ফরয নামাযের বিভিন্ন মাসায়েল
ফরয নামাযের বিভিন্ন মাসায়েল
ফরয নামাযের বিভিন্ন মাসায়েল
১।মাসআলাঃ সূরা ফাতেহা যখন পড়া শেষ হয়, তখন পাথক এবং শ্রোতা সকলেই নীরবে আমীন বলিবে। তারপর ইমাম অন্য সূরা শুরু করিবে। -মারাকী
২।মাসআলাঃ সফর বা যরুরতের হালাত যদি না হয়, তবে ফজরে এবং যোহরে তেওয়ালে মোফাছছাল, আছরে ও এশায় আওছাতে মোফাছছাল এবং মাগরিবে ক্বেছারে মোফাছছাল পরিমাণ সূরা পড়া সুন্নত। সূরা হুজুরাত হইতে সূরা বুরূজ পর্যন্ত সূরাগুলিকে তেওয়ালে মোফাছছাল, ‘সূরা-ত্বারেক’ হইতে ‘লামইয়াকুন’ পর্যন্ত আওছাতে মোফাছছাল এবং ‘সূরা-যিলযাল’ হইতে ‘সূরা নাস’ পর্যন্ত সূরাগুলিতে ক্বেছারে মোফাছছাল বলে। ফজরের প্রথম রাকা’আতে দ্বিতীয় রাকা’আত অপেক্ষা অধিক লম্বা পাঠ করা উচিত। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য নামাযে প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় রাকা’আত সমান হওয়া উচিত। দুই এক আয়াত বেশী-কম হইলে ধর্তব্য নহে। ¾আলমগীরী
৩।মাসআলাঃ রুকু হইতে মাথা উঠাইয়া পূর্ণরূপে সোজা হইয়া দাঁড়াইবে এবং ইমাম সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ বলিলে (তৎপর ইমাম রাব্বানা লাকাল হামদ বলিতে পারে) মুক্তাদীগণ শুধু ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলিবে কিন্তু মোনফারেদ উভয় বাক্য বলিবে। তারপর উভয় হাঁটুর উপর হাত রাখিয়া সিজদায় যাইবে। সিজদায় যাইবার সময় তকবীর বলিবে। কিন্তু তকবীর এমনভাবে বলিবে যেন মাথা মাটিতে রাখা মাত্রই তকবীর ([আরবি]-িএর ‘রে’ বলা) শেষ হইয়া যায়। ¾আলমগীরী
৪।মাসআলাঃ সিজদায় প্রথম দুই হাঁটু, তারপর দুই হাত মাটিতে রাখিবে, তারপর নাক, তারপর কপাল রাখিবে, মুখ দুই হাতের মধ্যে রাখা চাই। হাতের অঙ্গুলিগুলি ক্বেবলা রোখ করিয়া মিলাইয়া রাখিবে। উভয় পায়ের অঙ্গুলিগুলি ক্বেবলার দিকে ফিরাইয়া (চাপিয়া মাটির সহিত লাগাইয়া রাখিবে) তাহার উপর ভর করিয়া পায়ের পাতা খাড়া রাখিবে, পেট হাঁটু হইতে এবং বাজু বগল হইতে পৃথক রাখিবে, পেট মাটি হইতে এত পরিমাণ উঁচু (এক হাত পরিমাণ ফাঁক) রাখিবে, যেন একটি ছোট বকরীর বাচ্চা পেটের নীচে দিয়া চলিয়া যাইতে পারে (ইহা পুরুষদের সিজদার নিয়ম)। ¾আলমগীরী
৫।মাসআলাঃ ফজর, মাগরিব ও এশার প্রথম দুই রাকা’আতে (এবং তারাবীহ, ঈদ ও জুমু’আর নামাযে) আলহামদু এবং অন্য সূরা ‘ইমাম উচ্চস্বরে পড়িবে এবং সমস্ত নামাযের সমস্ত রাকা’আতে সামিআল্লাহু লিমানহামিদুহ এবং সমস্ত তকবীর ইমাম উচ্চস্বরে বলিবে। মোনফারেদ ফজর, মাগরিব এবং এশার কেরাআত উচ্চস্বরে বা চুপে চুপে যেরূপ ইচ্ছা পড়িতে পারে, কিন্তু সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ এবং তকবীরগুলি চুপে চুপে বলিবে। যোহন ও আছরের নামায (এবং মাগরিবের তৃতীয় রাকা’আতে এবং এশার শেষের দুই রাকা’আতে) ইমাম চুপে চুপে কেরাআত পড়িবে, শুধু সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ ও তকবীরগুলি ইমাম উচ্চস্বরে পড়িবে এবং একা নামাযী সবকিছু চুপে চুপে বলিবে। মুক্তাদী কেরাআত পড়িবে না, কিন্তু তকবীর ইত্যাদি চুপে চুপে বলিবে। ¾দুররে মুখতার
৬।মাসআলাঃ সালাম ফিরান হইলে নামায শেষ হইয়া গেল। তারপর উভয় হাত মিলিতভাবে সিনা বরাবর উঠাইয়া আল্লাহর নিকট নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গলের জন্য দো’আ করিবে। ইমাম নিজের জন্যও দো’আ করিবে এবং মুক্তাদীর জন্যও করিবে। মুক্তাদীগণ ইমামের সঙ্গে দুই হাত উঠাইয়া নিজ নিজ দো’আ পৃথক পৃথক করিতে থাকিবে। দো’আ শেষ হইলে উভয় হাত চেহারার উপর ফিরাইবে। ¾তাহতাবী পৃঃ ১৮৪, ১৮৫
৭।মাসআলাঃ যে সব নামাযের পর সুন্নত নামায আছে, যথা¾ যোহর, মাগরিব ও এশা ইহাদের পর অনেক লম্বা দো’আ পড়িবে না।
কয়েকটি দো’আ মাছুরাহঃ
[আরবি]
এই (জাতীয়) ছোট দো’আ করিয়া সুন্নত পড়া শুরু করিবে এবং যে সব নামাযের পর সুন্নত নাই, অর্থাৎ, ফজর এবং আছরের নামাযের সালাম ফিরাইয়া যদি পিছনে কোন মছবুক নামায পড়িতে না থাকে, তবে ইমাম ডান বা বাম দিকে ঘুরিয়া মুক্তাদীর দিকে হইয়া বসিবে এবং নামাযীদের অবস্থা বুঝিয়া দীর্ঘ দো’আও করিতে পারে।
৮।মাসআলাঃ প্রত্যেক ফরয নামাযের পর তিনবার¾
[আরবি]
আয়াতুল কুরসী, সূরা এখলাছ, ফালাক ও নাস এক একবার এবং ৩৩ বার [আরবি] ৩৩ বার [আরবি] ৩৪ বার [আরবি] পড়া মোস্তাহাব। যে নামাযের পর সুন্নত আছে, ইহা সুন্নতের পর পড়াই উত্তম। ¾মারাকী
No comments: