সহিহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, অধ্যায়ঃ হায়েয-১ম
পরিচ্ছেদঃ ১. ইযারের উপরে ঋতুমতী মহিলার সাথে মেলামেশা করা
৫৭২. আবূ বাক্র ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ), যূহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতূমতী হয়ে পড়ত তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে সে পরিধেয় বস্ত্র ভাল করে বেধে নিত। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে মেলামেশা করতেন।
৫৭৩. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও আলী ইবনু হুজর সা’দী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতূমতী হয়ে পড়ত, তখন তার পূর্ণ হায়েযের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পরিধেয় বস্ত্র বেধে নেয়ার হুকুম দিতেন। তারপর তার সাথে মেলামেশা করতেন। তিনি (আয়িশা (রাঃ) বলেন, তোমাদের মধ্যে কে তার কামভাব সেরুপ আয়ত্তে রাখতে সক্ষম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরুপ তাঁর কামভাব আয়ত্তে রাখতে সক্ষম ছিলেন?
৫৭৪. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের সাথে পরিধেয় বস্ত্রের উপরে মেলামেশা করতেন -- যখন তাঁরা ঋতুমতী হতেন।
পরিচ্ছেদঃ ২. ঋতুমতী মহিলার সাথে একই চাদরের নীচে শয়ন করা
৫৭৫. আবূ তাহির (রহঃ), হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) এবং আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে শুইতেন আর আমি তখন ঋতুমতী থাকতাম এবং আমার ও তার মধ্যে কেবলমাত্র একটি কাপড় থাকত।
৫৭৬. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি রেখামুক্ত চাঁদরের নিচে শুয়েছিলাম। ইতি মধ্যেই আমার হায়েয এল। আমি চুপিসারে উঠে গিয়ে আমার হায়েয-এর কাপড় পরে নিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তোমার কি হায়িয এসেছে? আমি বললাম,হ্যাঁ। তিনি “আমাকে (কাছে) ডাকলেন। অতঃপর আমি তাঁর সাথে চাঁদরটির নিচে শুইলাম। রাবী বলেন, তিনি (উম্মূসা সালামা) ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) জানবাত এর গোসল করতেন।
পরিচ্ছেদঃ ৩. ঋতুমতী মহিলার জন্য তার স্বামীর মাথা ধুয়ে দেয়া; তার চুল আঁচড়িয়ে দেয়া জায়েয; তার উচ্ছিষ্ট পবিত্র; তার কোলে মাথা রেখে শয়ন করে সেখানে কুরআন তিলওয়াত করা জায়েয
৫৭৭. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইতিকাফ করতেন তখন আমার দিকে তার মাথা ঝুঁকিয়ে দিতেন। আমি তা আঁচড়ে দিতাম। (ই'তিকাফকালে) তিনি ঘরে প্রবেশ করতেন না মানবিক প্রয়োজন (যেমন পেশাব পায়খানা) ছাড়া।
৫৭৮. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (ই'তিকাফে থাকাকালীন) প্রয়োজনের জন্য ঘরে যেতাম। সেখানে রোগী থাকত। আমি চলতে চলতেই তার খবরাদি জিজ্ঞেস করতাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে থাকা অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া ঘরে যেতেন না। ইবনু রুমহ বলেন, ‘যখন তাঁরা ইতিকাফে থাকতেন'।
৫৭৯. হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (অনেক সময়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই'তিকাফে থাকা অবস্থায় মসজিদ থেকে তাঁর মাথা আমার দিকে বের করে দিতেন। আমি তা ধুলে দিতাম। আর তখন আমি ঋতূমতী থাকতাম।
৫৮০. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে তাঁর মাথা এগিয়ে দিতেন। আর আমি ঋতুমতী অবস্থায় তাঁর মাথা আঁচড়ে দিতাম।
৫৮১. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঋতুমতী অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথা ধুয়ে দিতাম।
৫৮২. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ), আবূবকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাকে বললেন, ‘মসজিদ থেকে আমার জায়নামাযটি (হাত বাড়িয়ে) নিয়ে এস'। তিনি বলেন, আমি বললাম, আমি তো ঋতুমতী। তিনি বলেন, ‘তোমার হায়িয তো তোমার হাতে নয়”।
৫৮৩. আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে জায়নামায (হাতে বাড়িয়ে) তুলে নিয়ে আসতে আমাকে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম যে, আমি তো ঋতুমতী। তিনি বললেন, তুমি তা আমার কাছে নিয়ে আস। কারণ হায়িয তোমার হাতে (লেগে) নেই।
৫৮৪. যুহায়র ইবনু হারব, আবূ কামিল ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে থাকাবস্থায় বললেন, হে আয়িশা! আমাকে কাপড় এনে দাও। তিনি (আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি তো ঋতুমতী। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার হায়িয তোমার হাতে নয়। অতঃপর তিনি তা এনে দিলেন।
৫৮৫. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হায়িয অবস্থায় পানি পান করে সে পাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দিতাম। আমার মুখ লাগানো স্থানে তিনি তাঁর মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আমি হায়িয অবস্থায় হাড়ের টূকরা চুষে তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দিতাম। তিনি আমার মুখ লাগানো স্থানে তার মুখ লাগাতেন। যুহায়র পান করার কথা উল্লেখ করেননি।
৫৮৬. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (অনেক সময়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হায়েয অবস্থায় আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করতেন।
৫৮৭. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইয়াহুদীরা তাদের মহিলাদের হায়েয হলে তার সঙ্গে এক সাথে আহার করত না এবং এক ঘরে বাস করত না। সাহাবায়ে কিরাম এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন আল্লাহ তায়াআলা এ আয়াত নাযিল করলেনঃ وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ “তারা তোমার কাছে হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও যে, তা হল নাপাক। সুতরাং হায়েয অবস্থায় তোমরা মহিলাদের থেকে পৃথক থাকবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা (সে সময় তাদের সাথে) শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ কর। এ খবর ইয়াহুদীদের কাছে পৌছলে। তারা বলল, এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের বিরোধিতা করতে চায়।
অতঃপর উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) ও আব্বাদ ইবনু বিশর (রাঃ) এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! ইয়াহুদীরা এ রকম এ রকম বলছে। আমরা কি তাদের সাথে (হায়িয অবস্থায়) সহবাস করব না? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মূবারক বিবর্ণ হয়ে গেল। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি তাদের ওপর ভীষণ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা (উভয়ে) বেরিয়ে গেল। ইতিমধ্যেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে দুধ হাদিয়া এল। তিনি তাদেরকে ডেকে আনার জন্য লোক পাঠালেন। (তারা এলে) তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন। তখন তারা বূঝল যে, তিনি তাদের ওপর রাগ করেননি।
পরিচ্ছেদঃ ৪. মযীর বিবরণ
৫৮৮. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমার বেশী বেশী মযী বের হত। আমি এ সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করতাম। কারণ তাঁর কন্যা ছিল আমার বিবাহধীন। তাই আমি মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদকে (এ সম্পর্কে জানতে) বললাম, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তিনি বললেন, সে তার পুরুষাঙ্গ ধুলে ফেলবে এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে।
*কামভাবে যৌনাঙ্গ থেকে যে তরল পদার্থ নির্গত হয় তাকে মযী বলে
৫৮৯. ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মযী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করছিলাম ফাতিমার কারণে। তাই আমি মিকদাদকে বললাম, তখন তিনি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন তিনি বললেন, তাতে (মযী বেল হলে) শুধু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে হয়।
৫৯০. হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) বলেন, আমি একবার মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠালাম। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন যে, কোন লোকের মযী বের হলে সে তখন কি করবে? তিনি বললেন, উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে।
পরিচ্ছেদঃ ৫. ঘুম থেকে উঠলে মুখ এবং উভয় হাত ধুয়ে নেবে
৫৯১. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার রাতে (ঘূম থেকে) উঠলেন, হাজত পূরণ করলেন, তারপর তার মুখমন্ডল এবং উভয় হাত ধুইলেন। এরপর ঘুমিয়ে গেলেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬. নাপাক অবস্থায় ঘুমানো জায়েয, তবে পানাহার করতে, ঘুমাতে অথবা সহবাস করতে চাইলে তার জন্য উযু করা এবং লজ্জাস্থান ধুয়ে নেয়া মুস্তাহাব
৫৯২. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবন্ সাঈদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাপাক থাকা অবস্থায় যখন ঘূমাতে ইচ্ছা করতেন তখন ঘূমাবার পূর্বে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য যেরুপ উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে হয় সেরুপ উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন।
৫৯৩. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নাপাক থাকতেন তখন কিছু খাওয়া অথবা ঘুমাবার ইচ্ছা করলে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নিতেন।
৫৯৪. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইবনু বাশশার ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... শু’বা (রহঃ) সুত্রে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
৫৯৫. মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর আল মুকাদ্দামী ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের কেউ নাপাক অবস্থায় কি ঘূমাতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, যখন সে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে।
৫৯৬. মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উমর (রাঃ) একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করলেন যে, আমাদের কেউ কি নাপাক অবস্থায় ঘূমাতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ সে যেন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে তারপর ঘূমায়। এরপর যখন ইচ্ছা গোসল করে নেয়।
৫৯৭. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, তিনি রাতে অপবিত্র হন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তুমি (তখন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং তোমার লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে তারপর ঘূমাবে।
৫৯৮. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আবূ কাছাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিতর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি (সে সম্পর্কে) হাদীস বর্ণনা করলেন। (তারপর) আমি বললাম, তিনি নাপাকের সময় কি করতেন, তিনি কি ঘুমাবার আগে গোসল করতেন, না গোসল করার আগে ঘুমাতেন? তিনি (আয়িশা (রাঃ) বললেন, সবই করতেন। কখনো গোসল করে ঘূমাতেন আর কখনো উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নিতেন পরে ঘূমাতেন। আমি বললাম, সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি সব কাজেই অবকাশ রেখেছেন।
৫৯৯. যুহায়র ইবনু হারব ও হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) ... মু'আবিয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) এর সুত্রে উক্ত সনদে এ হাদীসটি বর্ননা করেছেন।
৬০০. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও আমর আন-নাকিদ ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন তার স্ত্রীর সাথে মিলবে তারপর আবার মিলতে ইচ্ছা করবে সে যেন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেয়। আবূ বকর তার হাদীস "উভয় মিলনের মধ্যে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে" যদি সে পূনরায় মিলনের ইচ্ছা করে বাক্যটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।
৬০১. হাসান ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ শু’আয়ব আল হাররানী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সকল স্ত্রীর কাছে যেতেন, একই গোসলে।
পরিচ্ছেদঃ ৭. মহিলার মনী (বীর্য) বের হলে তার উপর গোসল করা ওয়াজিব
৬০২. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আনাস ইবনু ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সুলায়ম (রাঃ) যিনি ছিলেন (এ হাদীসের রাবী) ইসহাকের দাদী-একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বললেন, আয়িশা (রাঃ) তখন তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন -- ইয়া রাসুলুল্লাহ! মেয়ে লোক যদি ঘূমে পুরুষে যা দেখে তাই দেখে তবে পুরুষে যা করে তারও কি তাই করতে হবে বলে আপনি মনে করেন? তখন আয়িশা (রাঃ) বললেন, উম্মু সুলায়ম! তুমি নারী জাতিকে অপমানিত করেছ। তোমার ডান হাতে মাটি লাগুক। (”হাতে মাটি লাগুক” তার এ কথা ছিল ভাল উদ্দেশ্যে) অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ)-কে বললেন, বরং তোমার ডান হাতে মাটি লাগুক। (এরপর উম্মু সুলায়ম এর জবাবে বললেন) হ্যাঁ, উম্মু সুলায়ম! সে গোসল করে ফেলবে যখন ঐরুপ দেখবে”।
৬০৩. আব্বাস ইবনুল ওয়ালদী (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সেই মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন যে ঘূমে পুরুষ যা দেখে তাই দেখতে পায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মেয়ে লোক যখন ঐরুপ দেখবে তখন সে গোসল করবে। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, এ কথায় আমি লজ্জাবোধ করলাম। তিনি বললেন, এ রকমও কি হয়? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কোত্থেকে হয়? পুরুষের বীর্য গাড় সাদা আর মেয়েলোকের বীর্য পাতলা, হলুদ। উভয়ের মধ্য থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায় অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়।
৬০৪. দাউদ ইবনু রুশায়দ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সেই মেয়েলোক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, যে পুরুষ ঘূমের মধ্যে যা দেখতে পায় তাই দেখে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পুরুষের যা হয় (স্বপ্নদোষ) মেয়েলোকেরও তাই হলে সে গোসল করবে।
৬০৫. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত-তামীম (রহঃ) ... উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সুলায়ম একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তা’আলা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না। তাই মেয়েলোকের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন কি তার ওপর গোসল করা জরুরী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখবে। (একথা শুনে) উম্মু সালামা (রাঃ) বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ! মেয়েলোকেরও স্বপ্নদোষ হয়? তিনি বললেন, তোমার উভয় হাত ধুলিময় হোক! তাহলে তার সন্তান কিসের দ্বারা তার সা’দৃশ হয়।
৬০৬. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ), যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... উরওয়া (রহঃ) থেকে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের অর্থের অনুরুপ বর্ণিত আছে। তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, তিনি (উম্মু সালামা (রাঃ)) বললেন, তুমি নারী জাতিকে লজ্জিত করেছ।
৬০৭. আবদুল মালিক ইবনু শুআয়ব ইবনুল লাইস (রহঃ) ... উম্মুল মুনিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জানান যে, আবূ তালহার সন্তানদের মা উম্মু সুলায়ম (রাঃ) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্থিত হলো। তারপর রাবী হিশামের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসটিতে ব্যতিক্রম যা রয়েছে তা হল, আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম –‘তোমার অমঙ্গল হোক! উহ! স্ত্রীলোক কি ঐরুপ দেখে?
৬০৮. ইবরাহীম ইবনু মূসা আর রাযী, সাহল ইবনু উসমান ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, স্ত্রীলোকের যখন স্বপ্নদোষ হবে এবং সে বীর্য দেখতে পাবে তখন কি সে গোসল করবে? তিনি বললেন,হ্যাঁ। এরপর আয়িশা (রাঃ) মহিলাটিকে বললেন, তোমার উভয় হাত ধুলিময় হোক এবং তাতে অস্ত্রের খোচা লাগুক! তিনি [আয়িশা (রা)] বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ছেড়ে দাও ওকে (ভৎসনা করো না) সন্তানের মধ্যে মা-বাপের সা’দৃশ এর কারণেই হয়ে থাকে যে, যখন স্ত্রীলোকের বীর্য পুরুষের বীর্যের ওপর প্রাধান্য লাভ করে, তখন সন্তানের আকৃতি তার মাতৃকুলের অনুরুপ হয়। আর যখন পুরুষের বীর্য স্ত্রীলোকের বীর্যের ওপর প্রাধান্য লাভ করে তখন তার আকৃতি পিতৃকুলের অনুরুপ হয়।
পরিচ্ছেদঃ ৮. পুরুষ ও মহিলার বীর্যের বিবরণ এবং সন্তান যে উভয়ের বীর্য থেকে পয়দা হয় তার বিবরণ
৬০৯. আল হাসান ইবনু আলী আল-হুলওয়ানী (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আযাদকৃত গোলাম সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দাঁড়িয়েছিলাম। ইতিমধ্যেই ইয়াহুদীদের এক পণ্ডিত ব্যাক্তি এসে বলল, আসসালামু আলাইকা ইয়া মুহাম্মাদ! এরপর আমি তাকে এমন এক ধাক্কা মারলাম যে, সে প্রায় পড়েই গিয়েছিল আর কি! সে বলল, তুমি আমাকে ধাক্কা মারলে কেন? আমি বললাম, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ' বলতে পার না? ইয়াহুদী বলল, আমরা তাঁকে তাঁর পরিবার পরিজন যে নাম রেখেছে সে নামেই ডাকি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার নাম মুহাম্মাদ। আমার পরিবারের লোকই আমার এ নাম রেখেছে।
এরপর ইয়াহুদী বলল, আমি আপনাকে (কয়েকটি কথা) জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার কি লাভ হবে, যদি আমি তোমাকে কিছু বলি? সে বলল, আমি আমার কান পেতে শুনব। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে যে লাঠিটি ছিল তা দিয়ে মাটিতে আকাঝোকা করলেন। তারপর বললেন, জিজ্ঞাসা কর।
ইয়াহুদী বলল, যেদিন এক যমীন ও আসমান পাল্টে গিয়ে কি অন্য যমীন ও আসমানে পরিণত হবে (অর্থাৎ কিয়ামাত হবে) সেদিন লোকজন কোথায় থাকবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা পুলসিরাতের কাছে অন্ধকারে থাকবে।
সে বলল, কে সর্ব প্রথম (তা পার হবার) অনুমতি লাভ করবে? তিনি বললেন, দরিদ্র মুহাজিরগন। ইয়াহুদী বলল, জান্নাতে যখন তারা প্রবেশ করবে তখন তাদের তোহফা কি হবে? তিনি বললেন, মাছের কলিজার টুকরা। সে বলল, এরপর তাদের সকালের নাস্তা কি হবে? তিনি বললেন, তাদের জন্য জান্নাতের ষাড় যবেহ করা হবে যা জান্নাতের আশে পাশে চরে বেড়াত। সে বলল, এরপরে তাদের পানীয় কি হবে? তিনি বললেন, সেখানকার একটি ঝর্ণার পানি যার নাম ‘সালসাবীল’-। সে বলল, আপনি ঠিক বলেছেন।
সে আরো বলল যে, আমি আপনার কাছে এমন একটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছি যা নাবী ছাড়া পৃথিবীর কোন অধিবাসী জানেনা অথবা একজন কি দুইজন লোক ছাড়া। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাকে তা বলে দেই তাতে তোমার কি কোন উপকার হবে? সে বলল, আমি আমার কান পেতে শুনব। সে বলল, আমি আপনাকে সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। তিনি বললেন, পুরুষের বীর্য সাদা এবং মেয়েলোকের বীর্য হলুদ। যখন উভয়টি একত্রিত হয়ে যায় এবং পুরুষের বীর্য স্ত্রীলোকের বীর্যের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে তখন আল্লাহর হুকুমে পূত্র সন্তান হয়। আর যখন স্ত্রীলোকের বীর্য পুরুষ লোকের বীর্যের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে তখন আল্লাহর হুকুমে কন্যা সন্তান হয়।
ইয়াহুদী বলল, আপনি ঠিকই বলেছেন এবং নিশ্চয়ই আপনি নাবী। এরপর সে চলে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ লোক আমার কাছে যা জিজ্ঞাসা করেছে, ইতিপূর্বে আমার সে সম্পর্কে কোন জ্ঞানই ছিল না। আল্লাহ তায়ালা এক্ষণে আমাকে তা জানিয়ে দিলেন।
৬১০. আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান আদ দারিমী (রহঃ) ... মু’আবিয়া ইবনু সাল্লাম (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে। তবে তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। রাবী যায়িদা তিনি আরো বলেছেন, মাছের কলিজার টূকরা এবং তিনি أَذْكَرَ ও وَآنَثَ শব্দ দু’টোকে দ্বিবচন ব্যবহার না করে একবচন ব্যবহার করেছেন।
৬১১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াইয়া আত তামীমী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন প্রথমে উভয় হাত ধূইতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুইতেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন। তারপর পানি নিয়ে তাঁর আঙ্গুল গুলো চুলের গোড়ায় ঢুকাতেন। এমনিভাবে যখন মনে করতেন যে, তা ভিজে গেছে তখন মাথায় তিন আজলা পানি ঢালতেন! তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিতেন। তারপর তাঁর উভয় পা ধুয়ে ফেলতেন।
৬১২. কুতায়বা ইবনু সাঈদ, যুহায়র ইবনু হারব, আলী ইবনু হুজর ও আবূ কুরায়ব ... হিশাম (রহঃ) থেকে অনুরুপ সনদে উক্ত হাদীসটি বর্নিত আছে। তবে তাদের হাদীসে পা ধোয়ার কথা উল্লেখ নেই।
৬১৩. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানবাত থেকে গোসলকালে প্রথমে তাঁর উভয় হাত কবজি পর্যন্ত তিনবার ধূইতেন। এরপর আবূ মূ'আবিয়ার (এই অনুচ্ছেদের প্রথম) হাদীসের অনুরুপ উল্লেখ করেন কিন্তু তিনি উভয় পা ধোয়ার ধোয়ার কথা উল্লেখ করেননি।
৬১৪. আমর আন নাকিদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন পাত্রে হাত ঢুকানোর পূর্বে প্রথমেই তার উভয় হাত ধুইতেন তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন।
৬১৫. আলী ইবনু ইবনু হুজর আস সা’দী (রহঃ) ... আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার খালা মায়মুনা (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানবাত থেকে গোসলের জন্য পানি এগিয়ে দিলাম। তিনি উভয় হাতের কবজা পর্যন্ত দুইবার অথবা তিনবার ধুইলেন। তারপর উভয় হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন তারপর লজ্জাস্থানে পানি ঢেলে দিলেন এবং বাম হাত দিয়ে তা ধুয়ে ফেললেন। তারপর তাঁর বাম হাত ভাল করে ঘষলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর আজলাভরে তিন আজলা পানি মাথার ওপর ঢেলে দিলেন। তারপর তাঁর উভয় পা ধূইলেন। তারপর আমি তাকে রুমাল দিলাম, কিন্তু তিনি তা ফেরত দিলেন।
৬১৬. মুহাম্মাদ ইবনু সাব্বাহ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব, আশাজ্জ ও ইসহাক প্রত্যেকেই ওয়াকী (রহঃ) থেকে এবং ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ কুরায়ব আবূ মু’আবিয়া থেকে উভয়ে আমাশ থেকে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেন। তবে তাদের উভয়ের হাদীসে তিনি আজলা পানি মাথায় ঢেলে দেয়ার কথা নেই। আর ওয়াকী-এর হাদীসে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পূর্ণ বিবরণ দেয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি কুলি করা এবং নাকে পানি দেয়ার কথা তার হাদীসে উল্লেখ করেছেন। আবূ মুআবিয়া’র হাদীসে রুমালের কথা উল্লেখ নেই।
৬১৭. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রুমাল দেয়া হল, কিন্তু তিনি তা স্পর্শ করলেন না। তিনি পানি নিয়ে এরুপ করছিলেন অর্থাৎ পানি ঝেড়ে ফেলছিলেন।
৬১৮. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না আল আনাযী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন হিলাব (দুধ দোহন করার পাত্র) এর ন্যায় একটি পানির পাত্র চেয়ে নিতেন। অতঃপর তা হাত দিয়ে ধরে প্রথমে মাথার ডান দিকে ঢালতেন তারপর বাম দিক, তারপর উভয় হাত দিয়ে পানি নিয়ে মাথায় ঢেলে দিতেন।
পরিচ্ছেদঃ ১০. জানাবাতের গোসলে কতটুকু পরিমাণ পানি ব্যাবহার করা মুস্তাহাব, পুরুষ এবং স্ত্রীলোকের একই অবস্থায় একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করা এবং তাদের উভয়ের মধ্যে একজনের অবশিষ্ট পানি দিয়ে অপরজনের গোসল করার বিবরণ
৬১৯. ইয়াহইয়াহ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ফারাক পরিমাণ পাত্রের পানি দিয়ে জানবাতের গোসল করতেন।
৬২০. কুতায়বা ইবনু সাঈদ, ইবনু রুমহ, আবূ বাকর আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ফারাক পরিমাণ পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করতেন। আর আমি এবং তিনি একই পাত্রে গোসল করতাম। সুফিয়ানের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে ‘একই পাত্র থেকে”। কুতায়বা বলেন, সুফিয়ান বলেছেন, ফারাক হল তিন সা’* পরিমাণ। * এক সা' প্রায় সাড়ে তিন সেরের সমান।
৬২১. উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আল আমবারী (রহঃ) ... আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং আয়িশা (রাঃ) এর রিযাঈ (দুধ) ভাই একবার তার কাছে গেলাম। অতঃপর তাঁর রিযাঈ ভাই তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জানবাতের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি একটি পাত্র আনালেন যা ছিল সা' পরিমান। তারপর তিনি গোসল করলেন। আমাদের এবং তাঁর মধ্যে পর্দা ছিল তিনি তাঁর মাথায় তিনবার পানি ঢাললেন। আবূ সালামা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রীগণ মাথার এর চুল কেটে তা ওয়াফরার ন্যায় (ঘাড়ের নিম্নভাগ পর্যন্ত) রাখতেন।
৬২২. হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন গোসল করতেন তখন ডান হাত থেকে শুরু করতেন। তিনি প্রথমেই ডান হাতে পানি ঢেলে তা ধূয়ে ফেলতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে শরীরের যেখানে নাপাক থাকত সেখানে পানি ঢেলে দিতেন এবং বাম হাত দিয়ে তা ধুয়ে ফেলতেন। এটা শেষ করে তিনি মাথায় পানি ঢালতেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়েই জানবাত অবস্থায় একই পাত্র থেকে (পানি দিয়ে) গোসল করতাম।
৬২৩. মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে গোসল করতেন যাতে তিন মুদ্দ বা তার সামান্য কম পানি ধরত।
৬২৪. আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা’নাব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) গোসল করতাম। আমাদের উভয়ের হাত ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তাতে লাগত। এ গোসল ছিল জানবাত থেকে।
৬২৫. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে থেকে গোসল করতাম যা আমার এবং তাঁর মাঝখানে থাকত। তিনি আমার থেকে আগে তাড়াতাড়ি করে ফেলতেন। তখন আমি বলতাম, আমার জন্য একটু রেখে দিন, আমার জন্য একটু রেখে দিন। তিনি [আয়িশা (রাঃ)] বলেন, তাঁরা উভয়েই জানবাত অবস্থায় ছিলেন।
৬২৬. কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মায়মূন (রাঃ) আমাকে জানোান যে, তিনি ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্রে গোসল করতেন।
৬২৭. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়মুনা (রাঃ) এর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে গোসল করেন।
৬২৮. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, তিনি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্রে জানবাতের গোসল করতেন।
৬২৯. উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন , রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ মাককূক পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং এক মাককূক পানি দিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন। (মাককুক শব্দ দ্বাবা এখানে হয়ত মুদূদ বুঝানো হয়েছে)। ইবনুল মূসান্না بِخَمْسِ مَكَاكِيكَ এর স্থানে بِخَمْسِ مَكَاكِيَّ বলেছেন ইবনু মু’আয عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ বলেছেন। কিন্তু এর সাথে ابْنَ جَبْرٍ কথাটি উল্লেখ করেননি।
৬৩০. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুদ্দ পানি দিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন এবং এক সা' থেকে পাঁচ মুদ্দ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করতেন।
৬৩১. আবূ কামিল আল জাহদারী (রহঃ) ও আমর ইবনু আলী (রহঃ) ... সাফীনা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সা' পানিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জানবাতের গোসল সস্পন্ন হয়ে যেত এবং এক মুদ্দ পানিতে উযূ (ওজু/অজু/অযু) হয়ে যেত।
৬৩২. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী সাফীনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সা' পানি দিয়ে গোসল এবং এক মুদ্দ পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করতেন। বর্ণনাকারী আবূ রায়হানা বলেন, সাফীনা (রাঃ) বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাই তার হাদীসের উপর আমি আস্থা রাখতে পারছি না।
পরিচ্ছেদঃ ১১. মাথা এবং অন্যান্য অঙ্গে তিনবার করে পানি ঢেলে দেয়া মুস্তাহাব
৬৩৩. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ), কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... যুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে লোকেরা গোসল নিয়ে তর্ক বিতর্ক করতে লাগল। কেউ কেউ বলল, আমিতো মাথা এরকম এরকমভাবে ধুই। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তো আমার মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দেই।
৬৩৪. মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... জুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একবার জানবাত থেকে গোসলের আলোচনা করা হলে তিনি বললেন আমি তো আমার মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেই।
৬৩৫. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ও ইসমাঈল ইবনু সালিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সাকীফ-এর প্রতিনিধি দল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জিজ্ঞেস করল, আমাদের দেশ হল শীত প্রধান দেশ। সুতরাং কিভাবে গোসল করতে হবে? তিনি বললেন, আমি তো আমার মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেই। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া এবং ইবনু সালিমের বর্ণনার মাঝে শব্দগত কিছু পার্থক্য আছে, কিন্তু অর্থের দিক থেকে কোন পার্থক্য নেই।
৬৩৬. মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন তাঁর মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দিতেন। (এ হাদীস শুনে) হাসান ইবনু মুহাম্মাদ তাকে [জাবির (রাঃ)] বললেন, আমার চুল খুব বেশী। জাবির (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি তাকে বললাম ভ্রাতষ্পূত্র! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল তোমার চুলের চেয়ে অনেক বেশী এবং অনেক সুন্দর ছিল।
পরিচ্ছেদঃ ১২. গোসলকারিণীর বেণীর হুকুম
৬৩৭. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মাথার বেনী তো খুবই মোটা এবং শক্ত। আমি কি জানবাতের গোসলের জন্য তা খুলে ফেলব? তিনি বললেন, না, তোমার মাথায় কেবল তিন আজলা পানি ঢেলে দিলেই চলবে। এরপর তোমার সর্বাঙ্গে পানি ঢেলে দিবে। এ ভাবেই তুমি পবিত্রতা অর্জন করবে।
৬৩৮. আমর আন নাকিদ ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) এর সুত্রে এ সনদে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত আছে। আবদুর রাযযাকের হাদীসে রয়েছে যে, ‘আমি কি তা হায়িয ও জানাবাতের গোসলের জন্য খূলব? তিনি বললেন, না”। এরপর ইবনু উয়ায়নার (উপরোক্ত) হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৬৩৯. আহমাদ ইবনু সাঈদ আদ দারিমী (রহঃ)-এর সুত্রে আইউব ইবনু মূসা (রহঃ) থেকে এ সনদে হাদীসটি বর্ণিত আছে। সেখানে উল্লেখ আছে যে, ‘আমি কি তা খুলে তারপর জানবাত থেকে গোসল করব? সেখানে তিনি হায়েযের কথা উল্লেখ করেননি।
৬৪০. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর কাছে সংবাদ পৌছল যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) মাহীলাদেরকে গোসলের সময় মাথার চুল (বেনী) খুলে ফেলতে আদেশ দেন। তিনি (আয়িশা (রাঃ) বললেন, ইবনু আমরের পক্ষে এ বড়ই আশ্চর্য যে, সে মহিলাদেরকে গোসলের সময় তদের চুল খুলে ফেলার আদেশ দেয়। সে তাদেরকে একেবারে মাথা মুড়ে ফেলতে আদেশ দেয় না কেন! আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। আমি আমার মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেয়ার বেশী কিছু করতাম না।
No comments: