Breaking News
recent

এস্তেহাযার হুকুম

এস্তেহাযার হুকুম
১। মাসআলাঃ এস্তেহাযার কারণে নামায ও রোযা কোনটাই ছাড়িতে পারিবে না। ইচ্ছা করিলে স্বামী-সহবাস করিতে পারিবে। অবশ্য সত্বর ওযূ করিয়া নামায পড়িতে হইবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ নাক দিয়া রক্ত প্রবাহিত হইতে থাকিলে বা হামেশা পেশাব, পায়খানা, রক্ত বা বায়ু জারী থাকিলে যেরূপ মা’যূরের হুকুম হয়, তদ্রূপ এস্তেহাযার রক্তের কারণেও মা’যূরের হুকুম হইবে। মা’যূরের হুকুম মা’যূরের বয়ানে দেখুন।
নেফাস
১। মাসআলাঃ সন্তান প্রসব হওয়ার পর পেশাবের রাস্তা দিয়া যে রক্তস্রাব হয়, তাহাকে নেফাস বলে। নেফাসের মুদ্দত ঊর্ধ্ব সংখ্যায় চল্লিশ দিন। চল্লিশ দিন অপেক্ষা বেশী নেফাস হইতে পারে না। কমের কোন সীমা নাই। যদি কাহারও এক দুই ঘন্টা মাত্র রক্তস্রাব হইয়া রক্ত বন্ধ হইয়া যায়, তবে মাত্র ঐ এক দুই ঘণ্টাকেই নেফাস বলা হইবে।
২। মাসআলাঃ যদি কাহার প্রসবের পর রক্তস্রাব মাত্রই না হয়, তবুও তাহার উপর গোছল ফযর হইবে।
৩। মাসআলাঃ প্রসবের সময় সন্তানের অর্ধেকের বেশী বাহির হওয়ার পর যে রক্তস্রাব হইবে উহা নেফাস হইবে। আর যদি অর্ধেকের কম বাহির হওয়ার পর রক্তস্রাব হয়, তবে উহা এস্তহাযা হইবে। অতএব, যদি হুঁশ থাকে, তবে নামাযের ওয়াক্ত হইলে ঐ অবস্থায়ও ওযূ করিয়া নামায পড়িতে হইবে। নামায না পড়িলে গোনাহগার হইবে; এমন কি ইশারায় হইলেও নামায পড়িতে হইবে। খবরদার! হুঁশ থাকিলে নামায ক্বাযা করিবে না। অবশ্য যদি নামায পড়িলে সন্তানের জীবন নাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সন্তানের জীবন রক্ষার্থে নামায ছাড়িয়া দিবে (ঐ সময় এস্তেগফার পড়িবে)।
৪। মাসআলাঃ যদি কোন মেয়েলোকের গর্ভপাত হয় এবং সন্তানের এক আধটা অঙ্গ পরিষ্কার দেখা যায়, তবে গর্ভপাতের পর যে রক্তস্রাব হইবে উহাকে নেফাস ধরিতে হইবে। আর যদি সন্তানের মাত্রও আকৃতি না দেখা যায়, শুধুমাত্র একটা মাংসপিণ্ড দেখা যায়, তবে দেখিতে হইবে যে, ইতিপূর্বে অন্ততঃপক্ষে পনর দিন পাক ছিল কি না এবং রক্তস্রাব কমপক্ষে তিন দিন তিন রাত জারী থাকে কি না। যদি এরূপ হয়, তবে উহাকে হায়েয গণ্য করিয়া হায়েযের কয় দিন নামায-রোযা পরিত্যাগ করিতে হইবে। আর যদি এইরূপ না হয়, তবে ঐ রক্তস্রাবকে এস্তেহাযা ধরিতে হইবে।
৫। মাসআলাঃ যদি কোন মেয়েলোকের প্রসবান্তে চল্লিশ দিনের বেশী রস্তস্রাব হয় এবং তাহার ইহাই প্রথম প্রসব হয়, তবে চল্লিশ দিন পর্যন্ত নেফাস ধরিতে হইবে। চল্লিশ দিন যখন পুরা হইবে, তখন গোছল করিয়া নামায পড়িতে হইবে। আর যদি ইতিপূর্বে আরও সন্তান প্রসব হইয়া থাকে এবং তাহার নেফাসের মুদ্দতের কোন নিয়ম থাকে, তবে নিয়মের কয়দিন নেফাস হইবে, বেশী কয়দিন এস্তেহাযা হইবে।
৬। মাসআলাঃ কোন মেয়েলোকের নিয়ম ছিল, প্রসবান্তে ত্রিশ দিন রক্তস্রাব হওয়ার, কিন্তু একবার ত্রিশ দিন চলিয়া যাওয়ার পরও রক্ত বন্ধ হইল না; তাহা হইলে এই মেয়েলোক এখন গোছল করিবে না, অপেক্ষা করিবে। যদি পূর্ণ চল্লিশ দিনের শেষে বা চল্লিশ দিনের ভিতর রক্ত বন্ধ হয়, তবে সব কয়দিনই নেফাসের মধ্যে গণ্য হইবে। আর যদি চল্লিশ দিনের বেশী রক্তস্রাব জারী থাকে, তবে ত্রিশ দিন নেফাসের মধ্যে গণ্য হইবে; অবশিষ্ট কয় দিন এস্তেহাযা। চল্লিশ দিনের পর গোছল করিবে এবং নামায পড়িবে। ত্রিশ দিনের পরের দশ দিনের নামায ক্বাযা পড়িবে।
৭। মাসআলাঃ যদি চল্লিশ দিনের পূর্বেই নেফাসের রক্তস্রাব বন্ধ হয়, তবে স্রাব বন্ধ হওয়া মাত্রই গোছল করিয়া নামায পড়িতে হইবে। গোছল করিলে যদি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়, তবে তায়াম্মুম করিয়া নামায পড়িবে। খবরদার! এক ওয়াক্ত নামাযও ক্বাযা হইতে দিবে না।
৮। মাসআলাঃ নেফাসের মধ্যে হায়েযের মত নামায একেবারে মাফ। কিন্তু রোযার ক্বাযা রাখিতে হইবে এবং নামায, রোযা ও স্বামী-স্ত্রীর মিলন সবই হারাম।
৯। মাসআলাঃ কোন মেয়েলোকের যদি ছয় মাসের ভিতরে আগে পারে দুইটি সন্তান প্রসব হয়, যেমন প্রথম সন্তান প্রসব হওয়ার দুই চারি দিন পরে বা দশ বিশ দিন পরে যদি দ্বিতীয় সন্তান প্রসব হয়, তবে প্রথম সন্তান প্রসবের পর হইতেই নেফাসের মুদ্দত গণনা করিতে হইবেদ্বিতীয় সন্তান হইতে নহে।

No comments:

Powered by Blogger.