Breaking News
recent

নেফাস ও হায়েয ইত্যাদির আহকাম

নেফাস ও হায়েয ইত্যাদির আহকাম
১। মাসআলাঃ যে মেয়েলোক হায়েয বা নেফাসের অবস্থায় আছে, অথবা যাহার উপর গোছল ফরয হইয়াছে, তাহার জন্য মসজিদে প্রবেশ করা, কা’বা শরীফের তওয়াফ করা, কোরআন শরীফ পাঠ করা এবং স্পর্শ করা দুরুস্ত নাই, অবশ্য কোরআন শরীফ যদি জুযদানের ভিতর থাকে অথবা রুমাল দ্বারা পেঁচান থাকে, তবে জুযদানের ও রুমালের উপর দিয়া ধরা জায়েয আছে; কিন্তু চামড়া, কাপড় বা কাগজ যদি কোরআন শরীফের সঙ্গে সেলাই করা না থাকে, তবে তাহা দ্বারা উপরোক্ত অবস্থায় কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয আছে।
২। মাসআলাঃ যাহার ওযূ নাই তাহার জন্যও কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয নহে, অবশ্য পড়াতে বাধা নাই।
৩। মাসআলাঃ যদি টাকা পয়সা (বা নোটের মধ্যে) অথবা তশতরী, তাবীয বা যে কোন পাতা বা কাগজের মধ্যে কোরআনের আয়াত লেখা থাকে, তবে তাহাও উপরোক্ত অবস্থাসমূহে অর্থাৎ, বিনা ওযূতে, হায়েয নেফাস এবং জানাবাতের অবস্থায় স্পর্শ করা জায়েয নহে। অবশ্য যদি এ সমস্ত জিনিস কোন থলির মধ্যে বা অন্য কোন পাত্রের মধ্যে থাকে, তবে সে থলি বা পাত্র ধরিতে বা উঠাইতে পারে।
৪। মাসআলাঃ (উপরোক্ত অবস্থাসমূহে পরণের কাপড়ের আঁচল দিয়া বা গায়ের জামার আস্তিন বা দামান দিয়াও কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয নহে।) অবশ্য যে কাপড়, চাদর, রুমাল উড়নী বা জামা পরিধানে নাইপৃথক আছে, তাহা দ্বারা কোরআন শরীফ ধরা জায়েয আছে।
৫। মাসআলাঃ যদি পূর্ণ আয়াত না পড়ে; বরং আয়াতের সামান্য শব্দ অথবা অর্ধেক আয়াত পড়ে, তবে দুরুস্ত আছে, কিন্তু ঐ অর্ধেক আয়াত এত বড় না হওয়া চাই যে, ছোট একটি আয়াতের সমান হইয়া যায়।
৬। মাসআলাঃ হায়েয, নেফাস ও জানাবাত অবস্থায় আল্লাহর কাছে দো’আ করা জায়েয আছে। অতএব, কোরআনের যে আয়াতের মধ্যে দো’আ (প্রার্থনা) আছে সেই আয়াত যদি কেহ তেলাওয়াতরূপে না পড়িয়া দো’আরূপে পড়িয়া তদ্দ্বারা দো’আ চায়, তবে তাহা জায়েয আছে। যেমন, যদি কেহ উপরোক্ত অবস্থায় অর্থের দিকে লক্ষ্য করিয়া
[অথবা]
প্রার্থনারূপে পড়ে বা [আরবি] বা [আরবি] দো’আরূপে পড়ে, বা [আরবি] মোনাজাতরূপে পড়ে, তবে তাহা জায়েয আছে।
৭। মাসআলাঃ উক্ত অবস্থায় দো’আয়ে কুনুত পড়া জায়েয আছে।
৮। মাসআলাঃ যদি কোন মেয়েলোক মেয়েদেরকে কোরআন শরীফ পড়ায়, তবে এমতাবস্থায় বানান করার দুরুস্ত আছে, মিলাইয়া পড়াইবার সময় পূর্ণ আয়াত পড়িবে না বরং একটা কিংবা দুইটা দুইটা শব্দের পর শ্বাস ছাড়িয়া দিবে এবং কাটিয়া কাটিয়া আয়াতকে মিলাইয়া বলিয়া দিবে।
৯। মাসআলাঃ উপরোক্ত অবস্থাসমূহে কলেমা শরীফ পড়া, দুরূদ শরীফ পড়া, আল্লাহর যেকের করা, এস্তেগফার পড়া, তসবীহ পড়া অর্থাৎ, সোবহানাল্লাহ, আলহামদু-লিল্লাহ, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর, লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম ইত্যাদি পড়া জায়েয আছে।
১০। মাসআলাঃ হায়েযের অবস্থায়ও ওযূ করিয়া পাক জায়গায় ক্বেবলামুখী হইয়া বসিয়া নামাযের সময়টুকু আল্লাহর যেকেরে মশগুল থাকা মোস্তাহাব। যেন নামাযের অভ্যাস ছুটিয়া না যায়, পাক হওয়ার পর নামায পড়িতে ঘাবড়াইযা না যায়।
১১। মাসআলাঃ কোন মেয়েলোকের উপর গোছল ফরয হইয়াছিল। গোছল না করিতেই হায়েয আসিয়া গেল। এই অবস্থায় তাহার আর গোছল করার দরকার নাই, যখন হায়েয হইতে পাক হইবে, তখন এক গোছলেই উভয় গোছল আদায় হইয়া যাইবে।

No comments:

Powered by Blogger.