Breaking News
recent

বুখারী শরীফ ১০ম খন্ড, অধ্যায়ঃ কোমল হওয়া অধ্যায় ১ (৫৯৭০-৬০২২)

 হাদিস ৫৯৭০

মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি নিয়ামত এমন আছে, যে দুঁটোতে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হল, সুস্থতা আর অবসর। আব্বাস আম্বরী (রহঃ) সাঈদ ইবনু আবূ হিন্দ (রহঃ) থেকে ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস ৫৯৭১

মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আয় আল্লাহ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। সুতরাং আপনি আনসার আর মুহাজিরদের কল্যাণ দান করুন।

হাদিস ৫৯৭২

আহমাদ ইবনু মিকদাম (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা খন্দকের যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি খনন করছিলেন এবং আমরা মাটি সরাচ্ছিলাম। তিনি আমাদের দেখছিলেন। তখন তিনি বলছিলেনঃ আয় আল্লাহ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। সূতরাং আপনি আনসার ও মুহাজিরদেরকে মাফ করে দিন।

হাদিস ৫৯৭৩

আবদুল্লাহ ইবনু মাসুলামা (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, জান্নাতের মধ্যে একটা চাবূক পরিমাণ জায়গা দুনিয়া এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম। আর আল্লাহর রাস্তায় সকালের এক মুহৃর্ত অথবা বিকালের এক মুহৃর্ত দুনিয়া ও এর সব কিছু থেকে উত্তম।

হাদিস ৫৯৭৪

আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমার উভয় কাঁধ ধরে বললেনঃ তুমি এ দুনিয়াতে একজন মূসা ফির অথবা পথযাত্রীর মত থাক। আর ইবনু উমর (রাঃ) বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে আর ভোরের অপেক্ষা করো না এবং ভোরে উপনীত হলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার অবকাশে পিড়ীত অবস্হার জন্য সঞ্চয় করে রেখো। আর জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিও।

হাদিস ৫৯৭৫

সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেনঃ একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি চতূর্ভুজ আকলেন এবং এর মাঝখানে একটি রেখা টানলেন, যা ভূজ অতিক্রম করে গেল। তারপর দূ-পাশ দিয়ে মাঝের রেখার সাথে ভেতরের দিকে কয়েকটী ছোট ছোট রেখা মিলালেন এবং বললেনঃ এ মাঝামাঝি রেখাটা হলো মানুষ। আর এ চতুর্ভূজটি হলো তার আয়ু, যা তাকে ঘিরে রেখেছে। আর বাইরের দিকে অতিক্রান্ত রেখাটি হল তার আশা। আর এ ছোট ছোট রেখাগুলো বাধা-বিপত্তি। যদি সে এর একটা এড়িয়ে যায়, তবে অন্যটা তাকে দংশন করে। আর অন্যটিও যদি এড়িয়ে যায় তবে আরেকটি তাকে দংশন করে।

হাদিস ৫৯৭৬

মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি রেখা টানলেন এবং বললেনঃ এটা আশা আর এটা তার আয়ু। মানুষ যখন এ অবস্হায় থাকে হঠাৎ নিকটবর্তী রেখা (মৃত্যু) এসে যায়।

হাদিস ৫৯৭৭

আবদুল সালাম ইবনু মুতাহহার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, আল্লাহ তা’আলা যাকে দীর্ঘায়ু করেছেন, এমনকি যাকে ষাট বছরে পৌছিয়েছেন তার ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি।

হাদিস ৫৯৭৮

আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দুটি ব্যাপারে সর্বদা যুবক থাকে। এর একটি হল দুনিয়ার মহব্বত, আরেকটি হল উচ্চাকাঙ্ক্ষা। লায়ছ (রহঃ) সাঈদ ও আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস ৫৯৭৯

মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আদম সন্তানের বয়স বাড়ে আর তার সাথে দুটি জিনিসও বৃদ্ধি পায়; ধন-সম্পদের মহববত ও দীর্ঘায়ুর আকাঙ্ক্ষা।

হাদিস ৫৯৮০

মুয়ায ইবনু আসা’দ (রহঃ) মাহমুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথা তাঁর স্বরণ আছে। আর তিনি বলেনঃ তাদের ঘরের পানির ডোল থেকে পানি মুখে নিয়ে তিনি তার মুখে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন সে কথাও তার স্বরণ আছে। তিনি বলেনঃ ইতবান ইবনু মালিক আনসারীকে, এরপর বনী সালিমের এক ব্যাক্তিকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে আমার এখানে এলেন এবং বললেনঃ- আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে ব্যাক্তি -লা ইলাহা ইয়াল্লাহ- বলবে এবং এ বিশ্বাস নিয়ে কিয়ামতের দিন হাযির হবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।

হাদিস ৫৯৮১

কুতায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, আমি যখন আমার মুমিন বান্দার কোন প্রিয়তম কিছু দুনিয়া থেকে তুলে নেই আর সে ধৈর্য ধারণ করে! আমার কাছে তার জন্য জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান নেই।

হাদিস ৫৯৮২

ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আমর ইবনু আওফ (রাঃ) তিনি বনী আমর ইবনু রওযাই-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে বদরের যুদ্ধেও শরীক ছিলেন। তিনি বর্ননা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহকে জিযিয়া আদায় করার জন্য বাহরাইন পাঠালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর- সাথে সন্ধি করেছিলেন এবং তাদের উপর আলা ইবনু হাসরামী (রাঃ)-কে আমীর নিযূক্ত করেছিলেন। আবূ উবায়দা (বা) বাহরাইন থেকে মালামাল নিয়ে আসেন, আনসারগণ তার আগমনের সংবাদ শুনে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঈে শরীক হন। সালাত (নামায/নামাজ) শেষে তাঁরা তার সামনে এলেন। তিনি তাদের দেখে হেসে বললেনঃ আমি মনে করি তোমরা আবূ উবায়দা (রাঃ)-এর আগমনের এবং তিনি যে মাল নিয়ে এসেছেন সে সংবাদ শুনেছ। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ হ্যা। তিনি বললেনঃ তোমরা এ সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং তোমরা আশা রেখো যা তোমাদের খুশী করবে। তবে, আল্লাহর কসম। আমি তোমাদের উপর দরিদ্রতার আশংকা করছি না বরং আশংকা করছি যে, তোমাদের পূর্ববতী উম্মাতের উপর যেমন দুনিয়া প্রশস্ত করে দেওয়া হইয়েছিল, তেমনি তোমাদের উপরও দুনিয়া প্রশস্ত করে দেওয়া হবে। আর তোমরা যা নয় তা তোমাদের আখিরাত বিমুখ করে ফেলবে, যেমন তাদের জন্য বিমুখ করেছিল।

হাদিস ৫৯৮৩

কুতায়বা (রহঃ) উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন এবং উহুদের শহীদানের উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন, যেমন তিনি মুর্দার উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে থাকেন। তারপর মিম্বরে আরোহণ করে বললেনঃ আমি তোমাদের অগ্রনী। আমি তোমাদের সাক্ষী হব। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি আমার –হাওয কে এখন দেখছি। আমাকে তো যমীনের ধনগারের চাবিসমূহ অথবা যমীনের চাবিসমূহ দেয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের উপর এ আশংকা করছি না যে, তোমরা আমার পরে মুশরিক হয়ে যাবে, তবে আমি আশংকা করছি যে, তোমরা দূনিরার ধন-সম্পদে আসক্ত হয়ে যাবে। 

 হাদিস ৫৯৮৪

ইসমাঈল (রহঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য যমীনের বরকত সমুহ প্রকাশিত করে দিবেন, আমি তোমাদের জন্য এ ব্যাপারেই সর্বাধিক আশংকা করছি। জিজ্ঞাসা করা হলো, যমীনের বরকত সমূহ কি? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার জাঁকজমক। তখন এক ব্যাক্তি তাঁর কাছে বললেনঃ ভাল কি মন্দ নিয়ে আসবে? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন, যদ্দরুন আমরা ধারণা করলাম যে, এখন তার উপর ওহী নাযিল হচ্ছে এরপর তিনি তাঁর কপাল থেকে ঘাম মুছে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেনঃ যখন এটি প্রকাশ পেল, তখন আমরা প্রশ্নকারীর প্রশংসা করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভাল শুধুমাত্র ভালকেই বয়ে আনে। নিশ্চয়ই এ ধনদৌলত সবুজ শ্যামল সুমিষ্ট। অবশ্য বসন্ত যে সবজি উৎপাদন করে, তা ভক্ষণকারী পশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় অথবা নিকটে করে দেয়, তবে প্রানী পেট ভরে খেয়ে সূর্যমুখী হরে জাবর কাটে, মল-মূত্র ত্যাগ করে এবং পূনঃ খায় (এর অবস্হা ভিন্ন)। এ পৃথিবীর ধনদৌলত তদ্রূপ সুমিষ্ট। যে ব্যাক্তি তা সৎভাবে গ্রহণ করবে এবং সৎকাজে ব্যয় করবে, তা তার খুবই সাহায্যকারী হবে। আর যে তা অন্যায়ভাবে গ্রহণ করবে, তার অবস্থা হবে ঐ ব্যাক্তির মত যে খেতে থাকে আর পরিতৃপ্ত হয় না।

হাদিস ৫৯৮৫

মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার যমানার লোকেরাই সর্বোত্তম। তারপর এর পরবর্তী যমানার পৌকেরা। তারপর এদের পরবর্তী যমানার লোকেরা। ইমরান (রাঃ) বর্ণনা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি দুবার কি তিনবার বললেনঃ তা আমার স্বরণ নেই- তারপর এমন লোকদের আবির্ভাব হবে যে, তারা সাক্ষ্য দিবে, অথচ তাদের সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা খিয়ানতকারী হবে। তাদের আমানতদার মনে করা হবে না। তারা মানত মানবে তা পূরণ করবে না। তাদের দৈহিক হিস্টপুস্টতা প্রকাশিত হবে।

হাদিস ৫৯৮৬

আবদান (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শ্রেষ্ঠ হল আমার যমানার লোক। তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক, তারপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে, যাদের সাক্ষ্য তাদের কসমের পূর্বেই হবে, আর তাদের কসম তাদের সাক্ষ্যের পূর্বেই হবে।

হাদিস ৫৯৮৭

ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খাব্বাব (রাঃ) সাতবার তার পেটে উত্তপ্ত লোহার দাগ নেওয়ার পর আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু কামনা করা নিষিদ্ধ না করতেন, তাহলে আমি মৃত্যু কামনা করতাম। নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ -এর সাহাবার অনেকেই (দুনিয়ার মোহে পতিত না হয়েই) চলে গিয়েছেন। অথচ দুনিয়া তাঁদের আখিরাতের কোনই ক্ষতিসাধন করতে পারেনি। আর আমরা দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, যার জন্য মাটি ছাড়া আর কোন স্হান পাচ্ছি না।

হাদিস ৫৯৮৮

মুহাম্মদ ইবনু মুছান্না (রহঃ) কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একবার খাব্বাব (রাঃ)-এর কাছে এলাম। তখন তিনি একটা দেয়াল তৈরি করছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের যে সাথীরা দুনিয়া থেকে চলে গেছে, দুনিয়া তাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। আর আমরা তাদের পর দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, যেগুলোর জন্য আমরা মাটি ছাড়া আর কোন স্হান পাচ্ছিনা।

হাদিস ৫৯৮৯

মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) খাববাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হিজরত করেছিলাম।

হাদিস ৫৯৯০

সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) ইবনু আবান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-এর কাছে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি নিয়ে এলাম। তখন তিনি মাকায়িদ-এ বসা ছিলেন। তিনি উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ স্থানেই দেখেছি, তিনি উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন, এরপর তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি এ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র মতো উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে, তারপর মসজিদে এসে দুরাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সেখানে বসবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন যে, তোমরা ধোকায় পড়ো না। ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি হুমরান ইবনু আবান।

হাদিস ৫৯৯১

ইয়াহইয়া ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) মিরদাস আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকেরা ক্রমান্বয়ে চলে যাবেন। আর থেকে যাবে নিকৃষ্টরা-যব অথবা খেজুরের মত লোকজন। আল্লাহ তা’আলা এদের প্রতি ভ্রক্ষেপও করবেন না।

হাদিস ৫৯৯২

ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দীনার, দিরহাম, রেশমী চাঁদর (শাল), পশমী কাপড়ের (চাঁদর) গোলামরা ধবংস হোক। যাদের এসব দেয়া হলে সন্তুষ্ট থাকে আর দেয়া না হলে অন্তুষ্ট হয়।

হাদিস ৫৯৯৩

আবূ আসিম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, যদি আদম সন্তানের দুটি উপত্যকাপূর্ণ ধনসম্পদ থাকে তবুও সে তৃতীয়টার আকাঙ্ক্ষা করবে। আর মাটি ছাড়া লোভী আদম সন্তানের পেট ভরবে না। অবশ্য যে ব্যাক্তি তওবা করবে, আল্লাহ তা আলা তার তওবা কবুল করবেন।

হাদিস ৫৯৯৪

মুহাম্মাদ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেনঃ বনী আদমের জন্য যদি এক উপত্যকা পরিমাণ ধনসম্পদ থাকে তাহলে সে আরও ধন অর্জনের জন্য লালায়িত থাকবে। বনী আদমের লোভী চোখ মাটি ছাড়া আর কিছুই তৃপ্ত করতে পারবে না। তবে যে তওবা করবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। ইবনু আব্বাস বলেনঃ সুতরাং আমি জানিনা-এটি কুরআনের অন্তর্ভুক্ত কিনা। তিনি বলেনঃ আমি ইবনুল যুবায়রকে বলতে শুনেছি-এটি মিম্বরের উপরের (বর্ণনা)।

হাদিস ৫৯৯৫

আবূ নূয়াইম (রহঃ) আব্বাস ইবনু সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। আমি ইবনুল যুবায়র (রাঃ)-কে মক্কায় মিম্বরের উপর তার খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ হে লোকেরা! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই বলতেন যে, যদি আদম সন্তানকে স্বর্ণে পরিপূর্ণ একটা উপত্যকা মাল দেয়া হয়, তথাপিও সে এ রকম দ্বিতীয়টার জন্য আকাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকবে। আর তাকে এরকম দ্বিতীয়টা যদি দেয়া হয়, তাহলে সে তৃতীয় আরও একটার জন্য আকাঙ্ক্ষা করতে থাকবে। মানুষের পেট মাটি ছাড়া কিছুই ভরভে পারে না। তবে যে ব্যাক্তি তওবা করে, আল্লাহ তাঁআলা তার তওবা কবুল করেন।

হাদিস ৫৯৯৬

আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি আদম সন্তানের স্বর্নে পরিপূর্ন একটা উপত্যকা থাকে, তথাপি সে তার জন্য দুটি উপত্যকার কামনা করবে। তার মুখ একমাত্র মাটি ছাড়া অন্য ভরতে পারবে না। অবশ্য যে ব্যাক্তি তওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। অন্য এক সুত্রে আনাস (রাঃ) উবাই ইবনু কাঁব (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমাদের ধারণা ছিল যে, সম্ভবত এ কুরআনেরই আয়াত। অবশেষে (সূরায়ে তাকাসুর) নাযিল হল।

হাদিস ৫৯৯৭

আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে মাল চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন। এরপর আমি আবার চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন। এরপর আমি আবারও চাইলাম। তিনি দিলেন। এরপর বললেনঃ এই ধন-সম্পদ সুগয়ানের বর্ণনামতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে হাকীম! অবশ্যই এই মাল শ্যামল-সবুজ ও সুমিষ্ট। যে ব্যাক্তি তা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে, তার জন্য এটাকে বরকতময় করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যাক্তি তা লোভ সহকারে নেবে, তার জন্য তাতে বরকত দেওয়া হবে না। বরং সে ঐ ব্যাক্তির ন্যায় যে খায়, কিন্তু পেট ভরে না। আর (জেনে রেখো) উপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাত থেকে শ্রেষ্ঠ।

হাদিস ৫৯৯৮

আমর ইবনু হাফস (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যাক্তি কে যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে? তারা সবাই জবাব দিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের মধ্যে সবাই তার নিজের সম্পদকে সবচাইতে বেশি প্রিয় মনে করি। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই মানুষের নিজের সম্পদ তা-ই, যা সে আগে পাঠিয়েছো আর পিছনে যা ছেড়ে যাবে তা ওয়ারিছের মাল।

হাদিস ৫৯৯৯

কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাতে আমি একবার বের হলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে একাকী চলতে দেখলাম, তার সঙ্গে কোন লোক ছিল না। আমি মনে করলাম, তার সঙ্গে কেউ চলুক হয়ত তিনি তা অপছন্দ করবেন। তাই আমি চাঁদের ছায়াতে তার পেছনে পেছনে চলতে লাগলাম। তিনি পেছনের দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখে ফেললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ কে? আমি বললাম, আমি আবূ যার। আল্লাহ তা’আলা আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গিত করুন। তিনি বললেনঃ ওহে আবূ যার, এসো। আমি তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ চললাম। তারপর তিনি বললেনঃ প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পাধিকারী হবে। অবশ্য যাদের আল্লাহ সম্পদ দান করেন এবং তারা সম্পদকে তা ডানে বামে, আগে ও পেছনে ব্যয় করে। আর মঙ্গলজনক কাজে তা লাগায়, (তারা ব্যতীত)। তারপর আমি আরও কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে চলার পর তিনি আমাকে বললেনঃ। তুমি এখানে বসে থাক। (এ কথা বলে) তিনি আমাকে চতূর্দিকে প্রস্তরঘেরা একটি খোলা জায়গায় বসিয়ে দিয়ে বললেনঃ আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি এখানেই বসে থেকেো। তিনি বলেনঃ এরপর তিনি প্রস্তরময় প্রান্তরের দিকে চলে গেলেন। এমন কি তিনি আমার দৃষ্টির অগোচরে চলে গেলেন। এবং বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেল। অতঃপর তিনি ফিরে আসার সময় আমি তাকে বলতে শুনলাম, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে যিনা করে। তারপর তিনি যখন ফিরে এলেন তখন আমি আর ধৈর্য ধারণ করতে না পেরে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য হলাম যে, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি কুরবান করুন। আপনি এই প্রস্তর প্রান্তরে কার সাথে কথা বললেন? কাউকে তো আপনার কথার উত্তর দিতে শুনলাম না। তখন তিনি বললেনঃ তিনি ছিলেন জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। তিনি এই কংকরময় প্রান্তরে আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি বললেনঃ আপনি আপনার উম্মাতদের সুসংবাদ দিবেন যে, সে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওহে জিবরাঈল! যদিও সে চুরি করে, আর যদিও সে যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যা। আমি বললামঃ যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যা। আবার আমি বললামঃ যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যা। যদি সে শরাবও পান করে। নযর (রহঃ) আবূ দ্দারদা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আবূ দ্দারদা থেকে আবূ সালিহের বর্ণনা মুরসাল, যা সহীহ নয়। আমরা পরিচয়ের জন্য এনেছি। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ তরে এ সুসংবাদ এ অবস্হায় দেওয়া হয়েছে, যদি সে তওবা করে আর মৃত্যৃকালে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে।

হাদিস ৬০০০

আল হাসন ইবনুুূর রাবী (রহঃ) যাহাদ ইবনু ওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) বলেন, একবার আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে মদিনার কংকরময় প্রান্তরে হেঁটে চলছিলাম। ইতোমধ্যে উহুদ আমাদের সামনে এল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ যার! আমি বললাম, লাববাইকা, ইয়া রাসূসাল্লাহ! তিনি বললেনঃ আমার নিকট এ উহুদ পরিমাণ সোনা হোক, আর তা ঝণ পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে রেখে দেওয়া ব্যতীত একটি দীনারও তা থেকে আমার কাছে জমা খাকুক আর এ অবস্থায় তিন দিন অতিবাহত হোক তা আমাকে আনন্দিত করবে না। তবে যদি আমি তা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এভাবে তাকে ডান দিকে, বাম দিকে ও পেছনের দিকে বিতরণ করে দেই তা স্বতস্ত্র। এরপর তিনি চললেন। কিছুক্ষণ পর আবার বললেনঃ জেনে রেখো, প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পাধিকরী হবে। অবশ্য যারা এভাবে, এভাবে, এভাবে ডানে, বামে ও পেছনে ব্যায় করবে, তারা এর ব্যাক্তিক্রম। কিন্তু এরকম লোক অতি অল্পই। তারপর আমাকে বললেনঃ তুমি এখানে থাক। আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করো। অতঃপর তিনি রাতের অন্ধকারে ঢলে গেলেন। এমনকি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। এরপর আমি একটা উচ্চ শব্দ শুনলাম। এতে আমি শংকিত হয়ে পড়লাম যে, সম্ভবত তিনি কোন শক্রর সাম্মুখীন হয়েছেন। এজন্য আমি তার কাছেই যেতে চাইলাম। কিন্তু তখনই আমার স্বরণ হলো যে, তিনি আমাকে বলে গিয়েছেন যে, আমি না আসা পর্যন্ত তুমি আর কোথাও যেয়ো না। তাই আমি সেদিকে আর গেলাম না। ইতোমধ্যে তিনি ফিরে এলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি একটা শব্দ শুনে তো শংকিত হয়ে পড়েছিলাম। বাকী ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি শব্দ শুনেছ? আমি বললাম, হ্যা। তিনি বললেনঃ ইনি জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনি আমার কাছে এসে বললেনঃ আপনার উম্মাতের কেউ যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা অবস্হায় মৃত্যুবরণ করে, তবে সে জান্নাতে দাখিল হবে। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, যদি সে যিনা করে এবং যদি সে চুরি করে। তিনি বললেনঃ যদিও সে যিনা করে এবং যদিও চুরি করে। 

 হাদিস ৬০০১

আহমাদ ইবনু শাবীব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার জন্য উহুদের সমতূল্য স্বর্ন যদি হয় আর এর কিয়দংশও তিনদিন অতীত হওয়ার পর আমার কাছে থাকবে না- তাতেই আমি সুখী হবো। তবে যদি ঋন পরিশোধের জন্য হয় (তা ব্যতিক্রম)।

হাদিস ৬০০২

আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বৈষয়িক প্রাচুর্য ঐশ্বর্য নয় বরং প্রকৃত ঐশ্বর্য হল অন্তরের ঐশ্বর্য।

হাদিস ৬০০৩

ইসমাঈল (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন তখন তিনি তার কাছে বসা একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যাক্তি সম্পর্কে তোমার মন্তব্য কি? তিনি বললেনঃ এ ব্যাক্তি তো একজন সভ্রান্ত পরিবারের লোক। আল্লাহর কসম! তিনি এমন মর্যাদাবান যে কোথাও বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহনযোগ্য। আর কারো জন্য সুপারিশ করলে তা গ্রহণযোগ্য। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ ব্যাক্তি সমন্ধে তোমার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ ব্যাক্তি তো এক গরীব মুসলমান। এ এমন ব্যাক্তি যে, যদি সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আর সে যদি কারো সুপারিশ করে, তবে তা কবুলও হবে না। এবং যদি সে কোন কথা বলে, তবে তা শোনার যোগ্য হয় না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ দুনিয়া ভরা আগের ব্যাক্তি থেকে এ ব্যাক্তি উত্তম।

হাদিস ৬০০৪

আল হুমায়দী (রহঃ) আবূ ওয়াহিনা (রহঃ) বর্ণনা করেন। একবার আমরা খাব্বাব (রাঃ)-এর সুশ্রুষায় গেলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে (মদিনায়) হিজরত করেছি; যার সাওয়াব আল্লাহর কাছেই আমাদের প্রাপ্য। এরপর আমাদের মধ্যে কেউ কেউ এ সাওয়াব দুনিয়াতে লাভ করার আগেই বিদায় নিয়েছেন। তন্মধ্যে মুসআব ইবনু উমায়র (রাঃ), তিনি তো উহুদের যুদ্ধে শহীদ হল। তিনি শুধু একখানা চাঁদর রেখে যান। আমরা কাফনের জন্য এটা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে পা বেরিয়ে যেত এবং পা ঢাকলে মাথা বেরিয়ে পড়তো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিলেন যে, তা দিয়ে মাথাটা ঢেকে দাও এবং পায়ের উপর কিছু -ইযখির ঘাস বিছিয়ে দাও। আবূ আমাদের মধ্যে এমনও অনেক রয়েছেন, যাদের ফল পাকছে এবং তারা তা সরবরাহ করছি।

হাদিস ৬০০৫

আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতের মধ্যে তাকিয়ে দেখলাম যে, অধিকাংশ জান্নাতবাসী গরীব এবং আমি জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, অধিকাংশ জাহান্নামী স্ত্রীলোক।

হাদিস ৬০০৬

আবূ মাঁমার (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমৃত্যু টেবিলের উপর খাবার খাননি আর ওফাতের পূর্ব পর্যন্ত মসৃণ রুটি খেতে পাননি।

হাদিস ৬০০৭

আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন অবস্থায় ইন্তেকাল করলেন যে, তখন কোন প্রানী খেতে পারে আমার তাকের উপর এমন কিছুছিল না। তবে আমার তাকে যৎসামান্য যব ছিল। এ থেকে (পরিমাপ না করে) বেশ কিছুদিন আমি খেলাম। একদা মেপে দেখলাম- যদ্দরুন তা শেয হয়ে যায়।

হাদিস ৬০০৮

আবূ নূয়াইম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেনঃ আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া অরে কোন মাবুদ নেই, আমি ক্ষুধার জালায় আমার পেটকে মাটিতে রেখে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। আর কোন সময় ক্ষুধার জালায় আমার পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি ক্ষুধার যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীগণের বের হওয়ার পথে বসে থাকলাম। আবূ বকর (রাঃ) যেতে লাগলে আমি কুরআনের একটা আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি তাহলে আমাকে পরিতৃপ্ত করে কিছু খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছু করলেন না। কিছুক্ষণ পর উমর (রাঃ) যাচ্ছিলেন। আমি তাকে কুরআনের একটি আয়াত সমন্ধে প্রশ্ন করলাম। এ সময়ও আমি প্রশ্ন করলাম এ উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন। আমার কোন ব্যবস্হা করলেন না। তরে পরক্ষনে আবূল কাসিম যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই মুচকি হাসলেন এখং আমার প্রাণে কি অস্থিরতা বিরাজমান এবং আমার চেহারার অবস্হা থেকে তিনি তা আচ করতে পারলেন। তারপর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি হাযির আছি। তিনি বললেনঃ তুমি আমার সঙ্গে চল। এ বলে তিনি চললেন, আমিও তার অনুসরণ করলাম। তিনি ঘরে ঢূকবার অনুমতি চাইলেন এবং আমার্যে ঢুকবার অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে একটি পেয়ালার মধ্যে কিছু পরিমান দুধ পেলেন। তিনি বললেনঃ এ দুধ কোথা থেকে এসেছে? তাঁরা বললেনঃ এটা আপনাকে অমুক পূরুষ অথবা অমুক মহিলা হাদিয়া দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, লাববাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ! তুমি সুফফাবাসীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। রাবী বলেনঃ সুফফাবাসীরা ইসলামের মেহমান ছিলেন। তাদের কোন পরিবার ছিল না এবং তাদের কোন সম্পদ ছিল না এবং তাদের কারো উপর নির্ভরশীল হওয়ারও সুযোগ ছিল না। যখন কোন সাদাকা আসত তখন তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি এর থেকে কিছুই গ্রহগ করতেন না। আর যখন কোন হাদিয়া আসত, তখন তার কিছু অংশ তাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং এর থেকে নিজেও কিছু রাখতেন। এর মধ্যে তাদেরকে শরীক করতেন। এ আদেশ শুনে আমার মনে কিছুটা হতাশা এলো। মনে মনে ভাবলাম যে, এ সামান্য দুধ দ্বারা সূফফাবাসীদের কি হবে? এ সামান্য দুধ আমার জন্যই যথেষ্ট হতো। এটা পান করে আমি শরীরে কিছুটা শক্তি পেতাম। এরপর যখন তাঁরা এসে গেলেন, তখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন যে, আমই যেন তা তাঁদেরকে দেই, আর আমার আশা রইল না যে, এ দুধ থেকে আমি কিছু পাব। কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ না মেনে কোন উপায় নেই। তাই তাঁদের কাছে গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনলাম। তারা এসে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তাঁরা এসে ঘরে আসন গ্রহন করলেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ তুমি পেয়ালাটি নাও আর তাদেরকে দাও। আমি পেয়ালা নিয়ে একজনকে দিলাম। তিনি তা পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। আমি আরেকজনকে পেয়ালাটি দিলাম। তিনিও পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। এমন কি আমি এরুপে দিতে দিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌছলাম। তাঁরা সবাই তৃপ্ত হয়েছিলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালাটি নিজ হাতে নিয়ে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। আর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ এখন তো আমি আর তুমি আছি। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি ঠিক বলছেন। তিনি বললেনঃ এখন তুমি বসে পান কর। তখন আমি বসে কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি আরও পান কর। আমি আরও পান করলাম। তিনি বারবার আমাকে পান করার নির্দেশ দিতে লাগলেন। এমন কি আমি বলতে বাধ্য হলাম যে! আর না। যে সত্তা আপনাকে সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম। (আমার পেটে) আর পান করার মত জায়গা আমি পাচ্ছি না। তিনি বললেনঃ তাহলে আমাকে দাও। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিয়ে দিলাম। তিনি আলহামদুলিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ বলে বাকীটা পান করলেন।

হাদিস ৬০০৯

মূসা’দ্দাদ (রহঃ) কায়স (রহঃ) বর্ণনা করেন, আমি সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমই আরবের সর্বপ্রথম ব্যাক্তি, আল্লাহর পথে যে তীর নিক্ষেপ করেছে। আমরা যুদ্ধকালীন নিজেদেরকে যে দুবলাহ গাছের পাতা ও বাবলা ছাড়া খাবারের কিছুই ছিল না, অবস্হায় দেখেছি। কেউ কেউ বকরীর পায়খানার ন্যায় পায়খানা করতেন। যা ছিল সম্পূর্ন শুকনো। অথচ এখন আবার বনূ আসা’দ (গোত্র) এসে ইসলামের উপর চলার জন্য আমাকে তিরস্কার করয়ে এখন আমি যেন শংকিত আমার সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ।

হাদিস ৬০১০

উসমান (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, মুহাম্মাদ এর পরিজন মদিনায় আগমনের পর থেকে লাগাতার তাঁর ওফাত পর্যন্ত তিন দিন গমের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খাননি।

হাদিস ৬০১১

ইবনু ইবরাহীম ইবনু আব্দুর রহমান (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুহাম্মাদ এর পরিবার একদিনে যখনই দুবেলা খানা খেয়েছেন একবেলা শুধূ খুরমা খেয়েছেন।

হাদিস ৬০১২

আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বিছানা চামড়ার তৈরি ছিল এবং তার ভেতরে ছিল খেজুরের আশ।

হাদিস ৬০১৩

হুদবা ইবনু খাসিদ (রহঃ) কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর কাছে এমন অবইায় যেতাম যে, তাঁর বাবুর্চি (মেহমান আপ্যায়নের জন্য) দণ্ডায়মান। আনাস (রাঃ) বলতেন, আপনারা খান। আমি জানিনা যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের সময় পর্যন্ত একটা চাপাতি রুটিও চোখে দেখেছেন কিনা। আর তিনি কখনও একটি ভুনা ছাগল নিজ চোখে দেখেননি।

হাদিস ৬০১৪

মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মাস অতিবাহিত হয়ে যেত আমরা এর মধ্যে ঘরে (রান্নার জন্য) আগুন প্রজ্বলিত করতাম না। তখন এক-মাত্র খুরমা আর পানি চলত। অবশ্য তবে যদি যৎসামান্য গোশত আমাদের নিকট এসে যেত।

হাদিস ৬০১৫

আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ আল ওয়াইসী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার উরওয়া (রাঃ)-কে বললেনঃ বোন পূত্র! আমরা দূ-মাসের মধ্যে তিনবার নয়া চাঁদ দেখতাম। কিন্তু এর মধ্যে আল্লাহর রাসুলের গৃহগুলোতে (রান্নার জন্য) আগুন জালানো হতো না। আমি বললাম, আপনাদের জীবন ধারণের কি ছিল? তিনি বললেনঃ কালো দুটি জিনিস। খেজুর আর পানি। অবশ্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রতিবেশী কয়েকজন আনসার সাহাবীর অনেকগুলো দুগ্নবতী প্রানীছিল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তা দিত। তখন আমরা তা পান করে নিতাম।

হাদিস ৬০১৬

আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ -এর পরিবারকে প্রয়োজনীয় জীবিকা দান করুন।

হাদিস ৬০১৭

আবদান (রহঃ) মাসরুক (রহঃ) বর্ননা করেন। আমি আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে কি রকম আমল সবচাইতে প্রিয় ছিল? তিনি বললেনঃ নিয়মিত আমল। আমি বললাম, তিনি রাতে কোন সময় উঠতেন? তিনি বললেনঃ যখন তিনি মোরগের ডাক শুনতেন।

হাদিস ৬০১৮

কুতায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে আমল আমলকারী নিয়মিত করে, সে আমল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সবচাইতে প্রিয় ছিল।

হাদিস ৬০১৯

আদম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কস্মিনকালেও তোমাদের কাউকে নিজের আমল নাজাত দেবে না। তাঁরা বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ তা-আলা আমাকে রহমাত দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। তোমরা যথারীতি আমল কর, ঘনিষ্ঠ হও। তোমরা সকালে, বিকালে এবং রাতের শেষাংশে আল্লাহর কাজ কর। মধ্যম পন্থা অবলম্বন কর। আকড়ে ধর মধ্যমপন্থাকে, অবশ্যই সফলকাম হবে।

হাদিস ৬০২০

আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ঠিকভাবে ও মধ্যম পন্থায় নেক আমল করতে থাক। আর জেনে রাখ যে, তোমাদের কাউকে তার আমল বেহেশতে নেবে না এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হলো, যা নিয়মিত করা হয়। তা অল্পই হোক না কেন।

হাদিস ৬০২১

মুহাম্মাদ ইবনু আর-আরা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, আল্লাহ তাআলার কাছে সবচাইতে প্রিয় আমল কি? তিনি বললেনঃ যে আমল নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হোক। তিনি আরও বললেনঃ তোমরা সাধ্যমত আমল করে যাও।

হাদিস ৬০২২

উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আলকামা (রহঃ) বর্ণনা করেন। আমি মুসলিম-জননী আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে উম্মুল মুঁমিনীন! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আমল কি রকম ছিল? তিনি কি কোন আমলের জন্য কোন দিন নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেনঃ না। তার আমল ছিল নিয়মিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন সক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তোমাদের কেউ কি সে সক্ষমতার অধিকারী? 

No comments:

Powered by Blogger.