১১৪ সূরা আন নাস এর অর্থ ও তাফসীর
সূরা আন নাস
![]() |
১১৪ সূরা আন নাস এর অর্থ ও তাফসীর online24.bd |
﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ﴾
﴿مَلِكِ النَّاسِ﴾
﴿إِلَٰهِ النَّاسِ﴾
৩) মানুষের প্রকৃত মাবুদের কাছে,১
১ . এখানেও সূরা আল ফালাকের মতো ' আউযু বিল্লাহ ' বলে সরাসরি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার পরিবর্তে আল্লাহর তিনটি গুণের মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করে তাঁর আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে , এ তিনটি গুনের মধ্যে একটি হচ্ছে , তাঁর রাব্বুন নাস অর্থাৎ সমগ্র মানব জাতির প্রতিপালক , মালিক ও প্রভু হওয়া৷ দ্বিতীয়টি হচ্ছে , তাঁর মালিকুন নাস অর্থাৎ সমস্ত মানুষের বাদশাহ , শাসক ও পরিচালক হওয়া ৷ তৃতীয়টি হচ্ছে , তাঁর ইলাহুন নাস অর্থাৎ সমগ্র মানব জাতির প্রকৃত মাবুদ হওয়া ( এখানে একথা সুস্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন যে , ইলাহ শব্দটি কুরআন মজীদে দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে৷ এক , এমন বস্তু বা ব্যক্তি যার ইবাদাত গ্রহণ করার কোন অধিকারই নেই কিন্তু কার্যত তার ইবাদাত করা হচ্ছে৷ দুই , যার ইবাদাত গ্রহণ করার অধিকার আছে এবং যিনি প্রকৃত মাবুদ , লোকেরা তার ইবাদাত করুক বা না করুক৷ ( আল্লাহর জন্য যেখানে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে এ দ্বিতীয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে৷ )
এ তিনটি গুনের কাছে আশ্রয় চাওয়ার মানে হচ্ছে : আমি এমন এক আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, যিনি সমস্ত মানুষের রব বাদাশাহ ও মাবুদ হবার কারণে তাদের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব রাখেন , যিনি নিজের বান্দাদের হেফাজন করার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন এবং যথার্থই এমন অনিষ্টের হাত থেকে মানুষের রক্ষা করতে পারেন , যার হাত থেকে নিজে বাঁচার এবং অন্যদের বাঁচাবার জন্য আমি তাঁর শরণাপন্ন হচ্ছি৷ শুধু এতটুকু নয় বরং যেহেতু তিনিই রব , বাদশাহ ও ইলাহ ,তিনি ছাড়া আর কেউ নেই যার কাছে আমি পানাহ চাইতে পারি এবং প্রকৃতপক্ষে যিনি পানাহ দেবার ক্ষমতা রাখেন৷
﴿مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ﴾
﴿الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ﴾
৫) যে বারবার ফিরে আসে ,২ যে মানুষের মনে প্ররোচনা দান করে ,
২ . মূলে ( আরবী ------) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ( আরবী ------) এর মানে হচ্ছে , বারবার প্ররোচনা দানকারী ৷ আর " ওয়াসওয়াসাহ " মানে হচ্ছে , একের পর এক এমন পদ্ধতিতে মানুষের মনে কোন খারাপ কথা বসিয়ে দেয়া যে , যার মনে ঐ কথা বসিয়ে দেয়া হচ্ছে , ওয়াসওয়াসাহ সৃষ্টিকারী যে তার মনে ঐ কথা বসিয়ে দিচ্ছে তা সে অনুভবই করতে পারে না৷ ওয়াসওয়াসাহ শব্দের মধ্যেই বারবার হবার অর্থ রয়েছে , যেমন ' যালযালাহ ' ( ভূমিকম্প ) শব্দটির মধ্যে রয়েছে , বারবার ভূকম্পনের ভাব৷ যেহেতু মানুষকে শুধুমাত্র একবার প্রতারণা করলেই সে প্রতারিত হয় না বরং তাকে প্রতারিত করার জন্য একের পর এক প্রচেষ্টা চালাতে হয় , তাই এ ধরনের প্রচেষ্টাকে ' ওয়াসওয়াসাহ ' ( প্ররোচনা ) এবং প্রচেষ্টাকারীকে ' ওয়াসওয়াস' ( প্ররোচক) বলা হয়৷ এখানে আর একটি শব্দ এসেছে খান্নাস৷ ( আরবী ------) এর মূল হচ্ছে খুনূস৷ ( আরবী---------) এর মানে প্রকাশিত হবার পর আবার গোপন হওয়া অথবা সামনে আসার পর আবার পিছিয়ে যাওয়া ৷ আর ' খান্নাস ' যেহেতু বেশী ও অত্যাধিক বৃদ্ধির অর্থবোধক শব্দ , তাই এর অর্থ হয় , এ কাজটি বেশী বেশী বা অত্যাধিক সম্পন্নকারী৷ একথা সুস্পষ্ট , প্ররোচনাদানকারীকে প্ররোচনা দেবার জন্য বারবার মানুষের কাছে আসতে হয়৷ আবার এই সঙ্গে যখন তাকে খান্নাসও বলা হয়েছে তখন এ দু'টি শব্দ পরস্পর মিলিত হয়ে আপনা আপনি এ অর্থ সৃষ্টি করেছে যে , প্ররোচনা দান করতে সে পিছনে সরে যায় এবং তারপর প্ররোচনা দেবার জন্য আবার বারবার ফিরে আসে ৷ অন্য কথায় একবার তার প্ররোচনা দান করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবার পর সে ফিরে যায়৷ তারপর সেই প্রচেষ্টা চালাবার জন্য বারবার সে ফিরে আসে৷
" বারবার ফিরে আসা প্ররোচনাকারীর অনিষ্ট " - এর অর্থ বুঝে নেয়ার পর এখন তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করার অর্থ কি , একথা চিন্তা করতে হবে ৷ এর একটি অর্থ হচ্ছে , আশ্রয় প্রার্থনাকারী নিজেই তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছে৷ অর্থাৎ এ অনিষ্ট তার মনে যেন কোন প্ররোচনা সৃষ্টি করতে না পারে৷ এর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে , আল্লাহর পথের দিকে আহবানকারীদের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তিই লোকদের মনে কোন প্ররোচনা সৃষ্টি করে বেড়ায় তার অনিষ্ট থেকে আহবায়ক আল্লাহর আশ্রয় চায়৷ সত্যের আহবায়কের ব্যক্তি সত্তার বিরুদ্ধে যেসব লোকের মনে প্ররোচনা সৃষ্টি করা হচ্ছে তার নিজের পক্ষে তাদের প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে খুঁটে খুঁটে তাদের প্রত্যেকের বিভ্রান্তি দূর করে দেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়৷ মানুষের আল্লাহর দিকে আহবান করার যে কাজ সে করে যাচ্ছে তা বাদ দিয়ে প্ররোচনাকারীদের সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার এবং তাদের অভিযোগের জবাব দেবার কাজে আত্মনিয়োগ করাও তার পক্ষে সঙ্গত নয়৷ তার বিরুদ্ধবাদীরা যে পর্যায়ে নেমে এসেছে তার নিজের পক্ষেও সে পর্যায়ে নেমে আসা তার মর্যাদার পরিপন্থী ৷ তাই মহান আল্লাহ সত্যের আহবায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন , এ ধরনের অনিষ্টকারীদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ শরণাপন্ন হও এবং তারপর নিশ্চিন্তে নিজেদের দাওয়াতের কাজে আত্মনিয়োগ করো৷ এরপর এদের মোকাবেলায় করা তোমাদের কাজ নয় , রব্বুন নাস , মালিকুন নাস ও ইলাহুন নাস সর্বশক্তিমান আল্লাহরই কাজ৷
এ প্রসঙ্গে একথাটিও অনুধাবন করতে হবে যে , ওয়াসওয়াসাহ বা প্ররোচনা হচ্ছে অনিষ্ট কর্মের সূচনা বিন্দু৷ যখন একজন অসতর্ক বা চিন্তাহীন মানুষের মনে তার প্রভাব পড়ে , তখন প্রথমে তার মধ্যে অসৎকাজ করার আকাংখা সৃষ্টি হয় তারপর আরো প্ররোচনা দান করার পর এ অসৎ আকাংখা অসৎ ইচ্ছায় পরিণত হয়৷ এরপর প্ররোচনার প্রভাব বাড়তে থাকলে আরো সামনের দিকে গিয়ে অসৎ ইচ্ছা অসৎ সংকল্পে পরিণত হয়৷ আর তারপর এর শেষ পদক্ষেপ হয় অসৎকর্ম৷ তাই প্ররোচনা দানকারীর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হবে ,অনিষ্টের সূচনা যে স্থান থেকে হয়, আল্লাহ যেন সেই স্থানেই তাকে নির্মল করে দেন৷
প্ররোচনা দানকারীদের অনিষ্টকারিতাকে অন্য এক দৃষ্টিতে বিচার করলে দেখা যাবে, প্রথমে তারা খোলাখুলি কুফরী ,শিরক , নাস্তিকতা বা আল্লাহ ও রসূলে বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং আল্লাহপন্থীদের সাথে শত্রুতার উস্কানী দেয়৷ এতে ব্যর্থ হলে এবং মানুষ আল্লাহর দীনের মধ্যে প্রবেশ করে গেলে তারা তাকে কোন না কোন বিদআতের পথ অবলম্বনের প্ররোচনা দেয় ৷ এতেও ব্যর্থ হলে তাকে গোনাহ করতে উদ্বুদ্ধ করে ৷ এখানেও সফলতা অর্জনে সক্ষম না হলে মানুষের মনে এ চিন্তার যোগান দেয় যে , ছোট ছোট সামান্য দু'চারটে গোনাহ করে নিলে তো কোন ক্ষতি নেই৷ অর্থাৎ এভাবে এ ছোট গোনাহ-ই যদি বিপুল পরিমাণে করতে থাকে তাহলে বিপুল পরিমাণ গোনাহে মানুষ ডুবে যাবে৷ এথেকেও যদি মানুষ পিঠ বাঁচিয়ে আসতে পারে তাহলে শেষমেশ তারা চেষ্টা করে মানুষ যেন আল্লাহর সত্য দীনকে শুধুমাত্র নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে ,কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি এ সমস্ত কৌশল ব্যর্থ করে দেয় তাহলে জিন ও মানুষ শয়তানদের সমস্ত দল তার ওপর ঝঁপিয়ে পড়ে৷ তার বিরুদ্ধে লোকদেরকে উস্কানি ও উত্তেজিত করতে থাকে৷তার প্রতি ব্যাপকভাবে গালিগালাজ ও অভিযোগ - দোষারোপের ধারা বর্ষণ করতে থাকে৷ চতুর্দিক থেকে তার দুনার্ম রটাবার ও তাকে লাঞ্ছিত চেষ্টা করতে তাকে৷তারপর শয়তান সে সেই মর্দে মু'মিনকে ক্রোধান্বিত করতে থাকে৷ সে বলতে থাকে , এসব কিছু নীরবে সহ্য করে নেয়া তো বড়ই কাপুরুষের কাজ৷ ওঠো ,এ আক্রমণকারীদের সাথে সংঘর্ষ বাধাও৷ সত্যের দাওয়াতের পথ রুদ্ধ করার এবং সত্যের আহবায়কদেরকে পথের কাঁটার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত করার জন্য এটি হয় শয়তানের শেষ অস্ত্র৷ সত্যের আহবায়ক এ ময়দান থেকেও যদি বিজয়ীর বেশে বের হয়ে আসে তাহলে শয়তান তার সামনে নিরুপায় হয়ে যায়৷ এ জিনিসটি সম্পর্কেই কুরআন মজীদে বলা হয়েছে :
আরবী --------------------------------------------------------------------------------
"আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে তোমরা কোন উস্কানী অনুভব করো তাহলে আল্লাহর পানাহ চাও৷' (হা - মীম সাজদাহ ,৩৬ )
আরবী ----------------------------------------------------------------------------------
" বলো , হে আমার বর ! আমি শয়তারদের উস্কানী থেকে তোমার পানাহ চাচ্ছি৷" ( আল মু'মিনূন ,৯৭ )
আরবী ----------------------------------------------------------------------------------
" যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের অবস্থা এমন হয় যে, কখনো শয়তানের প্রভাবে কোন অসৎ চিন্তা তাদেরকে স্পর্শ করলেও সঙ্গে সঙ্গেই সজাগ হয়ে যায় এবং তারপর (সঠিক পথ) তাদের সৃষ্টি সমক্ষে পরিস্কার ভেসে উঠতে থাকে৷ " ( আল আরাফ , ২০১ )৷
আর এ জন্যই যারা শয়তানের এই শেষ অস্ত্রের আঘাতও ব্যর্থ করে দিয়ে সফলকাম হয়ে বেরিয়ে আসে তাদের সম্পর্ক মহান আল্লাহ বলেন :
আরবী --------------------------------------------------------------------------
"অতি সৌভাগ্যবান ব্যক্তিরা ছাড়া আর কেউ এ জিনিস লাভ করতে পারে না৷ " ( হা - মীম সাজদাহ , ৩৫)
এ প্রসংগে আর একটি কথাও সামনে রাখতে হবে৷ সেটি হচ্ছে মানুষের মনে কেবল জিন ও মানুষ দলভুক্ত শয়তানরাই বাইর থেকে প্ররোচনা দেয় না বরং ভেতর থেকে মানুষের নিজের নফসও প্ররোচনা দেয়৷ তার নিজের ভ্রান্ত মতবাদ তার বুদ্ধিবৃত্তিকে বিপথে পরিচালিত করে৷ তার নিজের অবৈধ স্বার্থ - লালসা, তার ইচ্ছা , সংকল্প , বিশ্লেষণ ও মীমাংসা করার ক্ষমতাকে অসৎপথে চালিত করে ৷ আর বাইরের শয়তানরাই শুধু নয়, মানুষের ভেতরের তার নিজের নফসের শয়তানও তাকে ভুল পথে চালায়৷ একথাটিকেই কুরাআনের এক জায়গায় বলা হয়েছে এভাবে ( আরবী-----------) " আর আমি তাদের নফস থেকে উদ্ভুদ প্ররোচনাসমূহ জানি৷ " (কাফ, ১৬) এ কারণেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর এক বহুল প্রচারিত ভাষণে বলেন : ( আরবী -----------) " আমরা নফসের অনিষ্টকারিতা থেকে আল্লাহর পানাহ চাচ্ছি৷ "
﴿مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ﴾
৬) সে জিনের মধ্য থেকে হোক বা মানুষের মধ্য থেকে৷৩
৩ . কোন কোন বিশেষজ্ঞদের মতে এ শব্দগুলোর অর্থ হচ্ছে , প্ররোচণা দানকারীরাও দুই ধরনের লোকদের মনে প্ররোচনা দান করে ৷ এক ,জিন ও দুই,মানুষ৷ এ বক্তব্যটি মেনে নিলে এখানে ---নাস জিন ও মানুষ উভয়কে বুঝাবে এবং তাঁরা বলেন , এমনটি হতে পারে ৷ কারণ , কুরআনে যখন ( আরবী---) ( পুরুষরা ) শব্দটি জিনদের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে যেমন সূরা জিনের ৬ আয়াতে দেখা যায় এবং যখন ( আরবী ) ( দল ) শব্দটির ব্যবহার জিনদের দলের ব্যাপারে হতে পারে , যেমন সূরা আহকাফের ২৯ আয়াতে দেখা যায় তখন পরোক্ষভাবে ' নাস ' শব্দের মধ্যে মানুষে ও জিন উভয়ই শামিল হতে পারে৷ কিন্তু এ মতটি সঠিক নয়৷ কারণ ( আরবী ----------) শব্দগুলো আভিধানিক দিকে দিয়েই ( আরবী-----) (জিন ) শব্দের বিপরীতধর্মী৷ জিন - এর আসল মানে হচ্ছে গোপন সৃষ্টি৷ আর জিন মানুষের দৃষ্টি থেকে গোপন থাকে বলেই তাকে জিন বলা হয়৷ বিপরীত পক্ষে ' নাস ' ও 'ইনস ' শব্দগুলো মানুষ অর্থে এ জন্য বলা হয় যে তারা প্রকাশিত , তাদের চোখে দেখা যায় এবং ত্বক অনুভব করা যায়৷ সূরা কাসাসের ২৯ আয়াতে ( আরবী ------------------) বলা হয়েছে৷ এখানে ( আরবী --------) ( আ - নাসা ) মানে (আরবী ---) (রাআ) অর্থাৎ হযরত মূসা ( আ ) "তুর পাহাড়ের কিনারে আগুন দেখেন৷ " সূরা আন নিসার ৬ আয়াতে বলা হয়েছে : ( আরবী -------------) " যদি তোমরা অনুভব করো , এতিম শিশুদের এখন বুঝসুঝ হয়েছে৷
(আরবী ----------) (আ- নাসতুম) মানে ( আরবী ---------) ( আহসাসতুম ) বা ( আরবী -----) ( রাআইতুম)৷ কাজেই আরবী ভাষার প্রচলিত রীতি অনুযায়ী ' নাস' শব্দটির মানে জিন হতে পারে না৷
তাই এখানে আয়াতটি সঠিক মনে হচ্ছে , " এমন প্ররোচনা দানকারীর অনিষ্ট থেকে যে মানুষের মনে প্ররোচনা দান করে সে জিনদের মধ্য থেকে হোক বা মানুষদের মধ্য থেকে ৷" অর্থাৎ অন্য কথায় বলা যায় , প্ররোচনা দান করার কাজ জিন শয়তানরাও করে আবার মানুষ শয়তানরাও করে৷ কাজেই এ সূরায় উভয়ের অনিষ্ট থেকে পানাহ চাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ কুরআন থেকে এ অর্থের সমর্থন পাওয়া যায় এবং হাদীস থেকেও ৷ কুরআনে বলা হয়েছে :
আরবী --------------------------------------------------------------------------------
" আর এভাবে আমি জিন শয়তান ও মানুষ শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবী শত্রু বানিয়ে দিয়েছি তারা পরস্পরের কাছে মনোমুগ্ধকর কথা ধোঁকা ও প্রতারণার ছলে বলতে থাকে৷ " ( আল আন আম , ১১২ )
আর হাদীসে ইমাম আহমাদ , নাসাঈ ও ইবনে হিব্বান হযরত আবু যার গিফারী (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন৷ তিনি বলেন : আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হলাম৷ তখন তিনি মসজিদে বসেছিলেন৷ তিনি বললেন , আবু যার ! তুমি নামায পড়েছো ? আমি জবাব দিলাম , না৷ বললেন , ওঠো এবং নামায পড়ো ! কাজেই আমি নামায পড়লাম এবং তারপর আবার এসে বসলাম৷ তিনি বললেন :
আরবী --------------------------------------------------------------------------
" হে আবু যার ! মানুষ শয়তান ও জিন শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর পানাহ চাও!" আমি জিজ্ঞেস করলাম , হে আল্লাহর রসূল ! মানুষের মধ্যেও কি আবার শয়তান হয় ? বললেন হাঁ৷
No comments: