শিশুর কাফন
শিশুর কাফন
শিশুর কাফন
১২।মাসআলাঃ অকলে গর্ভপাত হইলে যদি সন্তানের হাত, পা, নাক, কান ইত্যাদি কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই প্রকাশ না পায়, তবে গোসল ও নিয়মিত কাফন দিবে না। শুধু একখানা কাপড়ে লেপ্টাইয়া একটি গর্ত খুড়িয়া মাটির নিচে পুতিয়া রাখিবে। আর যদি হাত, পা, নাক ইত্যাদি কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকাশ পায়, তবে উহাকে মোর্দা বাচ্চা মনে করিতে হইবে এবং নাম রাখিতে হইবে, গোসল দিতে হইবে; কিন্তু জানাযার নামায পড়িতে বা নিয়মিত কাফন দিতে হইবে না, শুধু একখানা কাপড়ে লেপ্টাইয়া দাফন করিয়া রাখিতে হইবে।
১৩।মাসআলাঃ যে সময় সন্তানের মাথা বাহির হইয়াছে সে সময় জীবিত থাকার আলামত পাওয়া গেলেও যদি তৎক্ষণাৎ মরিয়া যায়, তবে ঐ বাচ্চাকে মোর্দাই পয়দা হইয়াছে মনে করিতে হইবে। অবশ্য যদি বুক পর্যন্ত বাহির হইয়া থাকে, বা উল্টা বাহির হইলে নাভি পর্যন্ত বাহির হইয়া থাকে, তবে উহাকে জীবিত পয়দা হইয়াছে মনে করিবে।
১৪।মাসআলাঃ মেয়ে যদি ছোট হয় কিন্তু বালেগা হওয়ার কাছাকাছি হয়, তবে তাহাকে বয়স্কা আওরতের নিয়মেত (পাঁচ কাপড়ে) কাফন দেওয়া সুন্নত, তিন কাপড়ে দিলেও চলিবে। বয়স্কা ও কুমারী ও ছোট মেয়েদের জন্য একই হুকুম। কিন্তু বয়স্কাদের জন্য ইহা তাকীদী হুকুম, যদি কিছু ছোট হয়, তবে তাহাকেও ঐ নিয়মেই কাফন দেওয়া উত্তম।
১৫।মাসআলাঃ যদি অত্যন্ত ছোট মেয়ে হয় যে, এখনও বালেগা হইতে অনেক দেরী, তাহার জন্যও আওরতের নিয়মে পাঁচ কাপড়ে কাফন দিবে। যদি শুধু ইযার ও চাদর এই দুই কাপড়ে কাফন দেয়, তাহাও জায়েয আছে।
১৬।মাসআলাঃ ছোট ছেলেকে মেয়েলোকেরাও উপরোক্ত নিয়মে গোসল দিতে এবং কাফন পরাইতে পারে। অবশ্য কাপড় পুরুষের নিয়মে দিতে হইবে অর্থাৎ এক চাদর, এক ইযার ও এক কোর্তা।
১৭।মাসআলাঃ পুরুষের কাফনে যদি শুধু ইযার ও চাদর এই দুইখানা কাপড় দেয়, তাহাও দুরুস্ত আছে, দুইখানার চেয়ে কম দেওয়া মকরূহ; অক্ষম হইলে দুইখানার চেয়ে কমও মকরূহ নহে।
১৮।মাসআলাঃ জানাযার উপর যে চাদর ঢাকিবার জন্য দেওয়া হয়, তাহা কাফনের মধ্যে শামিল নহে।
১৯।যে শহরে মৃত্যু হয়, সেইখানেই কাফন-দাফন করা ভাল, অন্যত্র লইয়া যাওয়া ভাল নহে। (অবশ্য প্রয়োজন হইলে দুই এক মাইল দূরে নেওয়ায় দোষ নাই।)
বেঃ গওহর হইতে
১।মাসআলাঃ যদি কোথাও কবর খুড়িয়া মোর্দার লাশ পাওয়া যায়, যদি লাশ না পচিয়া থাকে আর তাহার শরীরে কাফন না থাকে, তবে তাহাকে সুন্নত নিয়ম মত কাফন পরাইয়া দিতে হইবে। কিন্তু যদি শরীর পচিয়া গিয়া থাকে, তবে নিয়ম মত কাফন পরাইয়া দেওয়ার দরকার নাই; শুধু একখানা কাপড়ে লেপ্টাইয়া মাটি দিয়া দিলেই চলিবে।
(মাসআলাঃ জীবিতাবস্থায় যে যে মূল্যের কাপড় পরে, মৃতাবস্থায়ও তাহাকে সেইরূপ মূল্যের কাপড় দেওয়া ভাল। যদি কাফনের কাপড় নতুন না হয়, পুরাতন পাক ছাফ হয় তাহাতে কোনই দোষ নাই। গোসল দিবার জন্য যেসব পাক ছাফ লোটা, ঘড়া ব্যবহৃত হয়, তাহারও পুরাতন হইলে কোনই দোষ নাই।)
(মাসআলাঃ পুরুষের জানাযা চাদর দিয়া ঢাকা যরূরী নহে, কিন্তু স্ত্রীলোকের জানাযার উপর পর্দা করা যরূরী। তবে এই চাদর কাফনের মধ্যে গণ্য নহে। কাজেই এতীমের মাল দ্বারা ইহা খরিদ করা যাইবে না, অন্য কেহ খরিদ করিয়া দিতে পারে বা পুরাতন চাদর ব্যবহার করিতে পারে।) অনুবাদক
No comments: