Breaking News
recent

বুখারী শরীফ ৯ম খন্ড, অধ্যায়ঃ অনুমতি চাওয়া ২ (৫৮২৯-৫৮৬৫)

 হাদিস ৫৮২৯

আমর ইবনু আসিম (রহঃ) কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীগণের মধ্যে কি মূসা ফাহা করার রেওয়ায ছিল? তিনি বললেনঃ হ্যা।

হাদিস ৫৮৩০

ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) খেকে বর্নিত যে, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর হাত ধরা অবস্থায় ছিলেন।

হাদিস ৫৮৩১

আবূ মূয়ায়ম (রহঃ) ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত তার উভয় হাতের মধ্যে রেখে আমাকে এমনভাবে তাশাহুদ শিখিয়েছেন, যে ভাবে তিনি আমাকে কুরআনের সুরা শিখাতেন ‘আত্তাহুয়্যাতুলিল্লাহি’ এসময় তিনি আমাদের মাঝেই বিদ্যমান ছিলেন। তারপর যখন তার ওফাত হয়ে গেল, তখন থেকে আমরা ‘আসসালামু আলাইকা’ এর স্থলে পড়তে লাগলাম ‘আসসালামু আলান নাবিয়্যি’।

হাদিস ৫৮৩২

ইসহাক এবং আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে আলী ইবনু আবূ তালিব যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অতিক্রম কালের সময় তাঁর কাছে থেকে বেরিয়ে এলেন লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলো হে আবূল হাসান! কিভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ভোর হয়েছে? তিনি বললেনঃ সুস্থ অবস্থায় তার ভোর হয়েছে। তখন আব্বাস (রাঃ) তার হাত ধরে বললেনঃ তুমি কি তার অবস্হা বুঝতে পারছ না? তুমি তিনদিন পরই লাঠির গোলাম হয়ে যাবে। আল্লাহর কসম! আমি নিঃসন্দেহে ধারণা করছি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রোগেই সত্তর ইন্তেকাল করবেন। আমি বনূ আবদুল মুত্তালিবের চেহারা থেকে তাঁদের ওফাতের লক্ষণ চিনতে পারি। অতএব তুমি আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে যাও। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, তার অবর্তমানে খিলাফতের দায়িত্ব কাদের হাতে থাকবে? যদি আমাদের খান্দানেই থাকে তবে তা আমরা জেনে রাখলাম। আর যদি অন্য কোন গোত্রের হাতে থাকবে বলে জানি, তবে আমরা তার সাথে পরামর্শ করবো এবং তিনি আমাদের জন্য অসিয়ৎ করে যাবেন। আলী (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! যদি আমরা এ ব্যাপারে রাসুলুলাহ কে জিজ্ঞাসা করি আর তিনি এ সম্পর্কে আমাদের বিরত থাকার নির্দেশ দেন, তাহলে লোকজন কখনও আমালের এর সুযোগ দেবেন না। সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কখনো জিজ্ঞেস করবো না।

হাদিস ৫৮৩৩

মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম - এর পেছনে তার সওয়ারীর উপর বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে দাকলেনঃ ও হে মুআয! আমি বললাম, লাব্বায়কা ওয়া সাদারকা। তারপর তিনি অনুরুপ তিনবার দাকলেন। এর পর তিনি বললেনঃ তুমি কি জানোো যে, বান্দাদের উপর আল্লাহর হক কি? তিনি বললেনঃ তা-হল বান্দ্বারা তার ইবাদত করবে আর এতে তার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আবার কিছুক্ষণ চলার পর তিনি বললেনঃ ওহে মুআয! আমি জবাবে বাললামঃ লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা। তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি জানোো যে, বান্দা যতক্ষন তাৎ ইবাদত করবে, তখন আল্লাহর উপর বান্দাদের হক কি হবে? তিনি বললেনঃ তা হল এই যে, তিনি তাদের আযাব দিবেন না।

হাদিস ৫৮৩৪

উমর ইবনু হাফস (রহঃ) যায়দ ইবনু ওয়াহব (রহঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! আবূ যার (রাঃ) রাবাযাহ নামক স্থানে আমাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, একবার আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে এশার সময় মদিনায় হাররা নামক স্থান দিয়ে পায়ে হেটে যাচ্ছিলাম। তখন আমরা ওহুদ পাহাড়ের সম্মূখীন হলে তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবূ যার! আমি এটা পছন্দ করি না যে, আমার নিকট ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনা আসুক। আর ঋন পরিশোধ পরিমাণ ব্যতীত এক দীনার পরিমাণ সোনাও এক রাত অথবা তিন তাত পর্যন্ত আমার হাতে তা থেকে যাক। বরং আনি পছন্দ করি যে, আমি আগুলো আল্লাহর বান্দাদের এভাবে বিলিয়ে দেই। (কিভাবে দিবেন) তা তার হাত দিয়ে তিনি দেখালেন। তাহাপর বললেনঃ হে আবূ যার! আমি বললামঃ লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা, ইয়া রাসুলুল্লাহ তখন তিনি বললেনঃ দুনিয়াতে যারা অধিক সম্পদাশালী, আখিরাতে তারা হবেন অনেক কম সাওয়াবের অধিকারী। তবে যারা তাদের সম্পদকে এভাবে, এভাবে বিলিয়ে দেবে। তারা হবেন এর ব্যতিক্রম। তারপর তিনি আমাকে বললেনঃ আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত , হে আবূ যার! তুমি এ স্থানেই থাকো। এখান থেকে কোখাও যেয়োনা। এরপর তিনি রওয়ানা হয়ে গেলেন, এমন কি আমার চোখের আড়ালে চলে গেলেন। এমন সময় একটা শব্দ শুনলাম। এতে আমি শংকিত হয়ে পড়লাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন বিপদের সন্মুখীন হয়ে পড়লেন কিনা? তাই আমি সে দিকে অগ্রসর হতে চাইলাম। কিন্তু সাথে সাথেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিষেধাজ্ঞা, যে কোথায়ও যেয়োনা মনে পড়লো এবং আমি থেমে গেলাম। এরপর তিনি ফিরে আসলে আমি বললাম: ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি একটা আওয়াজ শুনে শংকিত হয়ে পড়লাম যে, আপনি সেখানে গিয়ে কোন বিপদে পড়লেন কিনা। আপনার কথা স্বরণ করে থেমে গেলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তিনি ছিলেন জিবরাঈল। তিনি আমার নিকট এসে সংবাদ দিলেন যে আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে মারা যাবে, সে বেহেশতে প্রবেশ করবে। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদিও সে ব্যাক্তি ব্যভিচার করে? যদিও সে ব্যাক্তি চুরি করে? তিনি বললেনঃ সে যদিও ব্যভিচার করে, যদি-ও চুরি করে থাকে তবুও। আমাশ (রাঃ) বললেনঃ আমি যাবদকে বললাম, আমার কাছে খবর পৌছেছে যে, এ হাদীসের রাবী হল আবূ দারদা। তিনি বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এ হাদীসটি আবূ যারই রাবাযা নামক স্থানে আমার কাছে বর্ননা করেছেন। আমাশ (রহঃ) বলেন, আবূ সালিহ ও আবূদ দারদা (রাঃ) সুত্রে আমার কাছে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আর আবূ শিহাব আমাশ থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেনঃ – ‘তিন দিনের অতিরিক্ত’।

হাদিস ৫৮৩৫

ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি অপর কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সে সেখানে বসবে না।

হাদিস ৫৮৩৬

খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ব্যাক্তিকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সেখানে অপর ব্যাক্তিকে বসতে নিষেধ করেছেন। তবে তোমরা বসার জায়গা প্রশস্ত করে দাও এবং ব্যবস্থা করে দাও। ইবনু উমর (রাঃ) কেউ তার জায়গা থেকে উঠে যাক এবং তার জায়গায় অন্যজন বসুক তা পছন্দ করতেন না।

হাদিস ৫৮৩৭

হাসান ইবনু উমর (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাব বিনত জাহশ (রাঃ) কে বিয়ে করলেন, তখন তিনি কয়েকজন লোককে দাওয়াত করলেন। তারা আহার করার পর বসে বসে অনেক সময় আলাপ আলোচনায় মশগুল থাকলেন। তখন তিনি নিজে উঠে চলে যাওয়ার ভাব প্রকাশ করতে শুরু করলেন। কিন্তু এতেও তারা উঠলেন না। তিনি এ অবস্থা দেখে নিজেই উঠে দাড়ালেন। যখন তিনি চলে গেলেন, তখন লোকজনের মধ্যে যারা দাড়াবার ইচ্ছা করলেন, তারা তার সাথেই উঠে চলে গেলেন। কিন্তু তাদের তিনজন থেকে গেলেন। এরপর যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করতে চাইলেন, তখন দেখলেন যে ঐ তিনজন তখনো বসে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর তারাও উঠে চলে গেলে, আমি গিয়ে তাকে তাদের চলে যাওয়ার সংবাদ দিলাম। এরপর তিনি এসে ঘরে ঢূকলেন। তখন আমিও ঢ়ুকতে চাইলে তিনি আমার ও তার মধ্যে পর্দা টেনে দিলেন। এই সময় আল্লাহ তাআলা ওহী নাযিল করলেন: হে মুনিনগণ! তোমাদের অনুমতি দেওয়া না হলে তোমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহে প্রবেশ করবে না। আল্লাহর দৃষ্টিতে তা ঘোরতর অপরাধ (৩৩: ৫৩)। 
 হাদিস ৫৮৩৮

মুহাম্মদ ইবনু আবূ গালিব (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাবা শরীফের আঙ্গিনায় দু হাঁটু খাড়া করে দু-হতে নিরে তা বেড় দিয়ে এভাবে বসা অবস্থায় পেয়েছি।

হাদিস ৫৮৩৯

আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি কি তোমাদের নিকৃষ্ট কবীরা গুনাহের বর্ণনা দিব না? সকলে বললেনঃ হ্যা ইয়া রাসুলারাহ! তখন তিনি বললেনঃ তা হচ্ছে , আল্লাহব সঙ্গে অন্য কোন কিছুকে শরীক করা এবং মা বাপের অবাধ্যতা। মূসা’দ্দাদ বিশরের এক সুত্রে অনুরুপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তাতে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। এরপর তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেনঃ হুশিয়ার হয়ে যাও! আর (সবচেয়ে বড় গুনাহ হল মিথ্যা কথা বলা। এ কথাটা তিনি বারবার বলতে থাকলেন অবশেষে আমরা বললাম: হায়! তিনি যদি থেমে যেতেন।

হাদিস ৫৮৪০

আবূ আসিম (রহঃ) উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তাড়াতাড়ি গিয়ে নিজ ঘরে প্রবেশ করলেন।

হাদিস ৫৮৪১

কুতাইবা (রহঃ) আয়িশা। (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার) পেলঙ্গের মধাখানে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তখন আমি তাঁর কিবলার মাঝখানে শুয়ে থাকতাম। যখন আমার কোন প্রয়োজন হতো, তখন আমি তাঁর দিকে মুক করে উঠে দাড়ানো পছন্দ করতাম না বরং আমি শুয়ে শুয়েই পেছনের দিক দিয়ে কেটে পড়তাম।

হাদিস ৫৮৪২

ইসহাক এবং আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন সে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আমার বেশী সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন সম্পর্কে উল্লেখ করা হল। তখন তিনি আমার ঘরে আসলেন এবং আমি তার উদ্দেশ্যে খেজ্বরের ছাল ভর্তি করা চামড়ার একটা বালিশ পেশ করলাম। তিনি মাটিতেই বসে পড়লেন। আর বাশিশটা আমার ও তার মাঝখানে থেকে গেল। তিনি আমাকে বললেনঃ প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোযা থাকা কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়? আমি বললাম। ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তিনি বললেনঃ তা হলে পাচ দিন? আমি বললাম: ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ তবে সাতদিন? আমি আবার বললামঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ তবে নয়দিন? আমি পূনরায় বললাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তা হলে এগার দিন? আমি আবার বললাম: ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তখন তিনি বললেনঃ দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র চেয়ে বেশী কোন (নফল) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) নেই। তিনি প্রত্যেক মাসের (অথবা বছরের) অর্ধেক দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) , পালন করতেন অর্থাৎ একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন আর একদিন পালন করতেন না।

হাদিস ৫৮৪৩

ইয়াহইয়া ইবনু জাফর ও আবূ ওয়ালীদ (রহঃ) ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আলকামা (রাঃ) সিরিয়া গমন করলেন। তখন তিনি মসজিদে গিয়ে দু-রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে দু’আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে একজন নেক সঙ্গী দান করুন। এরপর তিনি আবূদ দারদা (রাঃ)-এর পাশে গিয়ে বসে পড়লেন। তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনি কোন শহবের লোক? তিনি জবাব দিলেনঃ আমি কুফার বাসিন্দা। তিনি জিজ্ঞাসা করললেন: আপনাদের মধ্যে কি সেই ব্যাক্তি নেই? যিনি ঐ ভেদ সম্পর্কে অবগত ছিলেন, যা অপর কেউ জানতেন না। (রাবী বলেন) অর্থাৎ হুযায়ফা (রাঃ) আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনাদের মধ্যে কি এমন ব্যাক্তি নেই, অথবা আছে যাকে আল্লাহ তা’আলা তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম র দু’আর কারনে শয়তান থেকে পানাহ দিয়েছেন? (রাবী বলেন) অর্থাৎ আম্মার (রাঃ) তিনি আবার জিজ্ঞাস করলেন: আর আপনাদের মধ্যে কি সে ব্যাক্তি নেই যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মিসওয়াক ও বালিশের জিম্মাদার ছিলেন? (রাবী বলেন) অর্থাৎ আাদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)। আবূ দারদা (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ আদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সূরায়ে ‘ওয়াল্লাইলি ইযা ইয়াগশা’ কি রকম পড়তেন? তিনি বললেনঃ তিনি ‘ওমা খালাকায যাকারা ওইয়াল উনসা’ এর স্থলে ‘ওয়ামা খালাকা’ অংশটুকু ছেড়ে দিয়ে পড়তেন “ওয়ায যাকারা ওইয়াল উনসা”। তখন তিনি বললেনঃ এখানকার লোকেরা আমাকে এ সূরা সম্পর্কেই সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিচ্ছিলেন। অথচ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ রকমই শুনেছি।

হাদিস ৫৮৪৪

মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) সাহল ইবনু স্বাদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা জুমআর সালাত (নামায/নামাজ)-এর পরেই কায়লুলা করতাম এবং দূপূরের খাবার খেতাম।

হাদিস ৫৮৪৫

কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) সাহল ইবনু স্বাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আলী (রাঃ)-এর কাছে আবূ তুরাব এর চাইতে প্রিয়তর কোন নাম ছিল না। এ নামে ডাকা হয়ে তিনি অতান্ত খুশী হতেন। কারণ একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রাঃ)-এর ঘরে আসলেন। তখন আলী (রাঃ) কে ঘরে পেলেন না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন: তোমার চাচাতো ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তার মধ্যে কিছু ঘটায় তিনি আমার সঙ্গে রাগারাগি করে বেরিয়ে গেছেন। আমার কাছে কায়লুলা করেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একব্যাক্তিকে বললেনঃ দেখতো সে কোথায়? সে লোকটি এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি তো মসজিদে ঘুমিয়ে আছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে দেখতে পেলেন যে, তিনি কাত হয়ে শুয়ে আছেন, আর তার চাঁদরখানা পাশ থেকে পড়ে গেছে। ফলে তার সাথে মাটি লেগে গেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গায়ের মাটি ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে লাগলেনঃ ওঠো, আবূ তুরাব (মাটির বাবা) ওঠো, আবূ তুরাব! একথাটা তিনি দুবার বললেন।

হাদিস ৫৮৪৬

কুতায়বা (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মে সুলায়ম (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য চামড়ার বিছানা বিছিয়ে দিতেন এবং তিনি সেখানেই ঐ চামড়ার বিছানার উপর কায়লুলা করতেন। এরপর তিনি যখন ঘূম থেকে উঠতেন তখন তিনি তার শরীরের কিছুটা ঘাম ও চুল সংগ্রহ করতেন এবং তা একটা শিশির মধ্যে জমাতেন এবং তাকে -সুক্ক- নামক সুগন্ধির মধ্যে মিশাতেন। রাবী বর্ণনা করেন যে, আনাস ইবনু মালিক বলেনঃ-এর ওফাতের সময় ঘনিয়ে আসলে, তিনি আমাকে অসিয়ত করলেন: যেন ঐ ‘সুক্ক’ থেকে কিছুটা তার সুগন্ধির মধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং তা তার সুগন্ধির মধ্যে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল।

হাদিস ৫৮৪৭

ইসমাঈল (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কুবা- এর দিকে যখন যেতেন তখন প্রায়ই উম্মে হারাম বিনতে মিরহান (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করতেন এবং তিনি তাঁকে খানা খাওয়াতেন। তিনি উবাদা ইবনু সামিৎ (রাঃ)-এর স্ত্রী ছিলেন। একদিন তিনি তার ঘরে গেলে তাকে খাবার খাওয়াতেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (রহঃ) সেখানেই ঘুমালেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি সজাগ হয়ে হাসতে লাগলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন: ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেনঃ স্বপ্নের মধ্যে আমাকে আমার উম্মাতের মধ্য হতে আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক মুজাহিদ দেখানো হয়েছে, যারা এই বিসাল সমুদ্রের মাঝখানে বাদশাহদের মত সিংহাসনের উপর সমাসীন। তখন তিনি বললেনঃ আপনি দু’আ করুন সেন আল্লাহ তা’আলা আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে দেন। তিনি সে দু’আ করলেন এবং বিছানায় মাথা রেখে আবার শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার হাসতে হাসতে সজাগ হলেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেন (স্বপ্নের মধ্যে) আমাকে আমার উম্মতের মধ্য থেকে আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক লোক দেখানো হয়েছে, যারা এই বিশাল সমুদ্রের মাঝখানে বাদশাহদের মত সিংহাসলের উপর সমাসীন। তখন আবার আমি বললামঃ আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। তিনি বললেনঃ তুমি প্রথম বাহিনীদেরই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সুতরাং তিনি মুআবিয়া (রাঃ)-এর আমলে সামুদ্রিক অভিযানে রওয়ানা হন এবং সমুদ্রাভিযান থেকে ফিরে এসে তার নিজেরই সাওয়ারী থেকে পড়ে গিয়ে (আল্লাহর পথেই) শাহাদাত বরন করেন। 


 হাদিস ৫৮৪৮

আলা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু-এরকমের লেবাস এবং দু-ধরনের বিক্রয় নিষেধ করেছেন। পেচিয়ে কাপড় পরিধান করা থেকে এবং এক কাপড় পরে এহতেবা করা থেকে, যাতে মানুষের লজ্জাস্থানের উপর কোন কাপড় না থাকে এবং “মুলামাসা ও মুনাবাযা” বেচা-কেনা থেকেও।

হাদিস ৫৮৪৯

মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ)উম্মূল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ) বর্ণণা করেন, একবার আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সব সহধর্মিণী তাঁর নিকট জমায়েত হয়েছিলাম। আমাদের একজনও অনুপস্থিত ছিলাম না। এমন সময় ফাতিমা (রাঃ) পায়ে হেঁটে আসছিলেন। আল্লাহর কসম! তাঁর হাঁটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাঁটার অনুরূপই ছিল। তিনি যখন তাঁকে দেখলেন, তখন তিনি আমার মেয়ের আগমন শুভ হোক বলে তাঁকে সম্বর্ধনা জানালেন। এরপর যখন তিনি তাঁকে নিজের ডান পাশে অথবা (রাবী বলেন) বাম পাশে বসালেন। তারপর তিনি তাঁর সঙ্গে কানে কানে কিছুক্ষণ কথা বললেন, তিনি (ফাতেমা) খুব বেশী কাদতে লাগলেন। এরপর তাঁর বিষন্ন অবস্থা দেখে দ্বিতীয়বার তাঁর সঙ্গে তিনি কানে কানে আরো কিছু কথা বললেন, তখন ফাতিমা (রাঃ) হাসতে লাগলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিণীগণের মধ্য থেকে আমি বললামঃ আমাদের উপস্থিত থাকা অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ করে আপনার সঙ্গে বিশেষ কি গোপনীয় কথা কানে কানে বললেন, যার কারণে আপনি খুব কাঁদছিলেন? এরপর যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে চলে গেলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তিনি আপনাকে কানে কানে কি বলেীছলেন? তিনি বললেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ভেদ (গোপনীয় কথা) পাস করবো না। এরপর রাসূলল্লাহ -এর ওফাত হয়ে গেল। তখন আমি তাঁকে বললামঃ আপনার উপর আমার যে দাবী আছে, আপনি আমি তার কসম দিয়ে বলছি যে, আপনি কি গোপনীয় কথাটি আমাকে জানাবেন না? তখন ফাতিমা (রাঃ) বললেনঃ হাঁ এখন আপনাকে জানাবো। সুতরাং তিনি আমাকে জানাতে গিয়ে বললেনঃ প্রথম বার তিনি আমার নিকট যে গোপনীয় কথা বললেন, তাহল এই যে, তিনি আমার নিকট বর্ণণা করেন যে, জিবরাঈল আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক বছর এসে পূর্ণ কুরআন একবার আমার নিকট পেশ করতেন। কিন্তু এ বছর তিনি এসে তা আমার কাছে দু’বার পেশ করেছেন। এতে আমি অনুমান করছি যে, আমার চির বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসছে। সুতরাং তুমি আল্লাহকে ভয় করে চলবে এবং বিপদে ধৈর্যধারণ করবে। নিশ্চয়ই আমি তোমার জন্য উত্তম অগ্রগমনকারী। তখন আমি কাঁদলাম যা নিজেই দেখলেন। তারপর যখন তিনি আমার বিষন্ন ভাব দেখলেন, তখন দ্বিতীয়বার আমাকে কানে কানে বললেনঃ তুমি কি জান্নাতের মুসলিম মহিলাদের অথবা এ উম্মতের মহিলাদের নেত্রী হয়ে যাওয়াতে সন্তুষ্ট হবে না? (তখন আমি হেসে দিলাম)।

হাদিস ৫৮৫০

আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ আনসায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে চিত হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছি, তখন তার এক পা আরেক পায়ের উপর রাখা ছিল।

হাদিস ৫৮৫১

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইসমাঈল (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোথাও তিনজন লোক থাকে তবে তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দু-জনে মিলে চুপি চুপি কথা বলবে না।

হাদিস ৫৮৫২

আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে একটি বিষয় গোপনে বলেছিলেন। আমি তার পরেও কাউকে তা জানাইনি। এটা সম্পর্কে উম্মে সুলায়ম (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন। কিন্তু আমি তাকেও বলি নি।

হাদিস ৫৮৫৩

উসমান (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন কোথাও তোমরা তিনজন থাকো, তখন একজনকে বাদ দিয়ে দু’জনে কানে-কানে কথা বলবে না। এতে তার মনে দুঃখ হবে। তোমরা পরস্পর মিশে গেলে তবে তা করাতে দোষ নেই।

হাদিস ৫৮৫৪

আবদান (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন কিছুমাল লোকজনকে বণ্টন করে দিলেন। তখন একজন আনসারী মন্তব্য করলেন যে এ বণ্টনটি এমন যার মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়নি। তখন আমি বললাম সাবধান! আল্লাহর কসম! আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট গিয়ে এ কথাটা বলে দিব। এরপর আমি তার নিকট গেলাম। কিন্তু তখন তিনি একদল সাহাবীর মধ্যে ছিলেন। তাই আমি কথাটা তাকে কানে-কানেই বললাম তখন তিনি রেগে গেলেন। এমন কি তার চেহারার রং লাল হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে তিনি বললেনঃ মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর রহমত নাযিল হোক। তাকে এর চাইতে অধিক কষ্ট দেওয়া হয়েছে, বিত তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন।

হাদিস ৫৮৫৫

মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন। একবার সালাত (নামায/নামাজ)-এর একামত হয়ে গেলো, তখনও একজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে কানে-কানে কথা বলছিলেন এবং দীর্ঘক্ষন ধরে তিনি এভাবে আলাপ করতে থাকলেন। এমন কি তার সংগীগণ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তারপর তিনি দাড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

হাদিস ৫৮৫৬

আবূ নূয়ায়ম (রহঃ) সালিম (রাঃ) তার পিতা থেকে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যখন তোমরা ঘূমাবে তখন তোমাদের ঘরগুলোতে আগুন রেখে ঘূমাবে না।

হাদিস ৫৮৫৭

মুহাম্মদ ইবনু আ-লা (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাত্রি কালে মদিনার এক ঘরে আগুন লেগে ঘরের লোকজনসহ পূড়ে গেল। এদের অবন্হা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জানানো হলে, তিনি বললেনঃ এ আগুন নিঃসন্দেহে তোমাদের জন্য চরম শত্রু। সুতরাং তোমরা যখন ঘূমাতে যাবে, তখন তোমাদেরই হিফাযতের জন্য তা নিভিয়ে ফেলবে।

হাদিস ৫৮৫৮

কুতায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পানাহারের পাত্রগুলো ঢেকে রাখবে। আর ঘূমাবার সময় (ঘরের)দরজাগুলো বন্ধ করবে এবং বাতিগুলো নিভিয়ে ফেলবে। কারণ প্রায়ই দুষ্ট ইদূরেরা জালানো বাতির ফিতাগুলো টেনে নিয়ে যায় এবং ঘরে আগুন লাগিয়ে গৃহবাসীকে জালিয়ে দেয়।

হাদিস ৫৮৫৯

হাসসান ইবনু আবূ আববাদ (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রাতে যখন তোমরা ঘূমাতে যাবে, তখন বাতি নিভিয়ে দেবে, দরজা বন্ধ করবে, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে এবং মশকের মুখ বেধে বাখবে। হাম্মাম বলেনঃ এক টুকরা কাঠ দিয়ে হলেও।

হাদিস ৫৮৬০

ইয়াহইয়া ইবনু কুযাআ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের স্বভাবগত বিষয় হলো পাচটিঃ খাতনা করা, নাভির নীচের পশম কামানো, বগলের পশম উপড়ানো, গোঁফ কাটা এবং (অতিরিক্ত)নখ কাটা।

হাদিস ৫৮৬১

আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইবরাহীম (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আশী বছর বয়সের পর কাদূম -নামক- স্থানে নিজেই নিজের খাতনা করেন। কুতায়বা (রহঃ) আবূয যিনাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ -কাদ্দুম- একটি স্থানের নাম।

হাদিস ৫৮৬২

মুহাম্মদ ইবনু আব্দুর রহীম (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ওফাতের সময় আপনি বয়সে কার মত ছিলেন? তিনি বললেনঃ আমি তখন মাখতুন (খাতূনাকৃত) ছিলাম। তিনি আরও বলেনঃ তাদের নিয়ম ছিল যে সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তারা খাতনা করতেন না।

হাদিস ৫৮৬৩

ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি কসম করে এবং তার কসমে বলে লাত ও উযযার কসম, তা হলে সে যেন লা ইলাহা ইলাল্লাহ বলে, আর যে কেউ তার বন্ধুকে বলে: এসো আমি তোমার সাথে জুয়া খেলবো। সে যেন সাদাকা করে।

হাদিস ৫৮৬৪

আবূ নুয়ায়ম (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) বর্ননা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যামানায় আমার খেয়াল হলো যে, আমি নিজ হাতে আল্লাহর কোন সৃষ্টির সাহায্য ছাড়া এমন একটা ঘর বানিয়ে নেই, যা আমাকে বৃষ্টির পানি থেকে ঢেকে রাখে এবং আমাকে রোদ থেকে ছায়া দান করে।

হাদিস ৫৮৬৫

আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) বর্ননা করেন। আল্লাহর কসম আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পর থেকে এ পর্যন্ত কোন ইটের উপর ইট রাখি নি। (অর্থাৎ কোন পাকা ঘর নির্মাণ করিনি) আর কোন খেজুরের চারা লাগাই নি। সুফিয়ান (রাবী) বর্ণনা করেন, আমি এ হাদীসটি তার পরিবারের এক ব্যাক্তির নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম তিনি তো নিশ্চয়ই পাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। তখন আমি বললাম, তা হলে সম্ভবতঃ এ হাদীসটি তাঁর পাকা ঘর নিমাণের আগেকার হবে। 

No comments:

Powered by Blogger.