Breaking News
recent

সহিহ্ মুসলিম শরীফ ৬ষ্ট খন্ড, অধ্যায়ঃ হারানো বস্তপ্রাপ্তি






পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই


৪৩৪৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াইয়া তামিমী (রহঃ) ... যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাঁকে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তার থলে এবং তার বাঁধন ভাল করে চিনে রাখবে। তারপর এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দেবে। এই সময়ের মধ্যে যদি এর মালিক আসে (তবে তাকে তা দিয়ে দিবে) অন্যথা তা তোমার ইখতিয়ারভুক্ত। 

তারপর সে হারানো ছাগল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেনঃ তা তোমার জন্য অথবা তোমার ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। অতপর সে হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বললেনঃ এ নিয়ে তোমার ভাবনা কী? তার সাথে আছে পানির মশক (পেটের মধ্যে পানি ধারণের থলে) এবং তার জুতা (জুতার মত পায়ের পাতা মরুভূমিতে চলার উপযোগী)। সে নিজেই পানির ঘাটে যাবে এবং গাছের পাতা খাবে যতক্ষন না মালিক তাকে পেয়ে যায়। ইয়াহইয়া (রহঃ) বলেনঃ আমার মনে হয় আমি عِفَاصَهَا পড়েছি।

৪৩৫০.    ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেনঃ তুমি এক বছর পর্যন্ত তার ঘোষণা দিবে এবং তুমি থলি ও বাঁধন চিনে রাখবে। তারপরে তুমি তা খরচ করতে পার। আর যদি তার প্রকৃত মালিক আসে, তবে তাকে তা আদায় করে দিবে। 

তারপর সে বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হারানো বকরির (কী হুকুম)? তিনি বললেন, তা তুমি নিয়ে রাখ। কেননা, এটি তুমি নিবে কিংবা তোমার ভাই নিবে কিংবা নেকড়ে নিয়ে যাবে। তারপর সে বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তবে যদি হারানো উট হয়? বর্ণনাকারী বলেনঃ তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগাম্বিত হলেন, এমনকি তাঁর উভয় গণ্ড লাল হয়ে গেল। (অথবা রাবী বলেছেনঃ তার চেহারা লাল হয়ে গেল।) তারপর তিনি বললেনঃ তাকে নিয়ে তোমার ভাবনা কী? তার সাথে আছে তার জুতো আর পানির মশক; যতক্ষন না তার মালিক তাকে পেয়ে যায়।

৪৩৫১.    আবূ তাহির (রহঃ) ... রাবিআ ইবনু আবূ আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে একই সুত্রে মালেক (রাঃ) এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি অধিক বর্ণনা করেছেন যে, একব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল তখন আমি তার সঙ্গে ছিলাম। সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো। বর্ণনাকারী বলেন, আমর (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেন যে, যখন এর কোন দাবীদার না আসে তখন তা খরচ করে দেবে।

৪৩৫২.    আহমাদ ইবনু উসমান ইবনু হাকীম আওদী (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু খালেদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল ...... অতঃপর তিনি ইসমাঈল ইবনু জা'ফর (রাঃ) এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি এও বলেছেন, "তখন তাঁর পবিত্র মুখমণ্ডল ও ললাট লাল হয়ে গেল এবং তিনি রাগান্বিত হলেন।" 'আর তা এক বছর ঘোষণা করবে।' এরপর আরো বলেছেন, যদি এর মালিক না আসে, তবে তা তোমার নিকট আমানত হিসেবে থাকবে।

৪৩৫৩.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) কানাব (রহঃ), রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সোনার অথবা রূপার হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেনঃ তুমি এর বন্ধন ও থলে চিনে রাখবে; তারপর এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিবে। এরপরও যদি তুমি মালিকের সন্ধান না পাও, তবে তা তুমি খরচ করতে পার। কিন্তু তা তোমার নিকট আমানত হিসেবে থাকবে। যদি কাল প্রবাহের কোন দিন এর দাবীদার আসে তবে তা তুমি তাকে দিয়ে দিবে। 

তারপর সে হারানো উট সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেনঃ এতে তোমার কী? তুমি তাকে ছেড়ে দাও। কেননা তার সাথে তার জুতা আছে এবং পানি সংরক্ষণের থলে আছে। সে নিজেই পানির ঘাটে যেতে পারে এবং গাছপালা খেতে পারে। অবশেষে একদিন তার মনিব তাকে পেয়ে যাবে। তারপর সে বকরি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বললেনঃ তুমি সেটি নিয়ে যাও। কেননা, তা তুমি নিবে অথবা তোমার ভাই নিবে অথবা নেকড়ে নিয়ে যাবে।

৪৩৫৪.    ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। রাবীআ (রহঃ) অধিক বর্ণনা করেছেন, 'তিনি এতে এত রাগাম্বিত হলেন যে, তাঁর গণ্ডদ্বয় লাল হয়ে গেল”। তারপর ... অবশিষ্ট হাদীস উল্লিখিত বর্ণনাকারীদের অনুরূপ বর্ননা করেছেন। তিনি আরো বর্ণনা করেন যে, তারপর যদি এর মালিক আসে এবং তার থলে এবং (মুদ্রার) সংখ্যা ও বন্ধন সঠিক ভাবে চিনতে পারে, (বর্ণনা দিতে পারে) তবে তাকে তা দিয়ে দিবে। অন্যথায় তা তোমারই।

৪৩৫৫.    আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, তা তুমি এক বছর পর্যন্ত প্রচার করবে। এর মধ্যে যদি সেটি (মালিকের) সন্ধান না পাওয়া যায় তবে তুমি এর থলে ও বন্ধন চিনে রাখবে। তারপর তুমি তা খেতে পারবে। তারপর যদি তার মালিক আসে, তবে তা তাকে দিয়ে দিবে।

৪৩৫৬.    ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) ... যাহহাক ইবনু উসমান (রহঃ) থেকে এই একই সুত্রে বর্ণনা করেন। আর তিনি তাঁর হাদীসে বলেছেন যে, যদি তা চিনা যায়, (সন্ধান পাওয়া যায়) তবে তাকে তা দিয়ে দেবে। অন্যথায় তুমি তার থলে, তার বন্ধন, তার আবরণ ও (মুদ্রার) সংখ্যা চিনে রাখবে।

৪৩৫৭.    মুহাম্মদ ইবনু বাশশার ও আবূ বাকর ইবনু নাফি' (রহঃ) ... সুওয়ায়দ ইবনু গাফলা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং যায়িদ ইবনু সুহান ও সালমান ইবনু রাবীআ যুদ্ধে বের হলাম। আমি একটি ছড়ি পেয়ে তা উঠিয়ে নিলাম। তখন আমার সঙ্গীদ্বয় আমাকে বললেন, তুমি তা রেখে দাও। আমি বললাম, না বরং আমি এটির ঘোষণা করব। যদি এটির মালিক আসে তো ভাল, অন্যথায় আমি এটি নিয়ে ব্যবহার করব। তিনি বলেন, আমি উভয়ের কথা প্রত্যাখ্যান করলাম। তারপর যখন আমরা যুদ্ধ থেকে ফিরে এলাম, তখন এক সময়, আমার হজ্জে যাওয়ার সুযোগ এল। তখন আমি মদিনায় গেলাম এবং উবায় ইবনু কা'ব (রাঃ) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। আমি ছড়ির ঘটনা এবং সঙ্গীদ্বয়ের কথা তাকে বললাম। 

তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় একটি থলে পেয়েছিলাম। তাতে একশ দ্বীনার ছিল। আমি সেটি নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ তুমি তা এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দেবে। বর্ণনাকারী বললেন, আমি তার ঘোষণা দিলাম, কিন্তু তা চিনে নিতে পারে এমন কাউকে পেলাম না। পরে আমি তার কাছে এলাম, তখন তিনি বললেনঃ (আরো) এক বছর পর্যন্ত প্রচার কর। তারপরও আমি তার কোন দাবীদার গেলাম না। তারপর আবার আমি তার কাছে এলাম। তখন তিনি বললেনঃ (আরো) এক বছর তার ঘোষণা দাও। তারপরও আমি কাউকে সেটির দাবীদার পেলাম না। 

তিনি বললেনঃ তুমি এটির সংখ্যা, থলে ও তার বন্ধন (স্মরণে) সংরক্ষণ করে রাখবে। যদি এর মালিক আসে, (তবে ভাল।) অন্যথা তুমি তা ভোগ করবে। তারপর তা আমি ভোগ করলাম। তিনি বলেন, পরে আমি তার (সালামা-র) সঙ্গে সাক্ষাত করলাম। তখন তিনি বললেন, আমার খেয়াল নেই যে, তিনি কি তিন বছরের কথা বলেছিলেন, না এক বছরের।

৪৩৫৮.    আবদুর রহমান ইবনু বিশর আবদী (রহঃ) ... সুওয়ায়দ ইবনু গাফলা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি যায়িদ ইবনু সোহান এবং সালমান ইবনু রাবীআ এর সাথে বের হলাম। এবং আমি একটি ছড়ি পেলাম। তারপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ ...... "(তা আমি ভোগ করলাম)" পর্যন্ত বর্ণনা করেন। শু'বা (রাঃ) বলেন, পরে আমি তাঁকে দশ বছর পর বলতে শুনেছি যে, তিনি উহা এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা করেছিলেন।

৪৩৫৯.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র মুহাম্মাদ ইবনু হাতেম ও আবদুর রাহমান ইবনু বিশর (রহঃ) সকলেই সালমা ইবনু কুহাইল (রহঃ) থেকে একই সুত্রে শুবা (রাঃ) এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হাম্মাদ ইবন সালামা ব্যতীত উল্লিখিত সকলের বর্ণিত হাদীসেই "তিন বছর" কথাটি উল্লেখ আছে। হাম্মাদের হাদিসে আছে দুই বছর কিংবা তিন বছর। আর সুফিয়ান, যায়দ ইবনু আবূ উনায়সা ও হাম্মাদ ইবনু সালামা (রহঃ) এর হাদীসে রয়েছে, "যদি কোন ব্যক্তি এরপর আসে এবং তার গণনা, (থলে) ও তার বন্ধনের বর্ণনা দিতে পারে, তবে তাকে তা দিয়ে দিবে।" আর সুফিয়ান (রহঃ) ওয়াকী (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে একটু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, অন্যথা তা তোমার মালের মতই। আর ইবনু নুমাইর (রহঃ) এর বর্ণনায় "অন্যথা তুমি তা ব্যবহার করতে পারবে" বর্ণিত হয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ১. হাজিগনের হারানো বস্তু প্রাপ্তি


৪৩৬০.    আবূ তাহির ও ইউনূস ইবনু আবদুল আ'লা (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু উসমান তায়মী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজীদের হারান বস্তু তুলে নিতে নিষেধ করেছেন।

৪৩৬১.    আবূ তাহির ও ইউনুস ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হারানো বস্তু উঠিয়ে রাখল সে যদি তা প্রচার না করে তবে সে পথহারা।

পরিচ্ছেদঃ ২. মালিকের অনুমতি ব্যতীত কোন পশুর দুধ দোহন করা হারাম


৪৩৬২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যেন কোন ব্যক্তির পশুর দুধ তার অনুমতি ব্যতীত দোহন না করে। তোমাদের কেউ কি ইহা পছন্দ করবে যে, কেউ তার প্রকোষ্ঠে (চিলে কোঠায়) ঢুকে পড়বে, তারপর অন্য কেউ তার ভাণ্ডার ভেঙ্গে খাদ্য সামগ্রী বের করে নিয়ে যাবে? (এমনিভাবে) তাদের পশুগুলোর স্তন তো তাদের তাদের খাদ্য সামগ্রী সঞ্চয় করে। সুতরাং, কেউ যেন কারো পশুর দুগ্ধ মালিকের অনুমতি ব্যতীত দোহন না করে।

৪৩৬৩.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নূমাইর, আবূ রাবি, আবূ কামিল, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু আবূ উমার ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... সকলেই ইবনু উমার (রাঃ) এর সুত্রে নরী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মালেক (রাঃ) এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। কিন্তু লাইস ইবনু সা’দ (রহঃ) ব্যতীত সকলের রিওয়ায়াতে فَيُنْتَقَلَ (ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হবে) রয়েছে- আর লায়সের বর্ণনায় এবং “তার খাদ্য সামগ্রী স্থানান্তর করে নিয়ে যায়” অংশটি মালিক (রাঃ) এর বর্ণনার অনুরূপ বর্ণিত রয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ৩. মেহমানদারী এবং অনুরূপ বিষয়


৪৩৬৪.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ শুরাইহ আদবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার দু' কান শুনেছে এবং দু' চোখ দেখেছে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা বলছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে সে যেন উত্তমরূপে তার মেহমানের উত্তম সমাদার করে। তখন সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ উত্তম সমাদার মানে কী? তখন তিনি বললেন, তার একদিন ও এক রাত (বিশেষ মেহমানদারী)। আর (সাধারণভাবে) মেহমানদারীর সময়কাল তিন দিন। এর চাইতে বেশি দিন মেহমানদারী করা, তার জন্য সাদাকা স্বরূপ। তিনি আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা নীরব থাকে।

৪৩৬৫.    আবূ কুরাইব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) ... আবূ শুরাইহ খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মেহমানদারী তিন দিন এবং উত্তমরূপে মেহমানদারী একদিন ও একরাত্রি কোন মুসলমান ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে সে তার ভাই এর নিকট অবস্থান করে তাকে পাপে নিপতিত করবে। তখন তারা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিভাবে সে তাকে পাপে নিপতিত করবে? তিনি বললেনঃ, সে (মেহমান) তার নিকট (এমন দীর্ঘ সময়) অবস্থান করবে, অথচ তার (মেযবানের) নিকট এমন কিছু নেই, যদ্বারা এ সে তার মেহমানদারী করবে।

৪৩৬৬.    মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) ... আবূ শুরায়হ খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার দু' কান শুনেছে, আমার দু' চক্ষু দেখেছে এবং আমার অন্তর স্মরণ রেখেছে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন। তারপর লাইস এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, কারো জন্যে বৈধ নয়, তার ভাই এর নিকট তততদিন অবস্থান করা, যাতে সে তাকে পাপে নিপতিত করে। বাকী অংশ ওয়াকী এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।

৪৩৬৭.    কুতাইবা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ... উভয়ে উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমরা বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের (বিভিন্ন স্থানে) প্রেরণ করেন। আমরা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে উপনীত হই; যারা আমাদের মেহমানদারী করে না। এ সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ যদি তোমরা কোন সম্প্রদায়ের কাছে উপনীত হও, আর তারা তোমাদের জন্য এমন সব আসবাব পত্র প্রদান করার হুকুম করে যা মেহমানদারীর জন্য সমীচীন, তবে তোমরা তা গ্রহণ করবে। আর যদি তারা তা না করে তবে তোমরা তাদের থেকে মেহমানদারীর হক আদায় করে নেবে, যা তাদের করনীয়।

পরিচ্ছেদঃ ৪. নিজের প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদ দ্বারা অন্যের সহায়তা করা মুস্তাহাব


৪৩৬৮.    শায়বান ইবন ফাররুখ (রহঃ) ... আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি সাওয়ারীতে আরোহণ করে তার কাছে এলো এবং ডানে-বামে তাকাতে লাগলো। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার কাছে পরিভ্রমণের কোন অতিরিক্ত যানবাহন থাকে, সে যেন তা দিযে তাকে সাহায্য করে, যার কোন যানবাহন নেই। আর যার কাছে অতিরিক্ত পাথেয় (খাদ্য সামগ্রী) থাকে; সে যেন তা দিয়ে তাকে সাহায্য করে যার পাথেয় (খাদ্য সামগ্রী) নেই। তারপর তিনি বিভিন্ন প্রকার সম্পদের এরূপ বর্ণনা দিলেন। এমনকি আমাদের ধারণা হল যে, অতিরিক্ত সম্পদের মধ্যে আমাদের কারো কোন অধিকার নেই।

পরিচ্ছেদঃ ৫. যখন খাদ্য সামগ্রী (পাথেয়) অল্প থাকে তখন সমস্ত পাথেয় একত্রে মিলিয়ে ফেলা এবং তদ্বারা পরস্পর সহমর্মিতা করা মুস্তাহাব


৪৩৬৯.    আহমাদ ইবনু ইউসুফ আযদী (রহঃ) ... ইয়াস ইবন সালামা (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক যুদ্ধে গিয়েছিলাম। তখন আমাদের মধ্যে খাদ্যের অভাব দেখা দিল। অবশেষে আমাদের কিছু সাওয়ারী যবেহ করতে মনস্থ করেছিলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে আমরা আমাদের খাদ্য সামগ্রী একত্রিত করলাম। আমরা একটি চামড়া বিছালাম এবং এতে লোকদের খাদ্য সামগ্রী জমা করা হল। বর্ণনাকারী বলেন, আমি সেটির পরিমাণ অনুমান করার জন্য উঁচু হলাম এবং আমি আন্দাজ করলাম সেটি একটি ছাগল বসার স্থানের সমান। আর আমরা ছিলাম চৌদ্দশ। 

রাবী বলেন, আমরা সকলেই তৃপ্তির সাথে খেলাম। তারপর আমরা আমাদের নিজ নিজ খাদ্য রাখার থলে পুর্ণ করে নিলাম। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র জন্য কি পানি আছে? বর্ণনাকারী বলেন, এক ব্যক্তি তার পাত্রে সামান্য পানি নিয়ে এগিয়ে এল। তিনি তা একটি বড় পাত্রে ঢেলে দিলেন। এরপর আমরা চৌদ্দশ লোক সকলেই তার থেকে পানি ঢেলে ঢেলে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলাম। তারপর আরো আটজন লোক এসে বললো, ওযুর জন্য কি পানি আছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উযূ (ওজু/অজু/অযু) শেষ হয়ে গেছে।

No comments:

Powered by Blogger.