সহিহ্ মুসলিম শরীফ ৫ম খন্ড, অধ্যায়ঃ বর্গাচাষ-১ম
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৩৮১৮. আহমাদ ইবনু হাম্বল ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বরবাসীদের উৎপাদিত ফসল বা ফলের অর্ধেক ভাগের শর্তে খায়বারবাসীদের সঙ্গে বর্গা চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন।
৩৮১৯. আলী ইবনু হুজর সা’দী (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের জমি উৎপন্ন ফল বা শস্যের অর্ধেকের শর্তে প্রদান করেরছিলেন। তিনি আপন বিবিদেরকে প্রতি বছর প্রতি একশ ওয়াসক প্রদান করতেন। আশি ওয়াসক খুরমা আর বিশ ওয়াসক যব। উমর (রাঃ) যখন খলীফা হন তখন খায়বারের জমি তিনি বণ্টন করে দেন। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিনীদেরকে ইখতিয়ার দেন যে, তাঁরা ভূমি ও পানি(র হিস্যা) বন্দোবস্ত রূপে দিবেন। (অর্থাৎ নিজেদের দায়িত্বে চাষাবাদের ব্যবস্থা করবেন) অথবা উমর (রাঃ) বার্ষিক হারে তাদের ওয়াসক প্রদানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তাঁরা এ ব্যাপারে ভিন্নভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। তাদের মধ্যে কেউ ভূমি ও পানি নিলেন আর কেউ বার্ষিক হারে ওয়াসক গ্রহণ করলেন। আয়িশা ও হাফসা (রাঃ) ভূমি ও পানি নিয়েছিলেন।
৩৮২০. ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের জমি খায়বরবাসীদের উৎপাদিত শস্য ও ফলের অর্ধেকের শর্তে বন্দোবস্ত দিয়েছিলেন এরপর হাদীসটি আলী ইবনু মুসহিরের বর্ণিত হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেন। তবে এ কথাটি তিনি উল্লেখ করেননি যে, আয়িশা ও হাফসা (রাঃ) ভূমি ও পানি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি এ কথা বলেছেন যে, উমর (রাঃ) নবী সহধর্মিনীদের ইখতিয়ার দেন জমি নিতে, তবে হাদিসে তিনি পানির উল্লেখ করেন নি।
৩৮২১. আবূ তাহির (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খায়বার বিজয়ের পর ইয়াহুদীরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাদের শ্রম বিনিয়োগের বিনিময়ে তাদেরকে তথায় থাকতে দেওয়ার জন্য আবেদন জানায় এই শর্তে যে, উৎপন্ন ফসল ও ফলের অর্ধেক তারা পাবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উপরোক্ত শর্তে যতদিন আমরা চাই ততদিনের জন্য থাকার অনুমতি দিলাম। এরপরে আবদুল্লাহ থেকে ইবনু নুমায়র ও ইবনু মুসহিরের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তাতে এতটুকু অতিরিক্ত আছে যে, খায়বারের প্রাপ্ত ফল প্রাপ্য অংশ অনুসারে অর্ধেক খায়বারের উৎপন্ন ফল কয়েক ভাগে ভাগ করা হত। আর তা থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক পঞ্চমাংশ গ্রহণ করতেন।
৩৮২২. ইবনু রুমহ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, খায়বারের বাগান ও যমীন খায়বারের ইয়াহুদীদেরকে এই শর্তে প্রদান করেন যে, তারা নিজেদের অর্থে তাতে কাজ করবে আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ফলের অর্ধেক পাবেন।
৩৮২৩. মুহাম্মদ ইবনু রাফি ও ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) ইয়াহুদী ও নাসারাদেরকে হিজাজের মাটি থেকে নির্বাসিত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খায়বার জয় করেন তখন তিনি তাদের তথা হতে বহিস্কার করতে চেয়েছিলেন। খায়বার যখন বিজয় হল তখন তা আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও মুসলমানদের সস্পত্তিতে পরিণত হয়। তাই তিনি সেখান থেকে ইয়াহুদীদের বিতাড়িত করার ইচ্ছা করেন। পরে ইয়াহুদীরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তথায় তাদের থাকতে দেয়ার জন্য প্রার্থনা করে এই শর্তের উপর যে, তারা শ্রম বিনিয়োগ করবে এবং উৎপাদিত ফলের অর্ধেক পাবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যতদিন আমাদের ইচ্ছা এই শর্তে থাকার অনুমতি দিলাম। এরপর তারা তথায় রয়ে গেল। পরে উমর (রাঃ) তাদেরকে তায়মা ও আরীহায় নির্বাসিত করেন।
৩৮২৪. ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলমান (ফলবান) গাছ লাগাবে তা থেকে যা কিছু খাওয়া হয় তা তার জন্য দান স্বরূপ, যা কিছু চুরি হয় তাও দান স্বরূপ, বন্য জন্তু যা খাবে তাও দান স্বরূপ। পাখী যা খাবে তাও দান স্বরূপ। আর কেউ যে কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করলে তাও তার জন্য দান স্বরূপ।
পরিচ্ছেদঃ ১. বৃক্ষ রোপণ ও ফসল ফলানোর ফযীলত
৩৮২৫. কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা উম্মু মুবাশশির নাম্নী জনৈকা আনসারী মহিলার খেজুর বাগানে গমন করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, এই খেজুর গাছ কি কোন মুসলমান লাগিয়েছেন; না কোন কাফির? সে বলল মুসলমান। তিনি বললেন, যে কোন মুসলমান গাছ লাগায় বা ক্ষেত করে, আর তা থেকে মানুষ কিংবা জীব জন্তু অথবা অন্য কিছুতে খায় তবে তা তার পক্ষে দান স্বরূপ।
৩৮২৬. মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও ইবনু আবূ খালফ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কোন মুসলমান যদি গাছ লাগায় বা ক্ষেত করে, আর তা থেকে কোন হিংস্র জন্তু কিংবা পাখী অথবা অন্য কিছুতে খায় তবে এর জন্য সে সাওয়াব পাবে। ইবনু আবূ খালফ (রহঃ) বলেছেনঃ- পাখী, এমন কিছু।
৩৮২৭. আহমাদ ইবনু সাঈদ ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা উম্মু মা'বাদ এর বাগানে প্রবেশ করেন। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে উম্মু মা'বাদ! এ গাছ কে লাগিয়েছে? কোন মুসলমান না কোন কাফির? সে বলল, মুসলমান। তিনি বললেন, কোন মুসলমান যদি কোন গাছ লাগায়, আর তা থেকে মানুষ কিংবা চতুষ্পদ জন্তু অথবা পাখী ভক্ষণ করে, তবে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তা তার জন্য দান স্বরূপ থাকবে।
৩৮২৮. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়র, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) হাফস ইবনু গিমাস (রহঃ) থেকে, আবূ কুরায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) একত্রে আবূ মুআবিয়া (রাঃ) থেকে, আমরুন নাকিদ (রহঃ) আম্মার ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে এবং আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু ফুযায়ল (রহঃ) থেকে এবং এরা প্রত্যেকেই আ'মাশ এর সূত্রে জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তবে আম্মার (রহঃ) থেকে আমরের বর্ণনায় ও মু'আবিয়ার থেকে আবূ বকরের বর্ণনায় উম্মু মুবাশশির (রাঃ) এর নাম অতিরিক্ত এসেছে।
আর ইবনু ফুযায়লের বর্ণনায় যায়িদ ইবনু হারিসার স্ত্রীর থেকে বলা হয়েছে। আর মুআবিয়ার থেকে ইসহাকের যে বর্ণনা তাতে তিনি কখনও উম্মু মুবাশশির (রাঃ) সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ...থেকে আবার কখোনও তার নাম ছাড়াই বর্ণনা করেন। আর এরা সকলেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ঐ রূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন, যেরূপ বর্ণনা করেছেন আতা (রহঃ) আবূ যুবায়র ও আমর ইবনু দীনার (রহঃ)।
৩৮২৯. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনু উবায়দ গুবারী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলমান যদি গাছ লাগায় কিংবা ফসল উৎপন্ন করে আর তা থেকে পাখী কিংবা মানুষ অথবা চতুষ্পদ জন্তু কিছু খায় তরে তা তার পক্ষ থেকে দান স্বরূপ হবে।
৩৮৩০. আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা উম্মু মুবাশশির নাম্নি এক আনসারী মহিলার খেজুর বাগানে প্রবেশ করেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করেন, এ খেজুর গাছ কে লাগিয়েছে, কোন মুসলমান না কোন কাফির? তারা বলল, একজন মুসলমান। এরপর উপরে উল্লিখিত রাবীদের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
পরিচ্ছেদঃ ২. প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ফলের মূল্য ছাড় দেয়া
৩৮৩১. আবূ তাহির ও মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি যদি তোমার ভাইয়ের নিকট ফল বিক্রি কর, তারপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তা নষ্ট হয়ে যায়, তবে তার থেকে কিছু আদায় করা তোমার জন্য বৈধ নয়। তোমার ভাইয়ের অর্থ বিনা অধিকারে (অন্যায়ভাবে) কিভাবে গ্রহণ করবে?
৩৮৩২. হাসান হুলওয়ানী (রহঃ) ... ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩৮৩৩. ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, খেজুরের রং পরিবর্তন হওয়ার পুর্বে তা বিক্রি করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। আমরা আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, রং পরিবর্তন হওয়া (زهو) বলতে কি বুঝায়? তিনি বললেন, লাল রং বা হলদে রং ধারণ করা। বল তো দেখি, আল্লাহ যদি ফল নষ্ট করে দেন তবে কি সুত্রে তোমার ভাইয়ের মাল তুমি হালাল মনে করবে?
৩৮৩৪. আবূ তাহির (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ফলের রং পরিবর্তন হওয়ার আগে বিক্রি করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। তারা বলল, রং পরিবর্তন হওয়ার অর্থ কি? তিনি বললেন, লাল রং ধারণ করা। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ যদি ফল বিনষ্ট করে দেন তাহলে কিসের বিনিময়ে তুমি তোমার ভাইয়ের অর্থ হালাল সাব্যস্ত করবে?
৩৮৩৫. মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ যদি তাতে ফল উৎপাদন না করেন তাহলে কিভাবে তোমাদের একজন অপর ভাইয়ের অর্থ বৈধ করবে?
৩৮৩৬. বিশর ইবনুল হাকাম, ইবরাহীম ইবনু দীনার ও আবদুল জব্বার ইবনু আলা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ফলের মুল্যে ছাড় প্রদান করতে আদেশ দিয়েছেন। ইবরাহীম (রহঃ) সুফিয়ানের সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
পরিচ্ছেদঃ ৩. ঋনের কিছু অংশ মওকুফ করা মুস্তাহাব
৩৮৩৭. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে এক ব্যক্তির খরিদকৃত ফল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক ঋনী হয়ে পড়ে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তাকে সাহায্য কর। লোকজন তাকে সাহায্য করল, কিন্তু ধার পরিশোধের পরিমাণ হল না। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পাওনাদারদের বললেন, যা তোমরা পেয়েছ তা গ্রহণ কর; এর বেশি তোমরা আর পাবে না।
৩৮৩৮. ইউনুস ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) ... বুকায়র ইবনুল আশাজ্জ (রহঃ) থেকে উক্ত সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩৮৩৯. আমাদের একাধিক সাথী আমার নিকট ইসমাঈল ইবনু আবূ উয়ায়স (রহঃ) সুত্রে ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা দরজার নিকটে প্রতিপক্ষদের উচ্চ কণ্ঠে ঝগড়া শুনতে পান। তাদের একজন অন্যজনের নিকট কোন এক বিষয়ে কমিয়ে দেওয়ার ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করার আবেদন করল। আর অপরজন বলছে যে, আল্লাহর শপথ! আমি তা করব না। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে তাদের দু'জনের কাছে গেলেন এবং বললেন, পূণ্যের কাজ না করার জন্য আল্লাহর নামে শপথকারী কোথায়? একজন বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি। (কতক আছে) সে যা পছন্দ করে তার জন্য তা-ই (হবে)।
৩৮৪০. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু কা'ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে একদিন মসজিদের মধ্যে ইবনু আবূ হাদরাদ (রাঃ) এর নিকট তার প্রাপ্য ঋণের তাগাদা করেন। উভয়ের আওয়াজ উচ্চ হতে থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে আওয়াজ ঘর থেকে শুনতে পান এবং ঘরের পর্দা উঠিয়ে বাইরে তাদের নিকট চলে আসেন। তিনি কা'বকে ডাক দিলেন, হে কা'ব! তিনি বললেন, লাব্বাইক ইয়া রাসুলাল্লাহ! (আমি উপস্থিত আছি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের ইশারায় তাকে তার প্রাপ্য ঋণের অর্ধভাগ ক্ষমা করে দিতে বললেন। কা'ব (রাঃ) বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাই করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, যাও (তার অবশিষ্ট পাওনা) পরিশোধ কর।
৩৮৪১. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... কা'ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি একদিন আলী ইবনু আবূ হাদরাদা (রাঃ) এর নিকট তার প্রাপ্য ঋণের তাগাদা করেন। এরপর ইবনু ওয়াহ্বের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) ... কাব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু আবূ হাদরাদ আসলামীর নিকট কিছু মাল পেতেন। তিনি তার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং জোর তাগাদা করেন। তারা পরস্পর কথাবার্তা বলেন এবং এক পর্যায়ে তাদের আওয়াজ উঁচু হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ের কাছে এলেন এবং কা'বকে ডেকে হাতের ইশারায় বললেন, অর্ধেক। সুতরাং কা'ব (রাঃ) ঋণের অর্ধেক গ্রহণ করেন এবং অর্ধেক পরিত্যাগ করেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪. বিক্রিত মাল দেউলিয়া ঘোষিত ক্রেতার নিকট পাওয়া গেলে বিক্রেতা তা ফেরত নেওয়ার অধিকার রাখে
৩৮৪২. আহমাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ইউনূস (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন অথবা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি দেউলিয়া ঘোষিত কোন লোকের কাছে কিংবা (বলেছেন) কোন মানুষের নিকট পায় যাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে তার মাল অবিকলভাবে পায় তবে সে তার মাল ফেরৎ পাওয়ার ব্যাপারে অন্যদের তুলনায় বেশী হকদার।
৩৮৪৩. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ... আবূ রাবী ও ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব ... আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে যুহায়র বর্ণিত হাদীসের মর্মে হাদীস বর্ণনা করেন। আর তাদের মধ্যে কেবল ইবনু রুমহ (রহঃ) তার বর্ণনায় বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি দেউলিয়া সাব্যস্ত হলে......।
৩৮৪৪. ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, দেউলিয়া লোকের নিকট যদি কোন বস্তু পাওয়া যায় এবং স্থানান্তরিত না হয় তবে বিক্রেতাই ঐ বস্তুর প্রাপক।
৩৮৪৫. মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি কোন লোকেকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয় আর কোন ব্যক্তি তার সম্পদ অবিকলভাবে তার কাছে পায় তবে সে ব্যক্তই উহার অধিক দাবীদার।
৩৮৪৬. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) দুই সুত্রে ... কাতাদা (রহঃ) থেকে উক্ত রূপ বর্ণনা করেন। অবশ্য এ বর্ণনার শেষে বলা হয়েছে সে ব্যক্তই অন্যান্য সকল পাওনাদারদের চেয়ে বেশী হকদার।
৩৮৪৭. মুহাম্মদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালফ ও হাজ্জাজ ইবনু শায়ির (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোক যখন দেউলিয়া হয়ে যায়, আর তার নিকট কোন ব্যক্তি তার (বিক্রিত মাল) অপরিবর্তিত অবস্থায় পায় তখন সে-ই তার অধিক দাবীদার।
পরিচ্ছেদঃ ৫. গরীবকে সময় দেওয়ার ফযীলত এবং ধনী ও গরীব দেনাদারের নিকট থেকে পাওনা আদায়ের ব্যপারে সহানুভূতি প্রদর্শন
৩৮৪৮. আহমাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের এক ব্যক্তির রুহের সাথে ফিরিশতাগণ সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসা করলেন, বিশেষ কোন সৎকাজ তুমি করেছ কি? সে বলল, না। তারা বললেন, স্মরণ করে দেখ। সে বলল, আমি মানুষের সাথে লেনদেন করতাম। তারপর অসচ্ছল ব্যক্তিদের অবকাশ দিতে ও সচ্ছল ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে আমি আমার লোকদের নির্দেশ দিতাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এরপর আল্লাহ তায়াআলা বললেনঃ “ওকে ছেড়ে দাও।”
৩৮৪৯. আলী ইবনু হুজর ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... রিবঈ ইবনু হিরাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হুযায়ফা (রাঃ) ও আবূ মাসঊদ (রাঃ) একত্রে মিলিত হল। হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, এক ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাথে মিলিত হয়। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি কি সৎকাজ করেছ? সে বলল, আমি তেমন কোন সৎকাজ করিনি; তবে আমি একজন ধনী লোক ছিলাম। আমি মানুষের সাথে লেন দেন করতাম। আমি সচ্ছলদের আপত্তি গ্রহন করতাম। আর গরীবদেরকে মাফ করে দিতাম। এরপর আল্লাহ নির্দেশ দিলেনঃ আমার বান্দাকে মাফ করে দাও। আবূ মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এরূপই বলতে শুনেছি।
৩৮৫০. মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি মৃত্যুর পর জান্নাতে প্রবেশ করে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল তুমি কোন ধরনের আমল করতে? রাবী বলেন, এরপর সে স্মরণ করে বা তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। সে বলল, আমি মানুষের সাথে কেনা-বেচা করতাম। দরিদ্র লোকদেরকে আমি সময় দিতাম এবং মুদ্রা বা অর্থ মাফ করে দিতাম এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এরপর আবূ মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এটি শুনেছি।
৩৮৫১. আবূ সাঈদ আশাজ্জ (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর সমীপে তার এমন এক বান্দাকে উপস্থিত করা হল, যাকে তিনি প্রচুর সম্পদ দান করেছিলেন। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করেন, দুনিয়ায় তুমি কি আমল করেছ? রাবী বলেন, আল্লাহর নিকট তারা কোন কথা গোপন রাখতে পারে না। সে বলল, হে আমার রব! আপনি আপনার সস্পদ আমাকে দান করেছিলেন। আমি মানুষের সাথে ক্রয়-বিক্রয় করতাম। সুতরাং সচ্ছল ব্যক্তির সহিত আমি সহনশীলতা প্রদর্শন করতাম আর গরীবকে সময় দিতাম। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ এ ব্যাপারে তোমার চেয়ে আমি অধিকযোগ্য। তোমরা আমার বান্দাকে মাফ করে দাও।
উকবা ইবনু আমির জুহানী ও আবূ মাসঊদ আনসারী (রাঃ) বলেন, এরূপই আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখ থেকে শুনেছি।
৩৮৫২. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের মধ্যে এক লোকের হিসাব গ্রহণ করা হয়, কিন্তু তার মধ্যে কোন প্রকার ভাল আমল পাওয়া যায়নি। কিন্তু সে মানুষের সাথে লেন-দেন করত এবং সে ছিল সচ্ছল। তাই দরিদ্র লোকদের মাফ করে দেওয়ার জন্য সে তার কর্মচারীদের নির্দেশ দিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ বললেনঃ এ ব্যাপারে আমরা তার চেয়ে অধিকযোগ্য। একে ক্ষমা করে দাও।
৩৮৫৩. মানসুর ইবনু আবূ মুযাহিম ও মুহাম্মাদ ইবনু জাফর ইবনু যিয়াদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক লোক মানুষের সাথে লেন-দেন করত। সে তার গোলামকে বলে দিত, তুমি যখন কোন অভাবগ্রস্তের কাছে (পাওনা আদায়ের জন্য) যাবে তখন তাকে (কিছু) ক্ষমা করে দিবে। হয়ত আল্লাহ আমাদেরও ক্ষমা করে দিবেন। এরপর সে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে মিলিত হল। আর আল্লাহ তাকে মাফ করে দিলেন।
৩৮৫৪. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছি।
৩৮৫৫. আবূল হায়সাম খালিদ ইবনু খিদাশ ইবনু আজলান (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আবূ কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ কাতাদা (রাঃ) একবার তার এক ঋণ গ্রহীতাকে খোঁজ করেন। সে তার থেকে আত্মগোপন করছিল। পরে তিনি তাকে পেয়ে যান। সে বলল, আমি অভাবগ্রস্ত। তিনি বললেন, আল্লাহ শপথ! সে বলল, আল্লাহর শপথ। তিনি বললেন, তাহলে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি এ কামনা করে যে, আল্লাহ তাকে কিয়ামত দিবসের দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি দেন সে যেন ঋণগ্রস্ত অক্ষম লোকের সহজ ব্যবস্থা করে কিংবা ঋণ মওকুফ করে দেয়।
পরিচ্ছেদঃ ৬. সচ্ছল ব্যক্তির টাল বাহানা করা হারাম। ঋণ পরিশধের দায়িত্ব অন্যের উপর দেওয়া (হাওালা করা) বৈধ এবং কোন সচ্ছল ব্যক্তির হাওয়ালা করা হলে তা গ্রহন করা মুস্তাহাব
৩৮৫৬. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সক্ষম ব্যক্তির টালবাহানা করা অত্যাচারের শামিল। তোমাদের কাউকে (ঋণ পরিশোধের) দায়িত্ব দিলে সে যেন তা গ্রহণ করে।
৩৮৫৭. আবূ তাহির (রহঃ) ... আয়্যুব (রহঃ) থেকে উক্ত সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩৮৫৮. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ননা করেন।
পরিচ্ছেদঃ ৭. মাঠে অবস্থিত পানি যা চারণ ভুমির কাজে এ পানির প্রয়োজনাতিরিক্ত অংশ বিক্রি করা অবৈধ এবং তা ব্যবহারে বাধা দেওয়া অন্যায়। আর ষাঁড় দ্বারা পালা দিয়ে মজুরী গ্রহন করা হারাম
৩৮৫৯. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।
৩৮৬০. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেনঃ উট দ্বারা পাল দিয়ে তার মজুরী গ্রহণ করতে এবং চাষের ও জমির (ইজারা প্রদান) বিনিময়ে পানি বিক্রি করতে। এগুলোর প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
৩৮৬১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও কুবায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি ব্যবহারে কাউকে বাধা দেওয়া যাবে না, যার উদ্দেশ্য যার (মূল) উদ্দেশ্য (পশুকে চারনভূমির) ঘাস খেতে বাধা দেয়া।
৩৮৬২. আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে বাধা দিবে না, যার দ্বারা উদ্দেশ্য হবে ঘাস খেতে বাধা সৃষ্টি করা।
৩৮৬৩. আহমাদ ইবনু উসমান নাওফলী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আত্মজন্ম) ঘাস বিক্রির (অবৈধ) উদ্দেশ্য প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি বিক্রি করা যাবে না।
পরিচ্ছেদঃ ৮. কুকুরের মূল্য, গনকের গননা কাজের মজুরী ও ব্যভিচারিনীর ব্যভিচার দ্বারা উপার্জিত অর্থ হারাম এবং বিড়াল বিক্রি করা নিষেধ
৩৮৬৪. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ মাসঊদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারিণীর ব্যভিচার দ্বারা উপার্জিত অর্থ এবং গণকের গণনা দ্বারা উপার্জিত অর্থ গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন।
৩৮৬৫. কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে এবং আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না (রহঃ) থেকে এবং তাঁরা উভয়ে যুহরী (রহঃ) থেকে এই সুত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে লায়স (রহঃ) থেকে ... ইবনু রুমহের বর্ণনায় আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে প্রত্যক্ষ শ্রবণের কথা উল্লেখ আছে।
৩৮৬৬. মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, নিকৃষ্ট উপার্জন বেশ্যা বৃত্তির উপার্জন এবং কুকুরের মূল্য আর রক্ত (শিঙ্গা দ্বারা) মোক্ষণকারীর আয়।
৩৮৬৭. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুকুরের মূল্য নিকৃষ্ট, ব্যভিচারিনীর ব্যভিচারের আয় নিকৃষ্ট এবং রক্ত মোক্ষণকারীর উপার্জন নিকৃষ্ট।
৩৮৬৮. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর (রহঃ) এর সূত্রে এই হাদীস উক্ত রূপে বর্ণনা করেন।
৩৮৬৯. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩৮৭০. সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) ... আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির (রাঃ) এর নিকট কুকুর ও বিড়ালের মুল্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৯. কুকুর হত্যার আদেশ ও তা রহিত হওয়ার বর্ণনা এবং শিকার করা অথবা ক্ষেত পাহারা বা জীবজন্তু পাহারা ও এ জাতীয় কোন কাজের উদ্দেশ্য ব্যতীত কুকুর পালন করা হারাম হওয়ার বর্ণনা
৩৮৭১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যা করার জন্য আদেশ করেছেন।
৩৮৭২. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি মদিনার চারপাশে লোক প্রেরণ করলেন যে, কুকুর হত্যা করা হোক।
৩৮৭৩. হুমায়দ ইবনু মাসআদা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যা করার জন্য হুকুম দিতেন। অতঃপর আমি মদিনার অভ্যন্তরে ও তার চারপাশের কুকুর ধাওয়া করাতাম। আর কোন কুকুরই আমরা না মেরে ছেড়ে দিতাম না। এমন কি বেদুইনদের দুগ্ধবতী উষ্ট্রীর সাথে যে কুকুর থাকত তাও আমরা হত্যা করতাম।
৩৮৭৪. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে শিকারী কুকুর, বকরী (পাহারা দানের কুকুর) অথবা অন্য জীবজন্তু পাহারা দেওয়া কুকুর ব্যতীত। এখন ইবনু উমর (রাঃ) কে বলা হল যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) তো ক্ষেত পাহারার কুকুরের কথাও বলে থাকেন। ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, আবূ হুরায়রার ক্ষেত আছে।
৩৮৭৫. মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালফ ও ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলতেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যা করার জন্য আমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন। অতঃপর কোন বেদুঈন নারী কুকুরসহ আগমণ করলে আমরা তাও হত্যা করে ফেলতাম। পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা হত্যা করতে নিষেধ করেন এবং বলেন, চোখের উপর সাদা দুই টিকা বিশিষ্ট ঘন কৃষ্ণ বর্ণের কুকুর তোমরা হত্যা কর কেননা উহা হল শয়তান।
৩৮৭৬. উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয (রহঃ) ... ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যা করার জন্য আদেশ দিয়েছেন। পরে তিনি বলেছেন, এদের এবং কুকুরের কি অবস্থা হল! অতঃপর শিকারী কুকুর ও বকরীর পাল পাহারার ব্যাপারে তিনি অনুমতি প্রদান করেন।
৩৮৭৭. ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব, মুহাম্মদ ইবনু হাতিম, মুহাম্মদ ইবনু ওয়ালীদ, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ... শু'বা (রহঃ) থেকে উক্তরূপে বর্ণনা করেন এবং ইবনু হাতিম ইয়াহইয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে বলেন, "এবং তিনি অনুমতি দিয়েছেন বকরী(র পাল পাহারার), শিকারী এবং ক্ষেত্র পাহারার কুকুরের ক্ষেত্রে।"
৩৮৭৮. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন কুকুর পালন করে যা গৃহপালিত জীব জন্তু পাহারা দানের জন্যও নয় কিংবা শিকার করার জন্যও নয় তাহলে প্রতিদিন তার সাওয়াব থেকে দু'কিরাত কমতে থাকবে।
৩৮৭৯. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... সালিম (রহঃ) তাঁর পিতা সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর কিংবা গৃহপালিত পশুর পাহারার কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করবে, প্রতিদিন তার সাওয়াব থেকে দু’কিরাত করে কমতে থাকবে।
৩৮৮০. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর অথবা জীবজন্তু পাহারা দেওয়ার কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করবে প্রতিদিন তার আমল থেকে দু'কিরাত করে কম হতে থাকবে।
৩৮৮১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ... সালিম ইবনু আবদুল্লাহ তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জীবজন্তু পাহারার কুকুর বা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করবে তার আমল থেকে প্রতিদিন এক কিরাত করে কমে যাবে। আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, কিংবা ক্ষেত পাহারার কুকুর।
৩৮৮২. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... সালিম (রহঃ) তাঁর পিতার সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর অথবা গৃহপালিত পশু পাহারার কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করবে, তার আমল থেকে প্রতিদিন দু'কিরাত করে কমতে থাকবে। সালিম (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেন- "কিংবা ক্ষেত পাহারার কুকুর"। আর তিনি ছিলেন ক্ষেতের মালিক।
৩৮৮৩. দাউদ ইবনু রুশায়দ (রহঃ) ... সালিম ইবনু আবদুল্লাহ তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ঘরের মালিক জীব জন্তু পাহারার কুকুর বা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করবে প্রতিদিন তার আমল থেকে দু’কিরাত করে কমে থাকবে।
৩৮৮৪. মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ক্ষেত কিংবা বকরীর পাল পাহারার কুকুর অথবা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর রাখবে প্রতিদিন তার সাওয়াব থেকে এক কিরাত করে কমতে থাকবে।
৩৮৮৫. আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন কুকুর পালন করে যা শিকারী কিংবা জীবজন্তু কিংবা (ক্ষেত) পাহারার জন্য নয়, তবে প্রতিদিন তার সাওয়াব থেকে দু’কিরাত করে কমতে থাকবে। আর আবূ তাহিরের বর্ণনায় “ক্ষেত পাহারার জন্য” কথাটি নেই।
৩৮৮৬. আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জীবজন্তু পাহারার অথবা শিকারী অথবা ক্ষেত পাহারার কুকুর ভিন্ন অন্য কুকুর রাখবে, তার সাওয়াব থেকে প্রতিদিন এক কিরাত করে কমে যাবে।
যুহরী (রহঃ) বলেন, ইবনু উমরের নিকট আবূ হুরায়রার কথাটি উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, আল্লাহ আবূ হুরায়রার প্রতি রহমত করুন! তিনি ছিলেন একজন কৃষক।
৩৮৮৭. যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কুকুর রাখবে তার আমল থেকে প্রতিদিন এক কিরাত করে কমতে থাকবে, তবে ক্ষেত পাহারার কিংবা জীবজন্তু পাহারার কুকুর ব্যতীত।
৩৮৮৮. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্তরূপ বর্ণনা করেন।
৩৮৮৯. আহমাদ ইবনু মুনযির (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) এর সুত্রে উক্ত রূপ বর্ণনা করেন।
৩৮৯০. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন কুকুর রাখবে যা শিকারী অথবা বকরীর পাল পাহারা দানের জন্য নয় তা হলে প্রতিদিন তার আমল থেকে এক কিরাত করে কমতে থাকবে।
৩৮৯১. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... সুফিয়ান ইবনু যুহায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ছিলেন শানু'আহ গোত্রের লোক, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি এমন কুকুর পালন করবে যা তার ক্ষেতের বা জীবজন্তু পাহারার কাজে লাগে না, তবে প্রতিদিন তার নেক আমল থেকে এক কির'রাত পরিমাণ কমতে থাকে। রাবী বললেন- আপনি কি এ কথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, এই মসজিদের মালিকের শপথ।
৩৮৯২. ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ... সায়িব ইবনু ইয়াযিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাদের নিকট একবার সুফিয়ান ইবনু আবূ যুহায়র আশ-শানাঈ প্রতিনিধি হয়ে আগমন করেন। অতঃপর তিনি বলেন যে,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উপরের অনুরূপ।
পরিচ্ছেদঃ ১০. শিঙ্গা লাগানোর মজুরী হালাল
৩৮৯৩. ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর নিকট শিংগাবৃত্তির উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিংগা (নিজ শরীরে) লাগিয়েছেন। আবূ তায়বা (রাঃ) তাকে শিংগা দিয়েছে। তিনি তাকে দু'সা খাদ্য বস্তু দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং তার মালিকদের সাথে আলোচনা করলে তারা তার উপর ধার্যকৃত "খারাজ" (দৈনিক প্রদেয় উপার্জন) কমিয়ে দেয়। তিনি আরো বলেনঃ তোমরা যে সব পদ্ধতিতে চিকিৎসা করাও শিংগা তার চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা অথবা (বলেছেন) ইহা তোমাদের ঔষধের মধ্যে অধিক ফলদায়ক।
৩৮৯৪. ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ... হুমায়দ (রহঃ) এর সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) এর নিকট শিংগা বৃত্তির মজুরী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। অতঃপর তিনি উক্তরূপ বর্ণনা করেন। তাছাড়া তিনি বলেন, তোমরা যে সব পদ্ধতিতে চিকিৎসা করাও শিংগা লাগানো এবং “কুসতুল বাহরী” ব্যবহার তার মধ্যে অতি উত্তম ব্যবস্থা। অত্রএব তোমরা তোমাদের শিশুদের কণ্ঠনালী দাবিয়ে দিয়ে চিকিৎসা কর না (কষ্ট দিও না)।
৩৮৯৫. আহমাদ ইবনু হাসান ইবনু খিরাশ (রহঃ) ... হুমায়দ (রহঃ) এর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)কে বলতে শুনেছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের একজন শিংগা বৃত্তিজীবী বালককে ডেকে পাঠান। সে তাঁর শরীরে শিংগা লাগায়। অতঃপর তিনি তাকে এক সা' অথবা এক মুদ বা বা দু'মুদ পরিমাণ পরিশোধ করতে আদেশ করেন এবং তার সম্পর্কে আলোচনা করেন। এতে তার উপর থেকে দৈনিক প্রেদেয় রূপে ধার্যকৃত পরিমাণ হ্রাস করে দেওয়া হয়।
৩৮৯৬. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিংগা লাগিয়েছেন এবং শিংগা প্রয়োগকারীকে তার মজুরী প্রদান করেছেন এবং তিনি নাকে ঔষধ (ফোঁটা) ঢেলে ব্যবহার করেছেন।
৩৮৯৭. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বানূ বায়াদা এর একটি গোলাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে শিংগা লাগায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মজুরী প্রদান করেন এবং তার মালিকের সাথে আলোচনা করেন। এত সে তার উপর থেকে ধার্যকৃত দৈনিক মজুর কর হ্রাস করে দেয়। যদি তা হারাম হতো তা হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দিতেন না।
পরিচ্ছেদঃ ১১. মদ বিক্রি করা হারাম
৩৮৯৮. উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর কাওয়ারীরী (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মদিনায় খুতবা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ হে লোক সকল! আল্লাহ তা'আলা মদের প্রতি ইঙ্গিত (নিষেধাজ্ঞা) দিয়েছেন। হয়তো এ ব্যাপারে তিনি শীঘ্রই কোন সুস্পষ্ট নির্দেশ দান করবেন। সুতরাং কারো। নিকট এর কিছু থাকলে সে যেন তা বিক্রি করে দেয় এবং কাজে লাগায়। রাবী বলেন, অল্প কয়েক দিন পরেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা মদ হারাম করে দিয়েছেন। সুতরাং যার নিকট এ আযাত পৌঁছবে এবং তার নিকট এর কিছু অবশিষ্ট থাকে, তবে সে যেন তা পান না করে এবং বিক্রি না করে। রাবী বলেন, তখন যাদের নিকট তা ছিল- তা নিয়ে তারা মদিনার রাস্তায় নেমে আসল এবং ঢেলে দিল।
৩৮৯৯. সুওয়াহাদ ইবনু সাঈদ ও আবূ তাহির (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু ওয়ালাতা আস সাবাঈ (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট আঙ্গুরের রস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক মশক শরাব হাদিয়া স্বরূপ নিয়ে আসে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি কি জাননা যে, আল্লাহ তা হারাম করে দিয়েছেন? সে বলল, না। অতঃপর সে এক ব্যক্তির সাথে কানাকানি করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে গোপনে কী বললে? সে বলল, আমি তাকে তা বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছি। এরপর তিনি বললেন, যিনি তা পান করা হারাম করেছেন। তিনি তার বিক্রিও হারাম করে দিয়েছেন। রাবী বলেন, এরপর সে মশকের মুখ খুলে দিল এবং তার মধ্যে যা কিছু ছিল সব পড়ে গেল।
৩৯০০. আবূ তাহির (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
৩৯০১. যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূরা বাকারার শেষের আয়াতগুলো নাযিল হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে আসেন এবং লোকদের পড়ে শোনান। এরপর মদের ব্যবসা নিযিদ্ধ ঘোষণা করেন।
৩৯০২. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সুরা বাকারার সুদ সম্পর্কীয় শেষের আয়াতগুলো নাযিল হল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের দিকে বের হয়ে আসেন এবং মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
পরিচ্ছেদঃ ১২. মদ, মৃতজন্তু, শূকর ও মূর্তি বিক্রি করা হারাম
৩৯০৩. কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মক্কা বিজয়ের বছরে মক্কায় অবস্থানকালে বলতে শুনেছেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল মদ, মৃতজন্তু, শুকর ও মূর্তি বিক্রয় করা হারাম ঘোষণা করেছেন । তখন জিজ্ঞাসা করা হল হে আল্লাহর রাসুল! মৃতজন্তুর চর্বি সম্পর্কে নির্দেশ কি? কেননা ইহা দ্বারা নৌকায় প্রলেপ লাগান হয়, চামড়ায় মালিশ করা হয় এবং মানুষ ইহা দ্বারা আলো (প্রদীপ) জ্বালায়। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, তা হারাম। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ ইয়াহূদী জাতিকে তখনই ধ্বংস করেছেন, যখন আল্লাহ তাদের মৃতের চর্বি হারাম করেন আর তারা তা গলিয়ে বিক্রি করেছে এবং তার মূল্য ভক্ষণ করেছেন।
৩৯০৪. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মক্কা বিজয়ের বছর লায়সের হাদীসের অনুরূপ বলতে শুনেছি।
৩৯০৫. আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) এর নিকট এই সংবাদ পৌছেছে যে, সামুরা (রাঃ) মদ বিক্রি করেছেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ সামুরার সর্বনাশ করুক। সে কি জানে না যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদী জাতির উপর অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের উপর চর্বি হারাম করা হয়েছিল। এরপর তারা তা গলিয়ে বিক্রি করে।
৩৯০৬. উমায়্যা ইবনু বিসতাম (রহঃ) ... আমর ইবনু দীনার (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে উপরোক্ত রূপ বর্ণিত।
৩৯০৭. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদীদের ধ্বংস করুন! তিনি তাদের উপর চর্বি হারাম করেছেন, তারপর তারা তা বিক্রি করে মূল্য ভক্ষণ করেছে।
৩৯০৮. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদী জাতিকে ধ্বংস করুন। তাদের উপর চর্বি হারাম করা হয়েছে, তারপর তারা তা বিক্রি করে তার মূল্য ভক্ষণ করেছে।
No comments: