সহিহ্ মুসলিম শরীফ ৬ষ্ট খন্ড, অধ্যায়ঃ বিচার বিধান
পরিচ্ছেদঃ ১. শপথ বিবাদীর জন্য প্রযোজ্
৪৩২১. আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি লোকের দাবী অনুসারে তাদের প্রার্থিত বস্তু প্রদান করা হতো তবে যে কোন লোক অপর ব্যক্তির জানমাল দাবী করে বসতো। তাই বিবাদীর জন্য শপথ নেওয়ার বিধান রয়েছে।
৪৩২২. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাদী থেকে (আল্লাহর নামে) শপথ নেওয়ার মাধ্যমে ফায়সালা দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ ২. হিন্দা (রাঃ) এর ঘটনা
৪৩২৩. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাদীর (কসম) শপথ গ্রহণ এবং একজন সাক্ষীর মাধ্যমে মুকদ্দমা নিষ্পত্তি করেছেন।
৪৩২৪. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) ... উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুকাদ্দমা নিয়ে আমার কাছে আগমন করে থাক এবং তোমাদের একজন অপরজন অপেক্ষা যুক্তিতর্কে অধিক বাকপটু হয়ে থাকে। স্বীয় দাবী প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করো। আমি কথা শুনে তার অনুকুলে রায় প্রদান করি। সূতরাং এতে যদি তার ভাইয়ের হকের কিছু তাকে প্রদান করি (বাস্তবে হয়ত এতে তার কোন অধিকারই নেই) তখন তার কর্তব্য হবে তা গ্রহণ না করা। কেননা, এতে যেন আমি তাকে জাহান্নামের এক খন্ড অগ্নি প্রদান করলাম।
৪৩২৫. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরাইব হিশাম (রহঃ) ... থেকে উক্ত সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
৪৩২৬. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হুজরার দ্বার প্রাস্তে জনৈক ঝগড়াকারীর শোরগোল শুনতে পেলেন। তখন তিনি তাদের কাছে বেরিয়ে এলেন এবং বললেন, আমি তো একজন মানুষ। তবে আমার কাছে যখন কোন বাদী বিবাদী আসে তখন হয়ত একজন অপরজন থেকে অধিক বাকপটু হয়। আর আমি মনে করি যে, সেই সত্যবাদী। আমি যার পক্ষে মুসলিমদের হকের ব্যাপারে রায় দেই, তা বস্তুত জাহান্নামের একটি টুকরা। সুতরাং সে তা গ্রহণ করুক কিংবা ছেড়ে দিক (তা তার ইছা)।
৪৩২৭. আমর আন নাকিদ আবদ ইবনু হুমাইদ (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে একই সুত্রে ইউনূস (রহঃ) এর হাদীসের অনুরূপ বর্ননা করেছেন। আর মা'মার (রহঃ) এর হাদীসে جلبة এর পরিবর্তে لَجَبَةَ خَصْمٍ بِبَابِ أُمِّ سَلَمَةَ উল্লেখ রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ৩. হিন্দা (রাঃ) এর ঘটনা
৪৩২৮. আলী ইবনু হুজর সা’দী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিন্দা বিনত উতবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। তিনি আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচাদি প্রদান করেন না। তবে আমি তার অজ্ঞাতেই তার সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় খরচাদি গ্রহণ করে থাকি। এতে কি আমার কোন দোষ (পাপ) হবে? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার সম্পদ থেকে তোমার ও তোমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হয় এমন সঙ্গত পরিমাণ নিতে পার ।
৪৩২৯. মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমাইর, আবূ কুরাইব, ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) এর সুত্রে উক্ত সনদে এ হাদীস বর্ণনা করেন।
৪৩৩০. আবদ ইবনু হুমাইদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিন্দা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর কসম, পৃথিবীর মধ্যে আপনার পরিবার পরিজন থেকে অন্য কোন পরিবার পরিজনের প্রতি আমার এত অধিক আকাঙ্ক্ষা ছিল না যে, তাঁদের আল্লাহ লাঞ্ছিত করুন। আর এখন পৃথিবীর মধ্যে আপনার পবিবার পরিজন থেকে কোন পরিবার পরিজনের প্রতি আমার এত অধিক আকাঙ্খা নেই যে, আল্লাহ তাদের সম্মান প্রদান করুন।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সেই মহান আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, তা আরো বৃদ্ধি পাবে। অতঃপর তিনি (হিন্দা) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান কৃপন স্বভাবের লোক। তবে আমি যদি তার বিনা অনুমতিতে তার পরিবার পরিজনের জন্য তার সম্পদ থেকে খরচ করি, এতে কি আমার কোন দোষ হবে? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাদের জন্য তুমি যথাবিধি খরচ করলে কোন দোষ হবে না।
৪৩৩১. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিন্দা বিনত উকবা ইবনু রবীআ, এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! পৃথিবীর মধ্যে আপনার পরিবার পরিজন থেকে অন্য কোন পরিবার পরিজন এর প্রতি আমার এত অধিক বাসনা ছিল না যে, তারা লাঞ্ছিত হোক। আর আজ পৃথিবীর মধ্যে আপনার পরিবার পরিজন থেকে অন্য কোন পরিবার পরিজনের প্রতি আমার এত অধিক বাসনা নেই যে, তাঁরা সম্মানিত হউক। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সেই মহান আল্লাহর কসম যার হাতে আমার জীবন, তা আরো বৃদ্ধি পাবে।
তারপর হিন্দা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপণ স্বভাবের লোক। এমতাবস্থায় আমি যদি আমাদের পরিবার পরিজনকে (যাদের খোর-পোষ তাতে দায়িত্বে তাদেরকে) তার সম্পদ থেকে খাবার প্রদান করি তবে কি এতে আমার কোন দোষ হবে? তিনি বললেন, (তা করবে) না, তবে যদি যথাবিধি হয়।
পরিচ্ছেদঃ ৪. বিনা প্রয়োজনে অধিক প্রশ্ন করা, প্রাপ্য হক না দেওয়া এবং না হক কিছু চাওয়া নিষিদ্ধ
৪৩৩২. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তিনটি কাজ পছন্দ করেন এবং তিনটি কাজ অপন্দ করেন। তোমাদের জন্য তিনি যা পছন্দ করেন, তা হলঃ
১. তোমরা তাঁরই ইবাদত করবে, ২. তাঁর সঙ্গে কিছুই শরীক করবে না এবং ৩. তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জু শক্তভাবে ধারণ করবে ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না।
আর যে সকল বিষয় তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেনঃ ১. বাজে কথাবার্তা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা এবং ৩. সম্পদ বিনষ্ট করা।
৪৩৩৩. শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) ... সুহাইল (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি বলেছেনঃ "এবং তিনি তোমাদের প্রতি তিনটি কাজে রাগান্বিত হন।" "এবং তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না" কথাটি তিনি উল্লেখ করেননি।
৪৩৩৪. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) ... মুগীরা ইবনু শু'বা সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হারাম করেছেন মায়ের অবাধ্য হওয়া, কন্যা সন্তান জীবিত অবস্থায় মাটিতে পুঁতে ফেলা এবং অন্যের হক আদায় না করা এবং না-হক কোন বস্তু প্রার্থনা করা। আর তিনটি বিষয় তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেন। তা হলঃ ১. অনর্থক কথাবার্তা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা এবং ৩. সম্পদ বিনষ্ট করা।
৪৩৩৫. কাসিম ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) ... মানসুর (রহঃ) থেকে উক্ত সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি বলেন, "রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের উপর হারাম করেছে"। আর “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের উপর হারাম করেছেন” এই বাক্যটি তিনি বলেন নি।
৪৩৩৬. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... শা’বী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন মুগীরা ইবনু শু'বা (রাঃ) এর কাতিব লেখক (সচিব) আমাকে বলেছেন যে, মুয়াবিয়া (রাঃ) মুগীরা (রাঃ) এর কাছে পত্র লিখলেন যে, আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন, এমন কিছু বিষয় আমাকে লিখে জানান। তখন তিনি তাঁকে লিখলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য তিনটি কাজ অপছন্দ করেনঃ ১. অনর্থক কথা বার্তা বলা, ২. সম্পদ অপচয় করা এবং ৩. অধিক প্রশ্ন করা।
৪৩৩৭. ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... ওয়াররাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীরা (রাঃ) মুযাবিয়া (রাঃ) এর নিকট পত্র লেখেনঃ “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তিনটি বিষয় হারাম করেছেন এবং তিনটি কাজ নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি হারাম করেছেনঃ পিতামাতার অবাধ্যতা, কন্যা সন্তানকে মাটিতে পুঁতে রাখা এবং হক আদায় না করা ও না-হক কিছু প্রার্থনা করা।
আর তিনি তিনটি কাজ নিষিদ্ধ করেছেন, তা হলোঃ ১. অনর্থক কথাবার্তা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা এবং ৩. মাল-সম্পদ বিনষ্ট করা।
পরিচ্ছেদঃ ৫. বিচারকের প্রতিদান, প্রচেষ্টার পর সে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছুক বা ভুল করুক
৪৩৩৮. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামিমী (রহঃ) ... আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যদি কোন বিচারক যথাযথ চিন্তা-গবেষণার পর রায় দেন, অতঃপর তিনি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন, তার জন্য রয়েছে দু'টি প্রতিদান (দিগুণ সাওয়াব)। আর যদি তিনি চিন্তা-গবেষণা করে রায় প্রদানের সময় ভুল করেন, তবুও তার জন্য রয়েছে একটি প্রতিদান।
৪৩৩৯. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) এর সূত্রে উক্ত সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসের শেষাংশে আরো উল্লেখ করেছেন, রাবী ইয়াযীদ বলেন, আমি হাদীসটি আবূ বাকর ইবনু আমর ইবনু হাযম (রহঃ) এর কাছে বর্ণনা করলে তিনি বললেন যে, আমার কাছে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে আবূ সালমা এরূপ হাদীস বলেছেন।
৪৩৪০. আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রাহমান দারিমী (রহঃ) ... ইয়াযিদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) এর সূত্রে হাদীসটি উভয় সুত্রে আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) এর বর্ণিত রেওয়াতের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬. ক্রোধান্বিত অবস্থায় বিচারকের বিচার করা নিষিদ্ধ
৪৩৪১. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকরা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমার পিতা সিজিস্তানের বিচারক আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বাকরা (রহঃ) কে একটি পত্র লিখলেন (তার পক্ষে আমি লিখে দিলাম) যে, আপনি রাগাম্বিত অবস্থায় দু'জনের মধ্যে বিচার করবেন না। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কোন বিচারক যেন রাগাম্বিত অবস্থায় দু'জনের মধ্যে বিচার না করেন।
৪৩৪২. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, শায়বান ইবনু ফাররুক, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না, উবায়দুল্লাহ ইবনু মুয়ায ও আবূ কুরাইব (রহঃ) ... আবূ বাকরা (রহঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবূ আওয়ানা (রহঃ) এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
পরিচ্ছেদঃ ৭. বাতিল সিদ্ধান্ত খণ্ডন ও বিদ'আতী কার্যকলাপ উচ্ছেদ
৪৩৪৩. আবূ জা'ফর মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ ও আবদুল্লাহ ইবনু আওন হিলালী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারে এমন বিষয় উদ্ভাবন করে যা তাতে নেই, তা পরিত্যাজ্য।
৪৩৪৪. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... সা’দ ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, যার তিনটি বাসস্থান ছিল। অতঃপর, সে (মৃত্যুকালে) প্রত্যেক বাসস্থানের এক তৃতীয়াংশ দান করার অস্যয়্যাত করে যায়। তিনি বললেন, এ সকল অংশকে এক বাসস্থানে একত্রিত করা হবে। এরপর তিনি বললেন, আমাকে আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন কর্ম করলো যা আমাদের ধর্মে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।
পরিচ্ছেদঃ ৮. উত্তম সাক্ষীগণ
৪৩৪৫. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কি তোমাদের উত্তম সাক্ষীদের সম্পর্কে অবহিত করব না? উত্তম সাক্ষী হল সেই ব্যক্তি, যাকে সাক্ষ্যের জন্য ডাকার আগেই সে সাক্ষ্য দিতে এগিয়ে আসে।
পরিচ্ছেদঃ ৯. মুজতাহিদগনের মতভেদ সম্পর্কে
৪৩৪৬. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু'জন মহিলার তাদের নিজ নিজ ছেলে ছিল। হঠাৎ এক নেকড়ে বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলে নিয়ে যায়। তখন তাদের একজন সঙ্গীনীকে বললো, তোমার ছেলেকে (বাঘে) নিয়েছে। আর দ্বিতীয় জন বললো, বরং তোমার ছেলেকে (বাঘে) নিয়েছে। এই নিয়ে পর দু'জন দাঊদ (আলাইহিস সালাম) এর নিকট নালিশ নিয়ে গেল। তিনি বয়সে বড় মহিলার পক্ষে সন্তানের রায় দিলেন।
তখন উভয়ে বেরিয়ে সুলায়মান ইবনু দাঊদ (আলাইহিস সালাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে সে ঘটনা বলল। তিনি বললেন, তোমরা আমার কাছে একটি ছুরি নিয়ে এসো, আমি সন্তানটিকে কেটে উভয়ের মাঝে ভাগ করে দেবো। তখন ছেটি মহিলাটি বললো, না, তা করবেন না। আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন (আমি মেনে নিলাম) ছেলেটি ঐ মহিলারই। তখন তিনি ছোট মহিলার পক্ষে ছেলে প্রদানের রায় দিলেন।
বর্ণনাকারী বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি سكين ‘ছুরি’ শব্দটি সেদিন ব্যতীত আর কখনও শুনিনি। আমরা مُدْيَةَ বলতাম।
৪৩৪৭. সুওয়াইদ ইবনু সাঈদ ও উমাইয়া ইবনু বিসতাম (রহঃ) ... আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে ওয়ারকা (রাঃ) এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ১০. বিচারক কর্তৃক বিবাদমান দু'দলের মধ্যে সন্ধি করিয়ে দেওয়া উত্তম
৪৩৪৮. মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) বলেন যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) যে সকল হাদীস আমাদের বর্ণনা করেছেন তার মধ্যে একটি এই যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির নিকট থেকে এক খন্ড ভূমি ক্রয় করে। যে ব্যক্তি ভূমি ক্রয় করেছিল সে তার কেনা সম্পত্তিতে একটি কলসী পেল। তাতে স্বর্ণ ছিল। যে সম্পত্তি ক্রয় করেছিল সে বিক্রেতাকে বলল, তুমি আমার কাছ থেকে তোমার স্বর্ণ বুঝে নাও। আমি তো তোমার কাছে থেকে ভূমি ক্রয় করেছি, স্বর্ণ খরিদ করিনি। তখন যে ব্যক্তি সম্পতি বিক্রি করেছিল সে বলল, আমি তো তোমার কাছে ভূমি এবং ভূমির মধ্যে যা কিছু আছে সবই বিক্রি করেছি। তিনি বলেন, তারপর উভয়েই এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে এর ফয়সালা চাইল। তখন, সে বলল, তোমাদের কি কোন সন্তান আছে? তাদের একজন বলল যে, আমার একটি ছেলে আছে এবং অপর জন বলল, আমার একটি মেয়ে আছে। তখন তিনি বললেন, তোমার ছেলেটিকে মেয়েটির সঙ্গে বিয়ে দাও এবং এ উপলক্ষে তোমরা তোমাদের উপর তা খরচ কর এবং (এ থেকে) সাদাকা কর।
No comments: