বুখারী শরীফ ১০ম খন্ড, অধ্যায়ঃ শরীয়তের শাস্তি (৬৩১৫-৬৩৪৫)
হাদিস ৬৩১৫
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যভিচারী ব্যাভিচার করার সময় মুমিন থাকে না। কোন শরাব পানকারী শরাব পান করার সময় মুমিন থাকে না। কোন চোর চুরি করার সময় মুমিন থাকে না এবং কোন ছিনতাইকারী এমনভাবে ছিনতাই করে যে, মানুষ তা দেখার জন্য তাদের চোখ সেদিকে উত্তোলিত করে; তখন সে মুমিন থাকে না। ইবনু শিহাব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে তাতে ‘নুহবাহ’ শব্দটি নেই।
হাদিস ৬৩১৬
ইবনু আবূ ইয়াস ও হাফস ইবনু উমর (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত এবং জুতা মেরেছেন। আর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।
হাদিস ৬৩১৭
কুতায়বা (রহঃ) উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্গিত। তিনি বলেনঃ নূআয়মান অথবা (রাবীর সন্দেহ) নূ'আয়মানের পূত্রকে শরাবপায়ী হিসাবে আনা হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে যারা ছিল তাদেরকে হুকুম করলেন একে প্রহার করার জন্য। রাবী বলেনঃ তারা তাকে প্রহার করল, যারা তাকে জুতা মেরেছিল তাদের মাঝে আমিও একজন ছিলাম।
হাদিস ৬৩১৮
সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) উকবা ইবনু হায়িস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা নূআয়মান অথবা রাবীর সন্দেহ) নূআয়মানের পূত্রকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আনা হল নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। এটা তার কাছে অস্বস্তিকর মনে হল। তখন ঘরের ভিতরে যারা ছিল তিনি তাদেরকে হুকুম করলেন একে প্রহার করার জন্য। সুতরাং তারা একে বেত্রাঘাত করল এবং জুতা মারল। রাবী বলেনঃ যাঁরা তাকে প্রহার করেছিল, আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।
হাদিস ৬৩১৯
মুসসিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত করেছেন এবং জুতা মেরেছেন। আর আবূ বকর (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।
হাদিস ৬৩২০
কুতায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তিকে আনা হল, সে শরাব পান করেছিল। তিনি বললেনঃ একে তোমরা প্রহার কর। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ তখন আমাদের মধ্যে কেউ হল তাকে হাত দিয়ে প্রহারকারী, কেউ হয় জুতা দিয়ে প্রহারকারী, আর কেউ হল কাপড়ঁ দিয়ে প্রহারকারী। যখন সে প্রত্যাবর্তন করল। কেউ তার সমন্ধে মন্তব্য করল যে, আল্লাহ তাঁআলা তোমাকে লাঞ্চিত করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এরুপ বলো না, শয়তানকে এর বিরুদ্ধে সাহায্য করো না।
হাদিস ৬৩২১
আবদুল্লাহ ইবনু আবদূল ওয়াহহাব (রহঃ) আলী ইবনু আবূ তাসিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি যদি কোন অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করি আর সে তাতে মরে যায় তবে মনে কোন দুঃধ আসে না কিন্তু শরাব পানকারী ব্যতীত। সে যদি মারা যায় তবে তার জন্য আমি দিয়াত দিয়ে থাকি। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশাস্তির ব্যাপারে কোন সীমা নির্ধারণ করেননি।
হাদিস ৬৩২২
মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যমানায় ও আবূ বকর (রাঃ)-এর খিলাফত কালে এবং উমর (রাঃ)-এর খিলাফতের প্রথম দিকে আমাদের কাছে যখন কোন মদ্যপায়ীকে আনা হল। তখন আমরা তাকে হাত দিয়ে জুতা দিয়ে এবং আমাদের চাঁদর দিয়ে তাদের প্রহার করতাম। এমনিভাবে যখন উমর (রাঃ)-এর খিলাফতের শেষ সময় হল তখন তিনি চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন। আর এ সব মদ্যপ যখন সীমালংঘন করেছে এবং অনাচার করা শুরু করে দিয়েছে তখন আশিটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।
হাদিস ৬৩২৩
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যমানায় এক ব্যাক্তি যার নাম ছিল আবদুল্লাহ আর লকব ছিল হিমার। এ লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে হাসাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার অপরাধে তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন। একদিন তাকে নেশাগ্রস্ত অবস্হায় আনা হল। তিনি তাকে বেত্রাঘাতের আদেশ দিলেন। তাকে বেত্রাঘাত করা হল। তখন দলের মাঝ থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহ! তার উপর লানত বর্ষণ করুন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে কতবার আনা হল! তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে লানত করো না। আল্লাহর কসম। আমি তাকে জানি যে, সে অবশ্যই আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে ভালবাসে।
হাদিস ৬৩২৪
আলী ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট একটি মাতাল লোককে আনা হল। তিনি তাকে প্রহার করার জন্য দাড়ালেন। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে হাত দিয়ে, কেউ জুতা দিয়ে এবং কেউবা কাপড় দিয়ে প্রহার করেছিল। লোকটি যখন চলে গেল, তখন এক ব্যাক্তি বলল, এর কি হল, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ো না।
হাদিস ৬৩২৫
আমর ইবনু আলী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ব্যভিচারী ব্যভিচার করে না, যখন কিনা সে মুমিন। এবং চোর চুরি করে না যখন কিনা সে মুমিন।
হাদিস ৬৩২৬
আমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াছ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ চোরের উপর আল্লাহর লাঁনত নিপতিত হয়, যখন সে একটি ডিম চুরি করে এবং এর জন্য তার হাত কাটা যায় এবং সে একটি রশি চুরি করে। এর জন্য তার হাত কাটা যায়। আমাশ (রহঃ) বলেনঃ ডিম দ্বারা লোহার টুকরা-এবং রশি দ্বারা কয়েক দিরহাম মুল্যমানের রশিকে বোঝানো হয়েছে।
হাদিস ৬৩২৭
মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট কোন এক মজলিসে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা আমার কাছে এ মর্মে বায়আত গ্রহন কর যে, আল্লাহ তা আলার সঙ্গে কোন কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না এবং ব্যাভিচার করবে না। এরপর তিনি এ আয়াত পুরা তিলাওয়াত করেনঃ “তোমাদের মাঝে যে ব্যাক্তি (বায় আতের শর্তসমূহ) পূরা করে তার বিনিময় আল্লাহ তা আলার কাছে। আর যে ব্যাক্তি এর ভেতর থেকে কিছু করে বসে আর তরে জন্য শাস্তি দেওয়া হয় তবে এটা তার জন্য কাফফারা হয়ে যায়। আর যদি এর ভেতর থেকে কিছু করে বসে আর আলাহ তা গোপন রাখেন তবে এটা তার ইখতিয়ার। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে মাপ করতে পারেন, ইচ্ছা করলে শাস্তি দিতে পারেন।
হাদিস ৬৩২৮
মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হাজ্জে (হজ্জ) বললেনঃ (হে লোক সকল)কোন মাসকে তোমরা সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? তারা বললেনঃ আমাদের এ-মাস নয় কি? তিনি আবার বললেনঃ তোমরা কোন শহরকে সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? সকলেই বললেনঃ আমাদের এ শহর নয় কি? তিনি বললেনঃ ওহে! কোন দিনকে তোমরা সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? তাঁরা বললেনঃ আমাদের এ দিন নয় কি? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তাঁআলা তোমাদের-এরক্ত, ধন-সম্পদ ও সম্মানকে শবীয়তের হক ব্যতীত এমন পবিত্র করে দিয়েছেন, যেমন পবিত্র তোমাদের এ মাসে এ শহরের মাঝে আজকের এ দিনটিকে। ওহে! আমি কি পৌছিয়েছি? এ কথাটি তিনি তিনবার উল্লেখ করলেন। আর প্রত্যেক বারেই লোকেরা উত্তর দিলেন, হ্যা। তিনি বসলেনঃ তোমাদের জন্য আফসোস অথবা ধবংস! তোমরা আমার পরে একে অপরের গর্দানে আঘাত করে কুফূরীর দিকে ফিরে যেয়ো না।
হাদিস ৬৩২৯
ইয়াহইয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যখনই (আল্লাহ তা আলার পক্ষ হতে) দুটি কাজের মধ্যে ইখতিয়ার প্রদান করা হত, তখন তিনি তন্মধ্যে সহজতরটিকে বেছে নিতেন, যতাক্ষণ না সেটা গুনাহর কাজ হত। যদি তা গুনাহর কাজ হত তবে তিনি তা থেকে অনেক দূরে থাকতেন। আল্লাহর কসম তিনি কখনও তার নিজের কোন কিছুর গ্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যতক্ষন না আল্লাহর হারাম সমূহৃকে ছিন্ন করা হত। তা হিয়ে থাকলে প্রতিশোধ নিতেন।
হাদিস ৬৩৩০
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উসামা (রাঃ) জনৈক মহিলার ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সুপারিশ করলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহ ধরুংস হয়ে গিয়েছে। কারন তারা আতরাফ (নিম্নশ্রেনীর) লোকদের উপর শরীয়তের শাস্তি কায়েম করত। আর শরীফ লোকদেরকে রেহাই দিত। ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জানো, ফাতিমাও যদি এ কাজ করত, তাহলে অবশ্যই আমি তার হাত কেটে দিতাম।
হাদিস ৬৩৩১
সাঈদ ইবনু সুলায়মান (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মাখযুমী সম্প্রদায়ের জনৈকা মহিলার ব্যাপারে কুরাইশ বংশের লোকদের খুব দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল যে কিনা চুরি করেছিল। সাহাবাগণ বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে কে কথা বলতে পারবে? আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রিয় পাত্র উসামা (রাঃ) ছাড়া কেউ এ সাহস পাবে না। তখন উসামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বললেনঃ এতে তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ তায়াআলার দেওয়া শাস্তির বিধানের ক্ষেত্রে সুপারিশ করছ? এরপর তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা প্রদান করলেন এবং বললেনঃ হে মানব মণ্ডলী! নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের লোকেরা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেননা কোন সম্মানিত লোক যখন চুরি করত তখন তারা তাকে রেহাই দিয়ে দিত। আর যখন কোন দুর্বল লোক চুরি করত তখন তার উপর শরীয়তের শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম! মুহাঁম্মাদ এর কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করে তবে অবশ্যই মুহাম্মাদ তাঁর হাত কেটে দেবে।
হাদিস ৬৩৩২
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দীনারের এক-চতূর্থাংশ বা ততোধিক চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আব্দুর রহমান ইবনু খালিদ (রহঃ) ইবনু আখী যুহরী (রহঃ) ও মা’মার (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে ইবরাহীম ইবনু সা’দ (রহঃ) এর অনুসরনে বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৬৩৩৩
ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) আয়িশা (রহঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একটি দীনারের এক-চতুর্থাংশ চুরি করায় হাত কাটা হবে।
হাদিস ৬৩৩৪
ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এক দীনারের চতৃর্থাংশ চুরি করলে হাত কাটা যাবে।
হাদিস ৬৩৩৫
ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যামানায় কোন চামড়া নির্মিত ঢাল বা সাধারণ ঢালের সমমূল্যের জিনিস চুরি করা ছাড়া হাত কাটা হত না।
হাদিস ৬৩৩৬
উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে উক্তরুপ বর্ণনা করেন।
হাদিস ৬৩৩৭
মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) আরেশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ চামড়া নির্মিত ঢাল বা সাধারণ ঢাল যার প্রত্যেকটির মূল্য আছে, এর চেয়ে কমে চুরি করলে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যামানায়) হাত কাটা হত না।
হাদিস ৬৩৩৮
ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যামানায় কোন চোরের হাত কাটা হত না। যদি সে একটি চামড়ার ঢাল বা সাধারণ ঢাল যার প্রতিটির মূল্যমান এর চেয়ে কমে কিছু চুরি করত। উকি (রহঃ) ও ইবনু ইদ্রিস (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) থেকে মুরসাল সুত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৬৩৩৯
ইসমাঈল (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত কর্তন করেছেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম।
হাদিস ৬৩৪০
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত-কর্তন করেছেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম।
হাদিস ৬৩৪১
মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত কর্তন করেছেন, যার মুল্য ছিল তিন দিরহাম।
হাদিস ৬৩৪২
ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিরহাম সমমানের ঢাল চুরি করার অপরাধে চোরের হাত কর্তন করেছেন।
হাদিস ৬৩৪৩
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম - বলেছেনঃ যে, আল্লাহ তা’আলার লানত বর্ষিত হয় চোরের উপর যে একটি ডিম চুরি করেছে তাতে তার হাত কাটা গিয়েছে বা একটি রশি ছুরি করেছে আর তাতে তার হাত কাটা গিয়েছে।
হাদিস ৬৩৪৪
ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলার হাত কর্তন করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন যে, সে মহিলাটি এর পরও আসত। আর আমি তার প্রয়োজনকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থাপন করতাম। মহিলাটি তওবা করেছিল এবং তার তওবা সুন্দর হয়েছে।
হাদিস ৬৩৪৫
আবদুল্লাহ ইবনু যুহাম্মাদ জুফী (রহঃ) উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি একটি দলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়আত করেছি। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের এ মর্মে বায়-আত করছি যে, তোমরা আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, তোমাদের সন্তান হত্যা করবে না, সামনে বা পিছনে কোন অপবাদ করবে না, বিধিসম্ম কাজে আমার অবাধ্যতা করবে না, তোমাদের মধ্যে যে আপন অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়িত করবে তার বিনিময় আল্লাহ তা’আলার নিকট। আর যে এগুলো থেকে কিছু করে ফেলবে আর সে জন্য দুনিয়াতে যদি তার শাস্তি হয়ে যায়, তাহলে এটি হব্বে তার জন্য গুনাহর কাফফারা এবং গুনাহর পবিত্রতা। আর যার (দোষ) আল্লাহ তাআলা গোপন রেখেছেন তার মুকাবিলা আল্লাহ তাআলার সাথে। (আল্লাহ) ইছছা করলে তাকে শাস্তি দিতে পারেন। আবার ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। আবূ আবদুল্লাহ হিসাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ চোর যদি হাত কেটে দেয়ার পর তাওবা করে তরে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে। অনুরুপভাবে শরীয়তের শাস্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেকটি লোকের ক্ষেত্রেই এ বিধান-প্রযোজ্য যখন সে তওবা করবে, তখন তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য হবে।
No comments: