Breaking News
recent

সহিহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, অধ্যায়ঃ মসজিদ ও সালাতের স্থান-১ম




পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই


১০৪৪.    আবূ কামিল আল-জাহাদারী, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল? তিনি বললেন, মাসজিদুল হারাম (কা'বাগৃহ)। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, অতঃপর কোনটি। তিনি বললেন, মাসজিদুল আক্বসা (বায়তুল মুকাদ্দাস)। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই দুটির মধ্যে কালের ব্যবধান কতটূকু? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর। তবে যেখানেই সালাত (নামায/নামাজ)-এর ওয়াক্ত হবে, সেখানেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিবে। সেটিই মসজিদ।
১০৪৫.    আর্লী ইবনু হুজর আস সা’দী (রহঃ) ... ইবরাহীম ইবনু ইয়াযীদ আত তায়মী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে মসজিদের আঙ্গিনায় কুরআন পাঠ করে শোনাতাম। আমি যখন সিজদার আয়াত পড়তাম, তখন তিনি সিজদা করতেন। আমি তাঁকে বললাম, হে পিতা, আপনি কি রাস্তায় সিজদা করছেন? তিনি বললেন, আমি আবূ যার (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন মাসজিদটি দুনিয়ায় সর্ব প্রথম স্থাপিত? তিনি বললেন, মাসজিদুল হারাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদুল আকসা। আমি জিজ্ঞেস করলাম এ দুটির মধ্যে কত বছরের ব্যবধান? তিনি বললেন, চল্লিশ বছরের। তবে সারা দুনিয়াই তোমার জন্য মাসজিদ। যেখানেই সালাত (নামায/নামাজ)-এর ওয়াক্ত হবে সেখানেই তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিবে।
১০৪৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে পাঁচটি জিনিস দেয়া হয়েছে, যা পূর্ববর্তী কাউকে দেয়া হয়নিঃ 

১. প্রত্যেক নাবীকে বিশেষ ভাবে তার গোত্রের প্রতি পাঠানো হয়েছে, আর আমাকে পাঠানো হয়েছে লাল-কাল সবার প্রতি 
২. আমার জন্য গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে আমার পূর্ববর্তীকারও জন্য তা হালাল ছিল না;
৩. আমার জন্য সমগ্র ভূপৃষ্ঠ পবিত্র, পবিত্রকারী ও মসজিদ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে সুতরাং যেখানে যার সালাত (নামায/নামাজ)-এর ওয়াক্ত হবে, সেখানে সে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিবে
৪. আমাকে রো'ব বা প্রবল প্রভাব দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, যা এক মাসের ব্যবধান থেকে অনুভূত হয়;
৫. আর আমাকে সুপারিশ করার অনুমতি দান করা হয়েছে।

১০৪৭.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১০৪৮.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তিনটি জিনিস দ্বারা অন্যদের উপর আমাদের মর্যাদা দান করা হয়েছে ১. আমাদের (সালাত (নামায/নামাজ)-এর) কাতারগুলোকে ফেরেশতাদের কাতারের ন্যায় করা হয়েছে এবং ২. আমাদের জন্য সমগ্র ভূমন্ডলকে মসজিদ বানানো হয়েছে। আর তার মাটিকে করা হয়েছে আমাদের জন্য পবিত্রকারী, যখন আমরা পানি না পাই। তিনি আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন করেছেন (যা আমি ভুলে গিয়েছি)।
১০৪৯.    আবূ করায়ব মুহাম্মদ ইবনুল আলা (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১০৫০.    ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ আলী হুজর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে ছয়টি জিনিস দ্বারা অন্য নাবীদের (নবীদের) উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে ১. আমাকে ব্যাপক তথ্যপূর্ণ ও অর্থবহ বাণী দান করা হয়েছে; ২. আমাকে প্রবল প্রভাব দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে; ৩. আমার জন্য গনিমতের মাল হালাল করা হয়েছে; ৪. আমার জন্য মাটিকে পবিত্রকারী ও মসজিদ বানানো হয়েছে; ৫. আমাকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের প্রতি প্রেরণ করা হয়েছে; ৬. আমার দ্বারা নাবীদের সীল মোহর (নবূওয়াতের সমাণ্ডি) করা হয়েছে।
১০৫১.    আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি ব্যাপক তথ্যপূর্ণ ও অর্থবহ বাণীসহ প্রেরিত হয়েছি। আমি প্রবল প্রভাবদ্বারা সাহায প্রাপ্ত হয়েছি। আমি একবার নিদ্রিত ছিলাম, তখন বিশ্ব ধনভাণ্ডারের চাবি আমার হাতে দেওয়া হয়েছিল। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে গেছেন, আর তোমরা ঐ গুলো বের করছ।
১০৫২.    হাজিব ইবনুল ওয়ালীদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইউনুস কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১০৫৩.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১০৫৪.    আবূ তাহির (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে প্রবল প্রভাব দ্বারা শক্রর বিরুদ্ধে সাহায্য করা হয়েছে এবং ব্যাপক তথ্যপূর্ণ ও অর্থবহ বাণী দান করা হয়েছে। একবার আমি যখন নিদ্রিত ছিলাম, তখন জগতের ধন-ভাণ্ডারের চাবি আমাকে দেওয়া হয় এবং তা আমার দুই হাতে রাখা হয়।
১০৫৫.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কতিপয় হাদীস বর্ণনা করেন এবং বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি প্রবল প্রভাব দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছি এবং ব্যাপক তথ্যপূর্ণ ও অর্থবহ বাণী প্রদত্ত হয়েছি।

পরিচ্ছেদঃ ১. মসজিদে নববীর প্রতিষ্ঠা


১০৫৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও শায়বান ইবনু ফাররূখ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন এবং মদিনার উচ্চ এলাকার এক মহল্লায় অবতরণ করলেন। যাকে আমর ইবনু আওফ গোত্রের মহল্লা বলা হয়। সেখানে তিনি চৌদ্দ রাত্রি অবস্থান করলেন। তারপর তিনি নাজ্জার গোত্রের নেতৃবৃন্দকে খবর পাঠালেন। তারা তরবারি ঝূলিয়ে এলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি যেন এখনও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখতে পাচ্ছি। তিনি তাঁর সাওয়ারীর ওপর এবং আবূ বকর (রাঃ) তাঁর পিছনে আর নাজ্জার গোত্রের নেতৃবৃন্দ তাঁর চতুর্দিকে ছিলেন। 

অবশেষে তিনি আবূ আইউবের গৃহ প্রাঙ্গণে অবতরণ করলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানেই সালাত (নামায/নামাজ)-এর ওয়াক্ত হতো, সেখানেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিতেন। বকরীর বাথানেও তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তারপর তাঁকে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়। আনাস (রাঃ) বলেন, তখন নাজ্জার গোত্রের প্রধানদের খবর দিলেন। তারা এলো। তিনি তাদের বললেন, হে বানূ নাজ্জার! তোমাদের এই বাগান খানি আমার নিকট বিক্রি কর। তারা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তার মূল্য একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাই। 

আনাস (রাঃ) বলেন, ঐ বাগনটিতে কি ছিল তা আমি বলছি খেজুরগাছ, মুশরিকদের কবর ও পূরাতন ঘর দুয়ারের ভগ্নাবশেষ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশে খেজুর গাছ কেটে দেয়া হলো, কবরগুলো খুড়ে ফেলা হলো এবং ধ্বংসাবশেষ সমান করে দেয়া হল। 

আনাস (রাঃ) বলেন, তারপর কিবলার দিকে খেজুর গাছের সারিবদ্ধ থাম দেওয়া হল এবং দুই পাশে পাথর স্থাপন করা হল। নির্মাণ কাজের সময় সাহাবা-ই- কিরাম রাজায’ (উৎসাহোদ্দীপক শ্লোক) আবৃতি করছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সাথে আবৃতি করছিলেন। তারা বলছিলেন اللَّهُمَّ إِنَّهُ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُ الآخِرَهْ فَانْصُرِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ হে আল্লাহ! আখিরাতের কল্যাণই প্রকৃত কল্যান। সূতরাং আনসার ও মুহাজিরদেরকে আপনি সাহায্য করুন।
১০৫৭.    উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আল-অম্বারী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ তৈরি হওয়ার পূর্বে বকরীর বাথানে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
১০৫৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনিও উপরোক্তরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ২. বায়তুল মুকাদ্দাস হতে কা’বার দিকে কিবলা পরিবর্তন


১০৫৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে বায়তুল মূকাদ্দাসের দিকে মুখ করে ষোল মাস পর্যন্ত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছি। অবশেষে সূরা বাকারার এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়ঃ وَحَيْثُمَا كُنْتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ (অর্থাৎ তোমরা যেখানেই থাক, তোমাদের চেহারা কা’বার দিকে কর)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করার পর আয়াতটি নাযিল হয়। এরপর একজন সাহাবী চলে গেলেন পথিমধ্যে একদল আনসারকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখলেন। তিনি তাঁদেরকে এ বিষয় অবহিত করলেন, তারা তাদের চেহারা বায়তুল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নিলেন।
১০৬০.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও আবূ বকর ইবনু খাল্লাদ (রহঃ) ... বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ষোল অথবা সতের মাস বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছি। অতঃপর আমাদেরকে কা'বার দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
১০৬১.    শায়বান ইবনু ফাররূখ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা কুবাতে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিল, ইতিমধ্যে একজন লোক এসে বলল, এ রাত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে এবং কাবার দিকে মুখ করবার আদেশ প্রদান করা হয়েছে। অতএব, তোমরাও কাবার দিকে মুখ করে দাঁড়াও। তাদের চেহারা ছিল তখন সিরিয়ার দিকে। অতঃপর তারা কা’বার দিকে ঘূরে গেলেন।
১০৬২.    সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকজন ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিল, ইতিমধ্যে একজন লোক তাদের কাছে আসলো। পরবর্তী অংশ মালিকের হাদীসের অনুরুপ।
১০৬৩.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। অতঃপর এ আয়াতটি নাযিল হলঃ قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ‏ "আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি প্রায়ই লক্ষ্য করি। সুতরাং তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি, যা তুমি পছন্দ কর। অতএব, তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও"। অতঃপর সালামা গোত্রের একজন লোক যাচ্ছিল। সে দেখল, লোকেরা ফজরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর রুকুতে আছে এবং তাঁরা এক রাক'আত আদায় করেছে, সে উচ্চস্বরে বললো, ওহে, কিবলা বদলে গেছে, তখন তাঁরা ঐ অবস্থায়ই কিবলার দিকে ফিরে গেল।

পরিচ্ছেদঃ ৩. কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ, মসজিদ ছবি বানানো, কবরকে সিজদার স্থান করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা


১০৬৪.    যূহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, উম্মু হাবীবা ও উম্মু সালামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি গীর্জার কথা উল্লেখ করলেন, যা তাঁরা আবিসিনিয়ায় দেখেছিলেন। তাতে অনেক ছবি ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাদের মধ্যে যখন কোন নেক লোক মারা যেত, তখন তার কবরের উপর তারা মসজিদ নির্মাণ করত এবং তারা সেখানে এদের ছবি তৈরী করত। এই সব লোক কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে।
১০৬৫.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমর আন-নাকিদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সাহাবীগণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তার মৃত্যু রোগের সময় আলোচনা করছিলেন, তখন উম্মু সালামা ও উম্মু হাবীবা (রাঃ) একটি গীর্জার কথা উল্লেখ করেন, পরবতীঁ অংশ উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ।
১০৬৬.    আবূ কুবায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীগণ একটি গীর্জার সম্পর্কে আলোচনা করলেন যা তাঁরা আবিসিনিয়ায় দেখেছিলেন। যার নাম ছিল মারিয়া। পরবর্তী অংশ উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ।
১০৬৭.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমর আন-নাকিদ (রহঃ) ... আয়োশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগ থেকে আরোগ্যলাভ করেননি সে রোগশয্যায় থেকে বলেছেন, ইয়াহূদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। তারা তাদের নাবীদের (নবীদের) কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, যদি এরুপ আশংকা না হতো, তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবর উঁচু করা হতো। কিন্তু তিনি তাকে মসজিদ বানানোর আশংকা করেছিলেন। ইবন আবু শায়বার বর্ণনায় وَلَوْلاَ ذَاكَ আছে কিন্তু قَالَتْ শব্দটি নেই।
১০৬৮.    হারুন ইবনু সাইদ আল-আয়লী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ইয়াহুদীদেরকে ধ্বংস করুক, তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।
১০৬৯.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলূল্লাহ বলেছেন, ইয়াহূদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।
১০৭০.    হারুন ইবনু সাঈদ আন আয়লী ও হারামালা ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত যখন নিকটবর্তী হল, তখন তিনি চাঁদর দিয়ে তাঁর চেহারা ঢাকতে লাগলেন। তাঁর শ্বাস রুদ্ধ হলে চেহারা থেকে তা সরিয়ে ফেলছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি বললেন, ইয়াহুদী-নাসারার উপর আল্লাহর অভিশাপ। তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। তিনি (এই কথা বলে) তাদের মত করা থেকে সতর্ক করে দিচ্ছিলেন।
১০৭১.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পাঁচদিন আগে তাকে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ আমার খলীল (অন্তরঙ্গ বন্ধু) হওয়া থেকে আমি আল্লাহর কাছে নিষ্কৃতি চাইছি। কেননা, আল্লাহ তায়ালা আমাকে তার খলীলরূপে গ্রহণ করেছেন-যেমনিভাবে খলীলরুপে গ্রহণ করেছিলেন ইবরাহীমকে। আমি যদি আমার উম্মাতের মধ্যে কাউকে খলীলরুপে গ্রহণ করতাম তবে আবূ বাকরকেই খলীল রুপে গ্রহণ করতাম। সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নাবী ও নেককারদের কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়েছিল। সাবধান! তোমরাও কবরকে মসজিদ বানিও না। আমি তোমাদের তা থেকে নিষেধ করছি।

পরিচ্ছেদঃ ৪. মসজিদ নির্মাণের ফযীলত এবং তার প্রতি উৎসাহ প্রদান


১০৭২.    হারূন ইবনু সাঈদ আল আয়লী ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... আবাদুল্লাহ আল-খাওলানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন উসমান (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদটি (মসজিদ-ই নববী ভেঙ্গে নতূন ভাবে) তৈরি করলেন এবং লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে লাগল। তখন তাঁকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা অনেক বেশী কথা বলাবলি করছ। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করবে, বর্ণনাকারী বুকায়র বলেন, আমার ধারণা তিনি বলেছেন, তদ্বারা তার একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করাই উদ্দেশ্যে হবে, তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করবেন।
১০৭৩.    যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... মাহমূদ ইবনু লাবীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) যখন নতুনভাবে মসজিদ-ই নববী নির্মাণের সংকল্প করলেন, লোকে তা পছন্দ করল না। তারা সেটি আগের মত রাখাই ভাল মনে করেছিল। তখন উসমান (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরী করবেন।

পরিচ্ছেদঃ ৫. রুকুর সময় দুই হাত হাঁটুতে রাখা উত্তম হওয়া এবং তাতবীক রহিত হওয়া


১০৭৪.    মুহাম্মাদ ইবনুল আলা আল-হামদানী, আবূ কুবায়র (রহঃ) ... আসওয়াদ ও আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, আমরা দু’জনে আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর বাসগৃহে উপস্থিত হলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের পিছনে যারা রয়েছে (অর্থাৎ শাসকগণ) তারা কি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন? আমরা বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে ওঠ এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর (কেননা, সালাত (নামায/নামাজ)-এর ওয়াক্ত হয়ে গেছে এবং আমীর ও শাসকদের অপেক্ষায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ে বিলম্ব করা যায় না) তিনি আমাদের আযান ও ইকামাতের আদেশ দিলেন না। আমরা তাঁর পিছনে দাঁড়াতে চাইলাম, তিনি আমাদের এক জনকে হাত ধরে ডান দিকে এনে দাঁড় করালেন এবং অন্য জনকে বাম দিকে। যখন তিনি রুকু করলেন, আমরা আমাদের দুই হাত হাটূর উপর রাখলাম। তিনি আমাদের হাত ধরে এবং হাতের দুই তালূ জোড় করে দুই উরুর মাঝখানে রাখলেন। 

সালাত (নামায/নামাজ) শেষে বললেন, অচিরেই তোমাদের মধ্যে এমন এমন অমীরের আবির্ভাব ঘটবে যারা সালাত (নামায/নামাজ) কে তার ওয়াক্ত হতে দেরী করে পড়বেন এবং (আসরের) সালাত (নামায/নামাজ) কে এরুপ দেরী করে পড়বে যে, সূর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হবে। অতএব, তোমরা যখন তাদের এরুপ করতে দেখবে তখন তোমরাও ওয়াক্তের ভিতরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিবে। তারপর তাঁদের সাথে দ্বিতীয়বার নফল হিসাবে পড়বে। আর তোমরা যখন তিনজন হবে, তখন সবাই মিলে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে (অর্থাৎ সবাই এক কাতারে দাঁড়াবে এবং ইমাম মাঝখানে থাকবে)। যখন তিনের অধিক হবে, তখন একজনকে ইমাম বানিয়ে নিবে (এবং তিনি সামনে দাঁড়াবেন)। আর যখন রুকু করবে, তখন দুই হাত উরুর উপর রেখে ঝুঁকে পড়বে এবং দুই হাতের তালূ জোড় করে (দুই উরুর মাঝে) রাখবে আমি যেন এখনও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক হাতের আঙ্গুলগুলো আরেক হাতের আঙ্গূলের ফাঁকে ঢুকতে দেখতে পাচ্ছি। এই বলে তাদের দেখালেন।
১০৭৫.    মিনজাব ইবনুল হারিস আত তামীমী, উসমান ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আলকামা ও আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁরা উভয়ে আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) এর নিকট গেলেন তারপর আবূ মুআবিয়ার হাদীসের মর্ম অনুযায়ী বর্ণনা করেছেন। এবং ইবনু মুসহির ও জারীরের হাদীসে আছে, আমি যেন এখনও দেখতে পাচ্ছি রুকু অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তার এক হাতের আঙ্গূল আরেক হাতের আঙ্গুলে ঢুকানো।
১০৭৬.    আবদুল্লাহ ইবনু আবদূর রহমান আদ দারিমী (রহঃ) ... আলকামা ও আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁরা উভয়ে আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) এর নিকট গেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের পিছনের লোকেরা কি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছে? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ! অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রহঃ) তাঁদের মধ্যভাগে দাঁড়ালেন এবং একজনকে ডান পাশে দাঁড় করালেন ও অপরজনকে বাম পাশে। তারা বললেন, আমরা রুকু করার সময় আমাদের হাত হাঁটুর উপর রাখলাম। কিন্তু তিনি আমাদের হাত ধরে দুই হাত জোড় করে দুই উরুর মাঝখানে রাখলেন। সালাত (নামায/নামাজ) শেষে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরুপই করেছেন।
১০৭৭.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ কামিল আল জাহদারী (রহঃ) ... মূসআব ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমি আমার পিতার পার্শ্বে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম এবং (রূকু করাকালীন) আমার দুই হাত দুই হাঁটুর মাঝখানে রাখলাম। তিনি ইশারা করে আমাকে আমার দুই হাতের তালূ আমার দুই হাঁটুর উপর রাখতে বললেন। আমি দ্বিতীয়বার ঐরুপ করলাম। আবার আমার হাতের উপর হাত মারলেন এবং বললেন, আমাদের এরূপ করতে নিষেধ করা হয়েছে আর হাতের তালূ দুই হাঁটুর উপর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১০৭৮.    খালাফ ইবনু হিশাম ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... আবূ ইয়া'ফুর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উক্ত সনদে "আমাদের এরুপ করতে নিষেধ করা হয়েছে" পর্যন্ত বর্ণনা করেন। তবে এ সনদে ঐ হাদীসের পরের কথাটি উল্লেখ করেন নি।
১০৭৯.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... মুস’আব ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনা, আমি রুকু করার সময় দুই হাত এরুপ করলাম অর্থাৎ দুই হাত জোড় করে দুই উরুর মাঝখানে রাখলেন। আমার পিতা বললেন, আমরা প্রথমে এরুপ করতাম, কিন্তু পরে আমাদের হাটূর উপর হাত রাখতে আদেশ করা হয়েছে।
১০৮০.    হাকাম ইবনু মূসা (রহঃ) ... মুস’আব ইবনু সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতার পার্শ্বে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম। যখন রুকুতে গেলাম, তখন এক হাতের আঙ্গুল আরেক হাতে আঙ্গুলের ফাঁকে ঢুকিয়ে উভয় হাত মাঝখানে রাখলাম। তিনি আমার হাতে মারলেন এবং সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে বললেন, প্রথমে আমরা এরুপ করতাম। কিন্তু আমাদের হাঁটুর উপর রাখার আদেশ দেয়া হয়।

পরিচ্ছেদঃ ৬. গোড়ালীর উপর নিতম্ব রেখে বসা


১০৮১.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও হাসান আল হুলওয়ানী (রহঃ) ... তাঊস (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে ইক’আ (দুই সিজদার ফাঁকে গোড়ালির উপর নিতম্ব রেখে বসা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, তা সুন্নাত। আমরা বললাম, আমরাতো এই ধরনের বসা একজন লোকের জন্য কঠিন মনে করি। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটি তোমার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সুন্নাত।

পরিচ্ছেদঃ ৭. সালাতে কথা বলা নিষেধ এবং এর পূর্ব অনুমতির বিধান রহিতকরন


১০৮২.    আবূ জাফর মুহাম্মাদ ইবনুস সাব্বাহ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... মুআবিয়া ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছিলাম। ইত্তবসরে আমাদের মধ্যে একজন হাঁচি দিল। আমি ইয়ারহামুকাল্লহ বললাম। তখন লোকেরা আমার দিকে আড় চোখে দেখতে লাগল। আমি বললাম আমার মায়ের পূত্র বিয়োগ হোক। তোমরা আমার প্রতি তাকাচ্ছ কেন? তখন তারা তাদের উরুর উপর হাত চাপড়াতে লাগল। আমি যখন বুঝতে পারলাম যে, তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছে, তখন আমি চুপ হয়ে গেলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলেন, আমার মাতা-পিতা তাঁর জন্য কুরবান হোক! আমি তার মত এত সুন্দর করে শিক্ষা দিতে পূর্বেও কাউকে দেখিনি, তাঁরপরেও কাউকে দেখিনি। আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে ধমক দিলেন না, মারলেন না, গালিও দিলেন না। বরং বললেন, সালাত (নামায/নামাজ) কথা কথাবার্তা বলা ঠিক নয়। বরং তা হচ্ছে- তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠের জন্য। 

আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! জাহিলি যুগ বিদুরিত হল বেশী দিন হয়নি, এইতো ইসলাম এসেছে আমাদের কেউ কেউ তো গনকদের নিকট আসা যাওয়া করে। তিনি বললেন, তুমি তাদের কাছে যেওনা। আমি পূনরায় বললাম, আমাদের কেউ কেউ তো শুভ ও অশূভ লক্ষণের অনুকরণ করে। তিনি বললেন, এটি তাদের মনগড়া বিষয়। এটি যেন তাদেরকে (কোন ভাল কাজ করতে) বাধা না দেয়। আমি বললাম, আমাদের মধ্যে কিছু লোক রেখা অঙ্কন করে, (ভাগ্য নির্নয় করে) তিনি বললেন, একজন নবী রেখা অঙ্কন করতেন। যার রেখা সেই নাবীর রেখার সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল হবে তারটা ঠিক হবে। 

(বর্ণনাকারী মুঅেবিয়া বলেন) আমার একটি দাসী ছিল। সে উহুদ ও জাওয়ানিয়ার দিকে আমার ছাগল চরাত। একদিন আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি, একটি একটি বাঘ এসে একটি ছাগল নিয়ে গেল। যেহেতু আমিও মানুষ, সেহেতু অন্যান্য মানুষের মত আমারও রাগ এসে গেল। আমি তাকে একটি চড় বসিয়ে দিলাম। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তিনি আমার এই কাজকে অত্যন্ত অপছন্দ করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাকে আযাদ করে দিব? তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো আমি তাকে তার নিকট নিয়ে এলাম। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ কোথায় আছেন? সে বলল, আকাশে। তিনি বললেন, আমি কে? সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল। তখন তিনি বললেন, ওকে আযাদ করে দাও। কেননা ও মু'মিনা।
১০৮৩.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর থেকে উপরোক্ত সুত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে।
১০৮৪.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু নুমায়র ও আবূ সাঈদ আল-আশাজ্জ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্থায় সালাম করতাম এবং তিনি ঐ অবস্থায়ই আমাদের সালামের জওয়াব দিতেন। কিন্তু আমরা আবিসিনিয়া হতে ফিরে এসে যখন ঐ অবস্থায় তাকে সালাম দিলাম, তিনি তার কোনও জবাব দিলেন না। সালাত (নামায/নামাজ) শেষে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্থায় আপনাকে সালাম দিতাম, (আপনি তার জবাব দিতেন, কিন্তু এখন আপনি জবাব দিলেন না, এর কারণ কি?) তিনি বললেন, সালাত (নামায/নামাজ)-এ নির্ধারিত আমল রয়েছে (সূতরাং এসময় অন্য কাজে মশগুল হওয়া যায় না)।
১০৮৫.    ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উক্তরূপ বর্ণনা করেছেন।
১০৮৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা সালাত (নামায/নামাজ)-এ কথাবার্তা বলতাম। প্রত্যেকেই তার পাশের ব্যাক্তির সাথে আলাপ করত। অতঃপর যখন (আল্লাহর জন্য দাঁড়াবে বিনীতভাবে) (২ঃ ২৩৮) আয়াতটি নাযিল হলো, তখন চুপ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয় এবং পরস্পরে আলাপ করতে নিষেধ করা হয়।
১০৮৭.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইসমাঈল ইবনু আবূ খালিদ (রহঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন
১০৮৮.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহু (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে একটি কাজে পাঠিয়েছিলেন। আমি ফিরে এসে দেখি, তিনি (সাওয়ারীতে আরোহণ করে নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছেন। আমি (ঐ অবস্থায়ই) তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি ইঙ্গিতে আমাকে চুপ করতে বললেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে আমাকে ডাকলেন এবং বললেন, তুমি এক্ষুণে আমাকে সালাম দিয়েছিলে অথচ আমি সালাত (নামায/নামাজ)-রত ছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি এই সময় পূর্বমুখী ছিলেন।
১০৮৯.    আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী মুস্তালিক গোত্রের দিকে যাওয়ার সময় আমাকে কোনও এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। আমি ফিরে এসে দেখি, তিনি তাঁর উটের উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছেন। আমি ঐ অবস্থায়ই তাঁর সাথে কথা বললাম। তিনি হাতদ্বারা (চুপ করতে) ইশারা করলেন। বর্ণনাকারী যুহায়র এই সময় তাঁর হাতদ্বারা ইশারা করে দেখালেন, আমি আবার কথা বললাম। আবার এরুপ ইশারা করলেন। বর্ণনাকারী যুহায়র এবারও তাঁর হাতদ্বারা মাটির দিকে ইশারা করে দেখালেন। তখন আমি তার কুরআন তিলাওয়াত শুনছিলাম। মাথায় ইশারা করে রুকু সিজদা করছিলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি যে কাজে তোমাকে পাঠিয়েছিলাম, তার কি করেছ? আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম বলে তোমার কথার উত্তর দিতে পারি নি। যুহায়র বলেন, আবুয-যুবায়র এ হাদিস বর্ণনা করার সময় কিবলামুখী হয়ে বসেছিলেন। তিনি হাতে ইশারা করে বনী মুস্তালিকের দিকে দেখিয়েছিলেন। সেদিক ছিল কা'বার ভিন্নদিকে।
১০৯০.    আবূ কামিল আল জাহদারী (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি এক সফর উপলক্ষে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহযাত্রী ছিলাম। তিনি আমাকে কোনও এক কাজে পাঠালেন। ফিরে এসে দেখি, তিনি কিবলা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে তার উষ্ট্রীর উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছেন। আমি সালাম করলাম। কিন্তু উত্তর দিলেন না। সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে বললেন, আমি যদি সালাত (নামায/নামাজ)রত না থাকতাম, তবে তোমার সালামের উত্তর অবশ্যই দিতাম।
১০৯১.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কোনও এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী হাম্মাদ কর্তূক বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৮. সালাতে শয়তানকে লানত করা, শয়তান হতে আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং ‘আমলে কালীল’ করা বৈধ


১০৯২.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ও ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গতরাতে একটি দুষ্ট জ্বীন আমার সালাত (নামায/নামাজ) নষ্ট করার জন্য হানা দিয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ তাকে আমার আয়ত্তাধীন করে দিলেন। আমি তার ঘাড় মটকিয়ে দিলাম। আমার ইচ্ছা হয়েছিল যে, তাকে মসজিদের কোনও একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখি। যাতে তোমরা সবাই ভোর বেলা তাকে দেখতে পাও। পরে আমার ভাই সুলায়মানের প্রার্থনা মনে পড়ে গেল। তিনি প্রার্থনা করেছিলেন- رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي (হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা কর এবং আমাকে এমন রাজত্ব দান কর যা আমার পর অন্য কেউ না পায়।) এরপর আল্লাহ তাকে (দুষ্ট জ্বীনকে) লাঞ্ছিত করে বিতাড়িত করলেন।
১০৯৩.    মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ... শূবা (রহঃ) থেকে উপরোক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে ইবনু জা’ফরের বর্ণনায় "আমি তার ঘাড় মটকিয়ে দিলাম" কথাটি নেই। আর ইবন আবু শায়বার বর্ণনায় আছে, "আমি তাকে সজোরে ধাক্কা দিলাম।"
১০৯৪.    মুহাম্মাদ ইবন সালাম আল-মুরাদী (রঃ) ... আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সালাতের উদ্দেশ্যে দাঁড়ালেন। আমি শুনতে পেলাম, তিনি বলছিলেন أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ (আমি তোমার থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি)। তারপর তিনবার বললেন, আমি তোমাকে লা’নত করছি, যেরুপ আল্লাহ্‌ তোমাকে লা’নত করেছনে। এরপর তিনি তার হাত বাড়িয়ে দিলেন-যেন কোনও জিনিস ধরছিলেন। পড়ে যখন তিনি সালাত শেষ করলেন, তখন আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আজ আমি আপনাকে সালাতে এমন কিছু বলতে শুনেছি, যা ইতিপূর্বে কখনও শুনিনি। আরও দেখলাম যে, আপনি আপনার হাত বাড়িয়ে দিলেন। 

তিনি বললেন, আল্লাহর দুশমন ইবলিশ আমার মুখে লাগানোর জন্য আগুনের একটি শিখা নিয়ে এসেছিল। তাই আমি তিনবার أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ বললাম। তারপরত তিনবার বললাম أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللَّهِ التَّامَّةِ অর্থাৎ আমি তমার উপর আল্লাহর পূর্ণ অভিশাপ বর্ষণ করছি। কিন্তু সে তখনও হটে গেল না। শেষে তাকে পাকড়াও করার ইচ্ছা হয়েছিল। আল্লাহর কসম! যদি আমার ভাই সুলায়মান আলাইহিস সালামের দু’আ না থাকত, তবে সে ভোর পর্যন্ত বাঁধা থাকত আর মদিনার শিশুরা তাকে নিয়ে খেলা করত।

পরিচ্ছেদঃ ৯. সালাতে শিশুদের কাঁধে উঠানো, কাপড় অপবিত্র প্রমান না হওয়া পর্যন্ত তাকে পবিত্র জ্ঞান করা এবং আমলে কালীল দ্বারা সালাত নষ্ট না হওয়া


১০৯৫.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা’নাব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কন্যা যয়নাবের মেয়ে উমামাকে (আবূল আস ইবনুুন রবী’র ঔরসজাত) স্বীয় কাঁধে উঠিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। যখন তিনি দাঁড়াতেন তাকে উঠিয়ে নিয়তেন আর যখন সিজদা করতেন, তখন নামিয়ে রাখতেন।
১০৯৬.    মুহাম্মদ ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... আবূ কাতাদা আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আবূল আ’সের কন্যা উমামাকে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা যায়নাবের মেয়ে) স্বীয় কাঁধের উপর রেখে ইমামতি করতে দেখেছি। তিনি যখন রুকু করতেন, তখন তাকে রেখে দিতেন আর যখন সিজদা হতে দাঁড়াতেন, তাকে আবার কাঁধের উপর তুলে নিতেন।
১০৯৭.    আবূ তাহির ও হারুন ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ কাতাদা আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আবূল আসের কন্যা উমামাকে স্বীয় কাঁধে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ)-এ ইমামতি করতে দেখেছি। তিনি যখন সিজদা করতেন, তখন তাকে নিচে রেখে দিতেন।
১০৯৮.    কতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি মসজিদে বসা ছিলাম, ইত্যবসরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করলেন। হাদিসের পরবর্তী অংশ উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ। তবে এ হাদিসে ঐ সালাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইমামতির কথা উল্লেখ নেই।

পরিচ্ছেদঃ ১০. সালাতে প্রয়োজনবশত দু’এক কদম চলা


১০৯৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হাজিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কতিপয় লোক সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) এর নিকট আগমন করল এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বর কি কাঠের তৈরি ছিল, তা নিয়ে তারা বিতর্ক করতে লাগল। তিনি (সাহল ইবনু সা’দ) বললেন, আল্লাহর কসম! সেটি কি কাঠের তৈরি ছিল, কে তৈরি করেছিল, তা আমি ভাল করে জানি এবং সর্বপ্রথম কোনদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর আরোহণ করেছিলেন, তাও আমি দেখেছি। 

আবূ হাজিম বলেন, আমি সাহল (রাঃ) কে বললাম, হে আব্বাসের পিতা! আপনি ঐসব ঘটনা পুনরায় আমাদের নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলাকে বলে পাঠালেন [আবূ হাজিম বলেন, সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) সেইদিন মহিলাটির নামও বলেছিলেন] তুমি তোমার কাঠমিস্ত্রি গোলামটিকে একটু ফুরসত দিও। সে আমার জন্য একটি মিম্বর তৈরি করে দিবে, আমি তার উপর থেকে মানুষকে ওয়াজ নসিহত করব। অতঃপর সেই গোলামটি তিন সিঁড়িবিশিষ্ট এই মিম্বরটি বানায় এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে সেটি মসজিদের এই স্থানে (বর্তমান স্থানে) রাখা হয়। তার কাঠগুলি গাবা (মদিনার নয় মাইল দূরে অবস্থিত মালভূমির নাম) অঞ্চলের ঝাউগাছের ছিল। 

আর আমি দেখলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর দাঁড়ালেন এবং (সালাত (নামায/নামাজ)-এর) তাকবীর বললেন, লোকেরাও তার পিছনে তাকবীর বলল। তিনি মিম্বরের উপরেই ছিলেন, অতঃপর তিনি রুকু হতে উঠে দু’এক কদম পিছনের দিকে হেঁটে নিচে নেমে গেলেন। আর মিম্বরের গোঁড়ায় সিজদা করলেন। আবার তিনি পূর্বস্থানে চলে গেলেন। এভাবে তিনি তার সালাত (নামায/নামাজ) সমাপ্ত করলেন। তারপর তিনি লোকদের দিকে ফিরে বললেন, হে লোকসকল! আমার এরুপ করার কারন হল, যেন তোমরা আমার অনুকরন করতে পার এবং আমার সালাত (নামায/নামাজ) শিখে নিতে পার।
১১০০.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, জুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, কয়েক ব্যাক্তি সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) এর নিকট আসল এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বর কিসের তৈরি তা জানতে চাইল। এরপর তারা উপরোক্ত ইবনু আবূ হাজিমের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।

পরিচ্ছেদঃ ১১. কোমারে হাত রেখে সালাত আদায় করা মাকরূহ


১১০১.    হাকাম ইবনু মূসা আল-কানতারী ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোমরে হাত রেখে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে নিষেধ করেছেন। আবূ বকরের বর্ণনায় نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم উল্লেখ রয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ১২. সালাতে কঙ্কর সরানো এবং মাটি সমান করা মাকরূহ


১১০২.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... মু’আয়কীব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঙ্কর সরানো সম্বন্ধে আলোচনা করলেন এবং বললেন, তা যদি তোমার করতেই হয় তবে একবার মাত্র করতে পার।
১১০৩.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... মু’আয়কীব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকেরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ)-এর মধ্যে কঙ্কর সরানো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেলেন, মাত্র একবার।
১১০৪.    উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর আল-কাওয়ারীরী ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... মু’আয়কীব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাত (নামায/নামাজ)-এর সিজদাস্থলের মাটি সমান করা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, যদি তা তোমার করতেই হয় তবে একবারমাত্র করতে পার।

পরিচ্ছেদঃ ১৩. সালাতে হোক বা সালাতের বাহিরে, মসজিদে থুথু ফেলা নিষেধ


১১০৫.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত-তামীমী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলার দেয়ালে শ্লেষ্মা লেগে থাকতে দেখে তা ঘষে তুলে ফেললেন। অতঃপর লোকদের উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমাদের কেউ যখন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে, তখন সম্মুখের দিকে থুথু নিক্ষেপ করবে না। কেননা আল্লাহ সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের সময় তার সম্মুখে থাকেন।
১১০৬.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র, কুতায়বা ইবনু সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু রাফি ও হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের কিবলার দিকে শ্লেষ্মা দেখতে পেলেন। রাবী বলেন, হাদিসের অবশিষ্ট অংশ মালিকের উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ।
১১০৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমর আন-নাকিদ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে কিবলার দিকে শ্লেষ্মা দেখতে পেয়ে একটি কঙ্কর দ্বারা তা ঘষে তুলে ফেলেলেন। অতঃপর তিনি ডানদিকে ও সামনের দিকে থুথু ফেলতে নিষেধ করেন। তবে প্রয়োজনে বামদিকে ও বাম পায়ের নিচে থুথু ফেলতে অনুমতি দিয়েছেন।
১১০৮.    আবূ তাহির, হারামালা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে উয়ায়না বর্ণিত উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
১১০৯.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের কিবলার প্রাচীরে থুথু কিংবা শ্লেষ্মা বা কফ দেখতে পেয়ে তা ঘষে তুলে ফেললেন।
১১১০.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একবার) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে কিবলার দিকে শ্লেষ্মা দেখতে পেলেন। অতঃপর লোকদের দিকে ফিরে বললেন, তোমাদের কি হয়েছে? তোমাদের একজন তো প্রভুর দিকে মুখ করে সালাত (নামায/নামাজ) দাঁড়ায়, তারপর সে সামনে দিকে থুথু নিক্ষেপ করতে থাকে। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে যে, কেউ তার দিকে মুখ করে দাঁড়াবে অতঃপর তার মুখের উপর থুথু নিক্ষেপ করবে? যখন তোমাদের কারো থুথু এসে পড়ে, তখন বামদিকে পায়ের নিচে ফেলবে। যদি জায়গা না থাকে, তবে এরুপ করবে—বর্ণনাকারী কাসিম এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজ কাপড়ে থুথু ফেললেন এবং এক প্রান্তকে আরেক প্রান্ত দিয়ে ঘষে ফেললেন।
১১১১.    শায়বান ইবনু ফাররুখ, ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে ইবনু উলাইয়ার অনুরুপ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তবে হুশায়মের বর্ণিত হাদিসে অতিরিক্ত আছেঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি যেন দেখতে পাচ্ছি, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাপড়ের একাংশ আরেক অংশের সাথে ঘষছেন।
১১১২.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন সালাত (নামায/নামাজ)-রত থাকে, তখন সে তার রবের সাথে একান্তে আলাপ করে। অতএব তার সম্মুখে ও ডানদিকে থুথু ফেলবে না, বরং বামদিকে পায়ের নিচে ফেলবে।
১১১৩.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মসজিদে থুথু নিক্ষেপ করা গুনাহ। তার কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হচ্ছে তা মাটিচাপা দেওয়া।
১১১৪.    ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল-হারিসী (রহঃ) ... শু’বা (রহঃ) বলেন, আমি কাতাদা (রহঃ) কে মসজিদে থুথু ফেলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মসজিদে থুথু নিক্ষেপ করা গুনাহের কাজ এবং তার কাফফারা হচ্ছে মাটিচাপা দেওয়া।
১১১৫.    আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আসমা আয-যুবাঈ ও শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) ... আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সামনে আমার উম্মতের ভালোমন্দ সমস্ত আমল পেশ করা হল। আমি তাদের নেক আমলের মধ্যে একটা দেখলাম রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা, আর তাদের মন্দ কর্মসমূহের মধ্যে একটা দেখলাম সেই শ্লেষ্মা যা মসজিদে ফেলা হয় অথচ মাটিচাপা দেয়া হয় না।
১১১৬.    উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আল-আম্বারী (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু শিখখীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। তাকে দেখতে পেলাম যে, তার কফ বের হলে তিনি জুতা দ্বারা তা ঘষে ফেললেন।
১১১৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু শিখখীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। তিনি বলেন অতঃপর তার কফ বের হলে তিনি বাম পায়ের জুতা দিয়ে তা ঘষে ফেললেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪. জুতা পরে সালাত আদায়


১১১৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ মাসলামা সাঈদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি জুতা পরিধান করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
১১১৯.    আবূর-রাবী আয-যাহরানী (রহঃ) ... সাঈদ ইবনু ইয়াযীদ আবূ মাসলামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম। অতঃপর পূর্বের হাদিসের অনুরুপ।

পরিচ্ছেদঃ ১৫. নকশাদার কাপড়ে সালাত আদায় করা মাকরূহ


১১২০.    আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি নকশাদার চাঁদর পরিধান করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং বললেন, এই নকশাগুলি আমাকে ঝঞ্ঝাটে ফেলে দিয়েছে (সালাতে অমনোযোগী করে ফেলেছে)। এটি আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং আমাকে তার মোটা চাঁদরটি এনে দাও।
১১২১.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি নকশাকৃত চাঁদর পরিধান করে সালাত (নামায/নামাজ)-এ দাঁড়ালেন। চাদরের নকশাগুলি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করল। সালাত (নামায/নামাজ) শেষে তিনি বললেন, এই চাদরটি আবূ জাহম ইবনু হুযায়ফার নিকট নিয়ে যাও এবং তার মোটা চাদরটি আমাকে এনে দাও, কেননা এটি এখন আমাকে আমার সালাত (নামায/নামাজ)-এ অন্যমনস্ক করেছে।
১১২২.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি নকশাদার চাদর ছিল। চাদরখানি সালাত (নামায/নামাজ)-এর মনোযোগ নষ্ট করত। তিনি চাদরটি আবূ জাহমকে দিয়ে দিলেন এবং তার মোটা চাদরটি গ্রহন করলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬. ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাবার সামনে আসলে এবং তৎক্ষণাৎ খাবার ইচ্ছা থাকলে তা না খেয়ে ও মলমূত্রের বেগ চেপে রেখে সালাত আদায় করা মাকরূহ


১১২৩.    আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু উয়ায়না (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে বং তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন রাত্রির খাবার আসবে, ওদিকে সালাত (নামায/নামাজ)-এর ইকামাত বলা হবে তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নিবে।
১১২৪.    হারুন ইবনু সাঈদ আল-আয়লী (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খাবার সামনে পেশ করা হলে এবং সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হলে তোমরা মাগ্রিবের সালাত (নামায/নামাজ)-এর পূর্বে খাবার খেয়ে নিবে। খাবার রেখে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য তাড়াহুড়া করবে না।
১১২৫.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে। ইবনু উয়ায়না (রহঃ) কর্তৃক যুহরী (রহঃ) এর সুত্রে . আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ।
১১২৬.    ইবনু নুমায়র ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কারো সামনে রাতের খাবার রাখা হয়, ওদিকে সালাত (নামায/নামাজ)-এর ইকামত শুরু হয়ে যায়, তখন সে প্রথমে খাবার খেয়ে নিবে। খাবার শেষ না করে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য তাড়াহুড়া করবে না।
১১২৭.    মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক আল-মূসাইয়্যাবী, হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও সালত ইবনু মাসউদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে অনুরুপ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
১১২৮.    মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) ... ইবনু আবূ আতীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর সিদ্দিক (আয়িশার ভ্রাতুষ্পুত্র) আয়িশা (রাঃ)-র কাছে একটি হাদিস আলোচনা করছিলাম। কাসিমের কথায় উচ্চারণগত অনেক ভুল হত। তার মাতা ছিল উম্মু ওয়ালাদ (অর্থাৎ তিনি দাসীর পুত্র ছিলেন)। আয়িশা (রাঃ) তাকে বলেন, কাসিম, তোমার কি হয়েছে! তুমি আমার এই ভ্রাতুষ্পুত্রের (ইবনু আতীক) মত কথা বলছ না কেন? অবশ্য আমি জানি, তুমি কোথা থেকে এসেছ। একে তার মা আদব শিক্ষা দিয়েছে (সে ছিল আযাদ), আর তোমার মা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছে (সে ছিল বাদী)। 

রাবী বলেন, এই কথায় কাসিম রেগে গেলেন এবং আয়িশা (রাঃ)-র প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। এরপর যখন দেখলেন যে, আয়িশা (রাঃ) এর পক্ষ থেকে দস্তরখান বিছানো হচ্ছে, তখন তিনি উঠে দাঁড়ালেন। আয়িশা (রাঃ) বললেন, কোথায় যাচ্ছ? তিনি বললেন, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে। আয়িশা (রাঃ) বললেন, বস। তিনি বললেন, আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে যাচ্ছি। আয়িশা (রাঃ) বললেন, ওরে অকৃতজ্ঞ! বস! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনিছি খাবার সামনে আসার পর কোনও সালাত (নামায/নামাজ) নেই এবং পেশাব পায়খানার বেগ থাকা অবস্থায়ও কোন সালাত (নামায/নামাজ) নেই।
১১২৯.    ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন। অবশ্য এ হাদিসে কাসিম ইবনু মুহাম্মাদের উক্ত ঘটনা উল্লেখ করা হয়নি।

পরিচ্ছেদঃ ১৭. রসুন-পিয়াজ, মূলা ইত্যাদি দুর্গন্ধযুক্ত দ্রব্য খাওয়ার পর মুখে থেকে দুর্গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত মসজিদে প্রবেশ করা নিষেধ এবং এরূপ ব্যক্তিকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ


১১৩০.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের যুদ্ধের সময় বলেছেন, যে ব্যাক্তি এই উদ্ভিদ অর্থাৎ রসুন খায়, সে যেন মসজিদে না আসে। যুহায়রের বর্ণনায় শুধু যুদ্ধের কথা উল্লেখ আছে, খায়বারের উল্লেখ নেই।
১১৩১.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি এই সবজি অর্থাৎ রসুন খাবে, সে যেন এর দুর্গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের মসজিদের নিকটবর্তী না হয়।
১১৩২.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল আজিজ ইবনু সুহায়র থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) এর নিকট রসুন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি এই উদ্ভিদ হতে আহার করবে, সে যেন আমাদের নিকট না আসে এবং আমাদের সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় না করে।
১১৩৩.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যাক্তি এই উদ্ভিদ খাবে, সে যেন আমাদের মসজিদের নিকট না আসে এবং আমাদেরকে রসুনের গন্ধদ্বারা কষ্ট না দেয়।
১১৩৪.    আবূ বাকর ইবন আবূ শায়বা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিঁয়াজ ও মুলা খেতে নিষেধ করে দিয়েছেন। অতঃপর একবার নিরুপায় হয়ে আমরা তা খেয়ে ফেললাম। তখন তিনি বললেন, যে ব্যাক্তি এই দুর্গন্ধযুক্ত উদ্ভিদ আহার করবে, সে যেন আমাদের মসজিদের নিকটবর্তী না হয়। কেননা মানুষ যাতে কষ্ট অনুভব করে, ফেরেশতাগণও তাতে কষ্ট পান।
১১৩৫.    আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি পিঁয়াজ ও রসুন খাবে, সে যেন আমাদের নিকট হতে দূরে থাকে এবং নিজ ঘরে বসে থাকে। একবার তার নিকট একটি ডেগ আনা হল, তাতে তরকারী রান্না হয়েছিল। তিনি তাতে রসুনের গন্ধ পেলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, এতে কি আছে? বলা হল, এতে রসুন জাতীয় জিনিস আছে। তিনি বললেন, এগুলি অমুক সাহাবীর নিকট নিয়ে যাও। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দেখলেন, সেও তা খাওয়া পছন্দ করছে না, তখন বললেন, তুমি খেয়ে ফেল। আমি যার সঙ্গে কথা বলি (ফেরেশতা) তুমি তার সঙ্গে কথা বল না।
১১৩৬.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি এইসব রসুনের তরকারী খাবে (কখনও বলেছেন) যে ব্যাক্তি পিঁয়াজ, রসুন ও কুরগাছ (গন্ধে ও স্বাদে পিয়াজের মত সবজি বিশেষ) খাবে, সে যেন আমাদের মসজিদের কাছে না আসে। কেননা আদম সন্তান যাতে কষ্ট পায়, ফেরেশতাগনও তাতে কষ্ট পান।
১১৩৭.    ইসহাক ইবনু ইবরাহিম ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রাঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি এই উদ্ভিদ অর্থাৎ রসুন খাবে, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে। এই রিওয়ায়াতে পিঁয়াজ ও কুররাছের কথা উল্লেখ নেই।
১১৩৮.    আমর আন-নাকিদ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খায়বার বিজয়ের পর আমরা তখনও ফিরে আসতে পারিনি। এদিকে আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গী-সাথীগন রসুন ইত্যাদি সবজি খেতে শুরু করলাম। লোকেরা ছিল খুবই ক্ষুধার্ত, আমরা খুব খেলাম। তারপর মসজিদে গেলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গন্ধ পেয়ে বললেন, যে ব্যাক্তি এই নিকৃষ্ট উদ্ভিদ থেকে কিছু খাবে, সে যেন আমাদের মসজিদের নিকট না আসে। লোকেরা বলতে লাগল, (রসুন) হারাম হয়ে গিয়েছে, হারাম হয়ে গিয়েছে। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেন, হে লোকসকল! আল্লাহ আমার জন্য যা হালাল করেছেন, আমি তা হারাম করতে পারি না। কিন্তু এটি এমন এক উদ্ভিদ যার গন্ধ আমার ভাল লাগে না।
১১৩৯.    হারুন ইবনু সাঈদ আল-আয়লী ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগনসহ একটি পিঁয়াজ ক্ষেত অতিক্রম করছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাতে নেমে পিঁয়াজ খেলেন এবং কেউ কেউ খেলেন না। এরপর আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। যারা পিঁয়াজ খাননি তিনি তাদেরকে কাছে ডাকলেন। আর যারা খেয়েছিলেন, তাদের মুখ হতে পিঁয়াজের গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত তাদের পিছিয়ে রাখলেন।
১১৪০.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... মা’দান ইবনু আবূ তালহা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাঃ) একদিন জুম’আর খুতবা দিলেন। এতে তিনি আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এর আলোচনা করে বললেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম, একটি মোরগ এসে আমাকে তিনটি ঠোকর মারল। আমার মতে এর তা’বীর হচ্ছে, আমার মৃত্যু অতি নিকটবর্তী। লোকেরা আমাকে বলেছে আমার একজন স্থলবর্তী নিযুক্ত করতে। নিশ্চয় আল্লাহ তার দ্বীন ও খিলাফাতকে নষ্ট করবেন না। আর তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যা দিয়ে প্রেরণ করেছেন, তাও নষ্ট করবেন না। যদি শীঘ্রই আমার মৃত্যু এসে পড়ে, তবে খিলাফত ঐ ছয় ব্যাক্তির পরামর্শের উপর রইল, যাদের প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত সন্তুষ্ট ছিলেন। আমি জানি, করিপয় লোক, যাদেরকে আমি নিজ হাতে শাস্তি দিয়েছি, এ ব্যাপারে তারা ইসলামের প্রতি দোষারোপ করবে। তারা যদি তা করে, তবে তারা আল্লাহর দুশমন ও পথভ্রষ্ট কাফির। 

আমি কালালা (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যাক্তি) ‘র সমস্যা ব্যাতিত অন্য কোন কঠিন সমস্যা রেখে যাচ্ছি না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কালালা সম্পর্কে যতবার জিজ্ঞাসা করেছি, ততবার অন্য কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি নি। তিনিও আমার প্রতি এ ব্যাপারে যতটা কঠোর ব্যবহার করেছেন, ততটা অন্য কোনও ব্যাপারে করেন নি। এক পর্যায়ে তিনি তার আঙুলদ্বারা আমার বুকে টোকা মেরে বললেন, হে উমর! সূরা নিসার শেষভাগের গ্রীষ্মকালীন (কালালা সম্পর্কিত) আয়াতটই কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়? আর আমি যদি বেঁচে থাকি, তাহলে কালালা সম্পর্কে এমন এক ফয়সালা রেখে যাব, যাকে ভিত্তি করে কুরআন জানা অজানা সকলেই ফয়সালা দিতে পারবে। 

অতঃপর উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ! আমি তোমাকে সেইসব লোক সম্পর্কে সাক্ষী করছি, যাদেরকে আমি বিভিন্ন শহরে প্রশাসক (গভর্নর, সুবেদার ও অফিসার) রুপে প্রেরণ করেছি। আমি তাদেরকে এ জন্য পাঠিয়েছি যে, তারা জনগণের মধ্যে সুবিচার কায়েম করবে, তাদেরকে তাদের দ্বীন ও নাবীর তরীকা শিক্ষাদান করবে, তাদের মধ্যে তাদের যুদ্ধলব্ধ মাল বণ্টন করবে এবং কোনও কঠিন সমস্যার উদ্ভব হলে তা আমার সমীপে উত্থাপন করবে। 

আর হে জনমণ্ডলী! তোমরা দু’টি গাছ ভক্ষণ করে থাক। আমি ঐ দু’টিকে অপছন্দ করি। তা হচ্ছে পিঁয়াজ ও রসূন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি, যখন তিনি মসজিদের কোনও ব্যাক্তি হতে ঐ দু’টির (কোন একটি গাছের) গন্ধ পেতেন, তখন তিনি তাকে "বাকী" প্রান্তরের দিকে বের করে দেয়ার আদেশ দিতেন। অতএব যে ব্যাক্তি তা (পিঁয়াজ রসূন) খেতে চাইবে, উত্তমরূপে রান্না করে খাবে- যাতে তার গন্ধ না থাকে।
১১৪১.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহিম (রহঃ) ... কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উপরোক্তরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন।

No comments:

Powered by Blogger.