Breaking News
recent

সহিহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, অধ্যায়ঃ তাহারাত (পবিত্রতা)-২য়




পরিচ্ছেদঃ ১৭. ইসতিনজার বিবরণ


৪৯৯.    আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার তাঁকে বলা হল, তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদেরকে সব কাজই শিক্ষা দেন এমনকি পেশাব পায়খানার পদ্ধতিও! তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেন, পায়খানার বা পেশাবের সময় কিবলামুখী হয়ে বসতে, ডান হাত দিয়ে ইসতিনজা করতে, তিনটি টিলার কম দিয়ে ইসতিনজা করতে এবং গোবর বা হাড় দিয়ে ইসতিনজা করতে।
৫০০.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুশরিকরা একবার আমাকে বলল, আমরা দেখছি তোমাদের সঙ্গী [রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] তোমাদেরকে সব কাজই শিক্ষা দেন এমনকি পেশাব পায়খানার নিয়ম নীতিও তোমাদেরকে শিক্ষা দেন! (জবাবে) তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেন ডান হাতে ইসতিনজা করতে, (ইসতিনজার সময়) কিবলামুখী হয়ে বসতে এবং তিনি আমাদেরকে আরো নিষেধ করেছেন গোবর অথবা হাড় দিয়ে ইস্‌তিনজা করতে। তিনি বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন তিনটি ঢেলার কম -দিয়ে ইসতিনজা না করে”।
৫০১.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাড় অথবা গোবর দিয়ে মুছতে (ইসতিনজা করতে) নিষেধ করেছেন।
৫০২.    যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবূ আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমরা পায়খানায় যাও তখন কিবলার দিকে মুখ করে বসোনা এবং পিছন করে বসো না- পেশাব করতেও না, পায়খানা করতেও না; বরং পূর্বদিকে অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বস।* আবূ আইউব (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমরা শাম (সিরিয়া) গেলাম। সেখানে আমরা দেখলাম যে, শৌচাগারগুলো কিবলার দিকে মুখ করে নির্মাণ করা হয়েছে। তখন আমরা অন্য দিকে মুখ ফিবিয়ে বসতাম এবং আল্লাহর কাজে মাগফিরাত চাইতাম। রাবী ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) বলেন, এ সম্পর্কে আমি সুফিয়ানকে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, হ্যা শুনেছি। 

* মদিনা মক্কা হতে উত্তরে অবস্থিত। এ হুকুম মদীনাবাসী ও দক্ষিণে অবস্থিত অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য। পূর্ব-পশ্চিমে অবস্থানরতদের জন্য উত্তর-দক্ষিণমুখী বসার নির্দেশ প্রযোজ্য হবে।
৫০৩.    আহমাদ ইবনুল হাসান ইবনু খিরাশ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ পেশাব-পায়খানা করতে বসলে কখনো যেন সে কিবলার দিকে মুখ করে এবং সেদিকে পিছন দিয়েও না বসে।
৫০৪.    আবদুল্লাহ ইবনু মাসালামা ইবনু কা’নাব (রহঃ) ... ওয়াসি ইবনু হাববান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা মসজিদে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম। আর আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তখন কিবলার দিকে পিছা করে হেলান দিয়ে বসেছিলেন। অতঃপর আমি সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে তাঁর দিকে ঘুরে বসলাম। তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, কিছু লোকে বলে, “তুমি যখন ইসতিনজা করতে বসবে তখন কিবলার দিকে মুখ করে বসো না এবং বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে না”। অথচ একবার আমি একটি ঘরের ছাদের ওপর উঠে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দু’টি ইটের ওপর বসা অবস্থায় দেখলাম। তিনি তখন ইস্তিঞ্জার জন্য বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে বসেছিলেন।
৫০৫.    আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার আমার বোন হাফসা (রাঃ)-এর ঘরের ছাদে উঠলম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ইসতিনজায় বসা অবস্থায় দেখতে পেলাম। তিনি শাম (সিরিয়া) এর দিকে মুখ করে এবং কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে বসেছিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৮. ডান হাত দিয়ে ইসতিনজা করা নিষেধ


৫০৬.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ... আবূ কাতাদা থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যেন পেশাব করার সময় তার পুরুষাঙ্গ ডান হাত দিয়ে না ধরে এবং পায়খানার পর ডান হাত দিয়ে যেন ইসতিনজা (কুলুখ ব্যবহার) না করে এবং (পানি পান করার সময়) পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ফেলে।
৫০৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন পায়খানায় (শৌচাগারে) যায় তখন সে যেন ডান হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে।
৫০৮.    ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে, ডান হাত দিয়ে পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করতে এবং ডান হাত দিয়ে ইসতিনজা করতে নিষেধ করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৯. পবিত্রতা অর্জন ও অন্যান্য কাজ ডানদিক থেকে শুরু করা


৫০৯.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রার্জন, চুল আচড়ানো এবং জুতা পরার বেলায় ডান দিক থেকে শুরু করতে ভালোবাসতেন।
৫১০.    উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সব কাজেই জুতা পারায়, চুল আচড়ানোতে এবং পবিত্রতা অর্জনে ডান দিক থেকে শুরু করতে ভাল বাসতেন।

পরিচ্ছেদঃ ২০. রাস্তায় বা (গাছের) ছায়ায় পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ


৫১১.    ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (বা) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা লানতের দুটি কাজ থেকে দূরে থাক। সাহাবারা আরয করলেন, সে কাজ দুটি কি? ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, মানুষের (যাতায়াতের) রাস্তায় অথবা তাদের (বিশ্রাম নেয়ার) ছায়ায় পেশাব পায়খানা করা।

পরিচ্ছেদঃ ২১. পানি দিয়ে ইসতিনজা করা


৫১২.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বাগানে ঢুকলেন। একটি পানির পাত্র সহ একজন বালক তার পেছনে গেল। সে ছিল আমাদের সকলের চেয়ে বয়ঃকনিষ্ঠ। সে বদনাটি একটি কুল গাছের কাছে রেখে দিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রয়োজন শেষ করে আমাদের কাছে এলেন। তিনি পানি দিয়ে ইসতিনজা করেছিলেন।

৫১৩.    আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা (র) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শৌচাগারে থাকতেন, তখন আমি এবং আমার মতই একটি বালক পানির লোটা ও একখানা লাঠি বয়ে নিয়ে যেতাম। অতঃপর তিনি পানি ইসতিনজা করতেন।
৫১৪.    যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইসতিনজার জন্য যেতেন, তখন আমি তার কাছে পানি নিয়ে যেতাম। তিনি তা নিয়ে ইসতিনজা করতেন।

পরিচ্ছেদঃ ২২. মোজার ওপর মাসেহ্‌ করা


৫১৫.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবূ কুরায়ব ও আবু বকর ইবনু শায়বাহ ... (রহঃ) হাম্মাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জারীর (রাঃ) একবার পেশাব করলেন। তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তাঁকে বলা, হল আপনি কি এরকম করে থাকেন? তিনি বলেন হ্যাঁ, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তিনি পেশাব করেছেন, তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেছেন এবং তাঁর উভয় মোযার ওপর মাসেহ করেছেন। আমাশ বলেন, ইবরাহীম বলেছেন যে, এ হাদীসটি (হাদীস বিশারদ) লোকেরা আগ্রহের সাথে গ্রহণ করেছেন। কারণ জারীর (রাঃ) সূরা মায়িদা নাযিলের পর ইসলাম গ্রহণ করেন।
৫১৬.    এ হাদীসটই ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) অপর বর্ণনায় মুহাম্মদ ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... আমাশ থেকে এই সনদে আবূ মুআবিয়ার হাদীসের অর্থের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে। তবে ঈসা ও সুফিয়ানের হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে যে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহর সাথী সঙ্গীদের কাছে এ হাদীসটি আনন্দদায়ক বলে মনে হত। কারণ জারীর (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন সূরা মায়িদা নাযিলের পরে।
৫১৭.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। তিনি কোন কাওমের ময়লা আবর্জনা ফেলার জায়গায় এসে পৌছলেন। অতঃপর সেখানে দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন, আমি তখন দূরে সরে গেলাম। তিনি বললেন, কাছে এস। আমি তাঁর নিকটে গেলাম এমনকি একেবারে তাঁর গোড়ালির কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। অতঃপর তাঁর উভয় মোযার ওপর মাসে করলেন।
৫১৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ ওয়াইল থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) পেশাবের ব্যাপারে খুবই কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তিনি একটি বোতলে পেশাব করতেন এবং বলতেন, বনী ইসরাঈলদের কারো (শরীরের) চামড়ায় যদি পেশাব লাগত তখন সে কাঁচি দিয়ে সে স্থান কেটে ফেলতো। অতঃপর হুযায়ফা (রাঃ) (একথা শুনে) বললেন, আমি চাই যে, তোমাদের সঙ্গী (আবূ মূসা) এ ব্যাপারে এত কঠোরতা না করলেই ভাল হত। (কারণ) একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংগে পথ চলছিলাম। তিনি একটি দেয়ালের পিছনে জনৈক কাওমের আবর্জনা ফেলার জায়গায় পৌছলেন। অতঃপর তোমরা যেমনভাবে দাঁড়াও, তেমনি দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন। আমি তাঁর থেকে দূরে সরে গেলাম। তিনি আমার দিকে ইশারা করলেন। অতঃপর আমি এলাম এবং একেবারে তার গোড়ালির কাছে এসে দাঁড়ালাম। তিনি তাঁর প্রয়োজন শেষ করলেন।
৫১৯.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবন রুমহ ইবনুল মুহাজির (রহঃ) ... মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত পূরণের জন্য বের হলেন। তারপর মুগীরা (রাঃ) একটি পানি ভর্তি বদনা নিয়ে তার অনুসরণ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত শেষ করলে তিনি তাঁকে পানি ঢেলে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং উভয় মোযার উপর মাসেহ করলেন। ইবনু রুমহ’ এর বর্ণনায় حِينَ শব্দের স্থলে حَتَّى শব্দের উল্লেখ রয়েছে।
৫২০.    এ হাদীসটি মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি তাঁর মুখমন্ডল ও উভয় হাত ধুইলেন এবং মাথা মাসেহ করলেন। তারপর উভয় মোযার উপর মাসেহ করলেন।
৫২১.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) ... মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ তিনি এক স্থানে থেমে হাজত পূরণ করলেন। এরপর ফিরে এলেন এবং আমার কাছে রাখা একটি পাত্র থেকে আমি তাকে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এরপর তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।
৫২২.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুসায়ব (রহঃ) ... মুগীবা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সফরে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। তিনি বললেন, মুগীরা! পানির পাত্র (সঙ্গে) নাও। আমি পানির পাত্র (সঙ্গে) নিলাম। তারপর তাঁর সাথে বেরিয়ে পড়লাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাটতে হাটতে আমার থেকে আড়ালে চলে গেলেন। তারপর তিনি তার হাজত পূরণ করলেন ও ফিরে এলেন। তখন তাঁর গায়ে ছিল একটি শামী জোববা যার আস্তিন ছিল চাপা (অপ্রশস্ত)। তিনি আস্তিন থেকে তার হাত বের করার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু (অপ্রশস্ত হওয়ার কারণে) তা আটকে গেল। অতঃপর তিনি জোব্বার নিচ থেকে তাঁর হাত বের করলেন। আমি তার ওপর পানি ঢেলে দিলাম। তিনি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য যেমন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা হয়-তেমনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তাঁর উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
৫২৩.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আর্লী ইবনু খাশরাম (রহঃ) ... মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত পূরণের জন্য বের হলেন। (হাজত শেষে) তিনি যখন ফিরে এলেন তখন বদনা নিয়ে আমি তাঁর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি তাঁর উভয় হাত ধুইলেন। তারপর মুখমন্ডল ধুইলেন। তারপর উভয় বাহু ধোয়ার ইচ্ছা করলেন, কিন্তু জোব্বায় (অপ্রশস্ততার কারণে) তা আটকে গেল। তিনি জোব্বার নিচে দিয়ে বের করে উভয় বাহু ধুয়ে ফেললেন এবং মাথা মাসেহ করলেন ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর আমাদের সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
৫২৪.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ নুমায়র (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সফরে এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, “তোমার সাথে কি পানি আছে”? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তাঁর সাওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন। তারপর হাটতে হাঁটতে রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন। তখন আমি বদনা থেকে তাঁকে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি তাঁর মুখমন্ডল ধুইলেন তখন তাঁর গায়েছিল একটি পশমের জোব্বা। তিনি তা থেকে হাত বের করতে না পেরে জোব্বার নিচ দিয়ে বের করলেন। তারপর তাঁর উভয় বাহু ধুইলেন এবং মাথা মাসেহ করলেন। আমি তাঁর উভয় মোযা খুলে দিতে চাইলাম কিন্তু (বাধা দিয়ে) তিনি বললেন, ওভাবেই থাকতে দাও। কারণ আমি ও দুটি পবিত্র অবস্থায় পায়ে দিয়েছি। (এই বলে) তিনি তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।
৫২৫.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করালেন। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। মুগীরা (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি এ দুটিকে পবিত্রাবস্ত্রায় পরেছি।

পরিচ্ছেদঃ ২৩. পাগড়ির উপর মাসেহ্‌ করা


৫২৬.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু বাযী (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছনে রয়ে গেলেন। আমিও তাঁর সাথে পেছনে পড়লাম। তিনি হাজত পূরণ করে বললেন, তোমার সাথে কি পানি আছে? আমি একটি পানির পাত্র নিয়ে এলাম। তিনি উভয় হাতের কবজা পর্যন্ত এবং মুখমন্ডল ধূইলেন তারপর উভয় বাহু বের করতে চাইলেন; কিন্তু জোব্বার আস্তিনে আটকে গেল। এতে জোব্বার নিচ থেকে তিনি হাত বের করলেন এবং জোব্বাটি কাঁধের ওপর রেখে দিলেন। উভয় হাত ধুইলেন, মাথার সম্মুখভাগ এবং পাগড়ি ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর তিনি সাওয়ার হলেন এবং আমিও সাওয়ার হলাম। 

আমরা যখন আমাদের কাওমের কাছে পৌছলাম তখন তারা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিল। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) তাদের সালাত (নামায/নামাজ)-এ ইমামতি করছিলেন। তিনি তাদেরকে নিয়ে এক রাকআত পড়ে ফেলেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন টের পেয়ে তিনি পিছিয়ে আসছিলেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (সেখানে থাকতে) ইশারা করলেন। এতে তিনি (আবদুর রহমান ইবনু আওফ) তাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি যখন সালাম ফিরালেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। তারপর আমাদের থেকে যে রাক’আত ছুটে গিয়েছিল তা আদায় করলাম।
৫২৭.    উমায়্যা ইবনু বিসতাম ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় মোযার ওপর এবং মাথার সম্মুখ ভাগ ও পাগড়ীর ওপর মাসেহ করেন।
৫২৮.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৫২৯.    মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী বাকর বলেন, আমি মুগীরা (রাঃ) এর পূত্র থেকে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ এবং পাগড়ি ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।
৫৩০.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মদ ইবনুল আলা (রহঃ) ... বিলাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় মোযা ও পাগড়ীর ওপর মাসেহ করেছেন।
৫৩১.    এ হাদীসটই সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... একই সনদে আমাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাদীসে এরুপ রয়েছে যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি......।

পরিচ্ছেদঃ ২৪. মোজার ওপর মাসেহ করার সময়সীমা


৫৩২.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) ... সুরাইয়া ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে এলাম মোযার ওপর মাসেহ করার মাস’আলা জিজ্ঞেস করতো তিনি বললেন, আবূ তালিবের পূত্র (আলী (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে এ মাসআলা জিজ্ঞেস কর। কারণ সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সফর করত। অতঃপর আমরা তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসাফিরের জন্য তিন দিন রাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং মুকীমের জন্য একদিন এক রাত। এ হাদীসের রাবী সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) যখন তার উস্তাদ আমর (রাঃ) এর উল্লেখ করতেন তখন তাঁর প্রশংসা করতেন।
৫৩৩.    ইসহাক (রহঃ) ... হাকাম (রহঃ) থেকে একই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৫৩৪.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... সুরাইয়া ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আয়িশা (রাঃ) কে মোযার ওপর মাসেহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আলীর কাছে যাও, কারণ এ ব্যাপারে সে আমার চেয়ে বেশী জানে। আমি আলী (রাঃ) এর কাছে এলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ উল্লেখ করলেন।

পরিচ্ছেদঃ ২৫. এক উযুতে সব সালাত আদায় করা জায়েয হবার বিবরণ


৫৩৫.    মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবন হাতিম (রহঃ) ... বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন এক উযূ (ওজু/অজু/অযু) দিয়ে কয়েক ওয়াক্তের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন এবং মোযার উপর মাসেহ করেন। উমার (রাঃ) তাকে বললেন, আপনি আজ এমন কাজ করেছেন যা ইতিপূর্বে আর করেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, "উমার! আমি ইচ্ছে করেই এ রকম করেছি।"

পরিচ্ছেদঃ ২৬. যার হাতে নাপাকীর সন্দেহ রয়েছে, তার জন্য তিনবার হাত ধোয়ার পূর্বে পাত্রের মধ্যে হাত ডুবিয়ে দেয়া মাকরুহ


৫৩৬.    নাসর ইবনু আলী আল জাহযামী ও হামিদ ইবনু উমার আল বাকরাবী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ঘূম থেকে উঠে তখন সে যেন তার হাত তিনবার না ধোয়া পর্যন্ত পাত্রে না ঢূকায়। কারণ সে জাননা যে, তার হাত রাতে কোথায় ছিল।
৫৩৭.    আবূ কুরায়ব ও আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৫৩৮.    আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৫৩৯.    সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমাদের কেউ জাগ্রত হবে তখন সে তার হাত পাত্রে ঢূকাবার পূর্বে যেন তা তিনবার ধূয়ে নেয়। কারণ সে জানেনা যে, তার হাত রাতে কোথায় ছিল।
৫৪০.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ), নাসরা ইবনু আলী (রহঃ), আবূ কুরায়ব (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ও আল হুলওয়ানী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এই হাদীস বর্ণিত আছে- প্রত্যেকের বর্ণনাতেই حَتَّى يَغْسِلَهَا (হাত না ধোয়া পর্যন্ত) রয়েছে। তাদের কেউ তিনবারের কথা উল্লেখ করেননি। কেবলমাত্র জাবির (রহঃ), ইবনুল মূসায়্যিব (রহঃ) আবূ সালামা (রহঃ), আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ), আবূ সালিহ (রহঃ) ও আবূ রাযীন (রহঃ) এর বর্ননায় তিন বার এর উল্লেখ রয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ২৭. কুকুরের উচ্ছিষ্ট সম্পর্কে বিধান


৫৪১.    আলী ইবনু হুজর আস-সা’দী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুরে মুখ দিল, তখন সে যেন তা ঢেলে ফেলে, তারপর পাত্রটি সাতবার ধূয়ে ফেলে।
৫৪২.    মুহাম্মাদ ইবনুস সাব্বাহ (রহঃ) আমাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে। কিন্তু তিনি فَلْيُرِقْهُ (সে যেন তা ঢেলে ফেলে) এর উল্লেখ করেননি।
৫৪৩.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্র থেকে যখন কুকুরে পান করবে তখন সে যেন তা সাতবার ধুয়ে ফেলে।
৫৪৪.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুর মুখ লাগিয়ে পান করবে তখন সে পাত্র পবিত্র করার পদ্ধতি হল সাতবার তা ধূয়ে ফেলা। প্রথম বার মাটি দিয়ে (ঘষা)।
৫৪৫.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুরে মুখ লাগিয়ে পান করবে, তখন সে পাত্র পবিত্র করার পদ্ধতি হলো, সাতবার ধুয়ে ফেলা। প্রথমবার মাটি দ্বারা।
৫৪৬.    উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... ইবনুল মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে বললেন, তাদের কী হয়েছে যে, তারা কুকুরের পিছনে পড়লো? তারপর শিকারী কুকুর এবং বকরীর (পাহারা দেয়ার) কুকুর রাখার অনুমতি দেন এবং বলেন, কুকুর যখন পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান করবে তখন তা সাতবার ধুইয়ে ফেলবে এবং অষ্টমবার মাটি দিয়ে ঘষে ফেলবে।
৫৪৭.    এ হাদীসটই ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনুল ওয়ালীদ (রহঃ) ... শু’বা (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে। তবে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ এর বর্ণনায় একটু অতিরিক্ত আছে। তা হল, তিনি বক্‌রী পাহারা দেয়ার, শিকার করার এবং ফসল পাহারা দেয়ার কুকুর রাখার অনুমতি দিয়েছেন। ইয়াহইয়া ছাড়া আর কারো বর্ণনায় ফসলের কথা উল্লেখ নেই।

পরিচ্ছেদঃ ২৮. স্থির পানিতে পেশাব করা নিষেধ


৫৪৮.    ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ও কুতায়বা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থির পানিতে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন।
৫৪৯.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যেন পানিতে পেশাব করে পরে তা দিয়ে যেন গোসল না করে।
৫৫০.    মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (র) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তুমি এমনটি করো না যে, প্রবাহিত নয় এমন স্থির পানিতে পেশাব করবে তারপর আবার তা থেকে গোসল করবে।

পরিচ্ছেদঃ ২৯. (নাপাক অবস্থায়) স্থির পানিতে গোসল করা নিষেধ


৫৫১.    হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ), আবূ তাহির (রহঃ) ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তোমাদের কেউ যেন নাপাক অবস্থায় স্থির পানিতে গোসল না করে। রাবী বলল, হে আবূ হুরায়রা! তখন সে কিভাবে (গোসল) করবে? তিনি বললেন, পানি তুলে নিয়ে করবে।

পরিচ্ছেদঃ ৩০. মসজিদে পেশাব এবং অন্যান্য নাপাকী পড়লে তা ধুয়ে ফেলা জরুরী; আর পানিদ্বারাই মাটি পবিত্র হয়, খুড়ে ফেলার প্রয়োজন পড়ে না


৫৫২.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করে দিল। তখন কিছু লোকজন তার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওকে ছেড়ে দাও এবং পেশাব করতে বাধা দিও না। রাবী বলেন, সে যখন পেশাব করল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বালতি পানি চাইলেন। অতঃপর তা সেখালে ঢেলে দিলেন।
৫৫৩.    মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইয়াহইয়া ইবন ইয়াহইয়া ও কুতায়বা ইবন সাঈদ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন, একবার এক বেদূঈন মসজিদের মধ্যে এক কোণে দাঁড়িয়ে সেখানেই পেশাব করে দিল। অতঃপর লোকজন এতে হৈ চৈ শুরু করে দিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওকে ছেড়ে দাও। তার পেশাব শেষ হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বালতি পানি আনার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তার পেশাবের ওপর ঢেলে দেওয়া হল।
৫৫৪.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইসহাকের চাচা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা মসজিদে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে বসেছিলাম ইতিমধ্যে এক বেদুঈন এল। সে দাঁড়িয়ে মসজিদেই পেশাব করতে লাগল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ বলতে লাগল, “থাম, থাম”। রাবী বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা ওকে বাধা দিও না, ছেড়ে দাও ওকে। অতঃপর তাঁরা তাকে ছেড়ে দিল, সে পেশাব করা শেষ করল। 

তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন, “দেখ এই যে মসজিদগুলো এতে পেশাব করা বা একে কোন রকম নাপাক করা উচিৎ নয়। এ সব তো কেবল আল্লাহর যিকির করা, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা এবং কুরআন তিলাওয়াত করার জন্য”। অথবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ধরনের কিছু বলেছিলেন। রাবী বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাওমের কোন এক লোককে নির্দেশ দিলেন, সে এক বালতি পানি নিয়ে এল। তিনি তা তার ওপর ঢেলে দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ৩১. দুগ্ধপোষ্য শিশুর পেশাবের হুকুম এবং তা ধোয়ার পদ্ধতি


৫৫৫.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে শিশুদেরকে নিয়ে আসা হত। তিনি তাদের জন্য বরকতের দু’আ করতেন এবং কিছু চিবিয়ে তাদের মুখে দিতেন। একবার একটি শিশুকে তাঁর কাছে আনা হল। অতঃপর শিশুটি তাঁর শরীরে পেশাব করে দিল। অতঃপর তিনি পানি আনিয়ে পেশাবের জায়গায় ঢেলে দিলেন। আর (ভালো করে) তা ধূলেন না।
৫৫৬.    যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে একবার একটি শিশুকে আনা হল। শিশু তাঁর কোলে পেশাব করে দিল। অতঃপর পানি আনিয়ে তার উপর ঢেলে দিলেন।
৫৫৭.    ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... হিশাম (রহঃ) থেকে এই সনদে ইবনু নুমায়রের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
৫৫৮.    মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনুল মুহাজির (রহঃ) ... কায়স বিনতে মিহসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তার এক শিশু পূত্রকে যে তখনো খাবার খেতে পারত না- নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কোলে দিলেন। শিশুটি পেশাব করে দিল। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] শুধু পানি ছিটিয়ে দেয়ার বেশী আর কিছু করলেন না।
৫৫৯.    এ হাদীসটই ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ), আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা (রহঃ), আমর আন নাকিদ (রহঃ) ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) সকলেই ইবনু উয়ায়না (রহঃ) এর মাধ্যমে যুহরী (রহঃ) থেকে এই সনদে বর্ণনা করেন এবং তিনি বলেন, অতঃপর তিনি [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] পানি এনে তা ছিটিয়ে দিলেন।
৫৬০.    হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা ইবনু মাসঊদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু কায়স বিনত মিহসান (রাঃ) যিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়আত গ্রহণকারীনী, প্রথম মুহাজির মহিলাদের অন্যতম। তিনি ছিলেন বানূ আসাদ ইবনু খূযায়মা গোত্রের উক্‌কাশা ইবনু মিহসান (রাঃ)-এর বোন। রাবী বলেন, তিনি (উম্মু কায়স) আমাকে জানান যে, তিনি একবার তার এক পূত্রকে যে তখনো খাবার গ্রহণের বয়সে পৌছেনি তাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে এলেন। উবায়দুল্লাহ বলেন, তিনি আমাকে জানান যে, তার সে পুত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোলে পেশাব করে দিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনিয়ে তাঁর কাপড়ের ওপর ছিটিয়ে দিলেন, এবং তা ভাল করে ধূলেন না।

পরিচ্ছেদঃ ৩২. বীর্যের হুকুম


৫৬১.    ইয়াইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আলকামা (রহঃ) ও আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। একবার এক ব্যাক্তি আয়িশা (রাঃ) এর মেহমান হল। অতঃপর সকালে সে তার কাপড় ধুতে লাগল। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেন, তুমি যদি (কাপড়ে) তা (বীর্য) দেখতে পাও তবে তোমার জন্য শুধু সে জায়গাটা ধুয়ে ফেলাই যথেষ্ট হবে। আর যদি তা না দেখ তবে তার আশে পাশে পানি ছিটিয়ে দিবে। আমি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে তা নখ দিয়ে ভাল করে আঁচড়ে ফেলতাম। অতঃপর তিনি তা পরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
৫৬২.    উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বীর্য সম্পর্কে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তা (বীর্য) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে নখ দিয়ে খুটে ফেলতাম।
৫৬৩.    কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ), ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাপড় থেকে বীর্য দূর করা সম্পর্কে আবূ মা'শার থেকে খালিদের হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৫৬৪.    মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ)-এর সুত্রে ও আয়িশা (রাঃ)থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত আছে।
৫৬৫.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আমর ইবনু মায়মুন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সূলায়মান ইবনু ইয়াসার কে জিজ্ঞেস করলাম যে, বীর্য কোন লোকের কাপড়ে লেগে গেলে সে শুধু সেই বীর্য ধুয়ে ফেলবে না কাপড়টাই ধুয়ে ফেলবে? তিনি বললেন, আয়িশা (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বীর্য ধুয়ে ফেলতেন। তারপর সেই কাপড়েই সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য বেরিয়ে যেতেন আর আমি (পেছন থেকে) সে কাপড়ে ধোয়ার চিহ্ন দেখতে পেতাম।
৫৬৬.    আবূ কামিল আল জাহদারী (রহঃ), আবূ কুরায়ব (রহঃ) ও ইবনু আবূ যায়িদা (রহঃ) এরা সকলেই আমর ইবনু মায়মূন (রহঃ) থেকে এ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনু যায়িদার হাদীসে রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বীর্য ধুতেন। আর ইবনুল মুবারাক (রহঃ) ও আবদুল ওয়াহিদ (রহঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে ধুয়ে ফেলতাম।
৫৬৭.    আহমাদ ইবনু জাওয়াস আল হানাফী আবূ আসিম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু শিহাব আল খাওলানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার আয়িশা (রাঃ)-এর মেহমান ছিলাম। (রাতে) আমার কাপড়েই স্বপ্নদোষ হল। আমি সে কাপড় দুটি পানিতে ডুবিয়ে ধুচ্ছিলাম। আয়িশা (রাঃ) এর এক দাসী আমাকে এরুপ করতে দেখে তাঁকে গিয়ে জানাল। আয়িশা (রাঃ) লোক পাঠিয়ে আমাকে ডেকে বললেন, তুমি তোমার কাপড় দুটিকে এরুপ করছ কেন? তিনি (আবদুল্লাহ ইবনু শিহাব) বলেন, আমি বললাম, ঘুমন্ত ব্যাক্তি তার স্বপ্নে যা দেখে আমি তাই দেখেছি। তিনি বললেন, তুমি কি কাপড় দুটিতে কিছু দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তুমি যদি কিছু দেখতে, তবে তা ধুয়ে ফেলতে। আমি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে শুকনো বীর্য নখ দিয়ে আঁচড়ে ফেলতাম।

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. রক্ত অপবিত্র এবং তা ধোয়ার পদ্ধতি


৫৬৮.    আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা অন্য সুত্রে ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমাদের কারো কাপড়ে হায়েযের রক্ত লেগে গেলে সে কি করবে? তিনি বললেন, (প্রথমে) তা নখ দিয়ে আঁচড়ে ফেলবে। এরপর পানি দিযে রগড়িয়ে ফেলবে, তারপর ধুয়ে ফেলবে, তারপর তাতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
৫৬৯.    আবূ কুরায়ব (রহঃ) ও আবূ তাহির (রহঃ)-প্রত্যেকেই হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) থেকে এ সনদে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের হাদীস (উপরোক্ত) হাদীস এর অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ৩৪. পেশাব অপবিত্র হবার দলীল এবং তা থেকে বেঁচে থাকা অবশ্য জরুরী


৫৭০.    আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ), আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি বললেন, জেনে রাখ এ কবরবাসীদ্বয়কে আযাব দেয়া হচ্ছিল তবে কোন কঠিন (কাজের) দরুন তাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছেনা। তাদের একজন চোগলখুরী করত। আর অপরজন তার পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। তিনি [ইবনু আব্বাস (রাঃ)] বলেন, অতঃপর তিনি খেজুরের একটি কাঁচা ডাল আনিয়ে দু টুকরা করলেন। তারপর এ কবরের উপর একটি এবং অন্য কবরের উপর একটি পুতে দিলেন। এরপর বললেন, হয়ত বা এদের আযাব কিছুটা লাঘব করা হবে যতদিন পর্যন্ত এ দুটি শুকিয়ে না যাবে।
৫৭১.    এ হাদীসটই আহমাদ ইবনু ইউসুফ আল-আযদী (রহঃ) ... সুলায়মান আল আ’মাশ (রহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণিত আছে। তবে তিনি বলেন, "আর অপরজন পেশাব থেকে পবিত্রতা অর্জন করত না"।

No comments:

Powered by Blogger.