Breaking News
recent

৪. রবিউস সানী মাস

৪. রবিউস সানী মাস


রবিউস সানী বা রবিউল আখির মাসের কোনোরূপ বৈশিষ্ট্য, ফযীলত বা এ মাসের কোনো বিশেষ সালাত, সিয়াম, দোয়া, যিক্র বা বিশেষ কোনো আমল হাদীস শরীফে বর্ণিত হয় নি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ইন্তিকালের প্রায় সাড়ে পাঁচশত বছর পরে, ৫৬১ হিজরী সালের রবিউস সানী মাসের ১০ তারিখে আব্দুল কাদির জীলানী (রাহ) ইন্তিকাল করেন। আমাদের দেশে অনেকে এ উপলক্ষ্যে ১১ রবিউস সানী গেয়ারভী শরীফ বা ফাতেহায়ে ইয়াযদহম উদযাপন করেন। 

স্বভাবতই এর সাথে হাদীসের কোনোরূপ সম্পর্ক নেই। এমনকি জন্ম বা মৃত্যু উদযাপন করা বা জন্ম তারিখ বা মৃত্যু তারিখ উপলক্ষ্যে দোয়া খায়ের বা সাওয়াব রেসানী করার কোনো নির্দেশনা, প্রচলন বা উৎসাহ কোনো হাদীসে নেই। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর জীবদ্দশায় তাঁর ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী অনেক আত্মীয় ও অনেক সাহাবী ইন্তেকাল করেছেন, যারা সকলেই আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম ওলীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি কখনো কারো মৃত্যুর পরের বছরে, বা পরবর্তী কোনো সময়ে মৃত্যুর দিনে বা অন্য কোনো সময়ে কোনো ফাতেহা বা কোনো অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন নি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ওফাতের পরে তাঁর কন্যা ফাতিমা, জামাতা আলী, দৌহিত্র হাসান-হুসাইন, উম্মুল মুমিনীনগণ, খলীফায়ে রাশিদগণ, অন্যান্য সাহাবীগণ, তাবিয়ী-তাবি-তাবিয়ীগণ কেউ কখনো তাঁর ওফাতের দিনে বা অন্য কোনো সময়ে কোনোরূপ ফাতেহা, দোয়া বা কোনো অনুষ্ঠান করেন নি। অনুরূপভাবে কোনো সাহাবী, তাবিয়ী, তাবি-তাবিয়ী, চার ইমাম, তাদের ছাত্রগণ কেউ কখনো এরূপ ফাতিহা বা অনুষ্ঠান করেন নি। 

রবিউস সানী মাসের ফযীলত, আমল ইত্যাদি নামে যা কিছু প্রচলিত রয়েছে সবই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। যেমন ‘‘রবিউস-সানী মাসের প্রথম তারিখে রাত্রিবেলা চার রাকয়া’ত নফল নামায আদায় করিতে হয়। উহার প্রতি রাকয়াতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা ইখলাছ পড়িতে হয়। এই নামায আদায়কারীর আমল নামায় ৯০ হাজার বৎসরের সাওয়াব লিখা হইবে এবং ৯০ হাজার বৎসরের গুনাহ মাফ করিয়া দেওয়া হইবে।’’[1] এরূপ আরো অনেক আজগুবি মিথ্যা কথা প্রচলিত বিভিন্ন পুস্তকে দেখা যায়।[2] 

ফুটনোটঃ[1] মুফতী হাবীব ছামদানী, বার চান্দের ফযীলত, পৃ. ১৭-১৮। 

[2] মুফতী ছামদানী, বার চান্দের ফযীলত,পৃ. ১৭-১৮; অধ্যাপিকা দুলাল, নেক কানুন, পৃ.৩০২।

No comments:

Powered by Blogger.