মুয়াবিয়া (রাঃ) সম্পর্কে আমাদের ধারনা কিরুপ হওয়া উচিত?
মুয়াবিয়া (রাঃ) সম্পর্কে আমাদের ধারনা কিরুপ হওয়া উচিত?
দুরাচারী ইয়াজিদকে খলিফা হিসাবে মনোনয়ন দিয়ে হযরত মুয়াবিয়া একটা বড় রকমের ভুল করেছেন-এতে কোনই সন্দেহ নেই। ঐসময়টা ছিল সাহাবী, তাবেইনদের যুগ, খলিফা মনোনয়নের জন্যে অনেক যোগ্য লোক থাকা সত্বেও তিনি কি কারনে পুত্র ইয়াজিদকে মনোনীত করেছিলেন, সেটা আল্লাহই ভাল জানেন। তবে তার বর্তমানে কারবালার এই ঘটনা ঘটেনি। তিনি হযরত আলীর খেলাফতের বিরুদ্ধেও অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন। তিনি চাইছিলেন ওসমান হত্যার প্রতিশোধ আগে নিতে, কিন্তু আলী চাইছিলেন আগে খিলাফত ঠিক করতে।
দু’জনই নিজ নিজ অবস্থান থেকে হয়তো সঠিক ছিলেন, যদিও পথ ছিল ভিন্ন। তাদের উভয়েরই ইজতেহাদী অনেক ভুল ছিল। সবার উপরে যে কথা, তাহলো, উভয়েই ছিলেন সম্মানিত সাহাবী। হযরত আলী ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী। সাহাবীদের সম্পর্কে কোন খারাপ ধারনা কোন মুসলমানের থাকতে পারে না। মুয়াবিয়ার ভুলে পরবর্তীতে ইসলামের চরম ক্ষতি হয়েছে।ইসলামের খিলাফত ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, তথাপি একজন সম্মানিত সাহাবী হিসাবে তিনি মুসলমানদের শ্রদ্ধার পাত্রই থাকবেন। কারবালার ঘটনার জন্যে তিনি দায়ী ছিলেন না। দায়ী ছিল তার দুরাচারী পুত্র ইয়াজিদ। নবীর দৌহিত্রকে এমন নৃশংশভাবে হত্যাকান্ডে যার সামান্যতম সম্পর্কও থাকবে, তেমনটা জানলে তিনি নিশ্চয়ই ইয়াজিদকে খলিফা হিসাবে মনোনয়ন দিতেন না।
কারবালার ঘটনায় তিন ধরনের ফেরকা
শীয়া:
শীয়া নামধারী কিছু মতবাদের লোকজন মনে করে ইমাম হুসাইন হকে পক্ষে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করেছেন। এয়াজিদের ক্ষমতা গ্রহন ছিল অনৈসলামিক। মুয়াবিয়ার প্রতিষ্ঠিত রাজতান্ত্রিক পদ্ধতি অবৈধ এবং জুলুম। ইমাম হুসাইনকে ভালবাসা এবং তার হত্যাকারীদের ঘৃণা করা তাদের ঈমানের অংশ মনে করে।
সুন্নি:
সুন্নিরা উপরোক্ত মতের বিপরীত ধারনা পোষন করেন। পার্থক্য এটাই যে, তারাও ইমাম হুসাইনকে ভালবাসে বলে দাবী করে।
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত:
এটা উল্লেখিত উভয় মতের মাঝামাঝি একটা সুবিধাবাদী মতবাদ। এরা ইয়াজিদকে ইসলামী শাসক মনে করে মুয়াবিয়া(রাঃ) তাকে মনোনীত করার কারনে। ইয়াজিদের বিরুদ্ধে ইমাম হুসাইনের রুখে দাড়ানোকে এরা সহি মনে করেন না। হুসাইনের কারবালা প্রান্তরে যাওয়া এরা সমর্থন করেন না। কারবালার যুদ্ধকেও হক আর বাতিলের যুদ্ধ মনে করেন না। এরা ইয়াজিদকেও সমর্থন করেন আবার হুসাইনের জন্যেও মায়াকান্না করেন। তাদের এই মতবাদ পুরোপুরি রাজতন্ত্রের অনুকুলে।
No comments: