বিশেষ জ্ঞাতব্য
বিশেষ জ্ঞাতব্য
সকলের অবগতির জন্য একটি কথা বলে দিচ্ছি। সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের মতামতের বাইরে যারা ফতোয়া দেন যে, ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া নামায কাযা করতে হবে না, বরং তওবা-ইস্তিগফার করে নেবে। এবং তারাও বলে না যে, তাদের মতে ঐ ব্যক্তি কাফের হয়ে যায়। তাই তওবার অর্থ এখানে নতুন করে ঈমান আনা। অন্যথায় তারা বলেন, তার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যেহেতু কাফের অবস্থায় তার নামাযগুলো ছুটেছে, তাই সেগুলো কাযা করতে হবে না। এখানে শায়খ মুহাম্মদ বিন সালিহ আলউসাইমীন রহ.কৃত ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম (বাংলা অনুবাদ) থেকে কিছু উদ্ধৃতি পেশ করছি:
‘আর যদি বিবাহের প্রস্তাবক এমন ব্যক্তি হয়, যে না জামাতের সাথে সালাত আদায় করে, না একাকী সালাত আদায় করে তবে সে কাফের, ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত। তার তওবা করা জরুরি। যদি খালেছভাবে তওবা নাসূহা করে সালাত আদায় শুরু করে, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু তওবা না করলে তাকে কাফেও ও মুরতাদ অবস্থায় হত্যা করতে হবে। গোসল না দিয়ে কাফন না পরিয়ে জানাযা না পড়িয়ে দাফন করতে হবে। মুসলমানদের গোরস্থানে দাফন করা যাবে না।’ (পৃষ্ঠা:৩২৬)
‘অতএব কোন অভিভাবক যদি নিজ মেয়ে বা অধীনস্থ কোন মেয়ের বিবাহ বেনামাযী ব্যক্তির সাথে সম্পন্ন করে, তবে সে বিবাহ বিশুদ্ধ হবে না। এই বিবাহের মাধ্যমে উক্ত নারী তার জন্য বৈধ হবে না।’ (পৃ.৩৩১)
‘অতএব স্বামী যদি সালাত পরিত্যাগ করার পর তওবা করে সালাত আদায়ের মাধ্যমে ইসলামে ফিরে না আসে, তবে তার বিবাহ ভঙ্গ হয়ে যাবে।’ (পৃ.৩৩১)
‘বে নামাযীর যবেহ করা প্রাণীর গোস্ত খাওয়া জায়েয হবে না। কেননা এটা হারাম।’ (পৃ.৩৩৩)
‘বেনামাযীর কোন নিকটাত্মীয় মারা গেলে সে তাদের মীরাছ লাভ করবে না।’ (পৃ.৩৩৩)
অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের মতে সে ব্যক্তি কাফের হয়ে যায় না। তাই তার বিবাহ ভঙ্গ হয় না। তার জানাযাও পড়তে হয়। সে মীরাছও লাভ করে এবং তার যবেহকৃত প্রাণীর গোস্তও হালাল।
খোদ উসাইমীন রহ.ই আশশারহুল মুমতি’ গ্রন্থে লিখেছেন-
وقوله: يجب فوراً قضاء الفوائت، ظاهر كلام المؤلِّف أنَّه لا فرق بين أن يدعها عمداً بلا عُذر، أو يدعها لعُذر، وهذا هو الذي عليه جمهور أهل العلم: أن قضاء الفوائت واجب، سواء تركها لعُذر أم لغير عُذر، أي: حتى المتعمِّد الذي تعمَّد إخراج الصَّلاة عن وقتها يقال له: إنك آثم وعليك القضاء، وهذا مذهب الأئمة الأربعة، وجمهور أهل العلم الخ
অর্থাৎ গ্রন্থকার যে বলেছেন, ছুটে যাওয়া নামায তড়িঘড়ি আদায় করা জরুরি, গ্রন্থকারের বক্তব্য থেকে এটাই স্পষ্ট যে, উযর ছাড়া ইচ্ছাকৃত নামায ছেড়ে দেওয়া এবং উযরের কারণে ছেড়ে দেওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই। এটাই সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের মত যে, ছুটে যাওয়া নামায পড়ে নেওয়া জরুরি, চাই উযরের কারণে ছুটে যাক বা বিনা উযরে। এমনকি যে ইচ্ছা করেই নামায ত্যাগ করল, তাকে বলা হবে, তুমি গুনাহগার। তবে তোমাকে অবশ্যই কাযা করে নিতে হবে। এটাই চার মাযহাবের ইমাম ও সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের মত।
No comments: