নামায ভঙ্গের কারণ
নামায ভঙ্গের কারণ
নামায ভঙ্গের কারণ
১।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে কথা বলিলে নামায ভেঙ্গে যায়, ভুলে বলুক বা ইচ্ছা পূর্বক বলুক।
২।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে আহ, উহ, হায়! কিংবা ইস! ইত্যাদি বলিলে অথবা উচ্চস্বরে কাঁদিলে নামায ভেঙ্গে যায়। অবশ্য যদি কাহারও বেহেশত দোযখের কথা মনে উঠিয়া প্রাণ কাঁদিয়া উঠে এবং বে-এখতিয়ার আওয়ায বাহির হয়, তবে তাহাতে নামায টুটিবে না। ¾হেদায়া
৩।মাসআলাঃ কঠিন প্রয়োজন ব্যতীত গলা খাকারিলে এবং গলা ছাফ করিলে যাহাতে এক আধ হরফ সৃষ্টি হয়, নামায ভেঙ্গে যায়। অবশ্য গলা একেবারে বন্ধ হইয়া আসিলে আওয়ায চাপিয়া আস্তে খাকারিয়া গলা ছাফ করা দুরুস্ত আছে, ইহাতে নামায নষ্ট হইবে না।
৪।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে হাঁচি দিয়া “আলহামদু লিল্লাহ” বলিলে নামায টুটিবে না, কিন্তু বলা উচিত নহে। যদি অন্যের হাঁচি শুনিয়া নামাযের মধ্যে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলে, তবে নামায ভেঙ্গে যাইবে। ¾শরহে বেদায়া
৫।মাসআলাঃ নামাযে কোরআন শরীফ দেখিয়া পড়িলে নামায ভেঙ্গে যায়।
৬।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে (মুখ বা চোখ এদিক ওদিক ঘুরান মকরূহ, কিন্তু যদি সীনা ক্বেবলা দিক হইতে ঘুরিয়া যায়, তবে নামায ভেঙ্গে যাইবে। ¾তানবীর
৭।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে অন্যের সালামের জওয়াব দিলে নামায ভেঙ্গে যাইবে।
৮।মাসআলাঃ নামাযে থাকিয়া চুল বাঁধিলে নামায ভেঙ্গে যাইবে। ¾তানবীর
৯।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে কিছু খাইলে বা পান করিলে নামায ভেঙ্গে যাইবে। এমন কি, যদি একটি তিলও বাহির হইতে মুখে লইয়া চিবাইয়া খায়, তবুও নামায ভেঙ্গে যাইবে। অবশ্য যদি দাঁতের ফাঁকে কোন চিজ আটকাইয়া থাকে এবং তাহা গিলিয়া ফেলে, তবে ঐ জিনিস যদি আকারে (বুটের চেয়ে ছোট) তিল, সরিষা, মুগ, মসুরীর মত হয়, তবে নামায হইয়া যাইবে (কিন্তু এরূপ করিবে না।) যদি ছোলা (বুট) পরিমাণ বা বড় হয়, তবে নামায ভেঙ্গে যাইবে। ¾শরহে তানবীর
১০।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে পান মুখে চাপিয়া রাখিয়াছে, যাহার পিক গলার মধ্যে যাইতেছে, এরূপ অবস্থায় নামায হইবে না। ¾রদ্দে মোহতার
১১।মাসআলাঃ নামাযের পূর্বে হয়তো কোন মিঠা জিনিস খাইয়া তারপর ভালমত কুলি করিয়া নামায শুরু করিয়াছে; নামাযের মধ্যে কিছু মিঠা মিঠা লাগিতেছে এবং থুথুর সহিত গলার মধ্যে যাইতেছে, ইহাতে নামায নষ্ট হইবে না; ছহীহ হইবে।
১২।মাসআলাঃ নামাযের মধ্যে কোন খোশ-খবরী শুনিয়া যদি ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলে, বা কাহারও মৃত্যুর সংবাদ শুনিয়া ‘ইন্না লিল্লাহ’ বলে, তবে নামায ভেঙ্গে যাইবে।
১৩।মাসআলাঃ নামায পড়িতে শুরু করিয়াছে এমন সময় একটি ছেলে হয়ত পড়িয়া গেল, তখন ‘বিসমিল্লাহ’ বলিল; ইহাতে নামায ভেঙ্গে যাইবে। ¾তানবীর
১৪।মাসআলাঃ কোন একটি স্ত্রীলোক নামায পড়িতেছিল, এমন সময় তাহার শিশু ছেলে আসিয়া স্তন হইতে দুধ পান করা আরম্ভ করিল (বা তাহার স্বামী তাহাকে চুম্বন করিল) এইরূপ হইলে ঐ স্ত্রীলোকের নামায ভেঙ্গে যাইবে। অবশ্য যদি ছেলে মাত্র দুই এক টান চুষিয়া থাকে এবং দুধ বাহির না হয়, তবে নামায টুটিবে না।
১৫।মাসআলাঃ আল্লাহু আকবর বলার সময় যদি কেহ ‘আল্লাহর’ ‘আলিফ’ বা ‘আকবরের’ আলিফ টানিয়া বলে বা ‘আকবরের’ বে টানিয়া বলে, তবে নামায হইবে না। ¾দুররুল মুখতার
১৬।মাসআলাঃ নামায পড়িবার সময় যদি কোন চিঠির দিকে কিংবা কোন কিতাবের দিকে হঠাৎ নযর পড়ে এবং মনে মনে লিখার মর্ম বুঝে আসে, তবে তাহাতে নামায টুটিবে না। কিন্তু যদি কোন একটি কথা পড়ে, তবে নামায ভেঙ্গে যাইবে।
১৭।মাসআলাঃ নামাযীর সম্মুখ দিয়া যদি কেহ হাঁটিয়া যায় কিংবা কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি চলিয়া যায়, তবে নামায টুটিবে না। কিন্তু নামাযীর সম্মুখ দিয়া গমনকারী শক্ত গোনাহগার হইবে। কাজেই এমন স্থানে নামায পড়া উচিত, যেন সম্মুখ দিয়া কেহ যাইতে না পারে, বা চলাচলে কাহারও কষ্ট না হয়। যদি এ ধরণের কোন জায়গা না থাকে, তবে সম্মুখে একহাত লম্বা ও এক আঙ্গুল পরিমাণ মোটা একটি লাঠি বা কাঠি পুতিয়া রাখিবে এবং ঐ কাঠি সামনে রাখিয়া নামায পড়িবে। কাঠি একেবারে নাক বরাবর পুতিবে না; বরং ডাইন বা বাম চোখ বরাবর পুতিবে। যদি লাঠি বা কাঠি না পুতিয়া ঐ পরিমাণ উঁচু কোন জিনিস সামনে রাখিয়া নামায পড়ে, তবে উভয় অবস্থায় উহার বাহির দিয়া যাওয়া দুরুস্ত আছে। কোন গোনাহ হইবে না। ¾শরহে তানবীর
১৮।মাসআলাঃ প্রয়োজনবশতঃ যদি নামাযের মধ্যেই এক আধ কদম আগে বা পিছে সরিয়া দাঁড়ায়, কিন্তু বুক ক্বেবলা হইতে না ফিরে, তবে তাহাতে নামায দুরুস্ত হইবে (কিন্তু যদি ছিনা ক্বেবলা হইতে ঝুঁকিয়া যায় বা সজদার জায়গা হইতে বেশী সামনে সরিয়া দাঁড়ায়, তবে নামায হইবে না।) ¾রদ্দুল মোহতার
১৯।মাসআলাঃ মূর্খতাবশতঃ কোন কোন মেয়েলোকের এরূপ ধারণা আছে যে, মেয়েলোকদের জন্য দাঁড়াইয়া নামায পড়া ফরয নহে। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ফরয নামায দাঁড়াইয়া পড়া স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমান ফরয।
No comments: