সহিহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, অধ্যায়ঃ কিতাবুস স্বলাত-৩য়
পরিচ্ছেদঃ ৩৭. ইমামের প্রতি সালাতের পূর্ণতা বজায় রেখে সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ
৯২৮. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ মাসঊদ আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আগমন করে বলল, আমি অমুক ব্যাক্তির কারণে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ)-এ আসছি না। কেননা, সে আমাদের নিয়ে (সালাত (নামায/নামাজ) দীর্ঘ করে। তখন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নসীহত করার ক্ষেত্রে কখনও এত অধিক রাগান্বিত হতে দেখি নি, যতটা দেখলাম সে দিন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা (দ্বীন সম্পর্কে) ঘৃণা সৃষ্টি করেছে। তোমাদের যে কেউ লোকদের ইমামতি করবে, সে যেন সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষিপ্ত করে। কেননা, তার পিছনে বৃদ্ধ, দুর্বল ও অভাবগ্রস্ত (মানুষ) থাকে।
৯২৯. আবূ বকর ইবনু শায়বা, ইবনু নুমায়র ও ইবনু আবূ আমর (রহঃ) ... ইসমাঈল (রহঃ) সুত্রে উপরোক্ত সনদে হুশায়মের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৯৩০. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যখন তোমাদের মধ্যে কেউ লোকদের ইমামতি করবে, তখন (সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষিপ্ত করবে। কেননা, তাদের মধ্যে শিশু, বৃদ্ধ, দুর্বল, ও রুগ্ন, ব্যক্তি থাকে। আর যখন একাকী সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন যেভাবে মন চায় তা আদায় করবে।
৯৩১. ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাদের নিকট মুহাম্মাদুর বাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। রাবী আরও বলেন, তার মধ্যে একটি এই, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন সংক্ষিপ্তভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে। কেননা, তাদের মধ্যে বৃদ্ধ ও দুর্বল (লোক) থাকে। আর যখন একাকী সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন যত ইচ্ছা তা আদায় করবে।
৯৩২. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন সংক্ষিপ্ত করবে। কেননা, লোকদের মধ্যে দুর্বল, রুগ্ন ও অভাবী (মানুষ) থাকে।
৯৩৩. আবদুল মালিক ইবনু শু’আয়ব ইবনুল লাইস (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এই সনদে) অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতে রুগ্ন এর স্থলে বৃদ্ধ বলেছেন।
৯৩৪. মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... উসমান ইবনু আবূল-আস আস-সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, তুমি তোমার কাওমের ইমামতি করবে। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এই ব্যাপারে ভয় পাই। তিনি বললেন, আমার কাছে আস। এবং আমাকে তাঁর সামনে বসালেন। অতঃপর তার হাত আমার বুকের মাঝে রাখলেন। এরপর বললেন, ফিরে বস। এবার আমার পিঠে দুই কাঁধের মাঝে তার হাত রাখলেন। অতঃপর বললেন, নিজ কাওমের ইমামতি কর। আর যে কেউ তার কাওমের ইমামতি করবে, সে যেন তার সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষিপ্ত করে। কেননা, তাদের মধ্যে বৃদ্ধ, রুগ্ন, দুর্বল এবং এমন লোকও রয়েছে যার কোন প্রয়োজন আছে। অবশ্য যখন একাকী সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন সে যেরুপ ইচ্ছা করতে পারে।
৯৩৫. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... উসমান ইবন আবূল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যে শেষ উপদেশ দিয়েছিলেন তা হচ্ছে, যখন তুমি তোমার কাওমের ইমামতি করবে, তখন তাদের সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষেপ করবে।
৯৩৬. খালাফ ইবনু হিশাম ও আবূ রাবী আয-যাহরানী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষেপে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন কিন্তু তা হতো পূর্ণাঙ্গ।
৯৩৭. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে-বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সালাত আদায়কারী কিন্তু তা হত পূর্ণাঙ্গ।
৯৩৮. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে যেরুপ সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছি, অন্য কোন ইমামের পিছনে সেরুপ আদায় করি নি।
৯৩৯. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্থায় মায়ের সঙ্গে আগত শিশুর কান্না যখনই শুনতে পেতেন তখন সালাত (নামায/নামাজ)-এ ছোট সূরা পাঠ করতেন।
৯৪০. মুহাম্মাদ ইবনুল মিনহাল আয-যারীর (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি সালাত (নামায/নামাজ) আরম্ভ করি এবং দীর্ঘ সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের ইচ্ছা করি, কিন্তু যখনই শিশুরু কান্না শুনতে পাই তখনই মায়ের কষ্ট অনুভব করে সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষিপ্ত করি।
পরিচ্ছেদঃ ৩৮. সালাতের রুকনসমূহ যথাযথ আদায় এবং তা সংক্ষিপ্ত অথচ পুর্নাঙ্গ করা
৯৪১. হামিদ ইবনু উমার আল-বাকরাবী ও আবূ কামিল ফূযায়ল ইবনু হুসায়ন আল-জাহদারী (রহঃ) ... বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত (নামায/নামাজ) পর্যবেক্ষণ করেছি। অতএব, তাঁর কিয়াম (সালাতে দাঁড়ান), রুকু, রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ান, অতঃপর সিজদা এবং দুই সিজদার মধ্যবর্তী বসা অতঃপর (দ্বিতীয়) সিজদা এবং সালাম ও (মূসাল্লীদের দিকে) ফিরে বসার মধ্যবতী বৈঠক এই সবগুলোকে প্রায়ই সমান সমান পেয়েছি।
৯৪২. উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আল-আম্বারী (রহঃ) ... আল হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আশ’আসের শাসনকালে জনৈক ব্যাক্তি যার নাম তিনি উল্লেখ করেছিলেন কুফা বাসীদের উপর তার আধিপত্য স্থাপন করেছিল। তিনি আবূ উবায়দা ইবনু আবদুল্লাহকে সালাত (নামায/নামাজ)-এ ইমামতি করতে নির্দেশ দিলেন। সালাত (নামায/নামাজ) আদায়কালে তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন এ দু’আটি পাঠ করা পরিমাণ সময় পর্যন্ত দাড়িয়ে থাকতেনঃ
اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
(হেআল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক প্রশংসা আপনারই জন্য যা আসমানপূর্ণ ও যমীনপূর্ণ এবং পূর্ণতা ছাড়াও যতটূকু আপনি ইচ্ছা করেন। হে প্রশংসা ও মর্যাদার অধিকারী! আপনি যা দান করবেন তা রোধ করার কেউ নেই। আর আপনি যা রোধ করবেন তা দান করারও কেউ নেই। এবং কোনও সম্পদশালীকেই তার সস্পদ আপনার শাস্তি থেকে বাচাতে পারবে না।)
হাকাম বলেন, আমি একথা আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লার নিকট বললাম। তিনি বললেন, আমি বারা ইবনু আযিব (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রুকু এবং রুকু হতে দাঁড়ান, তারপর সিজদা এবং দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময় এ সকল প্রায়ই সমান সমান হত। শুবা (রহঃ) বলেন, আমি আমর ইবনু মুররা’র সাথে এ হাদীস নিয়ে আলোচনা করলাম। তিনি বললেন, আমি আবদুর রাহমান ইবনু আবূ লায়লাকে দেখেছি, তার সালাত (নামায/নামাজ) এরুপ ছিল না।
৯৪৩. মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আল-হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাতার ইবনু নাজিয়া যখন কুফার উপর আধিপত্য স্থাপন করলেন তখন আবূ উবায়দাকে লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করলেন।
৯৪৪. খালাফ ইবনু হিশাম (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তোমাদের নিয়ে ঐরুপ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে ক্রটি করব না, যেরুপ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমাদেরকে নিয়ে। রাবী বলেন, আমি আনাসকে কিছু কাজ করতে দেখতাম, তোমাদেরকে তা করতে দেখিনা, তিনি যখন রুকু হতে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা ভাবে দাঁড়িয়ে যেতেন, এমনকি কেউ কেউ মনে করত যে, তিনি (হয়ত) ভুলে গেছেন। প্রথম সিজদা থেকে মাথা তুলেও এরুপ বসে যেতেন যে, কেউ কেউ মনে করত, তিনি (হয়ত) ভূলে গেছেন।
৯৪৫. আবূ বাকর ইবনু নাফি আল আবদী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত সালাত (নামায/নামাজ) আমি আর কারও পিছনে আদায় করিনি। অথচ তার সালাত হত পুর্নাঙ্গ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত (নামায/নামাজ)-এর রুকনসমূহ প্রায় সমান সমান হত। আবূ বকরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর (রুকন সমূহ) ও প্রায় সমান সমান হত। যখন ওমর (রাঃ) এর যামানা আসল, তিনি ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) দীর্ঘ করলেন। রাসূলল্লাহ যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলতেন, তখন এত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন যে, আমরা মনে করতাম সম্ভবত তিনি বেখেয়াল হয়ে পড়েছেন। তারপর সিজদা করতেন এবং দুই সিজদার মাঝে এত দীর্ঘ সময় বসে থাকতেন যে, আমরা মনে করতাম তিনি সম্ভবত বেখেয়াল হয়ে পড়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৩৯. ইমামের অনুসরণ এবং সব কাজ তার পরে করা
৯৪৬. আহমাদ ইবন ইউনুস ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারা ইবনু আযিব (রাঃ) আমার নিকট বলেছেন, তিনি অসত্য বলেন নি। তাঁরা (সাহাবায়ে কিরাম) রাসূলল্লাহ এর পিছনে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তিনি যখন ‘রুকু” থেকে মাথা তুলতেন, তখন তার কপাল মাটিতে না রাখা পর্যন্ত আমাদের কাউকে পিঠ ঝুকাতে দেখিনি। অতঃপর তার পিছনের সবাই সিজদায় চলে যেতেন।
৯৪৭. আবূ বাকর ইবনু খাল্লাদ আল-বাহিলী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারা ইবনু আযিব (রাঃ) আমার নিকট বলেছেন এবং তিনি অসত্য বলেন নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলতেন, আমাদের মধ্যে কেউ পিঠ ঝুকাতনা যে পর্যন্ত না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় যেতেন। (তিনি সিজদায় তারপর আমরা সিজদায় যেতেন)।
৯৪৮. মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু সাহম আনতাকী (রহঃ) ... বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, যখন তিনি রুকু করতেন, তাঁরাও রুকু করতেন। যখন তিনি রুকু হতে মাথা উঠাতেন এবং سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলতেন তখন আমরা দাঁড়িয়ে থাকতাম। তারপর যখন তাকে মাটির উপর কপাল রাখতে দেখতাম, তখন আমরাও তার অনুসরণ করতাম।
৯৪৯. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... বারা (ইবনু আযিব) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে (সালাত (নামায/নামাজ) আদায়) আমাদের এ নিয়ম ছিল আমরা যতক্ষন পর্যন্ত তাঁকে সিজদা করতে না দেখতাম, ততক্ষন পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ ঝুঁকাত না।
৯৪৯. যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) বাড়া (ইবনু আযিব) (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে (সালাত আদায়ে) আমাদের নিয়ম ছিল আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে সিজদা করতে না দেখতাম, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ ঝুকাত না।
৯৫০. মুহরিয ইবন আওন ইবন আবু আওন (রহঃ) ... আমর ইবন হুরায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে ফজরের সালাত আদায় করলাম। তখন তাকে পড়তে শুনলাম فَلاَ أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ * الْجَوَارِ الْكُنَّسِ (আমি শপথ করি পশ্চাদপসণকারী) নক্ষত্রের, যা প্রত্যাগমন করে ও অদৃশ্য হয়। সূরা আত-তাকবীরঃ ১৫-১৬) এবং তিনি পূর্ণভাবে সিজদায় না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ ঝুকাত না।
পরিচ্ছেদঃ ৪০. রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে কি বলবে
৯৫১. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রুকু থেকে পিঠ উঠাতেন, তখন বলতেনঃ
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ
(অর্থাৎ প্রশংসাকারীর প্রশংসা আল্লাহ্ শুনেন। হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক! সকল প্রশংসা আপনারই জন্য যা আসমানপূর্ণ ও যমিনপূর্ণ এবং পূর্ণতা ছাড়াও যা আপনি ইচ্ছা করেন)
৯৫২. মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ও ইবন বাশশার (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবন আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু'আ পাঠ করতেনঃ اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ
৯৫৩. মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ও ইবন বাশশার (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবন আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু'আ পাঠ করতেনঃ
اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَاءِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ وَالْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الْوَسَخِ
(হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনারই জন্য যা আসমানপূর্ব এবং যমীনপূর্ণ তাছাড়াও যতটূকু আপনি ইচ্ছা করেন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে পবিত্র করুন বরফ, শিলা ও ঠাণ্ডা পানি দ্বারা। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে গুনাহ ও ক্রটি বিচ্যুতি থেকে পবিত্র করুন যেমনিভাবে সাদা বস্ত্র পরিষ্কার করা হয় ময়লা থেকে) ।
৯৫৪. উবায়দুল্লাহ ইবন মু’আয (র) ও যূহায়র ইবন হারব (র) ……. শু’বা (র) সুত্রে মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মু'আযের বর্ণনায় ‘ওয়াসখ' শব্দের স্থলে ‘দারান, উল্লেখ করা হয়েছে এবং ইয়াযীদের বর্ণনায় ‘ওয়াসাখ’- শব্দের স্থলে 'দানাস’ বলা হয়েছে।
৯৫৫. আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুর-রাহমান আদ-দারিমী (র) ... আবু সাঈদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন রুকু হতে মাথা উঠাতেন, তখন বলতেনঃ
رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
৯৫৬. আবু বাকর ইবন আবু শায়বা (র) ... ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) যখন রুকু হতে মাথা উঠাতেন, তখন এই দু'আ পড়তেনঃ
اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
৯৫৭. ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে وَمِلْءَ مَا شِئْتَ পর্যন্ত বর্ণিত আছে। এই রিওয়ায়াতে (বর্ণিত দু’আর) পরবর্তী অংশের উল্লেখ নাই।
পরিচ্ছেদঃ ৪১. রুকু-সিজদায় কুরআন পাঠ নিষেধ
৯৫৮. সাঈদ ইবনু মানসূর, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মৃত্যু রোগে আক্রান্ত অবস্থায় হুজ্বরা শরীফের) পর্দা খুলে দিলেন। তখন লোকেরা আবূ বকরের পিছনে কাতারবন্দী অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেন, হে লোকগণ! এখন আর সত্য স্বপ্ন ব্যতীত নবূওয়াতের সুসংবাদ দেওয়ার কিছু অবশিষ্ট থাকবে না (কেননা, আমার উপর নবুওয়াতের সমাপ্তি ঘটেছে) মুসলমানগণ তা দেখবে। তোমরা সাবধান হও। আমাকে রুকূ এবং সিজদায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তোমরা রুকুতে তোমাদের রবের মহত্ত বর্ণনা করবে। এবং সিজদায় অধিক পরিমাণ দুআ পড়বে। তোমাদের দু’আ কবুল হওয়ার উপযুক্ত হাদীসটি আবূ বকর حدثنا سفيان عن سليمان বলে বর্ণনা করেছেন।
৯৫৯. ইয়াহইয়া ইবনু আইউব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে ইন্তেকাল করেছেন, সে রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আমাদের উদ্দেশ্যে পর্দা খূলে দিলেন। তাঁর মাথায় তখন পট্টি বাধা ছিল। এরপর বললেন, হে আল্লাহ! আমি কি পৌঁছয়েছি? এরুপ তিন বার বললেন। বস্তুত আমার পরে নবুওয়াতের কোনও সুসংবাদ দানকারী থাকবে না। কিন্তু সত্য স্বপ্ন থেকে যাবে। নেক বান্দা তা দেখবে অথবা তাকে দেখানো হবে। তারপর রাবী সুফিয়ানের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।
৯৬০. আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রুকু এবং সিজদারত অবস্থায় (কুরআন) পড়তে নিষেধ করেছেন।
৯৬১. আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রুকু এবং সিজদারত অবস্থায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করেছেন।
৯৬২. আবূ বাকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রুকু এবং সিজদায় কিরাআত পড়তে নিষেধ করেছেন। আমি বলি না যে, তোমাদেরকে নিষেধ করেছেন।
৯৬৩. যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পরম প্রিয় (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে রুকু এবং সিজদারত অবস্থায় কিরা'আত পড়তে নিষেধ করেছেন।
৯৬৪. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ঈসা ইবনু হাম্মাদ আল মিসরী, হারুন ইবনু আবদুল্লাহ আল মুকাদ্দামী, হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী, ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ইবনু হুজর এবং হান্নাদ ইবনুুস সারী (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রুকু করাকার্লীন কিরাআত পাঠ করতে নিষেধ করেছেন। তারা সকলেই আলী (রাঃ) সুত্রে বলেছেন যে, তিনি আমাকে রুকু অবস্থায় কিরাআত পড়তে নিষেধ করেছেন, কিন্তু সিজদায় কিরাআত পড়ার নিষেধ সম্পর্কে তারা তাদের রিওয়াতে কোন উল্লেখ করেননি। যেরুপ যুহুরী, যায়দ ইবনু আসলাম, ওয়ালীদ ইবনু কাসীর ও দাঊদ ইবনু কায়স (রহঃ) উল্লেখ করেছেন।
৯৬৫. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে সিজদা অবস্থায় (কিরাআত পড়ার) কথার উল্লেখ নেই।
৯৬৬. আমর ইবনু আলী (রাঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে রুকুতে থাকাকালীন অবস্থায় কিরা'আত পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ সনদে আলীর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
৯৬৭. হারুন ইবনু মারূফ ও আমর ইবনু সাওওয়াদ (রহঃ) ... আবূ হূরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সিজদার অবস্থায়ই বান্দা তার রবের অধিক নিকটবর্তী হয়ে থাকে। অতএব, তোমরা (সিজদায়) অধিক পরিমাণ দু'আ পড়বে।
৯৬৮. আবূ তাহির ও ইউনূস ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় (এ দু’আটি) পড়তেনঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ
(হে আল্লাহ! আমার সকল গুনাহ মাফ করে দিন। সল্প এবং অধিক, প্রথম এবং শেষ, প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য।)
৯৬৯. যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রুকু এবং সিজদাসমূহে অধিকাংশ সময় এই দু’আটি পাঠ করতেনঃ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي (হে আল্লাহ্, আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার সপ্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর) তিনি এটা করতেন নির্দেশ অনুযায়ী।
৯৭০. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পূর্বে প্রায়ই পাঠ করতেনঃ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি দেখছি যে আপনি নতূন নতুন বাক্য বলছেন? এ সব কি? তিনি বললেন আমার উম্মাতের মধ্যে আমার (মৃত্যুর) নিদর্শন রাখা হয়েছে। আমি যখন তা দেখি, তখন আমি এই বাক্যগুলো বলতে থাকি। নিদর্শনটি হল- إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ সূরার শেষ পর্যন্ত।
৯৭১. মুহাষ্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূরা إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ নাযিল হওয়ার পর আমি লক্ষ্য করেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই সালাত (নামায/নামাজ) পড়তেন, তখনই দুআ করতেন এবং বলতেনঃ سُبْحَانَكَ رَبِّي وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
পরিচ্ছেদঃ ৪২. রুকু ও সিজদায় কি পাঠ করা হবে
৯৭২. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এ দু’আ পড়তেনঃ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আামি লক্ষ্য করছি যে, আপনি প্রায় سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ দু'আটি পাঠ করে থাকেন। তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল ইযযাত আমাকে সংবাদ প্রদান করেছেন যে, আমি আমার উস্মাতের মধ্যে অচিরেই একটি নিদর্শন দেখব। তাই যখন আমি তা দেখছি, অধিক মাত্রায় سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ পড়ছি। ঐ নিদর্শন সম্ভবত এই যে, إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় অর্থাৎ মক্কা বিজয়-
وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا * فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
এবং তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে, তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং তার ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি তো তওবা কবুলকারী।
৯৭৩. হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানী ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আতাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি রুকু’তে কি বলেন? তিনি বললেন, আমি বলিঃ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ কেননা, ইবনু মুলায়কা আয়িশা (রাঃ) হতে আমর নিকট বর্ণনা করেনঃ আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, আমি এক রাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাছে না পেয়ে মনে করলাম যে, সম্ভবত তিনি তাঁর অন্য কোন ন্ত্রীর নিকট গমন করেছেন। আমি গোপনে তালাশ করলাম এবং (না পেয়ে) ফিরে এলাম। দেখলাম, তিনি রুকু কিংবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) সিজদায় আছেন এবং বলছেনঃ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ আমি বললাম, আমার মা-বাপ আপনার জন্য উৎসর্গিত! আমি এক ধারণায় ছিলাম আর আপনি অন্য কাজে মগ্ন আছেন।
৯৭৪. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিছানায় না পেয়ে (অন্ধকারে) হাতড়াতে লাগলাম। হঠাৎ আমার হাত খানি তাঁর পায়ের তালুতে গিয়ে লাগল। তিনি সিজদারত আছেন, পা দু-খানি খাড়া রয়েছে। তিনি বলছিলেনঃ
اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
হে আল্লাহ! আমি তোমার অসন্তোষ থেকে তোমার সন্তোষের মাধ্যমে এবং তোমার আযাব হতে তোমার ক্ষমার মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এবং আমি তোমার (শাস্তি) হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার প্রশংসা করে শেষ করতে সক্ষম নই। তুমি তেমনই যেমন তুমি নিজে তোমার প্রশংসা করেছ।
৯৭৫. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রুকু এবং সিজদায় এ দুআ পড়তেনঃ سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ الْمَلاَئِكَةِ وَالرُّوحِ
৯৭৬. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উপরোক্তরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪৩. সিজদার ফযীলত ও তার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৯৭৭. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... মা'দান ইবনু আবূ তালহা ইয়ামুরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আযাদকৃত গোলাম সাওবন (রাঃ) এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। আমি বললাম, আপনি আমাকে এমন একটি আমলের সংবাদ দান করুন, যার উপর আমল করলে আল্লাহ আমাকে জান্নাতে দাখিল করাবেন কিংবা তিনি বললেন, আপনি আমাকে আল্লাহর একটি প্রিয়তম আমলের সংবাদ দিন। তিনি নীরব রইলেন। আমি আবার বললাম, তিনি এবারও কিছু বললেন না। অতঃপর আমি তৃতীয়বার জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আমি এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেছেন, আল্লাহর উদ্দেশ্যে অধিক সিজদা কর। কেননা, তুমি যখনই আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করবে, তখন এ দিয়ে আল্লাহ তা’আলা তোমার মর্যাদা এক ধাপ বাড়িয়ে দিবেন এবং তোমার একটি পাপ মোচন করে দিবেন। মা’দান বলেন, অতঃপর আবূদ দারদা (রাঃ) এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হল। তাঁর নিকটও আমি একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলাম। তিনিও সাওবান (রাঃ) এর অনুরুপ বললেন।
৯৭৮. আল-হাকাম ইবনু মূসা আবূ সালিহ (রহঃ) ... রাবী’আ ইবনু কা’ব আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে রাত যাপন করি। আমি তার পানি এবং তার যা প্রয়োজন তা এগিয়ে দিই। তখন তিনি আমাকে বললেন, চাও। বললাম আমি এ-ই চাই। তিনি বললেন, তাহলে তুমি অধিক সিজদা দ্বারা তোমার নিজের ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৪৪. সিজদার অঙ্গসমূহ এবং সালাতে চুল ও কাপড় বাঁচানো আর মাথার চুল বাঁধার নিষেধাজ্ঞা
৯৭৯. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ রাবী আয-যাহরানী (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাতটি অঙ্গের উপর সিজদা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তার চুল ও কাপড় গুটাতে নিষেধ করা হয়েছে। ইহা ইয়াহইয়ার বর্ণনা। আবূ রাবী' বলেন, সাতটি অঙ্গের উপর (সিজদা করতে আদেশ করা হয়েছে) এবং চুল ও কাপড় গুটাতে নিষেধ করা হয়েছে। (আর ঐ সাতটি অঙ্গ হচ্ছে) দুই হাত, দুই হাঁটু, দুই পা এবং কপাল।
৯৮০. মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাতটি অঙ্গের উপর সিজদা করতে এবং কাপড় ও চুল না গুটাতে।
৯৮১. আমর আবূ-নাকিদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাত (অঙ্গ)-এর উপর সিজদা করতে আদেশ করা হয়েছে এবং চুল ও কাপড় গুটাতে নিষেধ করা হয়েছে।
৯৮২. মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি সাতটি অঙ্গের উপর সিজদা করতে আদিষ্ট হয়েছিঃ কপাল, (বর্ণনাকারী বলেন) তিনি এই সময় তাঁর নাকের দিকে ইশারা করলেন, দুই হাত, দুই হাটূ এবং দুই পায়ের অগ্রভাগ। আর কাপড় ও চুল না গুটাতে।
৯৮৩. আবূ তাহির (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি আদিষ্ট হয়েছি সাতটির উপর সিজদা করতে এবং চুল ও কাপড় না গুটাতে। (ঐ সাতটি হল) কপাল ও নাক, দুই হাত, দুই হাটু এবং দুই পা।
পরিচ্ছেদঃ ৪৫. সিজদার অঙ্গসমূহ ঠিকভাবে রাখা এবং দুই হাতের তালু মাটিতে রাখা, দুই কনুই পাঁজর থেকে ও পেট উরু থেকে পৃথক রাখা
৯৮৪. আমর ইবনু সাওয়াদ আমিরী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনুল হারিসকে দেখতে পেলেন যে, তিনি তার চুলগুলোকে পিছনে বেধে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) তা খুলে দিলেন। তিনি সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে ইবনু আব্বাসের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, আমার মাথার এবং আপনার (এ কর্মের) ব্যাপারটি কি? আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, এই ব্যাক্তির উদাহরণ (যে ব্যাক্তি সালাতের অবস্থায় মাথার চুল বেধে রাখে) ঐ ব্যাক্তির মত যে তার হাত বাধা অবস্থায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে।
৯৮৫. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সিজদার সময় অংগসমূহ সঠিক রাখবে-কুকুরের মত দুই হাত বিছিয়ে দিবে না।
৯৮৬. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইবনু বাশশার ও ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব মুহাম্মাদ ইবনু জাফর এবং জাফর ইবনু খালিদ (রহঃ) ... সূত্রে উক্ত সনদে শু'বা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তবে ইবনু জাফরের বর্ণনায় وَلاَ يَبَسط أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الْكَلْبِ এর স্থলে আছে وَلاَ يَتَبَسَّطْ أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الْكَلْبِ (অর্থ একই)।
৯৮৭. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তুমি সিজদা করবে, তখন তোমার দুই হাতের তালূ (ভূমিতে) রাখবে এবং দুই কনূই (ভূমি থেকে) উঠিয়ে রাখবে।
৯৮৮. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মালিক ইবনু বুহায়নাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় (সিজদা) করতেন তখন তাঁর উভয় হাত পার্শ্বদেশ থেকে এতখানি পৃথক রাখতেন যে তার বগলের শুভ্রতা প্রকাশ পেত।
৯৮৯. আমর ইবনু সাওয়াদ (রহঃ) আমর ইবনুল হারিস এবং লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) সুত্রে উভয়ই জাফর ইবনু রাবী’আ (রহঃ) থেকে উপরোক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন তবে আমর ইবনু হারিসের বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন, তখন তাঁর দুই হাত এমন ভাবে পৃথক করে রাখতেন যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। লায়সের বর্ণনায় বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন, তখন তাঁর দুই হাত বগল থেকে এমন ভাবে পৃথক রাখতেন যে, আমি তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখতে পেতাম।
৯৯০. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... মায়মূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন তখন কোন মেশ শাবক ইচ্ছা করলে তাঁর দুহাতের মধ্য দিয়ে চলে যেতে পারত।
৯৯১. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী মায়মূনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন, তখন তাঁর দুই হাত (পার্শ্বদেশ থেকে) এরুপ দুরে রাখতেন যে, তাঁর বগলের উজ্জ্বলতা পিছন হতে দেখা যেত। এবং যখন বসতেন, তখন তাঁর বাম উরুর উপর শান্ত হয়ে বসতেন।
৯৯২. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... শব্দগুলো আমরের, মায়মূনা বিনতুল হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন, তখন তাঁর দুই বাহু পৃথক করে রাখতেন। যারা তাঁর পিছনে থাকতেন, তারা তাঁর বগলের উজ্জ্বল্য দেখতে পেতেন। ওয়াকী (রহঃ) বলেন, মায়মুনা (রাঃ) ঔজ্জ্বল্য দ্বারা শুভ্রতা বুঝিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪৬. সালাতের সামগ্রিক রূপ এবং যা দিয়ে সালাত শুরু ও শেষ করা হয়; রুকুর নিয়ম ও তার সুষ্ঠতা; চার রাক'আত বিশিষ্ট সালাতের দু'রাক'আতের পর তাশাহুদ এবং দুই সিজদার মধ্যে ও প্রথম তাশাহুদে বসার নিয়ম
৯৯৩. মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) শব্দ ইসহাকের ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর দ্বারা সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করতেন এবং الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ দ্বারা কিরা’আত আরম্ভ করতেন। যখন রুকু করতেন তখন তাঁর মাথা উঠিয়েও রাখতেন না, ঝুঁকিয়েও রাখতেন না; বরং মাঝামাঝি রাখতেন। আর যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সিজদায় যেতেন না। আর যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না বসে (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতেন না। এবং প্রতি দু-রাক’আতে আত-তাহিয়্যাতু পড়তেন বাম পা বিছিয়ে রাখতেন আর ডান পা খাড়া করে রাখতেন। শয়তানের মত পাছার উপর বসা থেকে নিষেধ করতেন। পূরুষকে তার দু’বাহু হিংস্র জন্তুর মত বিছিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন। তিনি সালামের দ্বারা সালাত (নামায/নামাজ) সমাপ্ত করতেন।
আর খালিদের সুত্রে ইবন নুমায়র (রহঃ) থেকে عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ এর স্থলে عَنْ عَقِبِ الشَّيْطَانِ উল্লেখ রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ৪৭. মুসল্লীর জন্য সুতরা, সুতরার দিকে সালাত আদায় করার নির্দেশ, মুসল্লীর সম্মুখ দিয়ে যাতায়াত নিষেধ ও তার হুকুম এবং যাতায়াতকারীকে বাধাপ্রদান, মুসল্লীর সম্মুখে শয়ন করার বৈধতা, সাওারীর দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা, সুতরার নিকটবর্তী হওয়ার নির্দেশ, সুতরার পরিমাণ ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি
৯৯৪. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের যে কেউ তার সম্মুখে হাওদার পিছনের খাড়া কাঠের পরিমাণ কিছু স্থাপন করে, যেন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে। এরপর সেটির পিছন দিয়ে কেউ গেলে কোন পরোয়া করবে না।
৯৯৫. মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম এবং আমাদের সম্মুখ দিয়ে পশুগুলো যাতায়াত করত আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ বিষয়টি উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, তোমাদের কারও সম্মুখে হাওদার পিছনের কাঠ পরিমাণ কোনও কিছু থাকলে সেটির বহিরে দিয়ে কোন কিছুর যাতায়াত তার কোন ক্ষতি করবে না। ইবনু নুমায়র (রহঃ) বলেন, তার বাইরে দিয়ে ‘কোনও ব্যাক্তির’ যাতায়াত ক্ষতি করবে না।
৯৯৬. যূহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুসল্লীর সূতরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, হাওদার পিছনের কাঠের পরিমাণ।
৯৯৭. মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাবুকের যুদ্ধকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুসল্লীর সূতরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, তা হাওদার পিছনের কাঠটির মত।
৯৯৮. মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঈদের সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য বের হতেন, তখন ক্ষুদ্রাকৃতির বর্শা সংগে নেয়ার জন্য আদেশ করতেন। তারপর তা তার সামনে স্থাপন করা হতো এবং তিনি সেটির দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। আর লোকেরা তার পিছনে থাকত। সফরেও তিনি এরূপ করতেন। এ থেকেই শাসকগনও তা গ্রহন করেছেন।
৯৯৯. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাঠি গেড়ে রাখতেন। আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, পুতে রাখতেন। এবং সেটির দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। ইবনু আবূ শায়বা বাড়িয়ে বলেন, উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেছেন, তা হল ক্ষুদ্রাকৃতির বর্শা।
পরিচ্ছেদঃ
১০০০. আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাওয়ারীকে সামনে রেখে সেটির দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
১০০১. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাওয়ারীর দিকে ফিরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। ইবনু নূমায়র বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
১০০২. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মক্কায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তখন তিনি আবতাহ নামক স্থানে লাল চামড়ার তাবুতে অবস্থান করছিলেন। বিলাল (রাঃ) তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি নিয়ে বের হলেন, অতঃপর কেউ অবশিষ্ট পানি পেল আর কেউ অন্যের নিকট থেকে পানির ছিটা নিল। আবূ জুহায়ফা (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাল চাঁদর গায়ে দিয়ে বের হলেন। আমি যেন এখনও তাঁর পায়ের গোছাদ্বয়ের শুভ্রতা দেখতে পাচ্ছি। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং বিলাল (রাঃ) আযান দিলেন।
আমি দেখেছিলাম তিনি حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ এবং حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ বলার সময় এদিক-ওদিক অর্থাৎ ডানে ও বামে মুখ ফিরাচ্ছেন। অতঃপর তার জন্য অগ্রভাগে লৌহযুক্ত ছোট যষ্টি (আনাযা) পুঁতে দেয়া হল। তিনি সামনে এগিয়ে গেলেন এবং যুহরের দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তাঁর সামনে দিয়ে গাধা, কুকুর আসা-যাওয়া করছিল। তিনি তাদের বাধা দেননি। তারপর আসরের দু-রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরূপে মদিনায় পৌছা পর্যন্ত তিনি দুই দুই রাক'আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন।
১০০৩. মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আওন ইবনু আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁর পিতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লাল চামড়ার তাবুতে দেখেছেন। তিনি বলেন, আমি বিলাল (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)-র অবশিষ্ট পানি বের করতে দেখলাম। আর দেখলাম লোকেরা ঐ পানির জন্য তাড়াহুড়া করছে। যে ঐ পানি পেল, সে তা তার গায়ে মাখল। আর যে তা পেলনা সে তার সাথীর হাতের অদ্রতা থেকে কিছু নিল। তারপর দেখলাম একটি অগ্রভাগে লৌহযুক্ত যষ্ঠি বের করে গেড়ে দিলেন। এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাল ডোরাযুক্ত চাঁদর পরিধান করে তা উঠিয়ে বের হলেন। অতঃপর লোকজনকে নিয়ে যষ্ঠি সামনে রেখে দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর দেখলাম মানুষ ও জীবজন্তুকে বর্শার সম্মুখ দিয়ে চলা ফেরা করছে।
১০০৪. ইসহাক ইবনু মানসূর, আবদ ইব হূমায়দ ও আল কাসিম ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) ... আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে মালিক ইবনু মিগওয়াল বর্ণিত হাদীসে আছে, যখন দুপুর হলো, তখন বিলাল (রাঃ) বের হলেন এবং সালাত (নামায/নামাজ)-এর আযান দিলেন।
১০০৫ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশার (রহঃ) ... আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুপূর বেলা বাতহার দিকে বের হয়ে গেলেন। তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে দু-রাক'আত যুহরের ও দু’রাক'আত আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তাঁর সামনে একটি বর্শা প্রোথিত ছিল। তার অপর দিক দিয়ে স্ত্রীলোক ও গাধা যাতায়াত করছিল।
১০০৬. যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... শু'বা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এ হাদীসটি উপরোক্ত হাদীসের অনূরুপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু আল-হাকামের বর্ণনায় ‘লোকেরা তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি সংগ্রহ করতে লাগল’ কথাটি বেশি আছে।
১০০৭. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আমি গাধার উপর সাওয়ার হয়ে মীনার দিকে এলাম। আমি তখন যৌবনে উপনীত প্রায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজন নিয়ে সেখানে সালাত (নামায/নামাজ)-রত ছিলেন। আমি কাতারের সামনে এসে অবতরণ করলাম এবং গাধাটিকে চরবার জন্য ছেড়ে দিয়ে কাতারে প্রবেশ করলাম। এতে কেউই আমার উপর আপত্তি তোলেন নি।
১০০৮. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... উবায়াদূল্লহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাকে জানিয়েছেন সে, তিনি গাধার উপর আরোহণ করে মীনার দিকে আসেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে বিদায় হাজ্জ (হজ্জ) উপলক্ষে লোকজনসহ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, গাধাটি কাতারের সামনে দিয়ে ঘোরাফেরা করল। তারপর তিনি তা থেকে নামলেন এবং লোকদের সাথে কাতারে শামিল হলেন।
১০০৯. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আমর আন-নাকিদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন।
১০১০. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ হুমায়দ (রহঃ) ... যুহুরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এই রিওয়াতে মীনা ও আরাফাত এর উল্লেখ করেন নি। বরং "বিদায় হাজ্জ" (হজ্জ) কিংবা "মক্কা বিজয়" উল্লেখ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. মুসল্লার সম্মুখ দিয়ে গমনকারীকে বাধা প্রদান
১০১১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদূরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে, তখন তার সম্মুখ দিয়ে কাউকে যেতে দিবে না। বরং যথাসাধ্য তাকে বাধা দিবে। যদি সে না মানে, তবে তার সাথে লড়াই করবে। কেননা, সে একটি শয়তান।
১০১২. শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) ... হুমায়দ ইবনু হিলাল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও আমার একজন সঙ্গী একটি নিয়ে আলোচনা করছিলাম। সহসা আবূ সালিহ আস-সাম্মান বলে উঠল, আমি আবূ সাঈদ (রাঃ) এর নিকট যা শুনেছি এবং দেখেছি, তা এখন তোমার নিকট বলব। আমি আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। তিনি একটি ‘সুতরা’ সামনে রেখে শুক্রবার দিন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন। ইত্যবসরে আবূ মু’আইয়ত গোত্রের একজন জওয়ান এসে উপস্থিত হলো এবং সম্মুখ দিয়ে যেতে চাইল। আবূ সাঈদ (রাঃ) তার বুকে হাত দিয়ে বাধা দিলেন। কিন্তু সে আবূ সাঈদ (রাঃ) এর সম্মুখ ছাড়া অন্য কোনও পথ পালনা। তাই সে পূনরায় যেতে চাইল। আবূ সাঈদ (রাঃ) এবার আরও জোরে তার বুকে ধাক্কা দিলেন। এবার সে ছবির মত দাঁড়িয়ে গেল এবং আবূ -সাঈদ (রাঃ) কে কটূক্তি করলেন।
তারপর লোকজন ঠেলে বের হয়ে গেল এবং (মদিনার গভর্ণর) মারওয়ানের নিকট গিয়ে অভিযোগ দায়ের করল। আবূ সাঈদ (রাঃ)ও মারওয়ানের নিকটে প্রবেশ করলেন। তারপর মারওয়ান তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলল, আপনি ও আপনার ভাতিজার মধ্যে কি ঘটেছে? সে তো এসে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে আবূ সাঈদ (রাঃ) জওয়াব দিলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ মানুষকে আড়াল করবার নিমিত্ত সুতরা রেখে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে এবং কোনও ব্যাক্তি তার সম্মুখ দিয়ে যেতে চাইবে, সে যেন তার বুকে হাত দিয়ে বাধা দেয়। যদি সে না মানে, তবে তার সাথে লড়াই করবে। কেননা সে একটি শয়তান।
১০১৩. হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তখন সে কাউকে তার সম্মুখ দিয়ে যেতে দিবে না। যদি সে না মানে, তবে তার সাথে লড়াই করবে। কেননা, তার সাথে একটি সহচর (শয়তান) রয়েছে।
১০১৪. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১০১৫. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইহা (রহঃ) ... বুসর ইবনু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যায়িদ ইবনু খালিদ আল জুহানী (রাঃ) তাঁকে আবূ জুহায়ম (রাঃ) এর নিকট এ কথা জিজ্ঞাসা করার জন্য পাঠিয়েছিলেন যে, সালাত (নামায/নামাজ)-রত ব্যাক্তির সম্মুখ দিয়ে গমনকারী সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে তিনি কী শুনেছেন। আবূ জুহাহাম (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি সালাত (নামায/নামাজ)-রত ব্যাক্তির সম্মুখ দিয়ে গমনকারী ব্যাক্তি জানত যে, তার উপর কি পাপের বোঝা চেপেছে, তবে চল্লিশ দিন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকাও তার পক্ষে তা অপেক্ষা উত্তম হতো। আবূন-নাযর বলেন, আমি জানিনা, তিনি চল্লিশ দিন বলেছেন কিংবা মাস অথবা বছর।
১০১৬. আবদুল্লাহ ইবনু হাশিম ইবনু হায়্যান আল-আবদী (রহঃ) ... জুহায়ম আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মালিক বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪৯. মুসল্লী কর্তৃক সুতরার কাছে দাঁড়ানো
১০১৭. ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম আদ-দাওরাকী (রহঃ) ... সাহল ইবনু সা’দ আস-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত (নামায/নামাজ)-এর স্থান এবং সুতরার মধ্যকার ব্যবধান এই পরিমাণ প্রশস্ত ছিল যে, একটি বকরী যেতে পারে।
১০১৮. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... সালামা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি তাসবীহ ও নফল সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য মুসহাফ (কুরআন) রাখার স্থান লক্ষ্য করে এগিয়ে যেতেন। এবং বলতেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ স্থানটিত লক্ষ্য করে এগিয়ে যেতেন। আর মিম্বার ও কিবলার মধ্যকার স্থান একটি ছাগল যেতে পারে এই পরিমাণ ছিল।
১০১৯. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, সালামা (রাঃ) মুসহাফের নিকটে অবস্থিত খুটির পাশে সালাত (নামায/নামাজ)-এর আসন গ্রহণ করতেন। রাবী বলেন, আমি তাকে বললাম, হে আবূ মুসলিম! আমি লক্ষ্য করছি, আপনি বরাবর এই খুঁটিটির নিকটেই সালাত (নামায/নামাজ)-এর স্থান নির্বাচন করেন। তিনি জওয়াব দিলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এর নিকটেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি।
পরিচ্ছেদঃ ৫০. মুসল্লীর সুতরার পরিমাণ
১০২০. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ-সালাত (নামায/নামাজ)-এ দাঁড়াবে, তখন তার সম্মুখে হাওদার পিছনের কাষ্ঠ পরিমাণ কোনও বস্তু রেখে দিবে। যদি এরূপ কোনও বস্তু না থাকে, তবে তার সম্মুখ দিয়ে গাধা স্ত্রীলোক ও কালো কুকুর গমন করলে তার সালাত (নামায/নামাজ) ভঙ্গ হয়ে যাবে।
রাবী ইবনু সামিত বলেন, আমি বললাম, হে আবূ যার! লাল কুকুর ও হলুদ কুকুর থেকে কালো কুকুরকে পৃথক করার কারণ কি? তিনি জওয়াব দিলেন, হে ভাতিজা, আমিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তোমার মত এই বিষয়টি জিজ্ঞাস করেছিলাম। তিনি বলেছেন, কালো কুকুর একটি শয়তান।
১০২১. শায়বান ইবনু ফাররূখ (রহঃ) ... হুমায়দ হিলাল (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইউনুস কর্তূক বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১০২২. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল-মাখযুমী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নারী, গাধা ও কুকুর সম্মুখ দিয়ে গেলে সালাত (নামায/নামাজ) নষ্ট করে দেয়। তা থেকে রক্ষার উপায় হলো, মুসল্লীর সামনে হাওদার কাষ্ঠ পরিমাণ কোনও বস্তু রাখা।
পরিচ্ছেদঃ ৫১. মুসল্লীর সামনে আড়াআড়ি শুয়ে থাকা
১০২৩. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রিকালে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, আর আমি কিবলার দিকে তার সামনে জানাযার মত আড়াআড়িভাবে শুয়ে থাকতাম।
১০২৪. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের সালাত (নামায/নামাজ) সম্পূর্ণ আদায় করতেন, আর আমি তাঁর সামনে কিবলার দিকে আড়াআড়িভাবে পড়ে থাকতাম। যখন বিতর আদায় করতে ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগ্রত করতেন। আমিও তখন বিতর (সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম।
১০২৫. আমর ইবনু আলী (রহঃ) ... উরওয়া ইবনুুয যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বললেন সামনে দিয়ে কী অতিক্রম করলে সালাত (নামায/নামাজ) ভঙ্গ হয়? আমরা বললাম, স্ত্রীলোক ও গাধা। তিনি বললেন, স্ত্রীলোক একটি মন্দ প্রাণী? অথচ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে জানাযার মত আড়াআড়ি হয়ে শুয়ে খাকতাম আর তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
১০২৬. আমর আন-নাকিদ ও আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ) ... আল আসওয়েদি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ)-এর সামনে আলোচনা হচ্ছিল যে, কুকুর, গাধা ও স্ত্রীলোক সামনে দিয়ে গেলে সালাত (নামায/নামাজ) ভঙ্গ হয়ে যায়। আয়িশা (রাঃ) বললেন, তোমরা আমাদের গাধা ও কুকুরের সমতুল্য গণ্য করছ? আল্লাহর কসম, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি আর আমি তাঁর সামনে কিবলার দিকে তখন চৌকিতে শুয়ে থাকতাম। যখন ওঠার প্রয়োজন হতে তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে বসা এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দেয়া আমি অপছন্দ করতাম। আমি চৌকির পায়ের দিক দিয়ে সরে পড়তাম
১০২৭. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা আমাদের কুকুর ও গাধার পর্যায়ভুক্ত করছ। অথচ আমি তখতপোষের উপর শুয়ে থাকতাম, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে তখতপোশের মাঝখানে সালাত (নামায/নামাজ)-এ দাঁড়াতেন। তাঁকে কষ্ট দেওয়া আমার অপছন্দ হতো তাই আমি তখতপোশের পায়ের দিক দিয়ে লেপের নিচ থেকে সরে পড়তাম।
১০২৮. ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে ঘুমিয়ে থাকতাম। অমার পা দু’টি তার কিবলার দিকে থাকতো। যখন তিনি সিজদা দিতেন তখন আমাকে ঠেলা দিতেন, আর আমি পা টেনে নিতাম। আর তিনি যখন দাঁড়িয়ে যেতেন আমি পা ছড়িয়ে দিতাম। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন ঘরে বাতি থাকত না।
১০২৯. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ বকর আবূ শায়বা (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন আর আমি ঋতুমতী অবস্থায় তাঁর পাশে থাকতাম। কখনও সিজদা করতে তাঁর কাপড় আমার গায়ে লেগে যেত।
১০৩০. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রিকালে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, আর আমি ঋতূমতী অবস্থায় তার পাশে থাকতাম। আমি একটি চাঁদর গায়ে দিতাম, তার কিছু অংশ তাঁর গায়েও থাকত।
পরিচ্ছেদঃ ৫২. এক কাপড়ে সালাত আদায় করা এবং তা পরিধানের নিয়ম
১০৩১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একটি মাত্র কাপড় পরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেন, তোমাদের প্রত্যেকেরই কি দু'টি কাপড় আছে?
১০৩২. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া ও আবদুল মালিক ইবনু শু’আয়ব ইবনু লায়স (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১০৩৩. আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উদ্দেশ্য করে বলল, আমাদের মধ্যে কেউ কি একটি কাপড় পরিধান করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে পারবে? তিনি বললেন, তোমাদের প্রত্যেকেরই কি দু'টি করে কাপড় রয়েছে?
১০৩৪. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ তার কাঁধের উপর একাংশ থাকে না- এইভাবে এক কাপড় পরিধান করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে না।
১০৩৫. আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... উমার ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উম্মু সালামার গৃহে এক কাপড় পরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি। তিনি তার দুই প্রান্ত কাঁধের উপর রেখেছিলেন।
১০৩৬. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহিম (রহঃ) ... উরওয়া থেকে বর্নিত। তিনি অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাতে মুশতামিলান (مُشْتَمِل) এর স্থলে মুতাওয়াশশিহান (مُتَوَشِّحًا) বলেছেন।
১০৩৭. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... উমার ইবনু আবূ সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উম্মু সালামার ঘরে এক কাপড়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি। তার উভয় প্রান্ত তিনি বিপরীত দিকে দিয়েছিলেন।
১০৩৮. কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ঈসা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) ... উমার ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এক কাপড়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি। তিনি তার দু প্রান্ত দুই বিপরীত দিকে নিয়ে জড়িয়ে রেখেছিলেন। ঈসা ইবনু হাম্মাদ তাঁর বর্ণনায় "দুই কাঁধের উপর" কথাটি অতিরিক্ত বলেছেন।
১০৩৯. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এক কাপড়ে ‘তাওয়াশশুহ’ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছি।
১০৪০. মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... সুফিয়ান (রহঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছে তবে ইবনু নুমায়রের বর্ণনায় আছে "আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশ করলাম।"
১০৪১. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ যূবায়র আল মাক্কী (রহঃ) বলেন, তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে এক কাপড়ে তাওয়াশশুহ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছেন। অথচ তাঁর নিকট একাধিক কাপড় ছিল। জাবির (রাঃ) বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঐরুপ করতে দেখেছেন।
১০৪২. আমর আন-নাকিদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদূরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রবেশ করলাম এবং তাঁকে দেখলাম, তিনি একটি চাটাইয়ের উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছেন ও তার উপর সিজদা করছেন। আরও দেখলাম, তিনি এক কাপড়ে তাওয়াশশুহ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছেন।
১০৪৩. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আল আ'মাশ থেকে বর্ণিত। তিনি উপরোক্তরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে আবূ কুরায়বের রিওয়ায়াতে কাপড়ের দুই প্রান্ত দুই কাঁধের উপরে রাখার কথা উল্লিখিত হয়েছে এবং আবূ বকর ও সুওয়ায়দের রিওয়ায়াতে তাওয়াশশুহ এর কথা বলা হয়েছে।
No comments: