সংগীতের তালে উটের পথ চলা
সংগীতের তালে উটের পথ চলা
উটের গতিবৃদ্ধির জন্য যে সুরেলা গীত গাওয়া হয়, উহাকে আরবীতে হুদী বলা হয়। এ প্রথার সূচনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে মোল্লা আলী কারী (রহ.) লেখেন–জনৈক ব্যক্তি কোন কারণে তাঁর গোলামকে প্রহার করল এবং তাঁর আঙ্গুল কামড়ে থেতলে দিল। কিছু দিন পর তারা উভয়ে সফরে রওয়ানা হল। পথে গোলাম হাতের ব্যথায় দরুণ ওয়ায়, ওয়ায়, ওয়ায় বলে মাতম করছিল। গোলামের এআওয়াজের তালে তালে ঘোড়া তীব্র গতীত দৌড়াতে আরম্ভ করল। এ থেকেই সকলে বুঝতে পারে যে, উট সূরের তালে মত্ত হয়ে দ্রুত বেগে দৌড়ায়। এক পর্যায়ে এসে রীতিমত ইহা একটি স্বতন্ত্র বিদ্যায় রূপ নেয়। ঘোড়া তাড়ানোর গীতে রয়েছে কল্পনাতিত প্রভাব এ প্রসঙ্গে কয়েকটি সুপ্রসিদ্ধ ঘটনা রয়েছে।কথিত আছে যে, জনৈক ব্যক্তি এক বৃদ্ধ লোকের মেহমান হল। লোকটি বৃদ্ধের বাড়িতে এক কুৎসিত কালো গোলামকে দখল, সে একটি উটের সন্মুখে শৃংখলবব্ধাবস্থায় বসে আছে। গোলামটি তাকে বললঃ আপনি দয়া করে আমার মালিকের নিকট সুপরিশ করুন। কেননা সে মেহমান ব্যতিত অন্য কারও সুপারিশ গ্রহণ করে না। মেহমান গ্রাম্য মেজবানের নিকট সুপারিশ করলে সে বললঃ আপনার সুপরিশে আমি তাকে ছেড়ে দিচ্ছি। অন্যথায় সে জঘন্যতম অন্যায় করেছে।
মূল ঘটনা হল, আমার দশটি উট ছিল, এ গোলাম সে গুলোকে অনেক দূর হতে নিয় আসছিল। পথিমধ্যে সে গীত গাইতে আরম্ভ করল। সঙ্গে সঙ্গে সবকটি উট সুরের তালে মাতাল হয়ে আলাপাতাড়ি ছোটাছুটি করতে শুরু করল এবং অতিদ্রুত গতিতে কয়েক দিনের পথ মাত্র একদিনে অতিক্রম করে বাড়িতে ফিরল। বাড়িতে পৌছার পর দেখা গেল মাত্র একটি মাত্র উট কোন রকম প্রাণে বেঁচে আছে। তাছাড়া সকল উট গুলোই মারা গেছে। মেহমান লোকটি উক্ত ঘটনা শুনে আশ্চার্যম্বিত হয়ে সে গীতটি শুনতে চাইল। মেজবান গোলামক ডেকে গীতটি শুনাতে বলল। সে গীত শুরু না করতেই উট বিলকুল টানটান সোজা হয়ে দাঁড়াল; অতঃপর কিছুক্ষণের মধ্যেই মরুভূমির দিকে ছুটতে লাগল। মেজবান বেচারাও উম্মাদের মত এদিক সেদিক দৌড়াতে আরম্ভ করল।-মেরকাত-১৩২-১৩৩/৯
No comments: