ঝুটার মাসআলা
ঝুটার মাসআলা
ঝুটার মাসায়েল
[খাদ্য বা পানীয় বস্তু মুখে লাগাইয়া ত্যাগ করিলে তাহাকে ঝুটা বলে]
১। মাসআলাঃ বেদ্বীনই হউক, ঋতুমতীই হউক, আর নাপাকই হউক, নেফাছওয়ালীই হউক━সব রকমের মানুষের ঝুটা পাক। এইরূপে ইহাদের ঘামও পাক। কিন্তু হাতে বা মুখে কোন নাপাকী থাকিলে অবশ্য ঝুটা নাপাক হইয়া যাইবে। ━হেদায়া, আলমগীরী
২। মাসআলাঃ কুকুরের ঝুটা নাপাক। কুকুর কোন পাত্রে মুখ দিলে তাহা নাপাক হইয়া যায়। তাহা মাটির পাত্র হউক, কিংবা তামা কাঁসার পাত্র হউক সবই তিনবার ধুইলে পাক হইয়া যায় কিন্তু সাতবার ধোয়া ভাল। আর একবার মাটির দ্বারা মাজিয়া ফেলিলে আরও বেশী ভাল, যেন খুব পরিষ্কার হইয়া যায়। ━হেদায়া
৩। মাসআলাঃ শূকরের ঝুটাও নাপাক। এইরূপে বাঘ, চিতাবাঘ, বানর, শৃগাল ইত্যাদি হিংস্র জন্তুর ঝুটাও নাপাক। ━হেদায়া
৪। মাসআলাঃ বিড়ালের ঝুটা পাক বটে, কিন্তু মাকরূহ। তবে অন্য পানি থাকিতে বিড়ালের ঝুটা পানির দ্বারা ওযূ করিবে না। অবশ্য যদি পানি না পাওয়া যায়, তবে ঐ পানির দ্বারাই ওযূ করিবে। ━বেদায়া
৫। মাসআলাঃ যে দুধ বা তরকারী ইত্যাদির মধ্যে বিড়াল মুখ দিয়াছে, যদি উহার মালিক অবস্থাপন্ন হয়, তবে তা খাইবে না। যদি গরীব হয়, তবে খাওয়াতে কোন গুনাহ নাই। এরকম লোকের জন্য তা মাকরূহ নহে। ━হেদায়া
৬। মাসআলাঃ বিড়াল ইঁদুর ধরিয়া তৎক্ষণাৎ আসিয়া কোন হাড়িতে মুখ দিলে তাহা নাপাক হইয়া যাইবে; আর যদি কিছুক্ষণ দেরী করিয়া নিজের মুখ চাটিয়া চুষিয়া মুখ দিয়া থাকে, তবে নাপাক হইবে না; তবে তখন উপরের মাসআলার মত মাকরূহ হইবে। ━শঃ বেকায়া
৭। মাসআলাঃ যে মুরগী খোলা থাকে, এদিকে, ওগিকে ঘুরিয়া ফিরিয়া নাপাক জিনিস খায়, উহার ঝুটা মাকরূহ, যে মুরগীকে বন্ধ করিয়া রাখা হয় তাহার ঝুটা পাক, মাকরূহ নহে। ━হেদায়া
৮। মাসআলাঃ যে সকল পাখী শিকার করিয়া খায়, যেমন━শিকরা বাজ ইত্যাদি, তাহাদের ঝুটা মাকরূহ, কিন্তু যদি ঘরের পোষা হয় এবং মরা না খায়, ঠোঁটেও কোন রকম নাপাকী থাকার সন্দেহ না থাকে, তবে তাহার ঝুটা পাক। ━হেদায়া
৯। মাসআলাঃ হালাল পশু যেমন━ ভেড়া, বকরী, ভেড়ী, গরু, মহিষ, হরিণ ইত্যাদি এবং হালাল পাখী, যেমন━ ময়না, তোতা, ঘুঘু, চড়ুই ইত্যাদির ঝুটা পাক; এইরূপ ঘোড়ার ঝুটাও পাক। ━আলমগীরী
১০। মাসআলাঃ যে সব প্রাণী ঘরে থাকে, যেমন━ সাপ, বিচ্ছু, ইঁদুর টিকটিকি, এসবের ঝুটা মাকরূহ। ━হেদায়া
১১। মাসআলাঃ ইঁদুর যদি রুটির কিছু অংশ খাইয়া থাকে, সেই দিক দিয়া কিছু ছিঁড়িয়া ফেলিয়া অবশিষ্ট অংশ খাইবে। ━রদ্দুল মোহতার
১২। মাসআলাঃ গাধা এবং খচ্চরের ঝুটা পাক বটে, কিন্তু ওযূ হওয়া না হওয়ার মধ্যে সন্দেহ আছে। অতএব, যদি কোথাও গাধা বা খচ্চরের ঝুটা-পানি ব্যতীত অন্য পানি না মিলে, তবে ঐ পানির দ্বারা ওযূ করিতে হইবে এবং তায়াম্মুমও করিবে। প্রথমে ওযূ করুক কিংবা প্রথমে তায়াম্মুম করুক উভয় দিক সমান। ━হেদায়া
১৩। মাসআলাঃ যে সব জানোয়ারের ঝুটা নাপাক তাহার ঘামও নাপাক। যাহাদের ঝুটা পাক তাহাদের ঘামও পাক। আর যাহাদের ঝুটা মাকরূহ তাহাদের ঘামও মাকরূহ। গাধা ও খচ্চরের ঘাম পাক, যদি উহা কাপড়ে লাগে, তবে ধোয়া ওয়াজিব নহে, কিন্তু ধুইয়া ফেলা ভাল। ━দুঃ মুঃ
১৪। মাসআলাঃ কেহ হয়ত বিড়াল পোষে, এখন বিড়াল কাছে আসিয়া বসে এবং ঐ ব্যক্তির হাত পা চাটে, তবে যেখানে যেখানে চাটিয়াছে বা তাহার লোয়াব লাগিয়াছে সে সব জায়গা ধুইয়া ফেলিবে, যদি না ধোয়, তবে মাকরূহ এবং অন্যায় হইবে। ━মুনইয়া, আলমগীরী
১৫। মাসআলাঃ (নিজের স্বামী ছাড়া) অপর পুরুষের ঝুটা-খাদ্য ও পানি আওরতের জন্য খাওয়া মাকরূহ, যদি জানে যে, অমুকের ঝুটা। আর যদি না জানিয়া খায়, তবে মাকরূহ নহে। (এইরূপে নিজের স্ত্রী ছাড়া বেগানা আওরতের ঝুটা পুরুষের জন্যও মাকরূহ।)
No comments: