বুখারী শরীফ ৯ম খন্ড, অধ্যায়ঃ আচার ব্যবহার ২ (৫৫৯৬-৫৬৪৬)
হাদিস ৫৫৯৬
আলী ইবনু আয়্যাশ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক সৎ কাজই সাদাকা।
হাদিস ৫৫৯৭
আদম (রহঃ) আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) থেখে বর্নিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলমানেয়ই সাদাকা করা আবশ্যক। উপস্থিত লোকজন বললোঃ যদি সে সাদাকা করার মত কিছু না পায়। তিনি বললেনঃ তাহলে সে নিজের হাতে কাজ করবে। এতে সে নিজেও উপকৃত হবে এবং সাদাকা করবে। তারা বলল: যদি সে সক্ষম না হয় অথবা বলেছেনঃ যদি সে না করে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে যেন বিপদগ্রস্থ মাযলূমের সাহায্য করে। লোকেরা বলল: সে যদি তা না করে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে সৎ কাজের নির্দেশ দিবে, অথবা বলেছেন, সাওয়াবের কাজের আদেশ দিবে। তারা বলল: তাও যদি সে না করে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকে। কারণ, এই তার জন্য সাদাকা।
হাদিস ৫৫৯৮
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাহান্নামের আশুনের কথা উল্লেখ করলেন। তারপর তা থেকে পানাহ চাইলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরে আবার জাহান্নামের আগুনের কথা উল্লেখ করলেন, তারপর তা থেকে পানাহ চাইলেন এবং তার মুখ ফিরিয়ে নিলেন শুবা (রহঃ) বলেনঃ দু-বার যে বলেছেন, এতে আমার কোন সন্দেহ নেই। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেচে থাক এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও তা হলে মধুর ভাষা বিনিময়ে।
হাদিস ৫৫৯৯
আবদুল আযীয (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিনা আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদীদের একটি দল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বললঃ ‘আসসামু আলাইকুম’ তোমাদের উপর মৃত্যু আসুক। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ ‘অ আলাইকুকুসসালামু অ লা’নাহু’ আমি এ কথার অর্থঃ বুঝলাম এবং বললাম: তোমাদের উপরও মৃত্যু ও লানত আসুক। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ থাম হে আয়িশা! আল্লাহ সকল কাজে নমরতা ভালবাসেন। আমি বললাম: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! অপনি কি শোনেন নি তারা কি বলেছে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি বলেছি ‘আলাইকুম’ এবং তোমাদের উপরও।
হাদিস
discrip
হাদিস ৫৬০০
আবদুল্লাহ ইবনু আবদস ওহহাব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলো। লোকেরা উঠে (তাকে মারার জন্য) তার দিকে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার পেশাব করা বন্ধ করো না। তারপর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং পানি পেশাবের উপর ঢেলে দেয়া হলো।
হাদিস ৫৬০১
মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ মূসা (আশ আরী) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন মুমিনের জন্য ইমরাতের ন্যায়, যার এক অংশ অন্য অংশ মজবুত করে রাখে। এরপর তিনি (হাতের) আঙ্গুলগুলো (আরেক হাতের) আঙ্গুল (এর ফাকে) ঢ়ুকালেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যাক্তি কিছু প্রশ্ন করার জন্য কিংবা কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য এল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে ফিরে তাকালেন এবং বললেনঃ তোমরা তার জন্য (কিছু দেওয়ার) সুপারিশ করো। এতে তোমাদের সাওয়াব দেওয়া হবে। আল্লাহ তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবেদন অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা করেন।
হাদিস ৫৬০২
মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন ভিখারী অথবা অভাবগ্রস্ত লোক আসলে তিনি বলতেনঃ তোমরা সুপারিশ করো, তাহলে তোমরা সাওয়াব পাবে। অবশ্য আল্লাহ তা-আলা তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দু’আ অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা দেন।
হাদিস ৫৬০৩
হাফস ইবনু উমর ও কুতায়বা (রহঃ) মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর নিকট এমন সময় গেলাম, যখন তিনি মুআবিয়া (রহঃ)-এর সন্মুখে কুফায় আগমন করেনা তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথা উল্লেখ করে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাযাত অসালীন ছিলেন না আর অসালীন উক্তি করতেন না। তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক উত্তম ঐ ব্যাক্তি, যে স্বভাবে সর্বোত্তম।
হাদিস ৫৬০৪
মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। একবার একদল ইয়াহুদী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললোঃ আস-সামু আলাইকুম। (আপনার উপর মরণ আসুক)। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ- তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পতিত হোক। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা! তুমি একটু থামো। নমরতা অবলম্বন করা তোমার কর্তব্য। দৃঢ় ব্যবহার ও অশালীন আচরণ পরিহার করো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তারা যা বলেছে, তা কি আপনি শোনেন নি? তিনি বললেনঃ আমি যা উত্তর দিলাম, তুমি তা শোননি? আমি তাদের এ কথাটি তাদের উপর ফিরিয়ে দিয়েছি। সূতরাং আমার কথাই তাদের ব্যাপারে কবূল হবে আর আমার ব্যাপারে তাদের কথা কবুল করে না।
হাদিস ৫৬০৫
আসবাগ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গালি- গালাজকারী, অশালীন ও অভিশাপদাতা ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর নারায হলে, কেবল এতটুকু বলতেন তার কি হলো। তার কপাল ধুলাময় হোক।
হাদিস ৫৬০৬
আমর ইবনু ঈসা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি লোকটিকে দেখে বললেনঃ সে সমাজের নিকৃষ্ট লোক এবং সমাজের দুষ্ট সন্তান। এরপর সে যখন এসে বসলো, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং উদারতার সাথে মেলামেশা করেন। লোকটি চলে গেলে আয়িশা (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! যখন আপনি লোকটিকে দেখলেন তখন তার সম্পর্কে এরুপ বললেন, পরে তার সাথে আপনি সহাস্যে ও উদার প্রাণে সাক্ষাৎ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা। তুমি কখন আমাকে অশালীন রুপে পেয়েছ? কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মর্যাদার দিক দিয়ে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই ব্যাক্তি, যার বদ স্বভাবের কারনে মানুষ তাকে পরিত্যাগ করে।
হাদিস ৫৬০৭
আমর ইবনু আওন (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, সবার চাইতে অধিক দানশীল এবং লোকদের মধ্যে সর্বাধিক সাহসী ছিলেন। একদা রাতের বেলায় (একটি বিরাট আওয়াজ শুনে) মদিনাবাসীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই লোকেরা সেই শব্দের দিকে রওনা হয়। তখন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনা সামনি পেলেন তিনি সে আওয়াজের দিকে লোকদের আগেই বের হবে গিয়েছিলেন। তিনি বলতে লাগলেনঃ তোমরা ঘাবড়িওনা তোমরা ঘাবড়িওনা, (আমি দেখে এসেছি, কিছুই নেই)। এ সময় তিনি আবূ তালহা (রাঃ)-এর জ্বীন বিহীন ঘোড়ার উপর সওয়ার ছিলেন। আর তার কাঁধে একখানা তলোয়ার ঝূলাছিল। এরপর তিনি বললেনঃ অবশ্য এ ঘোড়াটিকে আমি সমুদ্রের মত (দ্রুতগামী) পেয়েছি। অথবা বললেনঃ এ ঘোড়াটিকে একটি সমুদ্র।
হাদিস ৫৬০৮
মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এমন কোন জিনিসই চাওয়া হয় নি, যার উত্তরে তিনি না- বলেছেন।
হাদিস ৫৬০৯
উমর ইবনু হাফস (রহঃ) মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) এর নিকট বসাছিলাম। তিনি আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবত অশালীন ছিলেন না এবং তিনি ইচ্ছা করেও কাউকে অশালীন কথা বলতেন না। তিনি বলতেনঃ তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র ভাল সেই তোমাদের মধ্যে সব চাইতে উত্তম।
হাদিস ৫৬১০
সাঈদ ইবনু আবূ মাসসাম (রহঃ) সাহল ইবনু সা-দ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ এক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমতে একখানা বুরদাহ নিয়ে আসলেন। সাহল (রাঃ) লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনারা কি জানেন বুরদাহ কী? তারা বললেনঃ তা চাঁদর। সাহল (রাঃ) বললেনঃ এটি এমন চাঁদর যা ঝালরসহ বোনা হয়েছে। এরপর সেই মহিলা আরজ করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি আপনাকে এটি পরিধানের জন্য দিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাঁদরখানি এমনভাবে গ্রহন করলেন, যেন তার এটির দরকার ছিল। এরপর তিনি এটি পরিধান করলেন। এরপর সাহাষীদের মধ্যে থেকে- এক ব্যাক্তি সেটি তার দেহে দেখে ইয়া রাসুলুল্লাহ! এটা কতই না সুন্দর! আপনি এটি আমাকে দিয়ে দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যা (দিয়ে দেব)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে চলে গেলেন, অন্যান্য সাহাবীরা তাকে দোষারোপ করে বললেনঃ তুমি ভাল কাজ করোনি। যখন তুমি দেখলে যে, তিনি চাঁদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেছেন যেন এটি তার প্রয়োজন ছিল। এরপরও তুমি সেটা চেয়ে বসলে। অথচ তুমি অবশ্যই জানো যে, তার কাছে যখনই কোন জিনিস চাওয়া হয়, তখন তিনি কাউকে কখনো বিমুখ করেন না। তখন সেই ব্যাক্তি বললো: যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি পরিধান করেছেন, তখন তার বরকত হাসিল করার আশায়ই আমি একাজ করেছি, যেন আমি এ চাঁদরটাকে আমার কাফন বানাতে পারি।
হাদিস ৫৬১১
আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামতের সময় ঘনিয়ে আসলে, ইল্ম কমে যাবে, অন্তরে কৃপণতা ঢেলে দেয়া হবে এবং হারজের আধিক্য হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ হারজ- কি, ইয়া রাসুলুল্লাহ? তিনি বললেনঃ হত্যা হত্যা।
হাদিস ৫৬১২
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি দশ বছর পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমত করেছি। কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উঃ শব্দ বলেন নি। একথা জিজ্ঞাসা করেননি তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না?
হাদিস ৫৬১৩
হাফস ইবনু উমর (রহঃ) আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে কী কাজে রত থাকতেন? তিনি বললেনঃ সাধারন গৃহ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। আর যখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হয়ে যেতো, তখন উঠে সালাত (নামায/নামাজ) চলে যেতেন।
হাদিস ৫৬১৪
আমর ইবনু আলী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তাঁআলা কোন বান্দাকে ভালাবাসেন, তখন তিনি জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে ডেকে বলেন, আল্লাহ তা-আলা অমুক বান্দাকে ভালবাসেন তুমিও তাকে ভালবাসবে। তখন জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ভালবাসেন এবং তিনি আসমান বাসীদের নিকট ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা-আলা অমুঁককে ভালবাসেন, অতএব তোমরাও তাকে ভালবাসবে। তখন আসমান বাসীরাও তাকে ভালবাসতে শুরু করে। তারপর আল্লাহ তা’আলার তরফ থেকে যমীন বাসীদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করা হয়।
হাদিস ৫৬১৫
আদম (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না, যতক্ষন না সে কোন মামুষকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে, আর যতক্ষণ না সে যে কুফরী থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করেছেন, তার দিকে ফিরে যাওয়ার চাইতে আগুন নিক্ষিপ্ত হওয়াকে সর্যাধিক প্রিয় মনে করবে এবং যতক্ষণ না আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় হবেন।
হাদিস ৫৬১৬
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু যামআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের বাযূ নির্গমনে কাউকে হাসতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন: তোমাদের কেউ কেন তার স্ত্রীকে ষাড়কে পিটানোর মত প্রহার করবে? পরে হয়ত, সে আবার তার সাথে গলাগালিও করবে। সাওরী ওহায়ব আবূ মুআবিয়া (রহঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ষাড় পিটানোর স্থলে দাসকে বেত্রাঘাত করার মত।
হাদিস ৫৬১৭
মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় (খুতবা দান কালে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানোো আজ কোন দিন? সকলেই বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই অধিক জ্ঞাত আছেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজ এটি হারাম (সম্মানিত) দিন। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোময়া জানো, এটি কোন শহর? সবাই জবাব দিলেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই বেশী জানেন। তখন তিনি বললেনঃ এটি একটি হারাম (সম্মানিত) শহর। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো! এটা কোন মাস? তারা বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই বেশী অবগত। তখন তিনি বললেনঃ এটা একটা হারাম (সম্মানিত) মাস। তারপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের (একে অন্যের) জানো মাল ও ইজ্জত-আবরুকে হারাম করেছেন! যেমন হারাম তোমাদের এ দিনটি তোমাদের এ মাস ও তোমাদের এ শহর।
হাদিস ৫৬১৮
সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন সে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানের গালি দেয়া ফাসিকী (কবীরা গুনাহ) এবং এক অন্যের সাথে মারামারি করা কুফরী। শুবা (রহঃ) সূত্রে গুনদারও অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৫৬১৯
আবূ মামার (রহঃ) আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন অপর জনকে ফাসিক বলে যেন গালি না দেয় এবং একজন আর একজনকে যেন কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা যদি সে তা না হয়ে থাকে তবে তা তার উপরই পতিত হবে।
হাদিস ৫৬২০
মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশালীন অভিশাপদাতা ও গালিদাতা ছিলেন না। তিনি কাউকে তিরস্কার করার সময় শুধু বলতেন: তার কি হল? তার কপাল ধূলাময় হোক।
হাদিস ৫৬২১
মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি গাছের নীচে বাইআত গ্রহণকারীদের অন্যতম সাহাবী ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের উপর কসম খাবে সে ঐ ধর্মেরই শামিল হয়ে যাবে আর মানুষ যে জিনিসের মালিক নয়, এমন জিনিসের নযর আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়। আর কোন ব্যাক্তি দুনিয়াতে যে জিনিস দ্বারা আত্নহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন সে জিনিস দিয়েই তাকে আযাব দেওয়া হবে। কোন ব্যাক্তি কোন মুমিনের উপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করারই শামিল হবে। আর কোন মুমিনকে কাফির বলে অপবাদ দিলে! তাও তাকে হত্যা করারই মত হবে।
হাদিস ৫৬২২
উমর ইবনু হাফস (রহঃ) সুলায়মান ইবনু সুরাদ (রাঃ) নামক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ দু-জন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে একে অন্যকে গালি দিচ্ছিল। তাদের একজন এত ক্রুদ্ধ হয়েছিল যে! তার চেহারা কুলে বিগড়ে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্যই একটই কালেমা জানি। যদি সে ঐ কালেমাটি পড়তো, তা হলে তার ক্রোধ চড়ে যেত। তখন এক ব্যাক্তি তার নিকট গিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ঐ কথাটি তাকে জানালো। আর তুমি বললো যে তুমি শয়তান থেকে পানাহ চাও। তখন সে বললোঃ আমার মধ্যে কি কোন রোগ দেখা যাচ্ছে? আমি কি পাগল? তুমি চলে যাও।
হাদিস ৫৬২৩
মূসা’দ্দাদ (রহঃ) উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের -লায়লাতুল কদর” সম্বন্ধে জানানোর জন্য বেরিয়ে আসলেন। তখন দু-জন মুসলমান ঝগড়া করছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি ‘লায়লাতুল কদর’ সম্পর্কে তোমাদের খবর দিতে বেরিয়ে এসেছিলাম। এ সময় অমুক অমুক পরস্পর ঝগড়া করছিল। এজন্য ঐ খবরের ‘ইল্ম’ আমার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এটা হয়ত তোমাদের জন্য কল্যাণকরই হবে। অতএব তোমরা তা রমযানের শেষ দশকের নবম! সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তালাশ করবে।
হাদিস ৫৬২৪
উমর ইবনু হাফস (রহঃ) আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তার উপর একখানা চাঁদর ও তার গোলামের গায়ে একখানা চাঁদর দেখে বললামঃ যদি আমি ঐ চাঁদরটি নিতেন ও পরিধান করতেন! তাহলে আপনার এক জোড়া হইয়ে যেত আর গোলামকে অন্য কাপড় দিয়ে দিতেন। তখন আবূ যার (রাঃ) বলেনঃ একদিন আমার ও আরেক ব্যাক্তির মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল। তার মা ছিল জনৈক অনারব মহিলা। আমি তার মা তুলে গালি দিলাম। তখন লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট তা বলল। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন: তুনি কি অমুককে গালি দিয়েছ? আমি বললাম: হ্যা। তিনি বললেনঃ তুমি কি তার মা তুলে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই। তুমিতো এমন ব্যাক্তি যার মধ্যে জাহেলী যুগের আচরন বিদ্যঁমান। আমি বললামঃ এখনো? এই বৃদ্ধ বয়সেও? তিনি বললেনঃ হা! তারা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাআলা ওদের তোমাদের অধীন করেছেন। সূতরাং আল্লাহ তায়ালা যার ভাইকে তার অধীন করে দেন, সে নিজে খায়, তাকেও যেন তা খাওয়ায়। সে নিজে যা পড়ে, তাকেও যেন তা পড়ায়। আর তার উপর যেন এমন কোন কাজের চাপ না দেয়, যা তার শক্তির বাইরে। আর যদি তার উপর এমন কঠিন কোনো চাপ দিতেই হয় তাহলে সে নিজেও যেন তাকে সাহায্য করে।
হাদিস ৫৬২৫
হাফস ইবনু উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) দু-রাকআত আদায় করে সালাম ফিরালেন। তারপর সিজাদার জায়গার সামনে রাখা একটি কাঠের দিকে আগ্রসর হয়ে তার উপর তার এক হাত রাখলেন। সেদিন লোকদের মাঝে আবূ বকর, উমর (রাঃ)-ও হাযির ছিলেন। তারা তার সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেলেন। কিন্তু তাড়াহুড়া করে (কিছু) লোক বেয়িয়ে গিয়ে বলতে লাগলঃ সালাত (নামায/নামাজ) খাট করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ছিল, যাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘যুলইয়াদাইন’ (দুই হাতাওইয়ালা অর্থাৎ লম্বা হাতা ওয়ালা) বলে ডাকতেন, সে বললঃ ইয়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! আপনি কি ভুল করেছেন, না সালাত (নামায/নামাজ) ছোট করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ আমি ভুলে যাইনি এবং (সালাত (নামায/নামাজ)) ছোটও করা হয়নি। তারা বললেনঃ বরং আপনই ভুলে গেছেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তখন তিনি বললেনঃ ‘যুলইয়াদাইন’ ঠিকই বলেছে। তারপর তিনি উঠে দাঁড়িয়ে দুরাক আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন ও সালাম ফিরালেন। এরপর ‘তাকবীর’ বলে আগের সিজদার মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা করলেন। তারপর আবার মাথা তুললেন এবং তাকবীর বললেন এবং আগের সিজদার ন্যায় অথবা তার থেকে দীর্ঘ সিজদা করলেন। এরপর মাথা উঠালেন এবং তাকবীর বললেন।
হাদিস ৫৬২৬
ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই এ দু-জন কবঁরবাসীকে আযাব দেওয়া হচ্ছে। তবে বড় কোন গুনাহের কারণে কবরে তাদের আযাব দেয়া হচ্ছে না। এই কবর বাষী পেশাব করার সময় সতর ঢাকতোনা। আর ঐ কবরবাসী লানত (পরনিঁন্দা) করে বেড়াত। এরপর তিনি খেজ্বরের একটি কাটা ভাল আনিয়ে সেটি দু-টুকরো করে এক টুকরো এ কবরটির উপর এবং এক টুকরো ঐ কবরটির উপর গেড়ে দিলেন। তারপর বললেনঃ এ দালের টুকরো দুটি না শুকানো পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের আযাব কমিয়ে দিবেন।
হাদিস ৫৬২৭
কাবীসা (রহঃ) উসাইদ সায়েদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আনসারদের ঘরগুলোর মধ্যে নাজ্জার গোত্রের ঘরগুলোই উত্তম।
হাদিস ৫৬২৮
সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আসার অনুমতি চাইলে তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও। সে বংশের নিকৃষ্ট ভাই অথবা বললেনঃ সে গোত্রের নিকৃষ্ট সন্তান। লোকটি ভিতরে আসলে তিনি তার সাথে নমরভাবে কথাবার্তা বললেন। তখন আমি বললাম: ইয়া রাসুলুল্লাহ? আপনি এ ব্যাক্তি সম্পর্কে যা বলার তা বলেছেন। পরে আপনি আবার তার সাথে নমরতার সাথে কথাবার্তা বললেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আয়িশা! নিশ্চয়ই সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যাক্তি সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেচে থাকার জন্য মানুষ তার সশ্রব ত্যাগ করে।
হাদিস ৫৬২৯
ইবনু সালাম ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার কোন বাগানের বাইরে গেলেন। তখন তিনি এমন দু’জন লোকেরা আওয়াজ শুনলেন, যাদের কবরে আযাব দেওয়া হচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তাদের দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে। তবে বেশী গুনাহের দরুন আযাব দেওয়া হচ্ছে না। আর তাহল কবীরা গুনাহ। এদের একজন পেশাবের সময় সতর ঢাকতো না। আর অপর জন চোগলখোরী করে বেড়াতো। তারপর তিনি একটা কাচা ডাল আনিয়ে তা ভেঙ্গে দু’ টুকরো করে, এ কবরে এক টুকরো আর ঐ কবরে এক টুকরো গেড়ে দিলেন এবং বললেনঃ দু’টি যতক্ষণ পর্যন্ত না শুকাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আযাব হালকা করে দেওয়া হবে।
হাদিস ৫৬৩০
আবূ নুয়াঈম (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
হাদিস ৫৬৩১
আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মিথ্যা কথা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা আর মুর্খতা পরিত্যাগ করলো না আল্লাহর নিকট (সিয়ামের নামে)তার পানাহার ত্যাগের কোন প্রয়োজন নেই।
হাদিস ৫৬৩২
উমর ইবনু হাফস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কিয়ামতের দিন তুমি আল্লাহর নিকট ঐ ব্যাক্তিকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট পাবে যে দুমুখো। সে এদের সামনে একরুপ নিয়ে আসতো আর ওদের কাছে অন্য রুপে ধরা দিত।
হাদিস ৫৬৩৩
মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমতের মাল) ভাগ করলেন। তখন আনসারদের মধ্য থেকে এক (মুনাফিক) ব্যাক্তি বলল: আল্লাহর কসম! এ কাজে মুহম্মদ আল্লাহর সন্তুষ্টি চাননি। তখন আমি এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথার খবর দিলাম। এতে তার চেহারার রং বদলে গেল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর রহম করুন। তাকে এর চাইতে অনেক বেশী কষ্ট দেওয়া হয়েছে তবুও তিনি সবর করেছেন।
হাদিস ৫৬৩৪
মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনকে আরেক জনের প্রাশংসা করতে শুনলেন এবং সে তার প্রসংসায় অতিরঞ্জন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা তো লোকটিকে মেরে ফেললে অথবা বললেনঃ লোকটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিলে।
হাদিস ৫৬৩৫
আদম (রহঃ) আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে এক ব্যাক্তির আলোচনা আসল। তখন একজন তার খুব প্রশাংসা করলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আফসোস তোমার প্রতি! তুমিতো তোমার সাথীর গলা কেটে ফেললে। এ কথাটি তিনি কয়েক বার বললেন। (তারপর তিনি বললেনঃ) যদি তোমাদের কারো প্রশংসা করতেই হয়, তবে সে যেন বলে, আমি তার সম্পর্কে এমন, এমন ধারণা করি, যদি তার এরুপ হওয়ার কাথা মনে করা হয়। তার প্রকৃত হিসাব গ্রহনকারীতো হলেন আল্লাহ আর আল্লাহর মূকাবিলায় কেউ কারো পবিত্রতা বর্ণনা করবে না।
হাদিস ৫৬৩৬
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইযার সম্পর্কে কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ আমার লুঙ্গিরও একদিক দিয়ে ঝূলে পড়ে। তিনি বললেনঃ তুমি তাদের অন্তভুক্ত নও।
হাদিস ৫৬৩৭
হুমায়দী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত এত দিন এমন অবস্থায় অতিবাহিত করছিলেন যে তার খেয়াল হতো যেন তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেন, অথচ তিনি মিলিত হননি। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি আমাকে বললেনঃ হে আয়িশা! আমি যে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম- সে বিষয়ে আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। (আমি স্বপে দেখলাম) আমার নিকট দুই ব্যাক্তি এলো। একজন বসলো আমার পায়ের কাছে এবং আরেক জন শিয়রে। পায়ের কাছে বসা বাক্তি শিয়রে বসা ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করল: এ ব্যাক্তির অবস্থা কি? সে বলল: তাকে যাদু করা হয়েছে। সে আবার জিজ্ঞাসা করললঃ তাকে কে যাদু করেছে? সে বললঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ ইবনু আসাম। সে আবার জিজ্ঞাসা করলঃ কিসের মধ্যে? সে বললো নর খেজুর গাছের খোলার ভিতবে তাঁর চিরুনীর এক টুকরা ও আচড়ানো হল পূরে দিয়ে যারওয়ান- কুপের মধ্যে একটি পাথরের নীচে রেখেছে। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সেখানে) গিয়ে দেখে বললেনঃ এ সেই কুপ যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। সেখানের খেজুর গাছের মাথাগুলো যেন শয়তানের মাথা এবং সে কুপের পানি যেন মেহদী নিংড়ানো পানি। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশে তা কুপ থেকে বের করা হলো। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আমি আরয করলামঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি কেন অর্থাৎ এটি প্রকাশ করলেন না? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তো আমাকে শিফা দান করেছেন- আর আমি মানুষের নিকট কারো কুকর্ম ছাড়ানো পছন্দ করি না। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ ইবনু আসাম ছিল ইয়াহুদীদের মিত্র বনূ যুরায়কের একব্যাক্তি।
হাদিস ৫৬৩৮
বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা থেকে বিরত থাকো। কারো প্রতিধারণা পোষন করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা ব্যাপার। তোমরা দোষ অন্বেষন করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, গরস্পর হিংসা করো না একে অন্যের প্রতি বিদ্যেষভাব পোষন করো না এবং পরস্পর বিরোধে লিপ্ত হয়ো না। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো।
হাদিস ৫৬৩৯
আবূল ইয়ামাশ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা একে অন্যের প্রতি বিদ্যেষভাব পোষন করো না, পরস্পর হিংসা করো না পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো। কোন মুসলমানের জন্য তিন দিনের বেশী তার ভাইকে পরিত্যাগ করে থাকা জায়িয নয়।
হাদিস ৫৬৪০
আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা অনুমান থেকে বেচে থেকেো। কারণ অনুমান বড় মিথ্যা ব্যাপার। আর কারো দোষ অনুসন্ধান করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, একে অন্যকে ধোঁকা দিও না, আর পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্ব্যেষভাব পোষণ করো নাএবং পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো।
হাদিস ৫৬৪১
সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অমুক অমুক ব্যাক্তি আমাদের দ্বীন সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না। রাবী লায়স বর্ণনা করেন যে, এ দু-ব্যাক্তি মুনাফিক ছিল।
হাদিস ৫৬৪২
ইয়াহইয়া ইবনু যুকায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লায়স আমাদের কাছে উক্ত হাদীস বর্ননা করেন। (এতে রয়েছে) আয়িশা (রাঃ) বলেন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে বললেনঃ হে আয়িশা! অমুক অমুক ব্যাক্তি আমাদের দ্বীন, যার উপর আমরা রয়েছি, সে সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না।
হাদিস ৫৬৪৩
আবদুল আযীয ইবনু আবদূল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই ধৃষ্টতা যে, কোন ব্যাক্তি রাতে অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক। আমি আজরাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অড়িবাহিত করল সে, আল্লাহ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর পর্দা খূলে ফেলল।
হাদিস ৫৬৪৪
মূসা জাদ (রহঃ) -সাফওয়ান ইবনু মুহরিয (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করল: আপনি -নাজওয়া- (কিয়ামতের দিন আল্লাহ ও তাঁর মুমিন বান্দার মধ্যে গোপন আলোচনা) সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের এক ব্যাক্তি তার রবের এমন নিকটবর্তী হবে যে তিনি তার উপর তাঁর নিজস্ব পর্দা ঢেলে দিয়ে দু-বার জিজ্ঞাসা করবেন: তুমি অমুক অমুক কাজ করেছিলে? সে বলবে: হ্যা। আবার তিনি জিজ্ঞাসা করবেন: তুমি এমন এমন কাজ করেছিলে? সে বলবে হ্যা। এভাবে তিনি তার স্বীকরোক্তি নিবেন। এরপর বলবেন আমি দুনিয়াতে তোমর এগুলো ঢেকে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ মাফ করে দিচ্ছি।
হাদিস ৫৬৪৫
মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) হারিসা ইবনু ওহাব খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের জান্নাতীদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? (তারা হলেন): ঐ সকল লোক যারা অসহায় এবং যাদের হীন মনে করা হয়। তারা যদি আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বসে, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পূরা করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামীদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? তারা হলো: রুঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় ও দাম্ভিক। মুহাম্মদ ইবনু ঈসা (রহঃ) সুত্রে আনাস ইবনু ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ- মদিনাবাসীদের কোন এক দাসীও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাত ধরে যেখানে ইচ্ছা নিয়ে যেত। আর তিনিও তার সাথে ঢলে যেতেন।
হাদিস ৫৬৪৬
আবূল ইয়ামান (রহঃ) আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রাঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পূত্র থেকে বর্নিত। আয়িশা (রাঃ) কে অবহিত করা হল যে- তাঁর কোন বিক্রির কিংবা দান করার ব্যাপারে আবদূল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়িশা (রাঃ) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সত্যই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেন হ্যা। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানত (শপথ) করে নিলাম যে আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল দীর্ঘ হল, তখন ইবনু যুবায়র (রাঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেন না! আল্লাহর কসম! এব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানতও ভঙ্গ করব না। এভাবে যখন ব্যপারটা ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর জন্য দীর্ঘ হতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দুব্যাক্তি মিসওয়ার ইবনু মাখরামা ও আব্দুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াত্যুসের সাথে আলোচনা করলেন। তিনি তাদের দু-জনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দু-জন (যে প্রকারে হোক) আমাকে আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে নিয়ে যাও। কারন আমার সাথে তার বিচ্ছিন্ন থাকার মানত জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার (রাঃ) ও আব্দুর (রাঃ) উভয়ে চাঁদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে জড়িয়ে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওবাবারাকা-তু আমরা কি-ভেতরে আসতে পারি? আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তারা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে তাদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করলেন তখন ইবনু যুবায়র পর্দার ভেতর ডুকে গেলেন এবং আয়িশা (রাঃ)-কে জড়িয়ে ধরে, তাকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাদতে আরম্ভ করলেন। তখন মিসওয়ার (রাঃ) ও আবদুর রহমান (রাঃ)-ও তাকে আল্লাহর কসম দিতে আরম্ভ করলেন। তখন আয়োশা (রাঃ) ইবনু যুবায়ের (রাঃ)-এর সাথে কথা বলেন এবং তার ওযর কবুল করে নেন। আর তাঁরা বলতে লাগলেন: আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্ক বর্জন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হারাম। যখন তারা আয়িশা (রাঃ)-কে বেশী বেশী বুঝাতে চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি -মানত- করে ফেলেছি। আর মানত তো শক্ত ব্যাপার। কিন্তু তারা একাধারে চাপ দিতেই থাকলেন অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর সাথে কথা বলে ফেললেন এবং তার নযরের জন্য (কাফফারা স্বরুপ) চল্লিশ জন গোলাম আযাদ করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তার মানতের স্মরণ করতেন তখন তিনি এত বেশী কাঁদতেন যে, তার চোখের পানিতে তার ওড়না ভিজে যেত।
No comments: