সহিহ্ মুসলিম শরীফ ৭ম খন্ড, অধ্যায়ঃ স্বপ্ন
পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৫৭০০. আমর আন-নাকিদ, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যাতে ভয় পেয়ে জ্বরাক্রান্ত হযে পড়তাম, তবে আমাকে কম্বল মুড়ি দিতে হতো না। অবশেষে আমি আবূ কাতাদা (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাত করলাম এবং ঐ বিষয়টি তার কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি الرُّؤْيَا (সু-স্বপ্ন) আল্লাহর পক্ষ থেকে আর দুঃস্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। সূতরাং তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখে যা সে অপছন্দ করে, তখন সে যেন তার বামদিকে তিনবার থু থু নিক্ষেপ করে এবং এর অনিষ্ট হাত আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে (অর্থাৎ আউযুবিল্লাহ পড়ে), তা হলে তা তার ক্ষতি করবে না।
৫৭০১. ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। তবে এরা এদের বর্ণিত হাদীসে (পূর্বোক্ত হাদীসের) রাবী আবূ সালামা (রহঃ) এর উক্তি "আমি স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়ে জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়তাম তবে আমাকে কম্বল মুড়ি দিতে হতো না" উক্তি উল্লেখ করেন নি।
৫৭০২. হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তাঁদের দু'জনের বর্ণিত হাদীসে 'ভয় পেয়ে জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়তাম' কথাটি নেই। আর (প্রথম সনদে) রাবী ইউনুস (রহঃ) অধিক বলেছেন, যখন সে ঘুম থেকে জেগে উঠবে, তখন সে যেন তিনবার তার বামদিকে থু-থু ফেলে।
৫৭০৩. আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা'নাব (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, الرُّؤْيَا (সু-স্বপ্ন) আল্লাহর পক্ষ থেকে আর الْحُلْمُ (দুঃস্বপ্ন) ও বাজে স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেঊ যখন এমন কোন বিষয় স্বপ্নে দেখে যা সে অপছন্দ করে, তখন সে যেন তার বামদিকে তিনবার থু থু নিক্ষেপ করে এবং (আউযুবিল্লাহ বা সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস পড়ে) স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে। কেননা (এভাবে করলে) তা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। রাবী বলেন, আমি এমন স্বপ্নও দেখতাম যা আমার জন্য পাহাড়ের চাইতেও কঠিন (ও ভয়াবহ), কিন্তু এখন অবস্থা এই যে, এ হাদীস যখন আমি শুনে ফেলেছি, এখন আর সে সবের পরোয়া করি না।
৫৭০৪. কুতায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ, মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। তবে রাবী আস-সাকাফী (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছে রাবী আবূ সালামা (রহঃ) বলেছেন, আমি এমন স্বপ্নও দেখতাম যা ......। আর রাবী আল লায়স ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে আবূ সালামা (রাঃ) এর উক্তি হতে হাদীসের শেষ পর্যন্ত অংশ নেই এবং রাবী ইবনু রুমহ এ হাদীসের রিওয়ায়াতে অধিক বলেছেন যে, আর সে (স্বপ্নদ্রষ্টা) ব্যক্তি যে পাশে ঘুমাচ্ছিল, সে পাশ পরিবর্তন করে অন্যপাশে শোবে।
৫৭০৫. আবূ তাহির (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রহঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন স্বপ্ন দেখল আর এতে কোন কিছু অপছন্দ হয়, তখন সে যেন তার বামদিকে থু থু নিক্ষেপ করে এবং শয়তান (-এর কারসাজি) থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে, (তাহলে) তা তার কোন ক্ষতি করবে না। আর কারো কাছে ঐ স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করবে না। আর যদি কোন ভাল স্বপ্ন দেখে, তা হলে (সুসংবাদ প্রাপ্তিতে) খুশি হবে। আর যাকে সে মহব্বত করে, এমন লোক ছাড়া কারো কাছে ব্যক্ত করবে না।
৫৭০৬. আবূ বাকর ইবনু খাল্লাদ বাহিলী ও আহমদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাকাম (রহঃ) ... আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমাকে অসুস্থ করে দিত। তিনি বলেন, পরে আমি আবূ কাতাদা (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাত করলাম (এবং আমার অসুবিধার বিষয়টি তাঁকে বললাম)। তখন তিনি বললেন, আমিও এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমাকে অসুস্থ করে দিত। অবশেষে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনলাম, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে। এবং তোমাদের কেউ যখন এমন (স্বপ্ন) দেখে যা সে পছন্দ করে, তা হলে তা তার ভালবাসার ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো কাছে ব্যক্ত করবে না। আর যখন এমন (স্বপ্ন) দেখে যা সে অপছন্দ করে, তা হলে সে যেন তার বামদিকে তিন (বার) থু থু নিক্ষেপ করে এবং সে শয়তানের অনিষ্ট ও স্বপ্নের অকল্যাণ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং কাউকে তা না বলে। কেননা (এভাবে করলে) সে স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না।
৫৭০৭. কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখল যা সে অপছন্দ করে, তখন সে যেন তার বামদিকে তিনবার থু থু নিক্ষেপ করে এবং শয়তান (এর চক্রান্ত) থেকে আল্লাহর কাছে তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং যে কাতে নিদ্রিত ছিল, তা থেকে যেন পার্শ্ব পরিবর্তন করে (ঘুমায়)।
৫৭০৮. মুহাম্মদ ইবন আবু উমার মাক্কী (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যামানা (ও সময় কিয়ামতের) নিকটবর্তী হয়ে যাবে, তখন প্রায়শ (খাটি) মুসলমানের স্বপ্ন মিথ্যা ও অঠিক হবে না। তোমাদের (মাঝের) সর্বাধিক সত্যভাষী ব্যক্তি সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলমানের স্বপ্ন নবুয়াতের পঁয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার), ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক প্রকার) স্বপ্ন শয়তানের থেকে দুর্ভাবনা সৃষ্টি করে। আর (এক প্রকার) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং চিন্তা-ভাবনা করে), তা থেকে (উদ্ভূত)।
অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা সে অপসন্দ করে, তা হলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সালাত আদায় করে আর মানুষের কাছে সে (স্বপ্নের) কথা প্রকাশ না করে। তিনি (আরও) বলেছেন যে, আমি (স্বপ্নে) হাতকড়া (পায়ের বেড়ী দেখা) পসন্দ করি এবং গলায় বেড়ী (দেখা) অপসন্দ করি। কেননা পায়ে বেড়ী দীন-ধর্মে অবিচলতা (-র পরিচায়ক)। রাবী বলেন, তবে আমি জানি না যে, তা (রিওয়ায়াতের এ শেষ অংশটি) মূল হাদীসের অংশ [নবী (সাঃ) এর বানী] কিংবা তা [আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে রিওয়ায়াতকারী তাবেঈ] রাবী ইবন সীরীন (রহঃ) বলেছেন।
৫৭০৯. মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আইউব (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে হাদীস বর্ননা করেছেন। আর তিনি (তাঁর বর্ণিত) হাদীসে বলেছেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, পায়ের কড়া (দেখা) আমাকে আনন্দিত করে এবং গলায় বেড়ী (দেখা) আমি অপছন্দ করি। আর (কেননা) পায়ের বেড়ী হল দ্বীন-ধর্মে অবিচলতার পরিচায়ক। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (খাঁটি) ঈমানদারের স্বপ্ন নবুওয়াতের ছেচল্লিশ অংশের একটি অংশ।
৫৭১০. আবূ রবী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যামানা বা সময় কিয়ামতের নিকটবর্তী হয়ে যাবে ...... রাবী (এভাবেই) হাদীসখানি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি তাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম উল্লেখ করেননি।
৫৭১১. ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর বর্ণনায় ‘আর আমি গলায় বেড়ী দেখা অপছন্দ করি’ থেকে শেষ বক্তব্য পর্যন্ত অংশ অনুপ্রবিষ্ট (ইদরাজ) করেছেন। আর ‘স্বপ্ন নবুওয়াতের ছেচল্লিশ অংশের একটি অংশ’ কথাটি তিনি উল্লেখ করেননি।
৫৭১২. মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না, ইবনু বাশশার, যুহায়র ইবনু হারব ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মুয়ায (রহঃ) ... উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনের স্বপ্ন নবুওয়তের ছেচল্লিশ অংশের একটি অংশ।
৫৭১৩. উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৭১৪. আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্য ঈমানদারের স্বপ্ন নবুওয়াতের ছেচল্লিশ অংশের একটি অংশ।
৫৭১৫. ইসমাঈল ইবনু খলিল ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানের স্বপ্ন যা সে দেখে কিংবা যা তার সম্পর্কে দেখানো হয়। রাবী ইবনু মুসহীর বর্ণিত হাদীসে (মুসলমানের স্বপ্ন স্থলে) রয়েছে, 'ভাল স্বপ্ন' নবুওয়াতের ছেচল্লিশ অংশের একটি অংশ।
৫৭১৬. ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নেককার ব্যক্তির স্বপ্ন নবুওয়াতের ছেচল্লিশ অংশের একটি অংশ।
৫৭১৭. মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও আহমাদ ইবনু মুনযির (রহঃ) ... ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৭১৮. মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) তাঁর পিতা সুত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৭১৯. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ... ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন নবুয়তের সত্তর অংশের একটি অংশ।
৫৭২০. ইবনু মুসান্না ও উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইয়াহইয়া সুত্রে উবায়দুল্লাহ (রহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
৫৭২১. কুতায়বা ও ইবনু রুমহ (রহঃ) লায়স ইবনু সা’দ থেকে (অন্য সনদে) ইবনু রাফি ও ইবনু ফুদায়ক (রহঃ) নাফি’ (রহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। লায়স-এর হাদীসে রয়েছে নাফি (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয ইবনু উমার (রাঃ) বলেছেনঃ স্বপ্ন নবুওয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ।
পরিচ্ছেদঃ ১. নবী (ﷺ) এর বানীঃ যে ব্যক্তি আমাকে সপ্নে দেখে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছে
৫৭২২. আবূ রবী সুলায়মান ইবনু দাঊদ আতাকী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, সে আমাকে সত্যই দেখেছো কেননা শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।
৫৭২৩. আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, অচিরেই সে আমাকে জাগ্রত অবস্থায় দেখতে পাবে। কিংবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাকে জাগ্রত অবস্থায় দেখতে পেল। কেননা শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না। রাবী আরো বলেন, আবূ সালামা বলেছেন, আবূ কাতাদা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে দেখল সে নিশ্চয়ই সত্যই দেখল।
এবং যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি হাদীস দু'টির সবটুকু তাদের উভয়ের সনদে ইউনুসের হাদীসের সম্পূর্ণ অনুরূপ সমানভাবে উল্লেখ করেছেন।
৫৭২৪. কুতায়বা ইবন সাঈদ ও ইবন রুমূহ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে (স্বপ্নযোগে) আমাকে দেখল, সে অবশ্যই আমাকে দেখল। কেননা শয়তানের পক্ষে আমার রূপ ধারণ করা সঙ্গত (সম্ভব) নয়। তিনি আরও বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন বাজে স্বপ্ন দেখে, সে যেন ঘুমের মাঝে তার সাথে শয়তানের কারসাজির খবর কাউকে না দেয়।
৫৭২৫. মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে (স্বপ্নযোগে) আমাকে দেখল, সে অবশ্য আমাকেই দেখল। কেননা শয়তানের পক্ষে সঙ্গত (সম্ভব) নয় যে, সে আমার সাদৃশ্য গ্রহণ করে।
পরিচ্ছেদঃ ২. ঘুমের মাঝে তার (ঘুমন্ত ব্যক্তির সাথে) শয়তানের খেলাধুলার খবর কাউকে দিও না
৫৭২৬. কুতায়বা ও ইবনু রুমহ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। (একদা) এক বেদুঈন তাঁর কাছে এসে বলল, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে আর আমি তার পিছনে পিছনে ছুটে চলছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধমক দিয়ে বললেনঃ ঘুমের মাঝে তোমার সাথে শয়তানের ক্রীড়া-কৌতুকের খবর কাউকে দিও না।
৫৭২৭. উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে এবং তা গড়াতে শুরু করেছে আর আমি তার পিছনে জোর দৌড় লাগালাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে বেদুঈন আরবকে বললেন, তোমার ঘুমের মাঝে তোমার সাথে শয়তানের ক্রীড়া-কৌতুকের বিষয় মানুষের কাছে ব্যক্ত করো না। রাবী [জাবির (রাঃ)] বলেন, এ ঘটনার পর আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভাষণ দিতে শুনলাম। তাতে তিনি বললেন, তোমাদের কেউ ঘুমের মাঝে তার সাথে শয়তানের ক্রীড়া-কৌতুকের বিষয় ব্যক্ত করবে না।
৫৭২৮. আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ সাঈদ আশাজ্জ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। রাবী বলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হেসে বললেন, শয়তান যখন তোমাদের কারো সাথে তার ঘুমের মাঝে ক্রীড়া-কারসাজি করে, তখন সে যেন মানুষের কাছে তা ব্যক্ত না করে। আর রাবী আবূ বাকর (রহঃ) এর রিওয়ায়াতে রয়েছে, যখন তোমাদের কারো সাথে ক্রীড়া-কারসাজি করা হয়। 'শয়তান' শব্দ উল্লেখ করেননি।
পরিচ্ছেদঃ ৩. স্বপ্নের ব্যাখ্যা
৫৭২৯. হাজিব ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) ... উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) কিংবা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করতেন যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এল । অন্য বর্ণনায় হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া তুজীবী (রহঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা (রাঃ) [ইবনু শিহাব (রহঃ) কে] খবর দিয়েছেন যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ হাদীস বর্ণনা করতেন যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এসে বলল, ইয়া রাসুলল্লাহ! আমি আজরাতে স্বপ্ন দেখলাম যে, শামিয়ানা থেকে ঘি ও মধু ঝরে পড়ছে আর লোকদের দেখলাম তারা তা থেকে তাদের হাতের অঞ্জলি ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ অধিক পরিমাণ নিচ্ছে কেউ অল্প পবিমাণে। আর একটি রশি দেখলাম আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সংযুক্ত। আর দেখলাম আপনি তা ধরলেন এবং উপর উঠে গেলেন, তারপর একজন লোক তা ধরল এবং সে উপর উঠে গেল, তারপর একজন লোক তা ধরল এবং সেও উপর উঠে গেল তারপর আর একজন লোক তা ধরল এবং তা ছিঁড়ে পড়ে গেল। পরে তা তার জন্য জুড়ে দেয় হল এবং সেও উপরে উঠে গেল।
স্বপ্ন বর্ণনার এ পর্যায় আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা আপনার জন্য উৎসর্গিত! আল্লাহর কসম! অবশ্য আপনি আমাকে অবকাশ দিবেন তা হলে আমি এ স্বপ্নটির তাবীর করব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনি তাবীর করুন।
আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, শামিয়ানাটি হল ইসলামের (রূপক) শামিয়ানা, আর যে ঘি ও মধুর ফোঁটা ঝাড়ে পড়ছিল তা হচ্ছে আল কুরআন এর মধুরতা ও কোমলতা, আর মানুষেরা যে তা থেকে অঞ্জলি ভরে ভরে নিয়ে-যাচ্ছিল, তা হলো কেউ অধিক পরিমাণে আর কেউ অল্প পরিমাণে আল-কুরআন থেকে আহরণ করয়ে আর আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সংযুক্ত রশিটি হল হক ও সত্য (পথ), যার উপরে আপনি রয়েছেন তা ধারণ করলেন, আর আল্লাহ তা দিয়ে আপনাকে উপরে তুলে নিলেন।
এরপর আপনার পরে এক ব্যক্তি তা ধারণ করবে এবং তা দিয়ে সেও উপরে উঠে যাবে তারপর এক ব্যক্তি তা ধারণ করবে সেও উপরে উঠে যাবে। তার পর আর এক ব্যক্তি তা ধারণ করবে এবং তা ছিঁড়ে পড়ে যাবে পরে তা তার জন্য জুড়ে দেয়া হবে এবং তা দিয়ে সে উপরে উঠে যাবে। ইয়া রাসুলাল্লাহ! এখন আমাকে বলে দিন আমার পিতা ও মাতা আপনার উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত, আমি ঠিক বলেছি কিংবা ভুল বলেছি?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আপনি কতক ঠিক বলেছেন আর কতক ভুল বলেছেন। তিনি বললেন, তা হলে আল্লাহর কসম ইয়া রাসুলাল্লাহ! যা আমি ভুল করেছি, তা অবশ্যই আপনি আমাকে বর্ণনা করে দিবেন। তিনি বললেন, এভাবে কসম করবেন না।
৫৭৩০. ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উহুদ (যুদ্ধক্ষেত্র) থেকে তার ফিরে আসার সময় এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এল। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আজ রাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম একটি শামিয়ানা, তা থেকে ফোঁটা ফোঁটা ঘি ও মধু ঝরছে। হাদীসের পরবর্তী অংশ ইউনুস (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের মর্মানুরূপ।
৫৭৩১. মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) অথবা আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবদুর রাযযাক বলেন (ঊর্ধ্বতন রাবী আমার উস্তাদ) মা'মার (রহঃ) কখনো বর্ণনা করতেন ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে, আবার কখনো বর্ণনা করতেন আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এ মর্মে যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বলল আজ রাতে (স্বপ্নে) আমি একটি শামিয়ানা দেখতে পাই ...... এরপর পূর্বোক্ত রাবীগণের বর্ণিত হাদীসের বর্ণনা অনুরূপে বর্ণনা করেছেন।
৫৭৩২. আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান দারিমী (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (যে সব অভ্যাসে অভ্যস্ত ছিলেন, সে সবের মাঝে একটি হল এই যে, তিনি) তাঁর সাহাবীগগকে (ফজরের সালাতের পরে) বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখে থাকলে সে তা আমার কাছে ব্যক্ত করুক; তা হলে আমি তাকে তার তাবীর বলে দিব। এক ব্যক্তি এসে বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি একটি শামিয়ানা দেখলাম। পরবতীঁ বর্ণনা (পূর্বোক্ত) রাবীগনের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
পরিচ্ছেদঃ ৪. নবী (ﷺ) এর স্বপ্ন
৫৭৩৩. আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা'নাব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক রাতে আমি দেখলাম যেভাবে ঘুমন্ত ব্যক্তি দেখে (অর্থাৎ স্বপ্ন), যেন আমরা উকবা ইবনু রাফি এর বাড়িতে রয়েছি। তখন আমাদের কাছে ইবনু তাব (নামক) খেজুর হতে কিছু তাজা খেজুর নিয়ে আসা হল। তখন আমি এর ব্যাখ্যা করলাম, দুনিয়ার বুকে আমাদের জন্য উন্নতি এবং আখিরাতে শুভ পরিণতি। আর আমাদের দ্বীন অবশ্যই উত্তম।
৫৭৩৪. নাসর ইবনু আলী জাহযামী (রহঃ) ... নাফি (রহঃ) থেকে আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) এ মর্মে রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ঘুমের মাঝে আমাকে একটি দাতন দিয়ে মিসওয়াক করতে দেখলাম। তখন দু ব্যক্তি আমাকে আকর্ষণ করল যাদের একজন অন্যজনের চাইতে বয়সে বড়। তখন আমি মিসওয়াকটি অল্প বয়স্ককে দিতে গেলে আমাকে বলা হল না বড়কে দিন- তাই তা আমি বয়স্ককে দিয়ে দিলাম।
৫৭৩৫. আবূ আমির আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আশআরী ও আবূ কুরায়র মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) ... আবূ মূসা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি স্বপ্লে দেখলাম যে, আমি মক্কা থেকে এমন এক দেশে হিজরত করে যাচ্ছি যেখানে খেজুর গাছ রয়েছে। তাতে আমার ধারণা এদিকে গেল যে, তা ইয়ামান কিংবা হাজর (এলাকা) হবে। পরে (বাস্তবে) দেখি যে, তা হল মাদ্বীনা (যার পূর্ব নাম) ইয়াসরিব। আমি আমার এ স্বপ্নে আরও দেখলাম যে, আমি একটি তরবারি নাড়াচাড়া করলাম, ফলে তার মধ্যখানে ভেংগে গেল। তা ছিল উহুদের দিনে, যা মুমিনগণের উপর আপতিত হয়েছিল।
