (বৈধ) হওয়া প্রসঙ্গে


৬৩৯২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা মন্দ দুই চেহারা বিশিষ্ট ব্যক্তি। সে এই দলের কাছে এক চেহারায় আসে অন্য দলের কাছে অন্য চেহারায় যায়।

৬৩৯৩.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ও ইবনু জুরায়জ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বাপেক্ষা মন্দ মানুষ সেই, যে দুই মুখ বিশিষ্ট, একদলের কাছে এক মুখী হয়ে আসে ও অন্য দলের কাছে আরেক মুখী হয়ে যায়।

৬৩৯৪.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) অন্য সনদেও যুহায়র হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সর্বাপেক্ষা মন্দ লোক হিসেবে দুই চেহারা বিশিষ্ট ব্যক্তিকে দেখতে পাবে; যে এই দলের কাছে এক চেহারা নিয়ে আসবে, ঐ দলের কাছে অন্য চেহারা নিয়ে যাবে।

পরিচ্ছেদঃ ২৮. কুটনামী হারাম হওয়া


৬৩৯৫.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... হিজরতকারিণীদের মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে প্রথম বায়আত গ্রহণকারীদের অন্যতমা উম্মু কুলসূম বিনত উকবা ইবনু আবী মুআয়ত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ সে ব্যক্তি মিথ্যাবাদী নয়, যে মানুষের মাঝে আপোষ মীমাংসা করে দেয়। সে কল্যাণের জন্যই বলে এবং কল্যাণের জন্যই চোগলখুরী করে। 

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত কোন বিষয়ে মিথ্যা বলার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে আমি শুনিনি। যুদ্ধ ক্ষেত্রে, লোকদের মাঝে আপোষ-মীমাংসার জন্য, স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর কথার ও স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর কথা প্রসঙ্গে।

৬৩৯৬.    আমর নাকিদ (রহঃ) ... মুহাম্মাদ ইবনু মুসলিম ইবনু উবায়দুল্লাহ ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। সালিহ বর্ণিত হাদীসে একটু পার্থক্য রয়েছে। তিনি (রাবী) বলেন, আর লোকেরা যা বলে তাতে তাঁর অন্য কিছুর অনুমতি দানের কথা আমি শুনিনি তিনটি ব্যতীত, যা ইবনু শিহাব (রহঃ) এর উক্তিরূপে ইউনুস (রহঃ) বর্ণনা করেছেন।

৬৩৯৭.    আমর নাকিদ (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে এই সনদে তার উক্তি نَمَى خَيْرًا (কল্যাণের খাতিরেই চোগলখুরী করে) পর্যন্ত বর্ণিত আছে। এর পরের অংশ তিনি উল্লেখ করেননি।

৬৩৯৮.    মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! আমি তোমাদের জানাচ্ছি আযহ (عَضْه) কী? এ হচ্ছে কুৎসা রটনা করা, যাতে মানুষের মাঝে বৈরিতার সৃষ্টি হয়। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি সত্য কথা বলতে বলতে সত্যবাদী হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়; আবার কেউ মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যাবাদী হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়।

পরিচ্ছেদঃ ২৯. মিথ্যার কদর্যতা এবং সত্যের সৌন্দর্য ও তার ফযীলত


৬৩৯৯.    যুহায়ব ইবনু হারব, উসমান ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সত্যবাদিতা নেকীর দিকে পথ প্রদর্শন করে আর নেকী জান্নাতের পথের নির্দেশ দেয়। কোন মানুষ সত্য কথা রপ্ত করতে থাকলে অবশেষে আল্লাহর কাছে (সত্যবাদী) হিসেবে (তার নাম) লিপিবদ্ধ হয়। আর মিথ্যা পাপের পথে পরিচালিত করে এবং জাহান্নামের দিকে পথ দেখায়। কোন মানুষ মিথ্যা বলতে থাকলে এমনকি আল্লাহর কাছে (তার নাম) মিথ্যাবাদীরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়।

৬৪০০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও হান্নাদ ইবনু সারঈ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সত্যবাদিতা তো নেকী; আর নেকী জান্নাতের পথ প্রদর্শন করে। কোন বান্দা সত্যের সাধনা করলে অবশেষে সত্যবাদী হিসাবে তার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। আর মিথ্যা তো পাপ এবং পাপ জাহান্নামের পথে পরিচালিত করে। আর কোন বান্দা মিথ্যায় লেগে থাকলে অবশেষে তার নাম মিথ্যাবদী হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়। ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) তার বর্ণিত হাদীসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বলেছেন।

৬৪০১.    হাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সত্য আকড়িয়ে ধরা তোমাদের একান্ত কর্তব্য কেননা সত্য নেকীর দিকে পরিচালিত করে, আর নেকী জান্নাতের পথে পরিচালিত করে। কোন ব্যক্তি সর্বদা সত্য বলার অভ্যাস রপ্ত করলে ও সত্যের উপর সংকল্পবদ্ধ হলে আল্লাহর কাছে সে সত্যবাদীরূপে লিপিবদ্ধ হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে সাবধান থাক! কেননা মিথ্যা পাপের দিকে পরিচালিত করে। আর পাপ (নিশ্চিত জাহান্নামের) অগ্নির দিকে পরিচালিত করে। কোন ব্যক্তি মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকলে এবং মিথ্যার উপর সংকল্পবদ্ধ হলে তার নাম আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদীরূপে লিপিবদ্ধ হয়।

৬৪০২.    মিনজাব ইবনুল হারিস তামিমী (রহঃ) ... ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ঈসা (রহঃ) এর হাদীসে يَتَحَرَّى الصِّدْقَ উল্লেখ করেননি। আর ইবনু মুসহির (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে অবশেষে يَتَحَرَّى الْكَذِبَ কথাটির উল্লেখ করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৩০. ক্রোধের সময় যে নিজকে নিয়ন্ত্রন করে তার ফযীলত এবং কিসে ক্রোধ দূর হয় তার বর্ণনা


৬৪০৩.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও উসমান ইবনু আবী শায়বা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের মধ্যে কাকে সন্তানহীন বলে গণ্য কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা যার সন্তান হয় না তাকেই সন্তানহীন মনে করি। তিনি বললেন, সে ব্যক্তি সন্তানহীন নয় বরং সেই ব্যক্তই সন্তানহীন, যে তার কোন সন্তান আগে পাঠায়নি (অর্থাৎ যার জীবদ্দশায় তার সন্তান মৃত্যূবরণ করেনি)। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের মধ্যে কাকে পালোয়ান বলে গণ্য কর? আমরা বললাম, যাকে লোকেরা কুস্তিতে হারাতে পারে না। তিনি বললেনঃ তা নয়; বরং (প্রকৃত বীর সেই) যে ক্রোধের সময় নিজেকে বশে রাখতে পারে।

৬৪০৪.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে তার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৪০৫.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সেই ব্যক্তি প্রকৃত বীর নয়, যে কুস্তিতে বিজয়ী হয়। প্রকৃত বীর সেই; যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারে।

৬৪০৬.    হাজিব ইবনুল ওয়ালীদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ সেই ব্যক্তি প্রকৃত বীর নয়, যে কুস্তিতে বিজয়ী হয়। লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাহলে প্রকৃত বীর কে? তিনি বললেনঃ প্রকৃত বীর সেই, যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারে।

৬৪০৭.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৪০৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ... সুলায়মান ইবনু সুরদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে দু'ব্যক্তি ঝগড়া-ঝাটিতে প্রবৃত্ত হল। তখন তাদের একজনের দু'চক্ষু (রাগে) লাল হয়ে গেল এবং তার শিরা-উপশিরা ফুলে উঠল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি এমন একটি কালেমা জানি, যা পাঠ করলে তার ক্রোধ দুর হয়ে যায়। আর তা হচ্ছে أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ (আমি বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই)। (এ কথা শুনে) সে ব্যক্তি বলল, আপনি কি আমাকে পাগল দেখতে পাচ্ছেন? ইবনুল আ'লা (রহঃ) বলেন, সে বলল, অর্থাৎ তিনি الرَّجُل শব্দটি বলেননি।

৬৪০৯.    নাসর ইবনু আলী আল জাহযামী (রহঃ) ... সুলায়মান ইবনু সুরাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দু'ব্যক্তি বাকবিতন্ডা করছিল। তাদের একজন ভয়ানক ক্রোধানিত হন এবং তার চেহারা রাগে লাল হয়ে গেল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রতি তাকিয়ে বললেনঃ আমি এমন একটি কালেমা জানি যা পাঠ করলে তা (ক্রোধ) তার থেকে চলে যায়। (আর তা হল) أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ আমি বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। তখন যারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা শুনেছেন, তাদের মধ্য থেকে একজন সেই ব্যক্তির দিকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, তুমি কি জান, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মাত্র কী বলেছেন? তিনি বলেছেনঃ অবশ্যই আমি এমন একটি কালেমা জানি, তা যদি সে পাঠ করত তাহলে তার থেকে তা (গোস্বা) চলে যেত। (আর তা হল) এই أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ (আমি বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর পানাহ চাই) তখন সে ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি কি আমাকে পাগল মনে করছ?

৬৪১০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৩১. মানুষকে এমনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে যে, সে নিজকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারে না


৬৪১১.    আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন জান্নাতে আদম (আলাইহিস সালাম) এর আকৃতি দান করেন। তখন তিনি তাকে যতদিন আল্লাহর ইচ্ছা ফেলে রেখে দিলেন। আর ইবলীস তার চতুর্দিকে ঘুরাফেরা করতে এবং দেখতে লাগল যে, জিনিশটি কি? সে যখন দেখতে পেল, তা শূন্য পাত্র তখন বুঝল যে, (আল্লাহ) তাকে এমন এক মাখলুক রূপে করেছেন, যে নিজকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না।

৬৪১২.    আবূ বকর ইবনু নাফি' (রহঃ) ... হাম্মাদ এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৩২. মুখমণ্ডলে মারার নিষেধাজ্ঞা


৬৪১৩.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের মধ্যে কেউ তার ভাই এর সঙ্গে মারামারি করে তখন সে যেন তার চেহারা থেকে বেঁচে থাকে (চেহারায় না মারে)।

৬৪১৪.    আমর নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আর তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কাউকে মারে ...।

৬৪১৫.    শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন প্রহার করে তখন সে যেন চেহারা থেকে আত্মরক্ষা করে (চেহারায় আঘাত না করে)।

৬৪১৬.    উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আম্বারী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার ভাইকে প্রহার করে তাহলে সে যেন তার মুখমণ্ডলে আঘাত না করে।

৬৪১৭.    নাসর ইবনু আলী আল যাহযামী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আর ইবনু হাতিম বর্ণিত হাদীসেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন তার ভাইকে প্রহার করে সে যেন তার চেহারা আঘাত করা থেকে বেঁচে থাকে। কেননা, আল্লাহ তা’আলা আদম (আলাইহিস সালাম) কে তার নিজ আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন।

৬৪১৮.    মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার ভাইকে প্রহার করে, সে যেন তার চেহারা থেকে বেঁচে থাকে।

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. যে ব্যক্তি লোকদের অন্যায়ভাবে শাস্তি দেয় তার জন্য কঠোর সতর্কবাণী


৬৪১৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... হিশাম ইবনু হাকীম ইবনু হিযাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তিনি একবার সিরিয়ায় কয়েকজন লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, যাদের সূর্য তাপে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল এবং তাদের মাথার উপর গরম তৈল ঢালা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেন, এ কী ব্যাপরে! তাকে বলা হল যে, খাজনার জন্য শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তখন তিনি বললেন, সাবধান! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ সে সব লোকদের শাস্তি দিবেন, যারা দুনিয়াতে মানুষকে (না হক) শাস্তি দেয়।

৬৪২০.    আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... হিশামের পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার হিশাম ইবনু হাকীম ইবনু হিযাম সিরিয়ার কৃষকদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। এদের তীব্র রৌদ্রতাপে দাঁড় করানো হয়েছিল। তিনি বললেন এদের কী হয়েছে? তারা বলল, জিযয়ার জন্য এদের পাকড়াও করা হয়েছে। তখন হিশাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাদের শাস্তি দিবেন যারা পৃথিবীতে (অন্যায়ভাবে) মানুষকে শাস্তি দেয়।

৬৪২১.    আবূ কুরায়ব (রহঃ) ও ইসহাক ইবন ইবরাহীম (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি জারীর বর্ণিত হাদীসে এইটুকু অতিরিক্ত উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেছেন, সে সময় ফিলিস্তীনে তাদের প্রশাসক (গভর্নর) ছিলেন উমায়র ইবনু সা’দ। তিনি তাঁর কাছে যান এবং তার সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। এরপর তিনি তাদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

৬৪২২.    আবূ তাহির (রহঃ) ... হিশম ইবনু হাকীম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি এলাকার আমীরকে দেখতে পান যে, তিনি জিযয়া আদায়ের জন্য কৃষকদের রৌদ্রতাপে শাস্তি দিচ্ছিল। তখন তিনি বললেন, এ কী! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সেসব লোকদের শাস্তি দিবেন, যারা দুনিয়াতে মনুষকে (না হক) শাস্তি দেয়।

পরিচ্ছেদঃ ৩৪. যে ব্যক্তি মসজিদে, বাজারে বা অন্য কোন লোক সমাবেশে অস্রসহ প্রবেশ করে তাকে তার (তীরের) ফলক ধরে রাখার আদেশ


৬৪২৩.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জাবির (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, এক ব্যক্তি তীরসহ মসজিদে হাঁটছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এর ফলক (ধারালো অংশ) আকড়ে ধরে রাখে।

৬৪২৩.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ রাবী (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি কিছু তীর নিয়ে মসজিদে এসেছিলেন। সে এগুলোর ধারালো দিক বের করে রেখেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ধারালো দিক আঁকড়ে রাখার জন্য নির্দেশ দিলেন, যাতে কোন মুসলমান আঘাত না পায়।

৬৪২৪.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জাবির (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, এক ব্যক্তি তীরসহ মসজিদে প্রবেশ করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এর ফলকগুলো (ধারালো দিকটা) আকড়ে ধরে রেখো।

৬৪২৫.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মসজিদে তীর বন্টন করছিল। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এর ধারালো দিকটা আগলে রেখে চলার নির্দেশ দেন। ইবনু রুমহ (রহঃ) كان رجل يصدق (يَتَصَدَّقُ স্থলে) বলেছেন।

৬৪২৬.    হাদ্দাব ইবনু খালিদ (রহঃ) ... আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি তার হাতে বর্শা নিয়ে কোন মজলিসে কিংবা বাজারে চলাফেরা করে-তাহলে সে যেন এর ফলক (ধারালো দিকটা) আগলে রাখে। এরপরও (আবার বলছি) যেন সে তার ধারালো দিকটা আগলে রাখে। আবারও বলছি যেন সে তার ধারালো দিকটা আগলে রাখে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা একে অপরের উপর বর্শা তাক না করা পর্যন্ত মৃত্যূবরণ করলাম না।

৬৪২৭.    আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আশআরী ও মুহাম্মাদ ইবনুল আ'লা (রহঃ) ... আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন হাতে বর্শা নিয়ে আমাদের মসজিদে আসে কিংবা আমাদের বাজারে গমন করে সে যেন এর ধারালো দিকটা নিজের হাতের তালু দ্বারা আগলে রাখে। নয়তো তা দ্বারা কোন মুসলমানের (দেহে) আঘাত লাগতে পারে। অথবা তিনি বলেছেন, সে যেন তার ফলক (ধারালো অংশ) নিয়ন্ত্রণে রাখে।

পরিচ্ছেদঃ ৩৫. কোন মুসলমানের দিকে অস্র দিয়ে ইশারা করা নিষিদ্ধ


৬৪২৮.    আমর নাকিদ ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আবূল কাসিম (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার ভাই এর প্রতি (লৌহ নির্মিত) অস্ত্র উত্তলোন করে সে তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত ফিরিশতাগণ তাকে লানত করতে থাকে যদিও তার সহোদর ভাই হয়।

৬৪২৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৪৩০.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমদের মধ্যে কেউ যেন তরবারী উঁচিয়ে তার ভাই এর প্রতি ইশারা না করে। কেননা, তোমরা জান না, শয়তান তার হাতে ভর করে তাকে জাহান্নামের গর্তে পড়ে যাবে।

পরিচ্ছেদঃ ৩৬. রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করার ফযীলত


৬৪৩১.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। তখন সে রাস্তার উপর একটি কাঁটাযুক্ত বৃক্ষের ডাল দেখতে পেয়ে তা সরিয়ে দিল। আল্লাহ তার এই ভাল কাজটি পছন্দ করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন।

৬৪৩২.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলার সময় একটি কাঁটাযুক্ত বৃক্ষের শাখা দেখে বলে, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই মুসলমানদের যাতায়াতের পথ থেকে এটা সরিয়ে ফেলব, যাতে তা তাদের কষ্ট না দেয়। ফলে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়।

৬৪৩৩.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জান্নাতে এক ব্যক্তিকে একটি ঘরে বেড়াতে (আনন্দ উপভোগ করতে) দেখেছি। একটি গাছের কারণে যেটি সে রাস্তার উপর থেকে কেটে অপসারণ করেছিল, যেটি লোকদের কষ্ট দিত।

৬৪৩৪.    মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একটি বৃক্ষ মুসলমানদের (রাস্তা চলাচল করার সময়) কষ্ট দিত। এক ব্যক্তি এসে সেটি কেটে ফেলে। এরপর সে জান্নাতে প্রবেশ করে।

৬৪৩৫.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাকে এমন একটি জিনিস শিক্ষা দিন, যার দ্বারা উপকৃত হতে পারি। তিনি বললেনঃ মুসলমানদের যাতায়াতের রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দিবে।

৬৪৩৬.    ইয়াহইয়াহ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ বারযাহ আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জানিনা, হয়ত আপনি চলে যাবেন। আর আমি বেঁচে থাকব। কাজেই আমাকে এমন কিছু পাথেয় দিয়ে যান যা দ্বারা আল্লাহ আমাকে উপকৃত করবেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন এটি কররে, এটি করবে। আবূ বকর (রাঃ) তা বিস্মৃত হয়ে গেছেন ...... এবং রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলবে।

পরিচ্ছেদঃ ৩৭. বিড়াল ও এরূপ জন্তু যা মানুষকে কষ্ট দেয় না, তাদের শাস্তি দেওয়া হারাম


৬৪৩৭.    আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আসমা ইবনু উবায়দ দাবিয়্যু (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একটি বিড়ালকে কষ্ট দেওয়ার অপরাধে একটি স্ত্রীলোককে শাস্তি দেওয়া হয়। এই বিড়ালটি সে বেঁধে রাখে। অবশেষে সেটি মারা যায়। এরপর সে (স্ত্রীলোকটি) জাহান্নামে প্রবেশ করে। সে উক্ত বিড়ালটিকে বন্দী অবস্থায় খাবারও দেয়নি, পানিও পান করায়নি, এমনকি তাকে ছেরেও দেয়নি যে, ভূ-পৃষ্ঠের কীট-পতঙ্গ খেয়ে সে বাঁচবার সুযোগ পায়।

৬৪৩৮.    হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও আবদুল্লাহ ইবনু জাফর ইবনু ইয়াহইয়াহ ইবনু খালিদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জুওয়ায়রিয়া বর্ণিত হাদীসের অর্থের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। 

নাসর ইবনু আলী জাহযামী (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একটি স্ত্রীলোককে একটি বিড়ালের জন্য আযাব দেওয়া হয়। সে এটিকে বেঁধে রাখে এবং এটিকে খাবারও দেয়নি এবং পানিও পান করায়নি; এমনকি ভূ-পৃষ্ঠের কীট-পতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য তাকে ছেড়েও দেয় নি।

৬৪৩৯.    নাসর ইবনু আলী জাহযামী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৪৪০.    ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মাদ ইবন মুনাব্বিহ (রহঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের এসব হাদীস শুনিয়েছেন। এরপর তিনি বেশ কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে একটি হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একটি স্ত্রীলোক একটি বিড়ালকে কষ্ট দেওয়ার দরুণ জাহান্নামে প্রবেশ করে। সে এটিকে শক্ত করে বেঁধে রাখে এবং বন্দী দশায় সে এটিকে খাবার দেয়নি, পানীয় দেয়নি এবং তাকে বন্ধনমুক্ত করে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা-মাকড় খেয়ে বাচতে পারে। অবশেষে বিড়ালটি ক্ষুৎপিপাসায় (কাতর হয়ে) মারা যায়।

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. অহংকার করা হারাম


৬৪৪১.    আহমাদ ইবনু ইউসূফ আযদী (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইজ্জত সম্মান তাঁর (আল্লাহর) ভূষণ এবং অহংকার তাঁর চাঁদর। যে ব্যক্তি এই ব্যাপারে আমার (অর্থাৎ আল্লাহর) সঙ্গে ঝগড়ায় অবতীর্ণ হবে আমি তাকে অবশ্যই শাস্তি দিব।

পরিচ্ছেদঃ ৩৯. মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ করা নিষিদ্ধ


৬৪৪২.    সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না। আর আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ সে ব্যক্তি কে যে কসম খেয়ে বলে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করবো না? আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং আমল বরবাদ করে দিলাম, (কিংবা তিনি এরূপ কিছু বলেছেন।)

পরিচ্ছেদঃ ৪০. অসহায় ও অখ্যাত ব্যক্তিদের ফযীলত


৬৪৪৩.    সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন অনেক আলুথালু কেশধারী মলিন চেহারা বিশিষ্ট দরজা থেকে বিতাড়িত (নিগৃহীত অধঃপতিত) হয়েছে, যারা আল্লাহর নামে কসম করলে আল্লাহ তা সত্যে পরিণত করে দেন।

পরিচ্ছেদঃ ৪১. 'মানুষ ধ্বংস হল' বলা নিষিদ্ধ


৬৪৪৪.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনুল আলো ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি বলে, মানূষ ধ্বংস হোক তাহলে সে সর্বাপেক্ষা অধিক ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেন, আমি জানিনা যে, তিনি هْلَكُهُمْ (সে তাদের ধ্বংস করল) বলেছেন, না أَهْلَكُهُمْ (তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক ধ্বংসপ্রাপ্ত) বলেছেন।

৬৪৪৫.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... সুহায়ল (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৪২. প্রতিবেশীর অধিকার সম্পর্কে জোরদারের নির্দেশ এবং তার প্রতি সদ্ব্যবহার প্রসঙ্গ


৬৪৪৬.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, জিবরীল (আলাইহিস সালাম) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এমনভাবে জোর দিয়ে নির্দেশ দেন যে, আমি ধারণা করছিলাম তিনি সম্ভবত তাকে ওয়ারিস বানিয়ে দিবেন।

৬৪৪৭.    আমর নাকিদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৪৪৮.    উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর কাওয়ারিরী (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জিবরীল (আলাইহিস সালাম) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এমনভাবে নির্দেশ দিচ্ছিলেন যে, আমি ধারণা করছিলাম তিনি সম্ভবত তাকে ওয়ারিস বানিয়ে দিবেন।

৬৪৪৯.    আবূ কামিল জাহদারী ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবূ যার! যখন তুমি (তরকারী) রান্না করবে তখন তাতে পানি বেশী দিবে যাতে ঝোলের পরিমাণ অধিক হয় এবং তোমরা তোমাদের প্রতিবেশীর প্রতি লক্ষ্য রেখো।

৬৪৫০.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বন্ধু (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে অসীয়াত (বিশেষ আদেশ) করেছেন, যখন তুমি ঝোল (তরকারী) রান্না করবে তখন তাতে পানি বেশী করে দিবে। এরপর তুমি তোমার প্রতিবেশীর পরিজনের প্রতি দৃষ্টি রাখবে এবং তা থেকে তাদের কিছু সৌজন্যমূলক পৌঁছিয়ে দিবে।

পরিচ্ছেদঃ ৪৩. সাক্ষাৎকালে হাসি মুখে থাকা মুস্তাহাব


৬৪৫১.    আবূ গাসসান মিসমাঈ (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ কোন কিছু দান করাকে তুচ্ছ জ্ঞান করো না, এমনকি (অপারগতায়) তোমার ভাইয়ের সাখে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাকেও।

পরিচ্ছেদঃ ৪৪. যা হারাম (নিষিদ্ধ) নয় এমন বিষয়ে সুপারিশ করা মুস্তাহাব


৬৪৫২.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কোন ব্যক্তি প্রয়োজন নিয়ে এলে তিনি তাঁর সঙ্গীদের বলতেন, তোমরা এর জন্য সুপারিশ কর, তাহলে সাওয়াব পাবে। আর আল্লাহ তার নবীর মুখে এমন সমাধান দেন যা তিনি পছন্দ করেন।

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. সৎ লোকের সহচর্য পছন্দ করা এবং মন্দ লোকের সংসর্গ থেকে দূরে থাকা


৬৪৫৩.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আলা হামদানী (রহঃ) ... আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সৎ সাথী ও মন্দ সাথীর উপমা মিশকধারী ও হাঁপরে ফূৎকার দানকারীর (কামারের) মত। মিশকধারী (বিক্রেতা) হয়ত তোমাকে কিছু (সুগন্ধি লাগিয়ে দেবে) অথবা তুমি তার নিকট থেকে কিছুটা খরিদ করবে কিংবা (অন্তত) তুমি তার কাছ থেকে সুঘ্রাণ লাভ করবে। আর হাঁপরে ফুকদানকারীরা (কামার) হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে অথবা তুমি তার দুর্গন্ধ পাবে।

পরিচ্ছেদঃ ৪৬. কন্যা সন্তানের প্রতি সাদাচারনের ফযীলত


৬৪৫৪.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কাহহায, আবদুল্লাহ ইবন আবদুর রহমান ইবনু বাহরাম ও আবূ বকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমার কাছে একটি স্ত্রীলোক এল। তখন তার সঙ্গে তার দুটি মেয়ে ছিল। সে আমার কাছে কিছু চাইল। সে একটি খেজুর ছাড়া আমার কাছে কিছু পেলনা। আমি সেই খেজুরটিই তাকে দিলাম। সে সেটি নিয়ে তা তার দু'মেয়েকে ভাগ করে দিল। নিজে তা থেকে কিছুই খেলনা। এরপর সে উঠে চলে গেল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলে তাঁর কাছে আমি ঘটনাটি বর্ণনা করলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যক্তি কন্যা সন্তান লালন পালনের পরীক্ষায় নিঃপতিত হয় আর তাদের সঙ্গে সে সদাচারন করে, তার জন্য এরা জাহান্নামের পর্দা হবে।

৬৪৫৫.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার) এক মিসকীন মহিলা তার দুটি কন্যা সন্তানকে বহন করা অবস্থায় আমার কাছে এল। আমি তাদের তিনটি খেজুর খেতে দিলাম। সে কন্যাদ্বয়ের প্রত্যেককে একটি করে খেজুর দিল এবং একটি নিজে খাওয়ার জন্য তার মুখে তুলল। তখন কন্যা দু'টি এই খেজুরটিও খেতে চাইল। সে তখন নিজে খাওয়ার জন্য যে খেজুরটি মুখে তুলেছিলো সেটি তাদের দুইজনের মধ্যে ভাগ করে দিল। তার এ ব্যাপার আমাকে অবাক করে দিল। পরে আমি সে যা করেছে তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা এই কারণে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছেন অথবা (বললেন) তিনি তাকে এই কারণে জাহান্নাম থেকে নাজাত দিয়েছেন।

৬৪৫৬.    আমর নাকিদ (রহঃ) ... আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুটি কন্যা সন্তানকে বালিগ হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করে, কিয়ামত দিবসে সে ও আমি এমন অবস্থায় আসব, (এই বলে) তিনি তার হাতের আংগুলগুলো একত্র করলেন।

পরিচ্ছেদঃ ৪৭. সন্তানের মৃত্যুতে ধৈর্যধারনকারীর ফযীলত


৬৪৫৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন মুসলমান ব্যক্তির তিনটি সন্তান মারা গেলে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না, কসম বাস্তবায়নের পরিমাণ ব্যতীত (অর্থাৎ জাহান্নামের উপরে অবস্থিত পুলসিরাত পার হওয়ার পরিমাণ)।

৬৪৫৮.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে মালিকের সনদে তার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে সুফিয়ান (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে فَتَمَسَّهُ النَّارُ স্থলে فَيَلِجَ النَّارَ আছে (সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে, কসম বাস্তবায়নের পরিমাণ ব্যতীত)।

৬৪৫৯.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতিপয় আনসারী মহিলাদের লক্ষ্য করে বলেছেনঃ তোমাদের কারো তিনটি সন্তান মারা গেলে সে যদি (সাওয়াব বনে করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য) ধৈর্যধারণ করে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন এক মহিলা বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! দু'জন মারা গেলে তিনি বললেন, দু'জন হলেও।

৬৪৬০.    আবূ কামিল জাহদারী ফুযায়ল ইবনু হুসায়ন (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! পুরুষ লোকেরাই আপনার কথাবার্তা (হাদীস) শুনে থাকে। সুতরাং আপনি আপনার পক্ষ থেকে আমাদের (নারী সমাজের) জন্য একটি দিন নির্ধারিত করে দিন, যে দিন আমরা আপনার কাছে সমবেত হব এবং আল্লাহ আপনাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা থেকে আমাদের শেখাবেন। তিনি বললেনঃ বেশ তো, অমুক অমুক দিন তোমরা একত্র হবে। তারা (নির্ধারিত দিনে) সমবেত হল। 

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এলেন এবং আল্লাহ তাঁকে যা শিখিয়েছেন তা থেকে তাদের শিক্ষা দিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন স্ত্রীলোক তার জীবদ্দশায় তিনটি সন্তান আগাম পাঠালে (অর্থাৎ তিনটি সন্তান মারা গেলে) তারা কিয়ামত দিবসে তাঁর জন্য আগুন (জাহান্নাম) থেকে পর্দা হবে। তখন এক মহিলা বলল, আর দু'জন, দু'জন। দু'জন (হলে কি হুকুম)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, দুজন (হলেও), দু'জন (হলেও), দু'জন (হলেও)।

৬৪৬১.    মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ইসবাহানী (রহঃ) এই সনদে তার মর্মার্থের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন তাবে তারা সবাই আবদুর রহমান ইবনু ইসবাহানী (রহঃ) থেকে এইটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, আবূ হাযিমকে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বলতে শুনেছেন, এমন তিনটি সন্তান যারা বায়োঃপ্রাপ্ত বালিগ হয়নি।

৬৪৬২.    সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) ... আবূ হাসসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বললাম, আমার দুটি পুত্র সন্তান মারা গিয়েছে। আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরফ থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করবেন, যাতে আমরা মৃতদের সম্পর্কে আমাদের অন্তরে সান্ত্বনা পেতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাদের জন্য তাদের ছোট সন্তানরা জান্নাতের প্রজাপতি তুল্য। তাদের কেউ কেউ তার পিতার সঙ্গে মিলিত হবে, অথবা তিনি বলেছেন পিতামাতা উভয়ের সঙ্গে মিলিত হবে। এরপর তার পরিধানের বস্ত্র কিংবা হাত ধরবে, যেভাবে এখন আমি তোমার কাপড়ের আঁচল ধরছি। এরপর আর বিরত হবে না, অথবা তিনি বলেছেন, আল্লাহ তাকে তার বাপ-মা সহ জান্নাতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত ছাড়বেনা। সুওয়ায়দ (রহঃ) এর বর্ণনায় 'আবূ সালীল আমাদিগকে হাদীস বর্ণনা করেছেন' উল্লেখ আছে। উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... তায়মী (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমন কিছু শুনেছেন যা আমাদের মৃতদের সম্পর্কে আমাদের অন্তরে প্রশান্তি এনে দিবেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ ......।

৬৪৬৩.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও আবূ সাঈদ আশাজ্জ্ব (রহঃ) ... উমর ইবন হাফস ইবন গিয়াস অন্য সনদে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একজন স্ত্রীলোক তার একটি পুত্র সন্তান নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর নাবী! আপনি তার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন। আমি তিনটি সন্তান দাফন করেছি। তখন তিনি বললেন, তুমি তিনটি সন্তান দাফন করেছ? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি তো অবশ্যই জাহান্নাম থেকে একটি মযবুত দেয়াল নির্মাণ করেছ। তাদের মধ্য থেকে উমর ইবনু হাফস তার দাদার সুত্রে বর্ণনা করেছেন। অবশিষ্টরা তালক (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তারা দাদার উল্লেখ করেননি।

৬৪৬৪.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও যুবায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক স্ত্রীলোক তার একটি পুত্র সন্তান নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সে অসুস্থ এবং তার ব্যাপারে আশংকা করছি। আর আমি তিনটি সন্তান দাফন করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি জাহান্নাম থেকে একটি মযবুত প্রাচীর নির্মাণ করেছ। যুহায়র (রহঃ) তালক থেকে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি কুনিয়াত উল্লেখ করেননি।

পরিচ্ছেদঃ ৪৮. আল্লাহ্‌ তা'আলা যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন তিনি তার বান্দাদের কাছে তাকে প্রিয় করে দেন


৬৪৬৫.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কে ডেকে পাঠান এবং বলেন, আমি অমুককে ভালবাসি, তুমিও তাকে ভালবাস। তিনি বলেন, তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাকে ভালবাসেন। এরপর তিনি আসমানে ঘোষণা দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লহ অমুককে ভালবাসেন, সুতরাং আপনারাও তাকে ভালবাসুন। তখন আসমানের অধিবাসীরা তাকে ভালবাসে। তিনি বলেন, এরপর পৃথিবীবাসীর অন্তরে তার গ্রহনযোগ্যতা স্থাপিত হয়, (সে মকবুল বান্দা হিসেবে গণ্য হয়)। 

আর আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে অপছন্দ করেন তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কে ডেকে বলেন, আমি অমুক বান্দাকে অপছন্দ করি, তুমিও তাকে অপছন্দ কর। তিনি বলেন, তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাকে অপছন্দ করেন। এরপর তিনি আসমানের অধিবাসীদের প্রতি ঘোষণা দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা অমুককে অপছন্দ করেন। সুতরাং আপনারাও তাকে অপছন্দ করুন। তিনি বলেন, তখন তারা তার তাকে অপছন্দ করেন। এরপর পৃথিবীবাসীর অন্তরে তার প্রতি অপছন্দনীয়তা স্থাপিত হয়।

৬৪৬৬.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ), সাঈদ ইবন আমর আশআছী ও হারুন ইবন সাঈদ আয়লা (রহঃ) ... সুহায়ল (রাঃ) এই সনদে অনুরূপ বর্ণিত। তবে ইবনুল মূসায়্যাব (রহঃ) এর হাদীসে الْبُغْضِ (অপছন্দ করার) বিষয়টির উল্লেখ নেই।

৬৪৬৭.    আমর নাকিদ (রহঃ) ... সুহায়ল ইবন আবূ সালিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আরাফাতের মাঠে অবস্থান করছিলাম। তখন আমীরুল হাজ্জ উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) এলেন। লোকেরা তাঁকে দেখার জন্য দাড়িয়ে গেল। তখন আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আব্বাজান! আমার মনে হয়, আল্লাহ তা’আলা উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) কে ভালবাসেন। তিনি বলেন, সে কি? অর্থাৎ তুমি কিভাবে বুঝলে? আমি বললাম, এ কারণে যে, মানুষের অন্তরে তার ভালবাসা বদ্ধমূল হয়ে গেছে। তিনি বললেন, তোমার বাবার কসম! আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। এরপর তিনি সুহায়ল (রাঃ) থেকে জারীর (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করেন।

পরিচ্ছেদঃ ৪৯. আত্মাসমূহ সম্মিলিত (বহুমাত্রিক) দল


৬৪৬৮.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মাসমূহ সম্মিলিত সেনাবাহিনী (তুল্য) (স্বভাবজাত সাদৃশ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত)। এদের মধ্যে যারা পরস্পরের পরিচিত ছিল তারা (পৃথবীতে) পরস্পরে সখ্যতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়। যারা (সেখানে) অপরিচিত ছিল তারা (এখানেও) মতভেদে লিপ্ত হয়।

৬৪৬৯.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে মারফু সনদে বর্ণিত। তিনি বলেন, মানুষের উপমা হচ্ছে স্বর্ণ ও রৌপ্যের খনির মত। জাহিলিয়া যুগে যারা উত্তম ছিলেন তারা ইসলামী যুগেও উত্তম (বলে বিবেচিত হবেন), যখন তারা ফিকহ (দীনের) জ্ঞান সম্পন্ন হয় (দ্বীনের সমঝদার হয়ে থাকেন) আর আত্মাসমূহ সম্মিলিত বাহিনীতুল্য (স্বভাবজাত কারণে পৃথক পৃথক)। (সেখানে) যে সব আত্না পরস্পরে পরিচিত ছিল (দুনিয়াতে) সেগুলো সখ্যতার বন্ধনে আবদ্ধ; আর সেখানে যেগুলো অপরিচিত ছিল, এখানেও তারা মতভেদপূর্ণ অপরিচিত।

পরিচ্ছেদঃ ৫০. যে যাকে ভালবাসে সে তার সাথেই (থাকবে)


৬৪৭০.    আবদুল্লাহ ইবনু কা'নাব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল, কিয়ামত কবে (সংঘটিত হবে)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তার (কিয়ামতের) জন্য কি পাথেয় সঞ্চয় করেছ? সে বলল, আল্লাহ ও তার রাসূলের ভালবাসা। তিনি বললেনঃ তুমি তারই সঙ্গী হবে যাকে তুমি ভালবাস।

৬৪৭১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব, মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কবে (সংঘটিত হবে)? তিনি বললেনঃ তুমি তার জন্য কি সঞ্চয় করেছ? তখন সে বেশী কিছু উল্লেখ করতে পারল না। তিনি বলেন, কিন্তু সে বলল, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেন, তুমি তার সঙ্গেই (উঠবে) যাকে তুমি ভালবাস। 

মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। ...... এরপর তার অনুরূপ (বর্ণিত)। তবে এই বর্ণনায় এতটুকু পার্থক্য রয়েছেঃ বেদুঈনটি বলল, আমি কিয়ামতের জন্য বড় ধরণের কিছু (সম্বল) যোগাড় করিনি, যার উপর আত্মপ্রসাদ লাভ করতে পারি।

৬৪৭২.    আবূ রাবী আতাকী (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে? তিনি বললেনঃ তুমি কিয়ামতের জন্য কি পাখেয় সঞ্চয় করেছ? সে বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ভালবাসা। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই তুমি তার সঙ্গে উঠবে যাকে তুমি ভালবাস। 

আনাস (রাঃ) বলেন, ইসলাম গ্রহনের পরে কোন কিছুতে আমরা এত বেশী খুশী হইনি যতটা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বানীঃ "তুমি তার সঙ্গেই (থাকবে) যাকে তুমি ভালবাস" দ্বারা আনন্দ লাভ করেছি। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহ, তার রাসুল, আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) কে ভালবাসি। সুতরাং আমি আশা করি যে, কিয়ামত দিবসে আমি তাদের সঙ্গে থাকব, যদিও আমি তাদের মত আমল করতে পারিনি।

৬৪৭৩.    মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ গুবারী (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তবে তিনি (জাফর ইবনু সুলায়মান) আনাসের উক্তি "আমি ভালবাসি এবং তার পরবর্তী অংশ" উল্লেখ করেননি।

৬৪৭৪.    উসমান ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ে মসজিদে নববী থেকে বের হচ্ছিলাম। তখন মসজিদের দরযায় এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কিয়ামতের জন্য কি পাথেয় সঞ্চয় করেছ? রাবী বলেন, তখন লোকটি চুপ হয়ে গেল। এরপর সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তো সে জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সালাত, সিয়াম ও সাদাকা-খয়রাত সঞ্চয় করিনি। তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি তার সঙ্গেই থাকবে যাকে তুমি ভালবাস।

৬৪৭৫.    মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু আবদুল আযীয ইয়াশকারী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তার অনুরূপ বর্ণিত।

৬৪৭৬.    কুতায়বা, আবু গাসসান মিসমাঈ ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীস বর্ণিত।

৬৪৭৭.    উসমান ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। এরপর সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, সে ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কী ধারণা পোষণ করেন, যে একটি কাওমকে ভালবাসে অথচ সে তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন মানুষ যাকে ভালবাসে সে তার সাথেই (থাকবে)।

৬৪৭৮.    মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৬৪৭৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। ...... এরপর তিনি আমাশ (রহঃ) সুত্রে জারীর (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করেন।

পরিচ্ছেদঃ ৫১. নেককার লোকের প্রশংসা সুসংবাদ স্বরূপ এবং তা তার ক্ষতির কারণ নয়


৬৪৮০.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামিমী, আবূ রাবী, আবূ কামিল (জাহদারী), ফুযায়ল ইবনু হুসায়ন (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আরয করা হল, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে কি অভিমত, যে নেক আমল করে এবং লোকেরা তার প্রশংসা করে? তিনি বললেন, এতো মুমিন ব্যক্তির জন্য তাৎক্ষণিক (আগাম) সুসংবাদ।

৬৪৮১.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) অন্য সুত্রে মুহাম্মাদ ইবন বাশশার ... মুহাম্মাদ ইবন মুসান্না ... অন্য সুত্রে ইসহাক (রহঃ) ... হাম্মাদ ইবনু যায়দের সনদে আবূ ইমরান জাওনী (রহঃ) থেকে তার অনুরূপ বর্ণিত। আবদুস সামাদ (রহঃ) ব্যতীত শু'বার সূত্রে অন্যান্যদের হাদীসে 'এবং লোকেরা এর জন্য তাকে ভালবাসে' (يُحِبُّهُ) আছে। আর আবদুস সামাদ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে হাম্মাদ যেভাবে বলেছেন তদ্রূপ 'লোকেরা তার প্রশংসা করে' (يَحْمَدُهُ) রয়েছে।

No comments:

Powered by Blogger.