পরে আমি আর একবার সেই তরবারি নাড়া দিলে তা আগের চাইতে উত্তম হয়ে গেল। মুলত তা হল সে বিজয় ও ঈমানদারদের সম্মিলন, সংহতি যা আল্লাহ সংঘটিত করলেন (মক্কা বিজয়)। আমি তাতে একটি গরুও দেখলাম। আর আল্লাহ তা’আলাই কল্যাণের অধিকারী। মূলত তা হল উহুদের যূদ্ধে (শাহাদাতপ্রাপ্ত) ঈমানদারগণের দলটি। আর কল্যাণ হল সে কল্যাণ, যা পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা দান করেছেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সে সাওয়াব ও প্রতিদান যা আল্লাহ তা'আলা আমাদের বদর যুদ্ধের পরে দিয়েছেন।
৫৭৩৬. মুহাম্মদ ইবনু সাহল তামীমী (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (ভণ্ড নবী) মুসায়লামা কাযযাব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে মদিনায় এল, সে তখন বলতে থাকল, মুহাম্মাদ যদি তার (মৃত্যুর) পরে নেতৃত্ব আমাকে দেওয়ার অঙ্গীকার করে, তা হলে আমি তার অনুসরণ করব। সে তার কাওমের অনেক লোকজন নিয়ে মদিনায় এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে এগিয়ে গেলেন। তাঁর সাথে ছিলেন সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শামমাস (রাঃ)। আর তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে ছিল খেজুর শাখার একটি টুকরা। অবশেষে তিনি সহচর বেষ্টিত মুসায়লামার সামনে গিয়ে থামলেন এবং কথাবার্তার এক পর্যায়ে বললেন (তুমি যদি আমার কাছে এ) নগণ্য খেজুর ডালের টুকরাটিও দাবি কর, তবু আমি তা তোমাকে দিব না এবং আমি কিছুতেই তোমার ব্যাপারে আল্লাহর বিধান লংঘন করব না। (অথবা আল্লাহর সিদ্ধান্ত লংঘন করব না)
আর যদি তুমি (অবাধ্য হও) পাশ্চাতে ফিরে যাও, তা হলে অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে ঘায়েল করবেন। আর আমি অবশ্যই মনে করি যে, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে, তা তোমার ব্যাপারেই দেখানো হয়েছে। আর (আমি তোমার সাথে অধিক বাক্য ব্যয় করতে চাই না), তবে এ সাবিত আমার পক্ষ থেকে তোমাকে জবাব দিবে।
এর পর তিনি তার কাছ থেকে ফিরে চললেন। রাবী ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, পরে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বক্তব্য 'তোমাকেই মনে করি যে, আমকে (স্বপ্নে) যা দেখানো হয়েছে, তা তোমার ব্যাপারেই দেখানো হয়েছে' সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম।
তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাকে বললেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ঘুমন্ত অবস্থায় আমার দুহাতে দুটো সোনার কংকন দেখতে পেলাম; সে সুটির অবস্থা আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলল। স্বপ্নে আমার কাছে ওহী পাঠানো হল যে, ও দুটিকে ফুঁ দিন। আমি সে দুটি ফুঁ দিলে সে দুটি উড়ে গেল। তখন আমি (স্বপ্নে দেখা) সে বালা দুটির, ব্যাখ্যা করলাম দু'জন নবুওয়াতের মিথ্যা দাবিদার, যারা আমার পরে আত্মপ্রকাশ করবে। (রাবী বলেন), তাদের দুজনের একজন হল 'আল-আনাসী' সান'আ বাসীদের নেতা এবং অপরজন হল মুসায়লামা- ইয়ামামাবাসীদের সরদার।
৫৭৩৭. মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এ হল সে সব হাদীস যা আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে রিওয়ায়াত করেছেন। এ কথা বলে তিনি কয়েকখানি হাদীস উল্লেখ করেছেন। এ হল (সে সবের একখানি)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, আমি ঘুমন্ত ছিলাম, এমতাবস্থায় আমার কাছে পৃথিবীর ভাণ্ডার সমূহ নিয়ে আসা হল। তখন আমার হাতে দুটি সোনার কংকন রেখে দেয়া হলে সে দুটি আমার জন্য বড় ভারী মনে হল এবং এগুলো আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলল। তখন আমার কাছে ওহীর মাধ্যমে জানান হল যে, আমি যেন সে দুটির উপরে ফুঁ দেই। তখন আমি ফুঁ দিলে সে দুটির অন্তর্হিত হয়ে গেল। আমি সে দুটির ব্যাখ্যা করলাম সে দুই মিথ্যুক (ভণ্ড নবী) যে দু’জনের (অবস্থান কালের) মাঝে আমি রয়েছি (অর্থাৎ) সানআ অধিবাসী (আসওয়াদ আল আনসী) এবং ইয়ামামা অধিবাসী (মুসায়লামাতুল কাযযাব)।
৫৭৩৮. মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত আদায় শেষে লোকদের দিকে মুখ করে বসতেন এবং বলতেন, তোমাদের কেউ কি গত রাতে কোন স্বপ্ন দেখেছে?
No comments: